ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • শব্দ ব্রহ্ম দ্রুম: পর্ব ২


    রূপম ইসলাম (October 21, 2022)
     

    আগের পর্ব  প্রথম পর্ব

    সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন ব্রহ্ম ঠাকুর। বললেন, ‘আমি এই লতিকাদেবীর কথা শুনেছি। প্রোফেসর লতিকা মুরুগান সুব্রহ্মণ্যম একজন বিখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ। নৃতত্ত্বের অভিযোজনবাদ এবং মহাকাশতত্ত্বের সংমিশ্রণে এই মহিলার সমকক্ষ এই মুহূর্তে দুনিয়ায় আর কেউ নেই।’

    বিলি গিলচার বললেন, ‘একদম ঠিক বলেছ টেগোর। এই মুরুগান সুব্রহ্মণ্যম এখন আছেন পোর্ট ব্লেয়ারের অ্যানথ্রোপলজিক্যাল মিউজিয়ামের কিউরেটর হিসেবে। এই অঞ্চলে আসবার পর আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মধ্যবর্তী সাগরিকা ‘১০ ডিগ্রি চ্যানেল’ সম্পর্কে তিনি তথ্যানুসন্ধান শুরু করেন। আরও অনেকের মতোই তাঁর খটকা লেগেছিল আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ট্রাইবাল জনগোষ্ঠীর আপাতদৃষ্টিতে সম্পূর্ণ মিলহীন বিভিন্নতা নিয়ে। লতিকা মুরুগানের মতো মানুষেরা প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা বলে আদৌ যে কিছু আছে— এ-কথা সহজে বিশ্বাস করতে চান না। ফলে ওঙ্গে, শমপেন, জারোয়া আর সেন্টিনেলিজ— আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের এই চার আদিম প্রজাতির চেহারা এবং আচার-আচরণ কতটা আলাদা এবং কেন— এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ১০ ডিগ্রি চ্যানেলের সামুদ্রিক প্রচণ্ডতায় পৌঁছোন, এবং সেখান থেকে সূত্র পান সম্পূর্ণ একটা অন্য বিষয়ের—’

    এরিক দত্ত অনেকক্ষণ ধরেই উশখুশ করছিলেন। এবার জোর করে বিলির কথার মাঝখানেই বললেন, ‘শোনো বিলি, এই বনে তোমার অনুচরদের শিকার করা বুনো খরগোশের মাংসের যে রোস্ট একটু আগে খেয়েছি, আর তার সঙ্গে তোমার কালেকশন থেকে অতি উত্তম সুরার কয়েক ঢোঁক— আর জেগে থাকতে আমি পারছি না। বাকি কথা কাল হোক? খানিকটা আঁচ করতে পারছি প্রোফেসর লতিকা সুব্রহ্মণ্যম কোনদিকে ইশারা করেছেন। পোর্ট ব্লেয়ারে পৌঁছে নাহয় একটা মিটিং করে নেওয়া যাবে ওঁর সঙ্গে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের জুড়িদার আরেকটা উদাহরণ যদি তিনি পেয়েই থাকেন, তা আমাদের প্রোজেক্টে সংযোজিত হতে পারে অবশ্যই। শুধু এ-যাত্রায় প্রয়াত হকিং সাহেবের পরামর্শ আমরা পাব না, এটাই যা দুঃখের…’

    এরিককে হঠাৎ বাধা দিয়ে ব্রহ্ম ঠাকুর বলে উঠলেন, ‘কিন্তু বিলি, লতিকাদেবী কী বিষয়ে গবেষণা করছেন, এবং সেটা আমাদের মিশনের সঙ্গে কতটা সম্পর্ক রাখে, তার খোঁজ তুমি পেলে কী করে? তিনি নিশ্চয়ই তোমায় তাঁর গবেষণার কথা জানিয়ে চিঠি দেননি। বরং আমি আঁচ করতে পারছি উলটোটাই ঘটেছে। তুমিই খুঁজে বের করেছ এই প্রোফেসর এলএমএসকে। কেন হঠাৎ? কীভাবে? এটা একটু খুলে বলো…’

    বিলি হাসিমুখে তাকিয়ে রইলেন ব্রহ্মের দিকে। বললেন, ‘আই মাস্ট সে টেগোর, তোমার চোখকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয়। হ্যাঁ, আমিই যোগাযোগ করেছি, তিনি করেননি। তবে পরেই এসব ‘খুলে’ বলব না হয়। দেখছই তো, এরিক আর জেগে থাকতেই পারছে না—’

    ‘ইজু আরকিপেলাগো! ইজু আরকিপেলাগো!’— বিলির বাক্যটাকে মাঝপথে কেটে দিল শব্দদুটো। দু’বার এই শব্দদুটো উচ্চারণ করে দুলে-দুলে মিটিমিটি হাসতে থাকলেন ব্রহ্ম ঠাকুর। এখন তিনি সোজাসুজি তাকিয়ে আছেন বিলির দিকেই।

    বিলি গিলচার থতমত খেলেন। তাঁর মনের অভ্যন্তরে তলিয়ে থাকা দুটো শব্দকে যেন সামুদ্রিক হারপুন গেঁথে উপরে তুলে এনেছেন বৃদ্ধ! জিজ্ঞাসু চোখে ব্রহ্মের দিকে তাকালেন তিনি।

    ব্রহ্ম ঠাকুর অবশ্য আর কোনও ব্যাখ্যায় যেতে চাইলেন না। বিলি গিলচারের গালে আদর করে দুটো স্নেহের চাপড় মেরে বললেন, ‘নাঃ আজ এসব কথা থাক, অতিরিক্ত কথা-টথা আমিও পরেই বলব’খন। চলো হে এরিক, আর দেরি নয়। কাল যদি পোর্ট ব্লেয়ারের দিকে নৌযাত্রা করতেই হয়, এখনই শুয়ে পড়া দরকার। শুভরাত্রি বিলি!’

    এই বলে দুই বৃদ্ধ ঢুকে পড়লেন তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা তাঁবুটায়। বিলি গিলচার দাঁড়িয়ে রইলেন সেদিকে তাকিয়ে। ধূমপান শুরু করলেন তিনি। বনজ ঝাঁঝালো সবুজ সৌরভে মিশে গেল উৎকৃষ্ট হাভানা চুরুটের গন্ধ। রাত বেশ জাঁকিয়েই নেমে এসেছে অন্ধকার দ্বীপটায়। বিলি এবার এগিয়ে চললেন ড. কিশিমোতোর তাঁবুর দিকে। কালকের অভিযানের বন্দোবস্ত আর তদারকি করতে হবে। অবিলম্বে কিছু বিশেষ নির্দেশও কয়েকজনকে দিয়ে রাখা দরকার।

    ২.

    আইকনিক ব্যান্ড ‘টক্সিক’-এর সংরাইটার কাম ভোকালিস্ট, রকস্টার বান্টি ঘোষাল এসেছেন একটা টিভি চ্যাট শোতে অংশ নিতে। বিখ্যাত সাংবাদিক মি. মুকুন্দ অবস্থী, যাঁকে সাংবাদিক-সার্কিটে অযাচিত জ্যাঠামির জন্য শ্লেষমিশ্রিত খাতির করে ‘জেঠু’ বলে ডাকা হয়, তিনি বসেছেন ‘স্পষ্ট কথা’ অনুষ্ঠানের গোল টেবিলের অন্যদিকে। উপরে একটা স্পটলাইট ঝুলছে, ঠিক যেন মনে হচ্ছে একটা কড়া ইন্টারোগেশন পর্ব চালু আছে, গোয়েন্দা অফিসার এবং সন্দেহভাজনের অংশগ্রহণে।

    মুকুন্দ অবস্থীর স্টাইলাজ্‌ড চকচকে ন্যাড়ামাথায় স্টুডিওর আলোছায়া পিছলে-পিছলে যাচ্ছে। খুব সন্তর্পণে হিসেব করে কাটা ফ্রেঞ্চকাট দাড়িটা তাঁর চোয়ালে না ঝুললে, তাঁকে মনে হত নির্বাণপ্রাপ্ত এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী! মহাজ্ঞানীসুলভ নির্লিপ্ততা অবস্থীর চোখেমুখে। এমন দেদীপ্যমান চেহারার উলটোদিকে অগোছালো ঝাঁকড়া চুল এবং কাদাখোঁচা দাড়ির বান্টি ঘোষালকে, বলা বাহুল্য, জঘন্য দেখাচ্ছে। বুকের ওপর রাখা একটা নাইলন স্ট্রিং ক্লাসিক্যাল গিটারে বান্টি মাঝে মাঝে টুংটাং না করলে তাকে এমন অভিজাত পরিবেশে একেবারেই মানাত না। 

    মুকুন্দ বললেন, ‘তা বান্টিবাবু, তোমার নাম বন্দন ‘বান্টি’ ঘোষাল হলেও সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ তোমাকে ‘বান্টি ঘোষাল, দ্য অ্যান্টি সোশ্যাল’ অথবা ‘বন্দন, বরাহনন্দন’ এইসব বিশ্রী উপমা যোগ করে ডাকতেই ভালবাসেন। এরকম কেন একটু খোলসা করবে?’

    অত্যন্ত রিল্যাক্সড এবং সেয়ানা ভঙ্গিতে ন্যাড়ামুণ্ডী অবস্থীসাহেব মেপে নিচ্ছিলেন খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পড়া রক আইকনকে। বান্টি ঘোষালের কথা বলা শেষ হতেই তিনি তাঁর দিকে খানিকটা ঝুঁকে পড়ে দুঁদে দারোগার কায়দায় বললেন— ‘নেপালে গিয়ে শুধু অনুষ্ঠান করোনি বান্টিবাবু। নারীঘটিত কী সব কেলেঙ্কারিও করে এসেছিলে ওখানে। নায়িকা ফুল্লরা যোশী এবং গায়িকা কুসুম ছেত্রী, নামগুলো চিনতে পারছ আশা করি? ফলাফলস্বরূপ নেপাল সরকার তোমাকে ব্যান করেছেন, আর ঢুকতে দেবেন না বলেছেন।

    বান্টি হ্যাঃ হ্যাঃ করে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলেন। তারপর গিটারে একটু টুংটাং করে নিয়ে বললেন, ‘আপনি ঠিক বলেছেন। কোনও কুকুর-ছাগল-মুরগি-নেংটি ইঁদুর অথবা চামচিকে এই তকমা দেয়নি আমায়। মানুষ দিয়েছে! যে-মানুষের উপকারের জন্য আমি গান তৈরি করি, বিনামূল্যে কনসার্ট করি, তারাই আমায় এসব নাম দিয়েছে। কারণটা কী বলুন তো? কী আবার! এদের বেশির ভাগের সনাতন ধারণার সঙ্গে এরা আমায় মেলাতে পারে না। আমি যে রকস্টার! আর রক এন রোল মানেই হল হট্টগোল। ওতে বাঙালির শান্তি এবং প্রশান্তি, দুটোই নষ্ট হয়। সোজা বাংলায় অনুবাদ করে বললে বলতে হবে— ভাতঘুম চটকে যায়!’

    ‘না না ওসব কথা ছাড়ো, পয়েন্টে এসো— একটু আগে কী বললে? তুমি বিনামূল্যে কনসার্ট করো? স্ট্রেঞ্জ! আমি তো শুনেছিলাম একজন অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা, পণ্ডিত প্রবীণকুমার মল্ল আর তোমার একটা যৌথ গানের আসর অর্গানাইজ করবার প্রস্তাব নিয়ে গেলে তুমি বলেছিলে প্রবীণকুমারকে গায়ক ভাবতে তোমার ঘেন্না করে। এমনকী শব্দ করে ‘ওয়্যাক থুঃ’ করেছিলে। তারপর চুকচুক করে তোমার পোষা কুকুরকে ডেকে তুমি বলেছিলে, ‘তোমরা যে টাকা আমায় দেবে বলছ, সেই টাকায় প্রবীণ মল্লের সঙ্গে গান গাইতে যাবে আমার এই পোষ্য! ও একজন নবীন শিল্পী, ওর ভাল নাম হল শ্রীযুক্ত জন্টি ঘোষাল, ডাকনাম ঝন্টু। ‘ঘেউ ঘে-উ-উ’ করে অশ্রাব্য কালোয়াতি গান গায়!’ বলোনি?’

    ‘বলছেন যখন পুরোটা বলুন! আপনার ওই প্রবীণকুমার মল্ল শ্রদ্ধেয় জিম মরিসনকে অপমান করেছিল। বলেছিল: ওটা গান হচ্ছে? না কি কবিতা? পারবে আমার মতো সুর লাগাতে— ‘সানিধাপামাগা মারেধাপামাগারে’— ইত্যাদি? আপনি যেই হোন না কেন, যত বড় হনুই হোন, জিম মরিসন বা লেড জেপলিন বা কার্ট কোবেন বা জিমি হেনড্রিক্সকে অপমান করতে পারেন কি? পারেন না। তাই আমি ওটার প্রতিশোধ নিয়েছিলাম। স্যর জিম মরিসনের অপমানের শোধ। এটা জানবেন, যুদ্ধে আর প্রেমে কোনও অন্যায় নেই। তাছাড়া নেপালের ভূমিকম্পের পরে নেপালে গিয়ে আমি অনুষ্ঠান করেছি, দুর্গত মানুষের জন্যই তো! পাঁচটা অনুষ্ঠানে পাঁচটাকাও নিইনি। হরিয়ানায় মানবাধিকার কর্মী কল্পিত মিস্ত্রী যখন খুন হলেন, আমিই তো গান বানালাম— ‘কে. মিস্ট্রি ২০১২’। আর কেউ বানিয়েছেন, বলুন? সেই তো আমি একাই…’

    অত্যন্ত রিল্যাক্সড এবং সেয়ানা ভঙ্গিতে ন্যাড়ামুণ্ডী অবস্থীসাহেব মেপে নিচ্ছিলেন খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পড়া রক আইকনকে। বান্টি ঘোষালের কথা বলা শেষ হতেই তিনি তাঁর দিকে খানিকটা ঝুঁকে পড়ে দুঁদে দারোগার কায়দায় বললেন— ‘নেপালে গিয়ে শুধু অনুষ্ঠান করোনি বান্টিবাবু। নারীঘটিত কী সব কেলেঙ্কারিও করে এসেছিলে ওখানে। নায়িকা ফুল্লরা যোশী এবং গায়িকা কুসুম ছেত্রী, নামগুলো চিনতে পারছ আশা করি? ফলাফলস্বরূপ নেপাল সরকার তোমাকে ব্যান করেছেন, আর ঢুকতে দেবেন না বলেছেন। আর এদিকে-সেদিকে কিছু অঘটন ঘটলেই তুমি সস্তা কথা আর মামুলি চর্বিতচর্বন সুরের গান বানিয়ে ফ্যালো বটে, কিন্তু সেসবের বাজনা আর রেকর্ডিং-এর দৈন্যই বলে দেয়, তোমার লক্ষ্য ঠিক শিল্পোৎপাদন নয়। তোমার আসল মতলব ইস্যুভিত্তিক ছেঁদো ‘গান’ নামিয়ে দিয়ে যেনতেনপ্রকারেণ লাইম লাইটে থাকা, যাতে পাঁচটা কাগজ তোমার বাইট নিতে ফোন করে। হিন্দি ছবির স্বর্ণযুগের সমস্ত গান ছেলেবেলা থেকে শুনে-শুনে আমার কান যে তৈরি বান্টিবাবু! তাই ওইসব ফালতু গানের জঘন্য কথা সুর এবং যন্ত্রাণুষঙ্গে বাকিরা ভুলতে পারে, কিন্তু আমি নই!’

    গিটারে ঝড়াং করে একটা পাওয়ার কর্ড মেরে উঠে দাঁড়ালেন রকতারকা বান্টি ঘোষাল। হালকা হেসে বেশ খানিকটা কেতা মেরে ঢুলুঢুলু চোখে বললেন, ‘জেঠু, জেঠু, জেঠু… আপনার ট্যারাব্যাঁকা কথা অনেকক্ষণ থেকে সহ্য করছি আমি। সাংবাদিক হিসেবে আপনার কিছু ফ্যানফলোয়িং আছে মানছি, কিন্তু আমার দিকটাও একবার ভাবুন। আমায় পছন্দ করেন এমন মানুষের সংখ্যা বোধহয় আপনার তুলনায় কিছুটা বেশিই হবে। আমার একটা ইশারা পেলে আপনাকে চ্যাংদোলা করে ছুড়ে ফেলে দিতে তারা খুব একটা দেরি করবে না। অতএব মুকুন্দজেঠু, এই অংশটা যে সাক্ষাৎকার থেকে কেটে বাদ দিতে হবে। নইলে একূল-ওকূল— দু’কূল যাওয়ারই যে সমূহ সম্ভাবনা—’

    *****

    বছর দুয়েক আগে খুন হয়েছেন পাগলাটে রক তারকা বান্টি ঘোষাল। তার অসংলগ্ন অসভ্যতায় বিরক্ত হয়ে খুনটা করেছিল ‘মার্ক চ্যাপম্যান রিমেম্বার্ড’ নামের এক প্রতিক্রিয়াশীল সংগঠনের মেম্বররা। এহেন বান্টির রঙিন জীবন নিয়ে দুর্দান্ত বায়োপিক হবে— এটা জানাই ছিল। অবশেষে হচ্ছে। তবে নয়্যর ঘরানার ছবি বলে পরিচালক ঠিক করেছেন সাদাকালোতে তোলা হবে। বহুপ্রতীক্ষিত ছবি ‘দ্য অ্যান্টি সোশ্যাল’-এর শুটিং শুরু হল আজ থেকেই। আর বান্টির কন্ট্রোভার্শিয়াল চরিত্রে দারুণ মানিয়েছে তরুণ নায়ক আশ্চর্যকে।

    বান্টির কথাবার্তা-হাবভাব-চালচলন, এমনকী যাবতীয় ম্যানারিজমও আত্মস্থ করেছে আশ্চর্য। খুবই কঠিন কাজ। দায়সারাভাবে করবার কোনও সুযোগ ছিল না। বিখ্যাত ‘জেঠু’ সাংবাদিক মুকুন্দ অবস্থী নিজের ভূমিকাতেই ক্যামিও করছেন। তিনিও সাহায্য করলেন, আশ্চর্যকে ‘বান্টি’ চরিত্রটার খুঁটিনাটি ধরিয়ে দিতে। আশ্চর্যের বিরাট কৌতূহল হচ্ছিল এই সাক্ষাৎকার পর্বটা শুট করে— জানতে ইচ্ছে করছিল রিয়্যাল লাইফে কী হয়েছিল এরপর। ন্যাড়াজেঠু জানালেন, সাক্ষাৎকারটি নানা কারণে প্রচারিত হয়নি। তবে পুলিশের ওপরমহলের কয়েকজনকে সোজা ফোন করে দিতে দেরি করেননি মুকুন্দ। অভিযোগ জানান, বান্টি তাঁকে লাইফথ্রেট দিয়েছে। থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে বান্টিকে আচ্ছাসে কড়কে দেওয়া হয়েছিল। ন্যাড়াজেঠু নিজেই চোখ টিপে আশ্চর্যকে জানালেন, ‘জেনে রাখো মাই ডিয়ার আশ্চর্য, আমিও কিন্তু ধোওয়া তুলসীপাতা, সতীসাবিত্রী কিংবা লবঙ্গলতিকা নই। শুনতে চাও আমার কীর্তিকলাপের কাহিনি? বাচ্চা ছেলে তুমি, কানগরম হবে না তো আবার?’

    (ক্রমশ)

    ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook