ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • শব্দ ব্রহ্ম দ্রুম: পর্ব ৩


    রূপম ইসলাম (November 4, 2022)
     

    পর্ব ২

    ৩।

    খারাওগাঁও উৎসবের নাম শুনেছেন আপনারা কেউ? অথবা টকৈ ট্যাবু কাকে বলে জানেন?

    আগন্তুকদের উদ্দেশ্যে প্রথমেই একটা অদ্ভুত প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে যেন তাঁদের প্যাঁচে ফেলতে চাইলেন ছোটখাটো চেহারার প্রোফেসর লতিকা এম সুব্রহ্মণ্যম, পোর্ট ব্লেয়ারের অ্যানথ্রোপলজিক্যাল মিউজ়িয়মের বর্তমান কিউরেটর। সাদা সিল্কের শাড়ি আর দীর্ঘ খোলা চুল, চোখে বাইফোক্যাল চশমা আর গলায় রুদ্রাক্ষের মালা পরিহিত তাঁকে আধ্যাত্মিক গুরুমার মতো দেখাচ্ছে। আভিজাত্য ঝরে পড়ছে তাঁর গোটা উপস্থিতি থেকেই।

    মিউজিয়ামেরই ক্যাফেটেরিয়ায় বসে কথা হচ্ছে। চমৎকার খোলামেলা এই ক্যাফেটেরিয়াটা মিউজিয়ামের বিশাল বাড়িটার তিনতলায়। প্রদর্শনশালায় কিছু জিনিস দেখার পালা শেষ করে নিয়ে সেখান থেকেই লিফ্টে করে সরাসরি উঠে আসা হয়েছে এখানে। 

    এখন মাঝদুপুর। একটা জানলার লাগোয়া টেবিলে বসা হয়েছে। লিফ্টটা এই ক্যাফেটার যেদিকে, তার ঠিক উলটোদিকে একটা দরজা দেখা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে দরজাটা দিয়ে বাইরে বেরোলে নীচে যাওয়ার সিঁড়ি মিলবে। অর্থাৎ ওটা হল ল্যান্ডিং।

    জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্যের দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে আছেন ব্রহ্ম ঠাকুর। এরিক দত্ত বসে আছেন টেবিলটার অন্যধারে। বেশ মোটা একটা কাগজের ফাইল হাতে করে লতিকা যোগ দিয়েছেন আলোচনায়। সামনের টেবিলে জায়গা কম, তাই ফাইলটা আপাতত তিনি পাশের একটা ফাঁকা চেয়ারের উপর রেখেছেন। ফাইলের মধ্যে কিছু ছবি আছে, আছে কিছু প্রিন্টআউট। বোঝাই যাচ্ছে, সঠিক সময়ে সেগুলো সবার সামনে তুলে ধরা হবে।

    অত্যন্ত উত্তেজনা নিয়ে টেবিলের পাশে পায়চারি করছেন আলোচনার আহ্বায়ক বিলি গিলচার। হাতে ধরা একটা জ্বলন্ত চুরুট, মাঝেমাঝে তাতে টান দিচ্ছেন, ধোঁয়া ছাড়ছেন তিনি। আড়চোখে তাকাচ্ছেন দড়ি বাঁধা ফাইলটার দিকে। তাঁর ভাবভঙ্গীতে একটা চাঞ্চল্য বেশ ভালভাবেই প্রকাশ হয়ে পড়ছে।

    ব্রহ্ম ঠাকুরের মধ্যে অবশ্য তেমন কোনও উত্তেজনা নেই। অন্তত তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি বেশ খানিকটা নির্লিপ্তই যেন। শুধু এখানে না, ঘণ্টাখানেক আগে স্পিডবোট থেকে পোর্ট ব্লেয়ারের মাটিতে পা রাখার সময় থেকেই ব্রহ্ম কেমন একটা চিন্তিত এবং আনমনা হয়ে রয়েছেন। কে বলতে পারে, হয়তো এখন তাঁর মন জুড়ে খেলা করে যাচ্ছে এক প্রাচীন উপাখ্যানের স্মৃতি। তাঁর ঠাকুরদা জমিদার কৃষ্ণদাসের অপঘাত মৃত্যু এই পোর্ট ব্লেয়ারেরই মাটিতে। তথাকথিত স্বাধীনতা সংগ্রামী না হয়েও নেহাতই কপালের ফেরে এক সাহেবখুনে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। পোর্ট ব্লেয়ারেরই সেলুলার জেলে তাঁর শেষ জীবন কাটে। এখানেই নৃশংস জেলার ডেভিড ব্যারীর অমানবিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিলেন কৃষ্ণদাস। সে অবশ্য ব্রহ্মের জন্মের অনেক আগের ঘটনা। ব্রহ্মের দাদামশাইয়ের নানান কীর্তিকলাপ উপকথার মতো তাঁদের পরিবারে আলোচিত হয়ে এসেছে, সেসব মন দিয়ে বারবার শুনেছেন ব্রহ্ম। বিশেষ করে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক নায়কের সঙ্গে কৃষ্ণদাসের যোগাযোগের কাহিনি তো রীতিমতো রোমাঞ্চকর!

