কয়েকটি কবিতা
কলেজ
কলেজ-ফেরত তোমার মন
সম্মোহন। সম্মোহন।
একটা-দুটো ছাতিম ফুল
মনের ভুল। মনের ভুল।
অলস মাথা, অলস পা
এগোয় না। এগোয় না।
লুকোয় ঘড়ি, নামায় চোখ
আরণ্যক। আরণ্যক।
সহজ পথে চলন তার
আবিষ্কার। আবিষ্কার।
লেখার খাতা, অসন্তোষ
শঙ্খ ঘোষ। শঙ্খ ঘোষ।
মেট্রো ছাড়ে, আটটা তিন
হৃদয়হীন। হৃদয়হীন।
গলির মোড়ে কী রোশনাই
বিচার চাই। বিচার চাই।
একার ঘরে টেবিল ল্যাম্প।
দোহাই শ্যাম। দোহাই শ্যাম।
কলেজ-ফেরত তোমার মন।
সঙ্গোপন। সঙ্গোপন।
আধুনিক গান
দিলে না যখন তুমি তৃণের সমান শ্যাম তিল পরিমাণ
তূণীরে বোঝাই মন ধারালো বিষাদঝাঁক আধুনিক গান
বেজেছে ছুরির মতো কুমার শানুর প্রেম যতীন-ললিত
বলেছে জ্যোতিষ এক আগামী বছর খুব পরিণত শীত
শানাবে রকমফের মনের খারাপ দিক চাঁদোয়া টাঙাক
কাফকা’র ছোট বই নিয়ে গেছে যে-মেয়েটি ফেরত না পাক
তোমারও ঘুমের রং কফির মতোই নীল কড়া ও কাফের
যেমন নাটক ছিল পাড়ার মলিন স্টেজে ছোটকাকাদের
তেমনই তোমার মন দুটো ছোট হাততালি জড়িয়ে ঘুমোয়
বিরহ রাহুল দেব গুলজার হয়ে এসে পাশ ফিরে শোয়
দিলে না যখন তুমি তৃণের সমান শ্যাম তিল পরিমাণ
তূণীরে বোঝাই মন ধারালো বিষাদঝাঁক আধুনিক গান
নৌকা
ভাল লাগছে না। নৌকাটি যাক ডানদিক।
এই বৈঠায় জ্যোৎস্না লাগিয়ে শান দি’
যদি তোমাদের বাতিঘর যায় পশ্চিম
মাটিতে তখন ঝাঁঝিয়ে উঠেছে যুদ্ধ
আদালত দেয় তন্বী সেনাকে রূপদোষ
আমি নিরুপায় ছইয়ের উপরে বসছি।
কবে যে ভেসেছি বাড়ি যাব বলে, ঠিক নেই।
পাখিদের ঠোঁট বাঁধাই করেছি তীক্ষ্ণে—
ঝোড়ো সমুদ্রে স্নান সেরে নেয় রাক্ষস…
মাটিতে তখন প্রকাশক ঢালে নীলক্ষেত
যেন শেষবার কলম চালিয়ে রিলকে
আমারই জন্য লিখবেন একটি বাক্য।
ফেরা যদি হয়, পুরনো পাড়াতে একরাত
সূর্যাস্তের সোনা গলাচ্ছে স্যাকরা
চেনা মণিহার উপহার দেবে পশ্চিম
আপাতত এই ঢেউয়ে-ঢেউয়ে ঘেরা দিকভ্রম…
শুকনো স্বপ্ন জলের ভাষায় লিখব
আমি নিরুপায় ছইয়ের উপরে বসছি।
শিলাইদহ
ট্যুরিস্ট স্পট ও শিলাইদহ
ব্যাকস্পেস এবং বিরহ
তোমায় মানায়
লেখার পরে বাতাস খোঁজা
ফুলের বাগান, উলের মোজা
লোকাল থানায়
কে হারাল, কে ফিরল না
কাঁটায় কুরুশ অন্যমনা
শীতের পশম
সাদার ওপর লালের ছিটে
একটি ছুরি আর চকিতে
চেরিব্লসম
এমন খুনের সাক্ষী নিখোঁজ
গোয়েন্দা তার অন্যদিকও
তলব করেন
তোমার বাড়ি দ্বীপের মতো
যুদ্ধে থাকে যে অক্ষত
সমস্বরে
এবার শীতে শিলাইদহ
দুঃখে সুখে বন্ধু রহো
এমনি সাথে
আস্তিনে তার শান্ত চাকু
হাতের পাতায় রবি ঠাকুর
শারদ প্রাতে।



