পরশমণি : পর্ব ৩

‘পিসেমশাই বলেছিল, ‘ধরে নাও এইবার দেশে ফিরলে, আর ভয়ে ভয়ে থাকতে হবে না!’ শিরোমণি ও-কথায় মাধ্যমিক-ফেল ছাত্রের মতো চেয়ে ছিল। জন্মে ইস্তক ঘর বলতে সে চেনে ষোলআনিতে তার সামান্য ভিটেমাটি, একটিমাত্র সদর, একটিই খিড়কি।’

পরশমণি : পর্ব ২

‘শিরোমণি অবাক হয়ে দেখে, মিছে কথা অবলীলায় বলা যায়, তার বউ বলে, সেও বলে আজকাল। বুড়ি ঠাকুরমার শলা শুনেই রাঁধে ওরা জামাই-বৌয়ে, কিন্তু ঠাকুরমাকে কে পোঁছে! শিরোমণি ওসব নিজের রেছিপি বলেই চালায়।’

পরশমণি : পর্ব ১

‘বছর ঘুরতে একটা মেয়ে হল তাদের। পরের বছর আরেকটা। নিত্যদিনের দারিদ্র সইতে সইতে সকাল-সন্ধ্যার ষোলআনি মাত করে একে অন্যকে বাপান্ত করতে শুরু করল তারা, শিরোমণির মুখ তত চলে না, পলারাণি কলহ পটু মেয়েলোক।’

দেখিল সে কোন ভূত

এমন খবর পাবার পর আমরা কি আর বসে থাকতে পারি? সতীর্থের এমন দুঃসময় চাক্ষুষ করতে আমি-তৌফিক-সানোয়ার-বেলায়েত পাঁচবিবি চললাম। শ্রীপ্রমথনাথ বিশী নাকি লিখেছিলেন, ‘অন্বেষণেই তো মৃগয়ার আনন্দ।’ চললাম মৃগয়ায়।

সহোদরা: পর্ব ৩

‘মৃত্যুর আগে বোনেরা খোদার কাছে ফরিয়াদ করেন, তাঁরা খোদার কাছে অপরাধী কিন্তু মীরনের কাছে তো কোনো অপরাধ করেননি, বরং মীরনের আজ যা আছে সবই তাঁদের দৌলতে। তাঁদের অভিশাপে সে-রাতেই রাজমহলের কাছে মীরন বজ্রাঘাতে মারা যায়।’ খোদার বিচার।

সহোদরা: পর্ব ২

‘ওবেলা চমন আবিষ্কার করে ছোট্ট একটা বাদশাহী ছুরি বিঁধে আছে জানালার কপাটে, বাঁটে কোফত্‌গার কী সুন্দর সোনার পাতের কাজ করেছে, চুনি-মরকত বসানো একটা ময়ূরকণ্ঠ। বাইরের কেউ কি চিঠি-সহ ছুরিটা ছুঁড়ে মেরেছে বেগমদের? পালাবার বন্দোবস্ত? ছুরি নিয়ে আহ্লাদিত চমন যায় মর্দান বেগকে জানাতে।’ আশঙ্কার সূত্রপাত।

সহোদরা: পর্ব ১

এ গল্প দুই বোনের। দুই মায়ের পেটের বোন। একজন দোর্দণ্ডপ্রতাপ, আরেকজন ম্রিয়মান। মরহুম নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার খালা আর মা! ঘসেটি বেগম আর আমিনা বেগম! সম্পর্কের গুমোট রাতদিন।

ভবদীয়: পর্ব ৫

‘বড়দিন ধুমধাম করে কেটে গেল, গির্জা আর আশ্রম ঘুড়ির কাগজের রঙিন শিকলি দিয়ে সাজানো হল, সুধীজনকে আপ্যায়ন করা হল গুড়ের পুলি আর পিঠা দিয়ে, জরি মুড়ে দেওয়া হল ক্রিসমাস ট্রি-কে মানে ঝাউগাছকে, শিশুরা পেল উপহার।’ বড়দিনের উদযাপন।

ভবদীয়: পর্ব ৪

‘খ্রিস্টান মেয়েরা দিন-রাত এ-সময় হাত চালায়, তাদের হাতের ভেজা পিঠার মতোই ভক্তিরসে ফুলে উঠবে সকলের মন, এর কতটা ভক্তি আর কতটা আনন্দ কেউ তার তৌল করবে না। গির্জায় খড়ের কুঁড়েঘর গড়া হবে, তাতে মাটির পুত্তলি যিশু-মেরি-যোসেফ আর ব্যগ্র গরু-ভেড়ার দল, যিশুর জন্মস্থান সেই গোশালঘর যত্ন করে আলো দিয়ে সাজানো হবে।’ ক্রিসমাসের প্রস্তুতি।

ভবদীয়: পর্ব ৩

‘সেকালের মাদাররা সকলের বাড়ি থেকে আসা চিঠি খুলে পড়তেন। বাড়ির কারও সাথে আর কখনও সাক্ষাতের নিয়মই ছিল না। এক-একটি ঘরে এক-একজন চিরকুমারী সিস্টার থাকতেন— খটখটে বিছানা, মামুলি দেরাজ আর একখানা টুল, কেউ কারও সাথে সহসা কথা বলতে পারতেন না, কাউকে ছুঁতেন না, নীরব কর্মযোগী ছিলেন তাঁরা।’ অতীতের দিনযাপন।

ভবদীয়: পর্ব ২

‘…চ্যাপেলের এই ছোট্ট মাতৃমূর্তিটি সন্ন্যাসিনীদের খুব প্রিয়, ক’দিন আগে কারা যেন দেওয়াল টপকে এসে ভেঙে দিয়ে গেছে মেরির ঘাড় আর স্তন।’ সন্ন্যাসিনীর ফিরে দেখা।

ভবদীয়: পর্ব ১

‘রেবতী কি আর অত বোঝে? জন্ম-জন্মান্তর ধরে তাদের একটিই আরাধনা ছিল, নরকের কুণ্ডের মতো চিরকাল পুড়তে থাকা পেটের আগুন নেভানো। প্রশ্ন সে তেমন করে না, কখনোই করেনি। এমনকী অ্যাগ্নেস চলে যাবার পরেও তো তার মনে প্রশ্নের উদয় হয়নি যে তার বউ কোথায় গেল, কার হাত ধরে চলে গেল, চলেই যে যাবে তা যেন কেমন করে জানত সে।’ নতুন উপন্যাস।