    সাগরযাত্রা করে পোর্ট ব্লেয়ারে এসে ব্রহ্মেরা উঠেছেন সমুদ্রের ধারেই একটা পুরনো বাড়িতে। সেখান থেকেই একটা গাড়িতে করে আসা হয়েছে এই নৃতত্ত্ব যাদুঘরে।

    লতিকা এক-এক করে সবার দিকে তাকালেন। তারপর নিজের চশমাটা একবার মুছে নিয়ে তীক্ষ্ণস্বরে বললেন— আমার করা প্রশ্নগুলো বোধহয় আমার নতুন বন্ধুদের কাছে একটু কঠিনই হয়ে গেছে! তবে কী প্রসঙ্গে আমি আদিবাসীদের নিজস্ব খারাওগাঁও উৎসব বা টকৈ ট্যাবুর কথা বলছি, সেটা জানাতে গেলে এইসব উপজাতির কথা আগে বলতে হবে। দেখুন, আগে প্রচুর আদিবাসী ট্রাইব থাকলেও, আস্তে আস্তে বিভিন্ন কারণে তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আপাতত যারা আছে তাদের নিয়েই কথা বলছি। প্রথমত রয়েছে অ্যান্ডাম্যানিজ়। এরা হল একধরনের মিশেল। এদের মধ্যে অন্যান্য জাতির বৈশিষ্ট্য ছাড়াও ভারতীয়ত্ব আছে, মূল ধারার ভারতীয়ত্ব। এদেরকে যদি বাদ দিই, রইল পড়ে চার রকম ট্রাইব্যালস। ১। জারোয়া ২। ওঙ্গে ৩। সেন্টিনেলিজ় ৪। শমপেন। আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখছি একটা ছোট্ট দ্বীপপুঞ্জের তুলনায় অধিবাসীদের চেহারার বৈচিত্র অনেকটাই যেন বেশি। শমপেনরা হল তিন রকমের মানুষের মিশ্রণ। ইউরোপয়েড, মঙ্গোলয়েড এবং দ্রাবিড়ীয়। সুঠাম শরীর, গায়ের রঙ ফর্সা বা হলদেটে। চুল ভারতীয়দের মতো। জারোয়ারা হল বেশ লম্বা এবং কুচকুচে কালো— দেখেই মনে হবে বুনো আফ্রিকান, নেগ্রিটো গোষ্ঠীর মানুষ। সেন্টিনেলিজ়রা এরকমই, তবে তুলনায় বেঁটে। আর ওঙ্গেরা একেবারেই বেঁটে, প্রায় আফ্রিকান পিগমিদের মতো। সবচেয়ে লম্বারাও চার ফুট দশ ইঞ্চি। চুলও মানানসই রকমের ক্ষুদে ক্ষুদে, মাথায় লেপ্টে থাকা, কোঁকড়ানো। এবার বলুন তো— এতো ছোট জায়গায় এত রকমের মানুষ এল কী করে?

    এরিক ইন্টারেস্ট পাচ্ছেন এই আলোচনায়। তিনি বললেন— মাদাম লতিকা, আমি যতদূর জানি, একটা তত্ত্ব হল, এই আন্দামান আর নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ আসলে ডুবো পর্বতমালার চুড়ো। এক সময়ে পুরোটাই কানেক্টেড ছিল। ব্রহ্মদেশের লেজের সঙ্গে এখনও তো সামুদ্রিক দূরত্ব মাত্র কিছু মাইল। সেখান থেকে মঙ্গোলয়েড গোষ্ঠীর মানুষ এসেছিল, যখন সমুদ্র নিচু ছিল। পরে জল বাড়ে এবং তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়…

    লতিকা চশমাটা ঠিক করে নিয়ে বললেন— কিন্তু জল বাড়বার ঘটনাটা তো একদিনে ঘটতে পারে না। এই সব দ্বীপের নিজস্ব খাদ্য বলতে তেমন কিছু ছিল না। নারকেল, কিছু ফল আর মাছ, কাঁকড়া আর চিংড়ি ছাড়া কীই বা ছিল? তাহলে আপনার কথা অনুযায়ী যারা এসেছিল, তারা ফেরত গেল না কেন? কীসের টানে থেকে গেল তারা?

    এরিক দত্ত কিছু বললেন না। কফির পেয়ালায় চুমুক দিলেন। শ্বেতশুভ্র একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়লেন বেশ অনেকটা। 

    আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখছি একটা ছোট্ট দ্বীপপুঞ্জের তুলনায় অধিবাসীদের চেহারার বৈচিত্র অনেকটাই যেন বেশি। শমপেনরা হল তিন রকমের মানুষের মিশ্রণ। ইউরোপয়েড, মঙ্গোলয়েড এবং দ্রাবিড়ীয়। সুঠাম শরীর, গায়ের রঙ ফর্সা বা হলদেটে। চুল ভারতীয়দের মতো। জারোয়ারা হল বেশ লম্বা এবং কুচকুচে কালো— দেখেই মনে হবে বুনো আফ্রিকান, নেগ্রিটো গোষ্ঠীর মানুষ। সেন্টিনেলিজ়রা এরকমই, তবে তুলনায় বেঁটে। আর ওঙ্গেরা একেবারেই বেঁটে, প্রায় আফ্রিকান পিগমিদের মতো। সবচেয়ে লম্বারাও চার ফুট দশ ইঞ্চি। চুলও মানানসই রকমের ক্ষুদে ক্ষুদে, মাথায় লেপ্টে থাকা, কোঁকড়ানো। এবার বলুন তো— এতো ছোট জায়গায় এত রকমের মানুষ এল কী করে?

    লতিকা এবার ব্রহ্ম ঠাকুরের দিকে তাকিয়ে বললেন— আচ্ছা মঙ্গোলয়েড তো হল। কিন্তু ইউরোপয়েড? নেগ্রেটো? নেগ্রেটোর মধ্যেও এতরকমের ভাগ-বিভাগ? দ্রাবিড়ীয়? কী করে তাহলে হচ্ছে এতরকম মানুষের সমাগম এই ছোট্ট এলাকাটায়?

    ব্রহ্ম ঠাকুর জানলা দিয়ে রাস্তার জনস্রোতের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এখান থেকে সমুদ্র দেখা যায় না। আলোচনায় বসবার আগে নীচের তলার প্রদর্শনশালায় রাখা আদিম জনগোষ্ঠীর ব্যবহারের কিছু জিনিস খুটিয়ে দেখা হয়েছে। কীভাবে রান্না করে আদিম মানুষ, কী ধরনের ভেলাতে চড়ে তারা মাছ ধরে, এসব দ্রষ্টব্য একটা লম্বা হলঘরে রয়েছে। সেসবের কথা ভাবতে ভাবতেই, বিশেষ করে জেলেডিঙিটার কথা মাথায় আসতেই তাঁর মনে হল, এত রকমের মানুষের সমাগমের একটা সহজ ব্যাখ্যা থাকতেই পারে…

    ৪।

    বেয়ারা হরির রেখে যাওয়া নোনতা-মিঠে লেবু চায়ে একটা আরামের চুমুক দিয়ে আরেকটু আলগা হয়ে বসলেন জ্যাঠা-সাংবাদিক মুকুন্দ অবস্থী। কোত্থেকে উড়ে আসা একটা মাছিকে হাতের অবজ্ঞায় দূরে পাঠালেন অবলীলায়। তারপর ঠোঁটের কোণে অদ্ভুত হিংস্র একটা হাসি ঝুলিয়ে বললেন

    অনেকেই জানে, হয়তো তুমিও শুনে থাকবে, গার্হস্থ হিংসার অভিযোগ উঠেছিল আমার বিরুদ্ধে। অভিযোগ সঠিক ছিল। আমার বউয়ের ছিল মদের নেশা। রোজ সন্ধেবেলায় সে বেরিয়ে যেত। ড্রিংক করে রীতিমত মাতাল হয়ে ফিরত বহুরাতে। তারপরও কিছু বললেই সে চোখ পাকাত। তেড়ে আসত। আমারও মাথায় খুন চড়ে গেল একদিন। মারলাম বউয়ের পেটে একটা লাথি। হাউমাউ করে সে কামড়াতে এল। হাতটা ধরে এই, এইখানে দিলাম সিগারেটের ছ্যাঁকা।…স্যরি।

    স্যরি বলবার কারণ অবশ্য কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা নয়, লেবু চা কাপ থেকে খানিকটা চলকে পড়েছে সামনের নিচু টেবিলটায়। আশ্চর্য লক্ষ করল কথা বলতে বলতে বেশ খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন মি. অবস্থী।পাল্লা দিয়ে কাঁপতে শুরু করেছে তাঁর ডান হাত। এতেই এই চা ছলকে যাওয়ার বিপত্তি।

    নিজেকে খানিকটা সামলে নিয়ে ন্যাড়াজেঠু গলাটা একটু নামিয়েই এবার বললেন— তুমি তো নিশ্চয়ই এটা বোঝো, সিগারেট হাতে থাকলেই একে তাকে ছ্যাঁকা দিতে ইচ্ছে করে। কী? করে না? সিগারেট খাওয়াই তাই এখন ছেড়ে দিয়েছি! তা যাই হোক, বউ এই ছোট্ট ব্যাপারটা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানাল। হাঃ হাঃ হাঃ! বালের অভিযোগ! ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমায় একটা ডায়লগ ছিল না? ‘একটা রোগ— অভিযোগ’! একদম পারফেক্ট কথা। কী লাভ হল? মুকুন্দ অবস্থীর একটা চুলও কেউ বাঁকাতে পারল? 

    আশ্চর্য অবাক হয়ে তাঁর ন্যাড়া মাথার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে অবস্থীসাহেব হেসে বললেন— ওটা কথার কথা। প্রাচীন হিন্দি প্রবাদ। আমার তো চুলই নেই! শখ করেই গুন্ডামার্কা চেহারা বানাতে সব কেটে সাফ করে ফেলেছি। আসলে ছোটবেলা থেকেই চেয়েছিলাম, বড় হয়ে গুন্ডা হব। হিন্দি সিনেমার বিখ্যাত ন্যাড়াগুন্ডা শেঠঠি, যিনি আবার বলিউডহিরো সুনীল শেঠির বাবা, তাঁর বড়পোস্টার লাগানো ছিল আমার বেডরুমে। অন্য প্রোফেশনে যাওয়ায় শেঠঠির মতো বিটকেল গুন্ডা হওয়া হল না, তবে চুলের, স্যরি, ন্যাড়ামুণ্ডুর পবিত্র স্টাইলটা করলাম ওঁর মতোই। তা যাই হোক, অন্য কেউ হলে বৌপেটানোর জন্য সটান জেল হত। কিন্তু কী জানো, তখনকার পুলিশ কমিশনার ছিল আমার বন্ধু। একেবারে দহরম-মহরম। ফলে সব চাপা পড়ে গেল। আর এই আমার সঙ্গে কিনা ওই হতচ্ছাড়া বান্টুসোশ্যাল বরাহনন্দন এসেছিল লাগতে! ধুৎ! পারে কখনও! …মাই ডিয়ার আশ্চর্য, এখনও যথেষ্ট কানেকশন আছে আমার। তোমার কোনও দরকার লাগলে বোলো। সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

    চুপ করে মি. মুকুন্দ অবস্থীর কথা শুনছিল আশ্চর্য । অবাক হয়ে যাচ্ছিল লোকটার নির্লজ্জ আস্ফালন আর দাপট দেখে। আর বান্টি ঘোষালও তথৈবচ! নোংরা অহংকারী ‘আমি-সর্বস্ব’ একটা লোক! রকস্টার… হুঁ! সংগীতজগতের ভেতরে কত যে অপ্রকাশিত নোংরামি রয়েছে। আর বেশিরভাগ লোকই বান্টিদের মতোই আত্মম্ভরী। সেসব আবার কোলা ব্যাঙের মতো গাল ফুলিয়ে গ্যাঙর গ্যাঙও করে এরা! সাবাশ! …আশ্চর্য নিজেকে মেলাতে পারছিল না। সে আড়াল খুঁজছিল।

    এই পর্বটার শ্যুটিং মিটতেই আশ্চর্য গিটারটা হাতে করে চলে এল তার জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা মেকআপভ্যানটিতে।

    আজ যতবারই গিটারটায় হাত বুলিয়েছে আশ্চর্য, ততবারই তার মাথায় গুনগুনিয়ে উঠেছে কিছু কথা, কিছু সুর। সেও তো গান লিখেছে মাঝেমাঝেই, গিটারও মন্দ বাজায় না। চর্চা করলে, অনুশীলন করলে সেও গায়ক হতে পারত। এখন মনে হচ্ছে, ভাগ্যিস হয়নি। এই সব বান্টি ঘোষাল, মুকুন্দ অবস্থী মার্কা বদ লোকেদের মাঝখানে গিয়ে পড়তে হত। আজকে অবশ্য তার মাথায় কথা-সুর আসবার একটা উপলক্ষ্য রয়েছে। গতরাতে কিছু আবেগতাড়িত ঘটনার মধ্যে দিয়ে তাকে যেতে হয়েছিল। সে যত্ন করে নিজের কাছে রেখেছে একটা হলুদ হয়ে যাওয়া অতি পুরনো ফটোগ্রাফ, যা তাকে রাখতে দিয়ে গেছেন গবেষক এরিক দত্ত। ছবিটায় তিনজন মানুষ হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন পাশাপাশি…

    (ক্রমশ)

    ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook