

মেডিসিনারি : পর্ব ১৩
মেয়েদের শরীর, মেয়েদের ব্যথা, মেয়েদের চিকিৎসার এককণাও মেয়েদের হাতে নেই। পুতুলনাচ হয় জানেন? সেইভাবে সুতো দিয়ে ঝোলে মানুষগুলো, তাদের বাঁধা হাত, বাঁধা শরীর, নাচে অঙ্গুলিহেলনে। বাড়ির ঠিকানা জানে না অনেকেই। জন্মতারিখ জানে না।
মেয়েদের শরীর, মেয়েদের ব্যথা, মেয়েদের চিকিৎসার এককণাও মেয়েদের হাতে নেই। পুতুলনাচ হয় জানেন? সেইভাবে সুতো দিয়ে ঝোলে মানুষগুলো, তাদের বাঁধা হাত, বাঁধা শরীর, নাচে অঙ্গুলিহেলনে। বাড়ির ঠিকানা জানে না অনেকেই। জন্মতারিখ জানে না।
‘আজও রূপান্তরকামীরা শিক্ষিত সমাজের কাছে কৌতুকের পাত্র। অথচ তাঁরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে-অসম লড়াই চালিয়ে যান, চিকিৎসক হিসেবে আমি তার প্রত্যক্ষদর্শী। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে আমার দায়িত্বটুকু পালন করেছি মাত্র…’
‘কত বছরই বা আগের কথা। বছর পনেরো-কুড়ি হবে। মফসসলের এক হাসপাতালের অপারেশন ঘর। অপারেশন টেবিলে লাইগেশন অপারেশন। রোগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও মৃত্যু। সমস্ত হাসপাতালে দমবন্ধকর অবস্থা। অনিমেষের আহ্বানে সব ডিপার্টমেন্টের ডাক্তাররা ওটিতে হাজির।’
কবিতা লেখা একটা ডায়েরি আমাকে দিয়ে বলল, পড়বেন, ভুল মনে হলে কারেকশন করে দেবেন। আমি বললাম, পড়ব নিশ্চয়, কিন্তু কারেকশন করতে পারব না। বরং নেক্সট চেক-আপে যখন তুমি আসবে, কেমন লেগেছে কবিতাগুলো, তখন মতামত জানাব।
‘যাঁরা বলেন, ডাক্তারি বিজ্ঞান, তাঁরা আসলে ডাক্তারিটাকে গোটাটা বোঝেননি। ডাক্তারি বিজ্ঞান তো বটেই, কিন্তু তাও পুরোপুরি বিজ্ঞান নয়।’
‘বিকেলের দিকে ওই এমার্জেন্সিতে সেদিনের জন্য রাউন্ড দিতে গেছি। হঠাৎই দেখি, মহিলাদের ওই ওয়ার্ডের দরজায় পর্দা সরিয়ে এক মাঝবয়সি লোক ওই মহিলার শয্যার দিকে তাকিয়ে উঁকিঝুঁকি মারছে। আমি ওই লোকের চোখের দৃষ্টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে না-হতেই দেখি লোকটি গায়েব।’
‘আমাদের এখানে শীতলা ফার্মেসিরা এতই উদার, তারা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঘুমের ওষুধ দিয়ে দেয়। কলকাতাই একমাত্র শহর, যেখানে এমন যথেচ্ছ ঘুমের ওষুধ পাওয়া যায়, এদেশের অন্যান্য শহরেও এমনটা হয় না।’ কথালাপে জয়রঞ্জন রাম।
‘কোভিডের সময় কত মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা যে হয়েছে। মানুষ কীভাবে মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়— সেসময় দেখেছিলাম। এমনও হয়েছে, রোগী বাড়ি যেতে চাইছেন, বাড়ির লোক তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী নন।’
‘আমার ডাক্তারি চোখ কিন্তু যা বলল, তাতে বুঝলাম, এই রোগীকে আমার ছোঁয়াই উচিত নয়। একটা ট্যাক্সি ডেকে তৎক্ষণাৎ মেয়েটিকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলাম। তখন কলকাতা জুড়ে হলুদ-কালো ট্যাক্সি চলে।’
‘প্রথম কথা ছিল, আমি যেন এমনভাবে চিকিৎসা করি, যাতে রোগীরা আমার নিজের হয়। যদি গাছতলাতে বসেও চিকিৎসা করি, তা-ও রোগীরা আমার কাছেই আসবে।’
‘রোগীর ছেলে আমার হাতে একশো টাকার নোট গুঁজে দিয়ে বলল, ‘বহোত শুকরিয়া সাব।’ মনে আছে, খুব রেগে গিয়েছিলাম। ছেলেটিকে ধমক দিয়ে বলেছিলাম, ‘ডাক্তারি করার জন্য সরকার থেকে আমাকে মাইনে দেয়। তুমি টাকা দেওয়ার কে হে?’’
‘সর্বভারতীয় নেতা, দিল্লি থেকে এসে একজন চিকিৎসককে দিয়ে আমাকে ফোন করালেন, পার্টি অফিসে গিয়ে তাঁকে দেখে আসার জন্যে। যেতে অস্বীকার করলাম, বললাম, চেম্বারে আসতে বলুন, দেখে দেব, এত রোগীকে বসিয়ে রেখে যাওয়া সম্ভব নয়।’
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.