ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • মনডে ব্লুজ : পর্ব ২

    উপল সেনগুপ্ত (January 20, 2025)
     

    আরও একটা কাজ না-করার দিন

    ১৯৯৪-’৯৫ সাল নাগাদ আমি চাকরিতে ঢুকি। তারপর বিভিন্ন সংস্থায় দশ বছরের চাকরিজীবন কেটেছে। সেসব চাকরিতে যে রোববারের ছুটি খুব নিয়মিত পাওয়া যেত, তা নয়। ফলে, সোমবারদিনটাও নিয়মিত আসত না। তাই ছুটির দিন থেকে কাজের দিনে যাওয়ার বিষাদ বা আলস্য যে সবসময় খুব টের পেতাম, তা কিন্তু নয়। যেমন, একটা অ্যানিমেশন সংস্থায় চাকরি করতাম, সেই চাকরিতে সপ্তাহের কাজ শুরুর আলাদা কোনও দিন ছিল না। তাছাড়া, ভালবেসে কাজ করলে সোমবারের কোনও আলিস্যি বা মনডে ব্লুজ সে-অর্থে কাজও করে না। তখন কাজের এমন একটা উন্মাদনা বা উদ্দীপনা কাজ করত, যে সোমবার মনের বোঝা বা ভার বয়ে নিয়ে যাওয়ার আলাদা কোনও চাপও অনুভব করিনি কখনও।

    কিন্তু তারপর চাকরি ছেড়েছিও প্রায় দু’দশক হতে চলল। এখন তো রোববার, সোমবার বা সপ্তাহের কোনও দিনই আলাদা করে আর কাজের কোনও অনিচ্ছে, অনীহা নেই। এখন সোমবারটাও, অন্যদিনের মতোই, আমার কাছে আরও একটা কাজ না করার দিন। এই যে রোজ কাজে যেতে না-চাওয়া, এর মূলে আছে একটা ছুটির মেজাজ। ছুটির আয়েস আছে বলেই না ছুটি ফুরনোর দুঃখ আছে! কিন্তু আমার এখন অনন্ত ছুটি। আমি ছুটি থেকে আর কাজে ফিরে যাই না, বরং কাজ থেকেই ছুটিতে ফিরি। তাই আমার কাছে এখন কাজের আনন্দ, আর ছুটির আলস্য। ছুটিকেই বরং মাঝেমধ্যে একটু একঘেয়ে লাগে। আরও একটা ছুটির দিনের মতোই সোমবারটাও আসে। তাই আমার মনডে ব্লুজ এখন ছুটির সঙ্গে বোঝাপড়ার, কাজের সঙ্গে নয়।

    আরও পড়ুন : রবি-সোম দুটোকেই হিংসে করি, লিখছেন প্রচেত গুপ্ত…

    চাকরি না-হয় ছেড়েছি, কিন্তু গান তো গেয়েই চলি সারাবছরই। এখন, গানের মহড়া যদি নিয়মিত হয়ে ওঠে, তবে সেখানেও অনীহা আসতে পারে। আবার গান ভালবেসে ফেললে, সেখানে রোজ, প্রতি মুহূর্তের গানেও কোনও অ­-ভাললাগা নেই। কোনও অনুষ্ঠানের জন্য বা কোনও বিদেশ সফরের জন্য বা অ্যালবামের গান বানানোর জন্য যখন সবাই একজোট হচ্ছি, তখন কোনও রবি-সোমের হিসেব নেই। তখন ভাল না লাগার কোনও অবকাশও যেন থাকে না! কাজেই গানের ক্ষেত্রে কোনও মনডে ব্লুজ আমার কোনওদিন ছিল না, বোধহয় থাকবেও না কোনওদিন। বরং গানেই সমস্ত খারাপ লাগার অনুভূতি ধুয়েমুছে যায়। আমাদের, চন্দ্রবিন্দু-র গানেই আছে, ‘ভাল লাগে না যে এই হাসি­-খেলা’! তাও একরকমের ব্লুজের কথাই বলে। কিন্তু গান বানানো আর গান গাওয়াতে কোনও ব্লুজ নেই, বরং আনন্দই আছে।

    কোনও অনুষ্ঠানের জন্য বা কোনও বিদেশ সফরের জন্য বা অ্যালবামের গান বানানোর জন্য যখন সবাই একজোট হচ্ছি, তখন কোনও রবি-সোমের হিসেব নেই। তখন ভাল না লাগার কোনও অবকাশও যেন থাকে না! কাজেই গানের ক্ষেত্রে কোনও মনডে ব্লুজ আমার কোনওদিন ছিল না, বোধহয় থাকবেও না কোনওদিন।

    ব্লুজ বলতে প্রথমেই আমরা, গানের লোকজন, একধরনের সাংগীতিক ধারার কথাই বুঝি। মনডে ব্লুজ-এর ব্লুজ শব্দটা হয়তো সে-জিনিস বোঝায় না। তবে আমার জন্য না-হলেও, সোমবার তো অফিসযাত্রীদের অনেকের কাছেই মনখারাপের দিন। কারণ টানা পাঁচদিন বা ছ’দিন তো অফিস চালু থাকবে তারপরে। সেই মেলানকোলিয়া, সেই মনখারাপ আদতে কোথাও গিয়ে মিলে যায় ব্লুজ ধারার সংগীতের সঙ্গেও। সেই সংগীতের মধ্যেও এমন একটা মনকেমনিয়া আমেজ তো আছেই! তাই মনডে ব্লুজ-এর সুরেও সেই বিষাদ হয়তো মিশে থাকবেই।

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook