ডেটলাইন পর্ব : ২৫

Temple Of Maya Devi

নির্বাণ সীমান্তে

‘ওম মণিপদ্মে হুম’— সেই যে সারাংকোটে শুরু হয়েছিল, বাসনা বিসর্জনের চেষ্টা, তারপরেই, মনোকামনা মন্দিরে বাসনা পূরণের হাতছানি। মাঝে চিতওয়ানের জঙ্গলে, হাতি-গন্ডার-বাঁদর-মাকড়সা-জোঁক— ইত্যাদি মনুষ্যেতর প্রাণীর সান্নিধ্যে, বিষয়-বাসনা বিসর্জন না হলেও, কিছুটা ভুলে থাকা, এবার তো একেবারে ত্যাগের আঁতুড়ঘরে।

হ্যাঁ, প্রকৃত অর্থেই আঁতুড়ঘর— কারণ, এই লুম্বিনীতেই জন্মেছিলেন রাজপুত্র সিদ্ধার্থ। মাত্র ২৯ বছর বয়সে, সব ঐশ্বর্য হেলায় ত্যাগ করে, পার্থিব বন্ধন উপেক্ষা করে— গভীর রাতে ঘুমন্ত স্ত্রী-পুত্রকে রেখে, যিনি বেরিয়ে পড়েছিলেন নির্বাণলাভের দীর্ঘ, কঠিন যাত্রায়। হয়ে উঠেছিলেন, গৌতম বুদ্ধ। যীশুখ্রিষ্টের জন্ম যেমন হয়েছিল, জেরুজালেম থেকে দূরে বেথলেহেমের আস্তাবলে, সিদ্ধার্থের জন্ম কপিলাবস্তুর রাজপ্রাসাদ থেকে দূরে, লুম্বিনী নামের এক অখ্যাত জায়গায়, পুষ্করিণীর ধারে। কিংবদন্তী আর ইতিহাস এখানে মিলেমিশে একাকার।

জটায়ু যদি উটে উঠতে পারেন, আমি পারব না হাতিতে চড়তে? তপশ্রী গুপ্তর কলমে পড়ুন ‘ডেটলাইন’ পর্ব ২৪…

সে যাই হোক, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। মায়া দেবী, তাঁর বাবার রাজ্য কোলিয়া যাওয়ার পথে থামেন এখানে, শালগাছের নীচে জন্ম দেন পুত্রের। তখন পূর্ণ চাঁদের মায়ায় ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। ৬২৩ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের সেই মুহূর্তকে ধরে রাখার জন্য, বুদ্ধের জন্মস্থানটিকে আলাদা করে বাঁধিয়ে, তার ওপর তৈরি হয়েছে, মায়া দেবীর মন্দির। সেও ২৪৯ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের কথা।

চণ্ডাশোক থেকে ধর্মাশোক হওয়ার পর, বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার হয়ে ওঠে সম্রাট অশোকের ধ্যানজ্ঞান। সে-সময়ে তিনি, ভগবান বুদ্ধের জন্মস্থানে তৈরি করেন মন্দির। মায়া দেবীর মন্দিরের ভেতরে, পোড়া ইটের শক্তপোক্ত দেওয়ালে— খোদাই করা ছিল, বুদ্ধের জন্মদৃশ্য।

মায়া দেবীর মন্দির

প্রসবের সময়ে, শালগাছের ডাল ধরে আছেন মায়া দেবী, পাশে তাঁর বোন মহাপ্রজাপতি গৌতমী। পুত্র জন্মের আগে, পথশ্রমে ক্লান্ত মায়া দেবী স্নান করেন পুকুরে। সদ্যোজাত শিশুকেও সেখানেই স্নান করানো হয়। সেই জলাশয়টিকেও চমৎকারভাবে বাঁধিয়ে রাখা হয়েছে— এই ইউনেস্কো ওয়ার্লড হেরিটেজ সাইটে। ভক্তের বিশ্বাস, অলৌকিক শিশু সিদ্ধার্থ জন্মের পরই, উত্তরমুখে সাত-পা হেঁটে গিয়েছিল, তারপর মুখ ফিরিয়ে ঘোষণা করেছিল, ‘আর কখনও আমার পুনর্জন্ম হবে না।’

লুম্বিনীতে, সারা বছরই প্রচুর পর্যটক আসেন, যাঁদের বেশিরভাগই দক্ষিণ আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষ। এছাড়া, চিন, জাপান তো আছেই। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশগুলো থেকে তীর্থযাত্রীরা আসেন। বুদ্ধের অনুগামীরা চারটি পবিত্র জায়গায় যান; জন্মস্থান লুম্বিনী, বোধিলাভের জায়গা বোধগয়া, প্রথম ধর্মপ্রচারের স্থান সারনাথ আর মহানির্বাণের জায়গা কুশীনগর। এর মধ্যে প্রথমটি শুধু নেপালে, বাকি তিনটি ভারতে। চার জায়গা মিলিয়ে, ‘বুদ্ধ সার্কিট’ জনপ্রিয় ট্যুর প্যাকেজ।

আর ভারত থেকে বেশ কয়েকটি সীমান্ত পেরিয়ে, সড়কপথে নেপালে ঢোকা যায় বলে, সময় ও খরচ দুই-ই বাঁচানো যায়। যেমন আমরা কাঠমান্ডু দিয়ে ঢুকেছি বটে, কিন্তু আর ফেরত যাব না এতটা উজিয়ে, আমরা বেরোব সোনাউলি পয়েন্ট দিয়ে, বিহারের রক্সৌল থেকে ট্রেন ধরব। এই শান্তির পীঠস্থানে দাঁড়িয়ে অবশ্য কল্পনা করতে পারিনি, ফেরার পথে কী ঝামেলা অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। সে-গল্প যথাসময়ে বলব।

খুব চমকপ্রদ, ‘দ্য লুম্বিনী মাস্টার প্ল্যান’। ঢোকার সময়ে যদি ভাল করে বুঝে নেন, তাহলে শুধু একটা ট্যুরিস্ট স্পট দেখার আনন্দ নয়, সঙ্গে পৌঁছে যাবেন— অসাধারণ এক উপলব্ধিতে। জাপানি স্থপতি কেনজো ট্যাঙ্গের তৈরি এই নকশা দেখলে, আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে— লুম্বিনীর বিস্তারিত ম্যাপ, যেমন অনেক দ্রষ্টব্য জায়গাতেই থাকে। আসলে কিন্তু, এটি বৌদ্ধ সংস্কৃতির অঙ্গ, জ্যামিতিক নকশা মেনে তৈরি, নির্বাণলাভের পথরেখা। তবে সত্যিই কি আর নির্বাণের রোড ম্যাপ হয়? ঐ আমার-আপনার মতো ভোগীদের সাময়িক আলোর পথযাত্রী করে তোলার একটা প্রয়াস আর কী!

জাপানি স্থপতি কেনজো ট্যাঙ্গ

তিনমাইল লম্বা, আর একমাইল চওড়া লুম্বিনী চত্বরকে— তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে এই ম্যাপে। উত্তর বিন্দুতে, প্রথম জোন— নিউ লুম্বিনী ভিলেজ। সেখানে রয়েছে, পিস প্যাগোডা, মিউজিয়াম আর শপিং আর্কেড। এটা হল, পার্থিব আকর্ষণের জায়গা। ‘মোহমায়া ত্যাগ’ করে এবার আপনি চলেছেন— মাঝখানের দিকে, যেটা মনাস্টিক জোন, জ্ঞান ও আত্মশুদ্ধির জায়গা। সেখানে রয়েছে প্রায় তিরিশটি মঠ, যা বিভিন্ন বৌদ্ধধর্মাবলম্বী দেশ বা সংগঠনের তৈরি। এক-এক দেশের, এক-একরকম স্থাপত্যশৈলী, নকশা, অন্দরসজ্জা— এই এলাকাটাকে ভারি বর্ণিল করে তুলেছে। শেষে আসবে পবিত্র উদ্যান।

সেখানে দেখবেন, মায়া দেবীর মন্দির, পুষ্করিণী আর অশোক স্তম্ভ। ভাবছিলাম, এই যে আমাদের ক্যামেরা কাঁধে ঘণ্টাখানেকের হাঁটাহাটি, তাকে বুদ্ধের দীর্ঘ ছ’বছরের নির্বাণযাত্রার আয়নায় ধরলে— কী ভয়ঙ্কর হাস্যকরই না লাগে! ২৯ বছর বয়সে স্ত্রী যশোধরা আর শিশুপুত্র রাহুলকে ফেলে রেখে, যে রাজপুত্র বেরিয়ে পড়েছিল অনন্তের সন্ধানে, তার বোধিলাভ হয়েছিল, ৩৫ বছরে। এখানে একটা কথা না বলে পারছি না। যশোধরা যে কী অসামান্য নারী ছিলেন, সে-বিষয়ে চর্চা প্রায় হয় না বললেই চলে। রাজকুমারী এবং পরে রাজবধূ হয়েও, তিনি আজীবন— বুদ্ধের কঠোর কৃচ্ছসাধনের পথই বেছে নিয়েছিলেন।

আসলে কিন্তু, এটি বৌদ্ধ সংস্কৃতির অঙ্গ জ্যামিতিক নকশা মেনে তৈরি, নির্বাণলাভের পথরেখা। তবে সত্যিই কি আর নির্বাণের রোড ম্যাপ হয়? ঐ আমার-আপনার মতো ভোগীদের সাময়িক আলোর পথযাত্রী করে তোলার একটা প্রয়াস আর কী!

আর-একটা মজার জায়গা আছে লুম্বিনীতে। ক্রেন স্যাংচ্যুয়ারি বা সারস অভয়ারণ্য। শ’খানেক জোড়া সারস আছে সেখানে। জোড়া ছাড়া, সারস একমুহূর্ত থাকে না বলেই, তাদের বলা হয় প্রেমের প্রতীক। কিন্তু লুম্বিনীতে সব ছেড়ে সারস কেন?

ছোটবেলায় ইতিহাস বইতে পড়া বুদ্ধের গল্প ভুলেই গেছিলাম প্রায়, নয়তো এই প্রশ্ন করতাম না। সারস নিয়ে একটা মন ছুঁয়ে যাওয়া আখ্যান আছে সেখানে। কিশোর রাজপুত্র বসে আছেন, প্রাসাদের বাগানে। হঠাৎ একটি তীরবিদ্ধ সারস— এসে পড়ল তাঁর পায়ের কাছে। সিদ্ধার্থ পরম যত্নে, তাকে তুলে নিয়ে গেলেন প্রাসাদে, মুছিয়ে দিলেন ক্ষত। ধীরে-ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে লাগল পাখিটি। ক’দিন পর, সিদ্ধার্থর এক ভাই, দেবদত্ত এসে চাইল সারসটিকে, বলল, ‘এটি আমার, কারণ আমি ওকে তির মেরেছি।’ দয়ার অবতার সিদ্ধার্থ কিছুতেই রাজি নন। শেষ পর্যন্ত, বিবাদের খবর পৌঁছল রাজ দরবারে। রাজা মীমাংসা করলেন, এই সারসের মালিক সে, যে একে বাঁচিয়েছে, যে তাকে মারতে চেয়েছে, সে নয়। এই কিংবদন্তীর গুণেই সারসের এই সমাদর বৌদ্ধদের কাছে।

পবিত্র উদ্যান

লুম্বিনী জায়গাটার একটা নিজস্ব ছন্দ আছে। ধীর লয়ের, মন্দাক্রান্তা ছন্দ। চলতি কথায় যাকে বলে, সাইট সিইং, মানে যেটা আমরা করে থাকি কোথাও ছুটি কাটাতে গিয়ে, এটা ঠিক সেই পর্যায়ে পড়ে না। এই যে উদ্যান জুড়ে এত মানুষ ধ্যানে বসেছেন, সারাদিন বসে আছেন একভাবে, তাঁদের দেখলেই বোঝা যায়, অনেকেই গৃহী। কেউ হয়তো ব্যবসায়ী, কেউ চাকরি করেন, কেউ-বা ছাত্র। এক সাহেব যুবককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘কেন এসেছেন?’ অল্প হেসে জবাব দিলেন, ‘শান্তির খোঁজে।’ সে কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়ার কোনও এক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করে, এবং তার থেকেও বড় কথা, সে আদৌ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নয়, বা হওয়ার কথা ভাবেও না।

এই চত্বরে, কোথাও কোনওরকম তাড়াহুড়ো বা হাঁকডাক দেখলাম না। সে-সব পড়ে আছে, গেটের বাইরে। ইচ্ছে হলে ঘুরে দেখতে পারেন, আশেপাশের প্রাচীন এলাকাগুলো। সব জায়গাতেই ছড়িয়ে রয়েছে, বুদ্ধের কোনও না কোনও কাহিনি। হাতে সময় থাকলে, অটো বা ভাড়ার গাড়ির সঙ্গে দরদস্তুর করে যেতে পারেন— ঘন্টাখানেক দূরত্বের, কপিলাবস্তুতে। পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের মাঝে, খুঁজতে পারেন এক অন্যরকম রাজপুত্রের শৈশব।

এই যে, সারাটা দিন অপার শান্তির আবহে, একটু হলেও ভেতরটা জুড়িয়েছিল, ছোট্ট হোটেলে রাতে ঘুমটাও হয়েছিল নির্ভার, পরদিন এক ঝাপটায় সব এলোমেলো হয়ে গেল। বিকেলের দিকে ট্রেন, বিহারের রক্সৌল থেকে। হাতে সময় নিয়ে বেরোতে হবে, কারণ ভারত-নেপাল সীমান্তের সোনাউলি চেকপোস্ট থেকে, রক্সৌল ঘন্টা ছয়েকের পথ।

সারস অভয়ারণ্য

বেরনোর আগেই বিপত্তি। আমার বড়সড় ক্যানভাসের ব্যাগটা চেনের ধার দিয়ে ছিঁড়ে গেল। তখন আর কী করা! হোটেল থেকে দড়ি চেয়ে, বাঁধা হল তাকে। ভোর-ভোর মালপত্র নিয়ে অটো চেপে বসলাম। নির্বিঘ্নে সীমান্ত পেরিয়ে, পা রাখলাম, নিজের দেশের কাস্টমস চেকিং পয়েন্টে। এরপরেই গন্ডগোল শুরু। অফিসারের কী মনে হল কে জানে, বললেন, ‘এই পেশাদার ক্যামেরা নিয়ে তো ভারতে ঢোকা যাবে না। এটা কি নেপালে কেনা হয়েছে?’

সরকারি শিলমোহর দেওয়া কাগজ বার করে দেখালাম, কলকাতার বিমানবন্দরেই ডিক্লারেশন দেওয়া হয়েছে যে, এই ক্যামেরা ও তার সঙ্গের সরঞ্জাম নিয়ে নেপাল যাওয়া হচ্ছে, টিভি চ্যানেলের জন্য ট্রাভেল শো শ্যুট করতে। নিয়ম মেনে সঙ্গে দেওয়া আছে, ক্যামেরার নথিপত্রও। কে শোনে কার কথা! অবাঙালি অফিসার স্পষ্ট বললেন, দশ হাজার টাকা (২০০৮ সালে কম নয়) ট্যাক্স দিলে, তবে ক্যামেরা ছাড়া হবে, নয়তো আটক থাকবে। কিন্তু কোন যুক্তিতে সেটা পরিষ্কার করে বলছেন না কিছুতেই। ওঁর গলায় জেদের সুরটা, আমারও গোঁ চড়িয়ে দিল। এর মধ্যে অফিসারের জনা দু’য়েক অ্যাসিস্ট্যান্ট হাজির হয়ে, ধুয়ো দিতে লাগল। হঠাৎ উনি আর-এক ফতোয়া জারি করলেন, ‘এদের মালপত্র সব খুলে তল্লাশি করো, আর কিছু বেআইনি জিনিস আছে কিনা।’ আমরা তো হতভম্ব। একে ক্যামেরাম্যান খুব নার্ভাস, ক্যামেরা ছেড়ে চলে যেতে হলে, চাকরিটাই থাকবে না। আমিও কম উদ্বেগে নেই, ট্রেন মিস হয়ে যাবে এসব চক্করে।

অবাক হয়ে দেখলাম, আমাদের দু’জনের মালপত্র খুলে, সব ছত্রখান করছে দুই কর্মী মিলে। এবার আমার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেল। প্রেস কার্ড আগেই দেখিয়েছিলাম, এতটুকু পাত্তা দেননি অফিসার। এসব ঝামেলার মধ্যেই আমি ঘটনা জানিয়ে মেসেজ করেছিলাম এক নামী সাংবাদিককে (সে-যুগে স্মার্ট ফোন ছিল না)। বলেছিলাম, আপনাকে ফোন করব, এক দোর্দন্ডপ্রতাপ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নাম করে; অনুরোধ করেছিলাম, আপনি উনি সেজে বলবেন, যেন আমাদের হেনস্থা না করে। একটা মোক্ষম গালাগালি সমেত জবাব এল, ‘কর ফোন।’

ফোনটা করলাম, এবং ম্যাজিকের মত কাজ হল। মন্ত্রীর নাম শুনে, চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন অফিসার, ফোনটা ধরিয়ে দিলাম। গত আধঘন্টার অভদ্রতা কোথায় গেল? ফোনের ওদিক থেকে, কী ভাষণ ভেসে আসছিল কে জানে, কাঁপতে-কাঁপতে, স্যর-স্যর করতে লাগলেন অফিসার, আর অসহায় চোখে আমাদের দিকে তাকাতে লাগলেন। মনে হয় ডোজটা একটু কড়াই ছিল, তা নয়তো ফোন রেখেই হাতজোড় করে ক্ষমা চাইবেন কেন? ফোন রেখেই মিনমিনে গলায় বললেন, ‘ভেরি সরি ম্যাডাম। মালুম নহি থা, কি আপ কা মন্ত্রীজি কে সাথ ইতনা জান-পহচান হায়।’ যে-দুটো চামচা এতক্ষণ মহানন্দে তান্ডব করছিল, তাদের ধমকে বললেন, ‘ব্যাগপত্র গুছিয়ে দাও। ম্যাডামের ব্যাগটা ছিঁড়ে গেছে, অতদূর যাবেন, বেল্ট এনে বেঁধে দাও।’ আমার দিকে তাকিয়ে অনুরোধ, ‘ম্যাডাম, প্লিজ দেখবেন, আমার যেন কিছু না হয়।’ আমি মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে, গম্ভীরভাবে বললাম, ‘দেখছি।’ যদিও আমার বেজায় হাসি পাচ্ছিল। এরপর এল চা-বিস্কুট। চামচাদের ওপর আদেশ হল, ‘ট্যাক্সি ডেকে মালপত্র তুলে দাও।’

স্বাভাবিক কারণেই, সাংবাদিক দাদা বা মন্ত্রীর নাম বললাম না। প্রথমজনকে একডাকে চেনে বাংলা, আর দ্বিতীয়জন ছিলেন, গোটা দেশে সর্বজনশ্রদ্ধেয়। কমন ফ্যাক্টর হল, ঐ মানুষটি সিনিয়র ও জুনিয়র, দুই সাংবাদিককেই স্নেহ করতেন। আমার ধারণা, সীমান্ত সংবাদ শুনলে হেসে ফেলতেন উনি।