ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • প্রেরণার টেস্ট ক্রিকেট


    ভি ভি এস লক্ষ্মণ (V.V.S Laxman) (June 18, 2021)
     

     

    ক্রিকেট দুনিয়ায় ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ একটা দুরন্ত সংযোজন। কোনও প্রতিযোগিতার প্রথম ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন যে কোনও দলের পক্ষে একটা দারুণ ব্যাপার, এবং ভারত ও নিউজিল্যান্ড ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। দুই দলই জানে যে সাদাম্পটনে প্রথম ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জয়ী হওয়া মানে, ইতিহাসের পাতায় নাম খোদাই হয়ে যাওয়া। লম্বা ফর্ম্যাটের খেলার তাৎপর্য এবং প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য আমি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে সাধুবাদ জানাই। আমার মতো ক্রিকেটারেরা, যারা কখনও বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেননি, তাঁদের কাছে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো একটা প্রতিযোগিতায় খেলার গুরুত্ব বিরাট। আমি জানি ক্রিকেট এখন অনেকটা বদলে গেছে, এবং অনুরাগীদের মনোরঞ্জনের জন্য আমরা নানাবিধ অদল-বদল করেছি, কিন্তু খেলোয়াড়দের কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সেই দিশায় এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ একটা সঠিক পদক্ষেপ।        

    তবে আমার মনে হয় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ-কে আরও একটু ‘ইনক্লিউসিভ’ (মানে, নিজের গন্ডিকে বাড়িয়ে আরও দলকে অন্তর্ভুক্ত করা) এবং প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে হবে, এবং সেইজন্য কিছু বদল দরকার। দু’বছর অন্তর এটা হচ্ছে, তা বেশ ভাল, কিন্তু  ১২টা টেস্ট খেলা দেশেরই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা উচিত। এদের দুটো গ্রুপে ভাগ করে নেওয়া যায় (প্রতিটায় ছ’টা দল), এবং দুই গ্রুপের দুটো সেরা দলের মধ্যে বেস্ট-অফ-থ্রি ফাইনাল খেলা যায়। বিদেশের মাটিতে জয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। দেশের মাটিতে জয় নিশ্চয়ই সহজে আসে না, কিন্তু পরিস্থিতি জানা থাকার দরুন হোম-সাইডের একটা বাড়তি সুবিধে থেকেই যায়। ‘অ্যাওয়ে ম্যাচ’ জেতা বেশি কঠিন, এবং সেটার পুরস্কারও তাই বড় হওয়া উচিত। এছাড়া, সিরিজের প্রথম টেস্টে টস-এর ব্যবস্থা বাতিল করে, অতিথি-দলের অধিনায়ককে ব্যাট বা ফিল্ড করার সিদ্ধান্তের স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। এরই সঙ্গে, পিচ তৈরির সময় নূন্যতম মান রক্ষা করা গেলে (যাতে হোম-টিমের প্রতি কোনও পক্ষপাত না হয়), খেলাটায় দুই দলকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে, একটা ভারসাম্য থাকবে।  

    নিউজিল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি

    টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ-এর লিগ পর্যায়ে ভারতই সবচেয়ে কর্তৃত্ব নিয়ে খেলেছে, সবচেয়ে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে।  ভারতের একমাত্র পথের কাঁটা হিসাবে উঠে এসেছিল নিউজিল্যান্ড, যখন তারা ফেব্রুয়ারি-মার্চ ২০২০’তে দুই-টেস্ট সিরিজে ভারতকে প্রবল আধিপত্য নিয়ে হারায়। ফাইনালের সময় দু’দলেরই এটা খুব ভালই মনে থাকবে, এবং নিউজিল্যান্ড মনোবলের দিক থেকে সুবিধেজনক অবস্থায় থাকবে। তার সঙ্গে যোগ হবে আর একটা ব্যাপার— নিউজিল্যান্ড প্রায় ঘরের মাঠের আবহাওয়ায় সাদাম্পটনে খেলতে নামবে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাম্প্রতিক জয়ও তাদের শক্তিশালী প্রতিপক্ষ করে তুলেছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, এই ভারত দলটা চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে লাগাতার রুখে দাঁড়িয়েছে এবং যে-কোনও বাধা পেরিয়ে যাওয়াকে প্রায় একটা অভ্যাসে পরিণত করেছে।

    ভারত এবং নিউজিল্যান্ড এই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী ফাইনালে সুযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। অতিমারীর প্রকোপে ক্রীড়াসূচি অনেকটা ওলটপালট হয়ে গেছে, তার মধ্যেও যে-তিনটে দল বরাদ্দ ছ’টা সিরিজ খেলে উঠতে পেরেছে, তার মধ্যে একটা হল ভারত। নিউজিল্যান্ড একটু সুবিধে পেয়ে গেছে, যখন যোগ্যতা নির্ণয়ের মাপকাঠি কিছুটা বদল করা হল, আর পয়েন্টের পার্সেন্টেজ দেখে দলগুলোর চূড়ান্ত অবস্থান ঠিক করা হল। অস্ট্রেলিয়া নিজেদের হাত কামড়াবে, কারণ ভারতের বিপক্ষে ডিসেম্বর ২০২০-র মেলবোর্ন টেস্টে তারা ওভার রেট ঠিকঠাক না রাখতে পারায় চারটে পয়েন্ট খোয়ায় এবং সেই সুযোগে নিউজিল্যান্ড যোগ্যতা অর্জন করে। 

    ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি

    ভারত এবং নিউজিল্যান্ড দুই দলেরই বোলিং আক্রমণ দুর্দান্ত হলেও, আসলে দুই দলের ব্যাটসম্যানদের ওপরেই জয় নির্ভর করছে। ভারতকে তাই প্রথম ইনিংস-এ বড় রান করতে হবে। ভারতের একটাই ভয়, সাম্প্রতিক কালে বিদেশের মাটিতে তারা সিরিজের শুরুটা ভালভাবে করতে পারেনি। মনে রাখতে হবে, এটা একটাই ম্যাচ, এবং এখানে প্রথম টেস্ট হেরে পরে ফিরে আসার কোনও অবকাশ নেই। ভারতকে তাই একেবারে শুরু থেকেই পূর্ণ শক্তিতে খেলতে হবে।     

    সাদাম্পটনের আবহাওয়া এবং ডিউকস বলটা ভারতের ব্যাটিংকে যথেষ্ট বেগ দিতে পারে। প্রথম তিনজন ব্যাটসম্যান— রোহিত শর্মা, শুভমান গিল এবং চেতেশ্বর পূজারাকে তাই দায়িত্ব সহকারে, ধরে খেলতে হবে। একেবারে গোড়ার ব্যাটিং-শিক্ষাগুলোকে মাথায় রাখতে হবে: দৃঢ়সঙ্কল্প ফুটওয়ার্ক, যতটা সম্ভব দেরি করে বল খেলা, এবং শরীরের কাছে খেলা, মানে ব্যাটটাকে শরীরের থেকে দূরে না নিয়ে যাওয়া। এগুলো ঠিকঠাক না করতে পারলে, টিম সাউদি এবং ট্রেন্ট বোল্ট যখন নতুন বল নিয়ে জুটিতে বোলিং শুরু করবেন, তাঁদের মোকাবিলা করা শক্ত হয়ে পড়বে।

    অভিজ্ঞ রোহিত শর্মা নিশ্চয়ই লাল বলের খেলায় ওপেনার হিসাবে নিজের সুনাম বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকবেন। এই ভূমিকায় তিনি ২০১৯ থেকেই সফল হয়ে আসছেন। পূজারার অবশ্য অন্য দেশের তুলনায় ইংল্যান্ডে খেলার রেকর্ড খুব উল্লেখযোগ্য নয়। কিন্তু তিনি এর আগে ইংল্যান্ডে টেস্টও খেলেছেন, কাউন্টি ক্রিকেটও খেলেছেন, সেই অভিজ্ঞতাগুলোর সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।    

    যদি প্রথম তিনজন ব্যাটসম্যান তাঁদের কাজ ঠিকঠাক করতে পারেন, মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা অনেকটা চাপমুক্ত হয়ে, নিজেদের খেলা খেলতে পারবেন। এর চাবিকাঠি অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং সহ-অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানের হাতে, এবং ভারতের সৌভাগ্য, এঁরা দুজনেই বিলক্ষণ জানেন, ইংল্যান্ডের মাঠে সেঞ্চুরি করতে কী কী দরকার। 

    নিউজিল্যান্ড বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়বে না, কিন্তু ভারত যদি নিজেদের পূর্ণ শক্তিতে খেলতে পারে, তাহলে আমি একটাই ফলাফল দেখতে পাচ্ছি। তবে ফলের চেয়ে, এই খেলাটা অনুষ্ঠিত হওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। টেস্ট ক্রিকেটের ঠিক এই উৎসাহটা, এই উদ্দীপনাটারই প্রয়োজন ছিল। ক্রিকেটের প্রকৃত সমঝদারের পক্ষে এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না।

    Read in English

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook