
‘যুক্তি, তক্কো, আর গপ্পো’
‘আপাতদৃষ্টিতে বিভ্রান্ত, অনিশ্চিত এবং পরস্পর-বিরোধিতায় জর্জরিত এই ছবির কেন্দ্র-চরিত্র নীলকণ্ঠ বেশ কিছু মূল্যবান প্রশ্ন তুলছে। যিনি এক অর্থে ব্রাত্য, আবার প্রতিবাদের প্রকৃষ্ট প্রমাণ।’

‘আপাতদৃষ্টিতে বিভ্রান্ত, অনিশ্চিত এবং পরস্পর-বিরোধিতায় জর্জরিত এই ছবির কেন্দ্র-চরিত্র নীলকণ্ঠ বেশ কিছু মূল্যবান প্রশ্ন তুলছে। যিনি এক অর্থে ব্রাত্য, আবার প্রতিবাদের প্রকৃষ্ট প্রমাণ।’

‘ধরা যাক, কোনও শটে ক্যামেরার ফোরগ্রাউন্ড-এ একটা মুখ আছে, কিন্তু সেটুকুই ফ্রেমটার বৈশিষ্ট্য নয়; দেখা যাবে, দূরে ব্যাকগ্রাউন্ড-এও কোনও একজন চরিত্র, কোনও কাজে লিপ্ত। একইসঙ্গে ফোরগ্রাউন্ড-ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করে, ফ্রেমে গতিময়তা আনতেন ঋত্বিক।’

এটিও খেয়াল করার যে, পাঁচ ও ছয়ের দশকে রিফিউজি পরিবারগুলি ক্রমে কলকাতায় আসার প্রাবল্যে মহানগরের ভেঙে-পড়া ব্যবস্থায় সংসারের হাল ধরতে বাড়ির বউকে বা বোনকে চাকরি খুঁজতেই হয়। কিন্তু শরণার্থী প্রায় প্রতিটি পরিবারের যে-নীতা, সে তার থেকেও অন্যতর কিছু। সে-ই টুকরো করে দেওয়া বঙ্গভূমি, বিখণ্ডিত বঙ্গবালা। আর অন্যদিকে সে-ই বাপের আদরের মেয়ে। বাবা এখন সম্বলহীন।

‘ঋত্বিক এখানে পুনর্জন্মবাদকে স্বীকৃতি না দিলেও, জীবনের যে-প্রবহমান নীতি, তা একপ্রকার অবিকৃতই রেখেছেন। কারণ তার উৎপত্তি কোনও ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র পৃথক কণা থেকে নয়, এ এক পারমার্থিক সত্য, যা অদ্বৈত মতে নাম, রূপ, স্থান ও কালের অতীত।’

“‘স্মৃতি’কে এপিক ফর্মের মাধ্যমে ছুঁতে চান ঋত্বিক। আমাদের মনে করাতে চান বিকল্প এক ‘আধুনিকতা’-র অবয়ব। মৃত্তিকালগ্ন অবয়ব। আত্মবীক্ষা আর আত্মশক্তির ‘আধুনিকতা’।”

সার্বিয়ান চলচ্চিত্রকার নিকোলা লেজাইচের ‘হাউ কাম ইট’স অল গ্রিন আউট হিয়ার?’ ছবিটি মূলত আত্মজৈবনিক।মুখ্য ভূমিকায় এখানেও এক নিকোলা, বছর চৌত্রিশ বয়স তার; কমার্শিয়াল বিজ্ঞাপন পরিচালনা করে, ইচ্ছে আছে আগামীতে নিজের মনের মতো ছবি বানানোর।

“আগুনের বর্ণমালায় যখন লক্ষ কোটি মানুষের ললাটে ‘র্যাড্ক্লিফ লাইন’-এর রক্তক্ষরণ শুরু হল, তখন থেকেই পদ্মার চর ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ। নাটকে বৃদ্ধের চরিত্রে প্রধান অভিনেতা ভৃগু, আর-এক দলের অনসূয়াকে নিয়ে নতুন মঞ্চায়নের পরিকল্পনা করে। ইতিমধ্যে শিবনাথ-অভিনীত কোকিলকূজন সমন্বিত দৃশ্যে ডেকে উঠল অনেকগুলো ব্যাং।”

“ধীরে-ধীরে উভয়েই ঈষৎ টলোমলো পায়ে এগিয়ে এলেন ‘কলের বাঁশি’র দিকে। অন্য রিক্সায়, সেই মুভিক্যামেরাতে তখন তোয়ালের সাদা আবরণ খসিয়ে দিয়ে, ছবি নেওয়ার প্রস্তুতি চলেছে।”

‘দেশ-বিদেশের এত চলচ্চিত্র, কিন্তু সব ছবিই কি সমানভাবে দেখা গুরুত্বপূর্ণ? কী দেখব, কেন দেখব, কী না দেখলেও চলে, পাশাপাশি এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে একান্তই যেগুলো দেখা প্রয়োজন, তা নিয়েই এই আলোচনা।’

জগদ্দলের প্রান্তরজুড়ে অপূর্ব ছুটে চলা। বিশাল পর্দার কখনও এক কোণে, কখনও একেবারে প্রান্তে, কালো শরীর নিয়ে অপূর্ব জেগে থাকা। জগদ্দল যেন তার প্রেমিক, তার অর্ধাঙ্গিনী, সবটাই মান-অভিমানের খেলা। আদর করে তার গা মুছিয়ে দেওয়া। ছবির শুরুই হয় এক পাগল বরকে দিয়ে, যে তার টোপর আর ধুতি সামলাতে ব্যস্ত।

‘‘পুনের ফিল্ম ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রিন্সিপাল এবং ‘ডিরেকশন’ অর্থাৎ, নির্দেশনা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে তাঁর ভূমিকা ভোলার নয়। আমার মনে পড়ে না, কখনও ক্লাসে তিনি তাত্ত্বিকভাবে চলচ্চিত্রকে দেখতে শিখিয়েছেন বলে। ফিল্ম থিওরির চেয়ে সবসময়েই ঋত্বিক জোর দিয়েছিলেন হাতে-কলমে চলচ্চিত্রশিক্ষার ওপর।’’

ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্র নির্মাণের আড়াই দশক ও তৎপরবর্তী চলচ্চিত্রভাষার বাঁকবদলের প্রস্তুতির উপাদান— ‘নাগরিক’-এর নিরীক্ষা, ত্রুটি ও ভাষার মধ্যে নিহিত রয়েছে।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.