ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • হিজাব ও আমি


    গজালা ওয়াহাব ( Ghazala Wahab) (October 15, 2022)
     

    আগের বছরের কথা। কলকাতা লিটারারি মিটে আমার অধিবেশন শেষে যখন বেরিয়ে আসছি, আতিথ্যের কাজে নিযুক্ত টিমের থেকে একজন এগিয়ে এলেন আমাকে গাড়ি অবধি পৌঁছে দেওয়ার জন্য়। ঝকঝকে আরও একজন তরুণী সঙ্গ নিল, এক কাঁধে ওড়নাখানি আলগোছে ফেলে রাখা, সেও আমাদের সেই হাঁটাপথে যোগ দিল। তাদের খনিকের কথোপকথনে বুঝতে পারলাম, তারা একে অপরের বন্ধু। এবং তরুণীটি মুসলিম। আন্দাজ করছিলাম, মেয়েটি আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়, কিন্তু সেই কর্মী গাঁইগুঁই করছেন খানিক। অবশেষে তিনি রাজি হলেন এবং আমার সঙ্গে তার পরিচয় করালেন। বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মেয়েটি হাত বাড়িয়ে করমর্দন করল আমার সঙ্গে। 

    ‘দারুণ লাগল আপনার কথা শুনে’। সে বলল। আর বলল, ‘যদিও আমি আপনার বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নই।’

    এহেন দ্বিখণ্ডিত কথা শুনে আমি বেশ আশ্চর্য হলাম দেখে, সে বলল, ‘আপনি বললেন ৮০ শতাংশ মুসলিম নারী বাধ্য হয়ে হিজাব পরে। আমার মনে হয় অনুপাতটা ৬০-৪০ হবে!’

    আমি তাকে এবার বুঝিয়ে বললাম যে, আমি আসলে আমার অভিজ্ঞতা থেকে এই বক্তব্য ও মত পেশ করেছি, কোনও পরীক্ষালব্ধ পরিসংখ্যান থেকে নয়। আমার বয়ানে মনযোগ না দিয়ে, সে ফের কথার মাঝে কথা পাড়ল। 

    ‘দেখুন, সবসময় কিন্তু বাধ্য বা বলপূর্বক ব্যাপার ঘটে না, কখনও কখনও অভ্যাসের বশবর্তী হয়েও হিজাব পরি আমরা। কারণ, সেই ছোটবেলা থেকে হিজাব পরে আসছি। আর বাড়ি থেকে শুরু করে পড়শির সকলকেই প্রায় হিজাব পরতে দেখছি। তখন মনে হয়, এটাই তো স্বাভাবিক। ফলে, হিজাব না পরলে বরং অবাক চোখে সবাই তাকায়। সবাই চেয়ে থাকে, ফুট কাটে, ঔচিত‌্যবোধ নিয়ে কথা বলে…’ গাড়ির কাছে পৌঁছনো অবধি সেই মেয়ে একনাগাড়ে তার আরও বহুবিধ কারণ বলে যেতে থাকল। 

    তারপর আমায় এগিয়ে দিতে আসা ভদ্রলোকটি আমাকে অনুরোধ করলেন, যদি আমি মেয়েটিকে হোটেলে যাওয়ার পথে একটা জায়গায় ছেড়ে দিই, যাতে সে সহজে বাড়ি পৌঁছে যেতে পারে। 

    মেয়েটি সেই ছেলেটির দিকে অদ্ভুত তীক্ষ্ণ নজরে তাকাল, আর ঝড়ের গতিতে বাংলায় কিছু একটা বলল, যাকে কথা শোনানো বলাই ভাল। তার কথার ধরন, হাবভাবে, আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম, ছেলেটির এমন আগলে রাখার প্রবৃত্তিতে মেয়েটি বেশ ক্ষুণ্ণ, বিরক্ত।

    তারপর টানটান ইংরেজিতে মেয়েটি বলল- ‘I came on my own, no? I will go on my own.’ আমি একা একাই এসেছিলাম তো? একাই চলে যেতে পারব। 

    এহেন পরিস্থিতিতে ছেলেটির ভ্যাবাচ্যাকা মুখ দেখে, আমি নিজেই মেয়েটিকে বললাম, ‘দ্যাখো, রাত বাড়ছে, তোমাকে পৌঁছে দিতে পারলে আমারই ভাল লাগবে। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই অজুহাতে তোমার সঙ্গে আরেকটু গল্পও হয়ে যাবে।’

    কিন্তু তাকে রাজি করা গেল না। তার বন্ধুর কনুইয়ে হাত গলিয়ে, সে এবার দিলখোলা এক হাসিমুখ ছড়িয়ে দিল ছেলেটির দিকে। বুঝতে পারলাম, এবার তাদের একটু মশগুল থাকতে দেওয়াই ভাল হবে। গাড়িতে ওঠার পর, আমি দেখলাম, তখনও তারা বকবক করছে, আর কথার মাঝে মাঝে একেবারে শৈল্পিকভাবে সেই ওড়নাটিকে কাঁধ থেকে নামিয়ে হিজাব বানিয়ে ফেলল মেয়েটি। 

    রাস্তায় যেতে যেতে, মেয়েটির কথা আমার বার বার মনে পড়তে লাগল। তার কথার মধ‌্যে ওই ‘অভ্যাস’, ‘বেড়ে ওঠা, ‘পাড়া-পড়শি’, ‘অভিজ্ঞতা’, ‘সংস্কার’, ‘সম্মান’– শব্দগুলো ঘুরপাক খেতে লাগল মাথার মধ্যে। এবং, কোনও একটা ভাবে যেন, এই বিষয়গুলোকে আমি বাধ‌্যতার থেকে বিযুক্ত করতেই পারছিলাম না। আর শেষমেশ চয়েস বা ব্যক্তিমত এবং ব্যক্তি-স্বাধীনতার সঙ্গেই যোগ পেতে থাকলাম। এসব ঘটছিল, সম্ভবত মানবস্বভাব বিষয়ে আমার সীমাবদ্ধ জ্ঞানের কারণেই। এরকম অদ্ভুত একটা ব্যাপার ঘটল। ২০১০ সালের একটা ঘটনা আমার স্মৃতি থেকে হট করে মনে পড়ে গেল, যেন উদ্ভাসিত হল। 

    একটা সাক্ষাৎকারের জন্য়, কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা, স্বর্গীয় সৈয়দ আলি শাহ গিলানির বাড়ি গিয়েছি। এবং তাঁর ঠিক উল্টোদিকে বসে আছি। ভারত সরকারের সঙ্গে কথোপকথনে আসার ব্যর্থতা, শান্তি এবং স্থিতি ইত‌্যাদি বজায় রাখতে না পারা এবং আরও বিবিধ বিষয়ে আমি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলাম। আমার সেই বিরাট প্রশ্নের জন্য গিলানিসাব প্রস্তুতি নিচ্ছেন মনে মনে, এমন সময় আমি তাঁর দিকে আরও একটি প্রশ্নবাণ নিক্ষেপ করলাম– ‘আপনার কি মনে হয় না, সেবার গ্রীষ্মকালের সময়, পুলিশ ফায়ারিংয়ে ১০০টা তরতাজা তরুণের যে মৃত্যু হল, তার জন্য়জন্য়আপনিই দায়ী? কারণ, আপনি জানতেন পুলিশের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তাদের লক্ষ্য করে কিনা পাথর ছুড়তে রাস্তায় নেমে পড়েছিল সেই ছেলেগুলো, কেবল আপনার কথাকে পাত্তা দিয়ে!’

    গিলানিসাহেব আমার দিকে হতবাক দৃষ্টিতে তাকালেন, তারপর বললেন- এই, আপনি মুসলিম না?’

    এই প্রশ্নটা যদি গিলানিসাবের করা না হত, এবং গিলানিসাবের ব্যক্তিত্বে আমি যদি কিঞ্চিৎ মুগ্ধ না হতাম, আমি তার জবাবে সপাটে একটা কথাই বলতাম– তাতে আপনার কী মশাই?

    কিন্তু, এখানে পারলাম না। এবং মাথা নেড়ে ‘হ্যাঁ’-ই বললাম। 

    ‘আপনি তাহলে মাথা ঢাকেননি কেন?’ কড়া, চড়া স্বরে তিনি আমার দিকে এই প্রশ্ন ছুড়লেন। 

    এবং, যথারীতি এই প্রশ্নের প্রতিক্রিয়ায় আমি তখন হতভম্ব, অপ্রস্তুত এবং একইসঙ্গে অস্বস্তিতে আমার গা হিঁচপিঁচ করছে। তখনও আমার সেই দার্ঢ্য তৈরি হয়নি যে, মুখের ওপর বলে দেব, নারীর শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ চাপানো মানে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ করাই। আমি খানিক আমতা আমতা করে বললাম– আমি কখনও আমার মাথা ঢাকি না। আর চেষ্টা করলাম, যাতে সাক্ষাৎকারের দিকে গতিটাকে ফিরিয়ে আনা যায়। 

    এবার গিলানিসাব তেড়েমেড়ে উঠলেন। ‘কেন?’

    –আপনি যদি ইসলামের আচারবিচারই না মানেন, তাহলে আপনি নিজেকে মুসলিম বলেন কী করে!’

    এই বলে তিনি উঠে দাঁড়ালেন, এবং ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে এই বলে যে, একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে তিনি কোনওভাবেই হিজাবহীন নারীর সঙ্গে কথা বলা তো দূর, তার সামনেও বসতেও পারবেন না। কিন্তু, সেই অস্বস্তিকর প্রশ্নবাণের আগে তিনি কেন একজন হিজাবহীন মহিলার মুখোমুখি বসেছিলেন, তার ব্যাখ্যা কিন্তু এখন খুঁজতে গেলে মজা নষ্ট!

    সেই থেকে, ওই কথোপকথনটুকু আমি বহুবার আমার মনের রেকর্ডারে চালিয়েছি, এবং তা শুনেছি, শোনার চেষ্টা করেছি কাশ্মীরি রাজনীতির দৃষ্টিভঙ্গিতে। কিন্তু আমি তো কলকাতায় থিতু, ফলে হিজাবের রাজনীতি আমার কাছে স্পষ্ট হল। বর্তমানে, হিজাব নিয়ে যা কিছু আলোচনা, আসলে বাধঅযবাধকতা এবং বেছে নেওয়া– মূলত এই দু’টি বিষয়েই ঘুরপাক খায়। যদিও, এই দু’টি বিষয়ের মাঝে ভিন্ন এক পৃথিবী বিরাজ করে। যেখানে ‘অভ্যাস’, ‘মানসিক বিচারবোধ’, ‘ভয়’, ‘ব্যাখ্যাভ্রম’, ‘উৎপীড়ন’, ‘পরিচয়ের রাজনীতি’ এবং ‘রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ’ বসবাস করে। 

    সত্যটি এই, হিজাব কোনও দিনই শালীনতার পরাকাষ্ঠা ছিল না। আসলে এই নিয়ম বা সংস্কারের প্রয়োগ একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি। যার মধ্য দিয়ে নারীকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, শালীনতার ছল করে। পুরুষদের বলা হয়, তাদের সম্মান, এমনকী পুরুষকার নিহিত রয়েছে তাদের জীবনের সেই সেই নারীর শরীরে, যাদের তারা শাসন করে, আদেশ চাপায়। আর তারপর, সেই শরীরগুলোকে উৎপীড়নের হুমকিকে ডেমোক্লিসের তরবারি হিসাবে দেখা হয়। যার মধ্য দিয়ে পুরুষকে অনুগত এবং অধীন রাখা যায়। ব্যাপারটা আরও স্পষ্ট করে বলার জন্য়, ‘হিজাব’ সম্পর্কে কোরানের তৃতীয় আয়াতটাই স্মরণ করা যায়। যা নবি মহম্মদের কনিষ্ঠতম এবং সর্বাপেক্ষা মান্য স্ত্রী আইশার বক্তব্য। ইমাম বুখারির ‘হাদিথ ১৪৮’ অনুযায়ী, তিনি বলছেন–

    “নবি মহম্মদের স্ত্রীগণ ভোররাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মদিনায় ‘বাকি’ বলে একটি জায়গার কাছে আল-মানসি বলে একটা বিরাট বড় মাঠে যেতেন। উমার প্রফেটকে বলতেন, ‘স্ত্রীদের পর্দা দিন।’ কিন্তু আল্লাহর দূত মহম্মদ তা করেননি। একদিন রাতে, মহম্মদের এক স্ত্রী সওদা বিন্ত্‌ জামা, রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে ইশা নামাজের জন্য় রওনা দিলেন। তিনি বেশ লম্বা-চওড়া মহিলা ছিলেন। উমার তাঁকে চিনতে পেরে যান এবং বলেন, ‘আমি তোমাকে চিনে গেছি, ও সওদা!” উমার এই কথা বলেছিলেন, কারণ, তিনি চেয়েছিলেন আল-হিজাবের আয়াত যাতে তৈরি হয় যথা শীঘ্র সম্ভব। 

    একদিকে, বলা হয়ে থাকে, উমার চাইছিলেন তাঁর স্ত্রীদের শরীরজুড়ে আব্রু দেওয়া হোক, কারণ, সেই সময়, ওই এলাকায়, যেখানে সেই স্ত্রীরা বর্জ্যত্যাগ যেতেন, একটা ডাকাত দল ঘুরে বেড়াত। উমারের যুক্তি ছিল, সেই ডাকাত দল যদি বুঝতে পারে, এই মহিলারা মুসলিম, তাহলে তারা নিগ্রহ করতে যাবে না। এবার, বুঝতে অসুবিধা হয় না, মেয়েদের আব্রু করার চেয়ে, মুসলিম সৈন্যদের যদি সেই ডাকাত দলকে পরাস্ত করতে পাঠানো হত, তাহলে আরও কাজের কাজ হত। কিন্তু, তাতে তো আর স্বাধীনচেতা, আত্মবিশ্বাসী, মনের জোরে বলীয়ান মেয়েদের নিয়ন্ত্রণ করা যেত না। 

    যা হোক, মুসলিম নারীদের দৃশ্যরহিত করতে যে আয়াতটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, তা হল: 

    “হে নবি, আপনার স্ত্রী এবং কন্যা এবং আপনার অনুগামীর নারীদের বলুন, তাদের বহিরাবরণে যেন আরও কিছু আচ্ছাদন নামিয়ে আনে। কারণ, তাতেই তারা সবচেয়ে বেশি পরিচিত হবে এবং তাদের নিগ্রহ হতে হবে না। আর তাতেই আল্লা ক্ষমাশীল এবং দয়াময় হবেন।”

    এই যে ‘বহিরাবরণে আরও কিছু আচ্ছাদন’ আনার যে সূক্ষ্ম তারতম্য রয়েছে, তা আসলে বোঝায় পায়ের নখ থেকে মুখ অবধি ঢেকে দেওয়া। এই ব্যাখ্যা কোরানের পুরুষ হাদিশগুলিতে কয়েক শ’ বছর ধরে চলে আসছে বিভিন্নভাবে। আর এই কারণেই, ইসলাম ধর্মে হিজাব অন্যতম এক দ্বন্দ্বের বস্তু হয়ে এসেছে এবং রয়েছে। এর ফলে, বিশাল সংখ্যক মুসলিম ধর্মাবলম্বী নারী হিজাব পরতে অস্বীকার করছে। বেশিরভাগ পুরুষ মনে করে, মেয়েরা নিজেদের ঢাকার জন্য সম্পূর্ণত প্রচেষ্ট হচ্ছে না। আর অধিকাংশ নারী মনে করে, পুরুষদের শিকারি নজর থেকে বাঁচার জন্য় কোনও আব্রুই যথেষ্ট নয়।

    আল্লার ভালবাসা, ভয়, জন্নতের প্রতি আকর্ষণ, নরকের নিপীড়ন, নীতিপুলিশি, গার্হ্যস্থে অপুঙ্গব পৌরুষ এবং সম্ভাব্য ধর্ষকদের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও, ইরানের মেয়েরা তাদের হিজাব উড়িয়ে দিচ্ছে তাদের আবরণ থেকে। কেন? কারণ, তারা পুরুষ প্রজাতির দ্বারা বিকৃত ও নির্মিত ইসলামের ভাবধারার বিরুদ্ধে এক কৌশলী সংগ্রামে রত হয়েছে। 

    দুর্ভাগ্যবশত, ভারতে, মুসলিম নারীরা এখনও পুরুষদের কূট-কৌশলের চালে জড়িয়ে নিজেদের নিতান্ত বোড়ে হিসেবে মেনে নিচ্ছে। তারা যদি হিজাবের রাজনীতি বুঝতে না পারে, তারা “ব্যক্তি-স্বাধীনতার” সঙ্গে, তাকে মিশিয়ে ফেলতে থাকবে। 

    Read in English

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook