সে সময়টা ছিল পঞ্চকবির— আমরা যখন বড়ো হচ্ছি। রবীন্দ্রনাথের পর এই পাঁচ কবি সমমৰ্যাদায় স্থান পাবেন আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসে এমনটাই আমরা জানতাম। আজ অর্ধ-শতাব্দী পরে দেখছি এ মুহূর্তের ছবিটা অন্য। মনে পড়ছে বছর দুই আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বুদ্ধদেব বসু স্মারক বক্তৃতা’ দিতে গিয়ে অশোক মিত্র প্রতীকার্থে বলেছিলেন যে বহুদিন পর্যন্ত একটি রেলগাড়ির পাঁচটি কামরায় সমসংখ্যক মানুষই উঠতেন এবং তারা সব কামরাতেই বদলে বদলে চড়তে পছন্দ করতেন; কিন্তু বিশেষ একটি বছরের পরে অকস্মাৎ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেল। দেখা গেল সব মানুষ ধস্তাধস্তি-গুঁতোগুতি করে একটি কামরায় ঢুকে পড়তে বেজায় ব্যস্ত। বলা বাহুল্য, এই জনতা-আক্রান্ত কামরাটি ‘নির্জনতম কবি’ জীবনানন্দের! অন্যদের নাম উল্লেখের প্রয়োজন করে না।’
উদ্ধৃতিটি দীর্ঘ হলেও, প্রাসঙ্গিক বলেই তুলে ধরা। লেখক দময়ন্তী বসু সিং, বুদ্ধদেব বসুর কনিষ্ঠ কন্যা। চলতি শতকের গোড়ায় একটি পত্রিকায় তাঁর এই লেখা আসলে একটি প্রবণতার দিকেই ইঙ্গিত করে। সেই প্রবণতা হল বিস্মৃতির। দময়ন্তী-উল্লিখিত পঞ্চকবি বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব বসু ও জীবনানন্দ দাশ। জীবনানন্দের জন্মশতবর্ষ (১৯৯৯) থেকে তাঁকে উদযাপনের ‘হিড়িকে’ বাকি চারজন পিছনে চলে গেলেন— এমনই বক্তব্য তাঁর। বলা বাহুল্য, আরও দু-দশক পেরিয়ে আমরা দেখছি, সেই চারজন আক্ষরিক অর্থেই বিস্মৃতপ্রায়। যে-সীমিত গণ্ডিতে তাঁদের চর্চা চলে, তা বাংলা কবিতার পাঠকবৃত্তের তুলনায় নগণ্য। তরুণ কবিদেরও ক’জনই-বা গুরুত্ব সহকারে পড়েন তাঁদের?

এই অবস্থান থেকেই বুঝতে চেষ্টা করব, কেন চর্চার বাইরে চলে গেল তাঁদের কবিতা। আমাদের আলোচনা মূলত অমিয় চক্রবর্তীকে নিয়েই, কিন্তু যে-কারণগুলি উঠে আসবে, তা বাকি তিনজনের ক্ষেত্রেও অংশত প্রযোজ্য। তবে অমিয় চক্রবর্তীর কবিতা, কাব্যবৈশিষ্ট্য, দর্শন তথা কবিসত্তার আলোচনা বর্তমান নিবন্ধের উদ্দেশ্য নয়। সে-বিষয়ে বহু মনোজ্ঞ প্রবন্ধ ইতিপূর্বে রচিত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য তাঁর (এবং সেই সূত্রে বাকিদেরও) প্রাসঙ্গিকতা হারানোর কারণটুকু খুঁজে পাওয়া। কিংবা, আদৌ হারিয়েছে কি না— তা বোঝার চেষ্টা।
বাংলা কবিতা যখন রবীন্দ্র-প্রভাব ছাড়িয়ে ক্রমশ এগোতে চাইছে, তখনই আবির্ভাব পঞ্চকবির। এঁদের মধ্যে জীবনানন্দকে সরিয়ে রাখা যাক, কেননা তিনি এতই স্বকীয় যে, পরবর্তীকালে নিজেই একটি ‘যুগ’ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু অমিয় চক্রবর্তী-সহ বাকি তিনজন রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশাতেই যখন কবিতাচর্চা শুরু করলেন ও ক্রমে ভিন্ন ও অপেক্ষাকৃত আধুনিক স্বরের আমদানি করলেন কবিতায়, তা রবীন্দ্রস্বাদে নিমজ্জিত বাঙালি পাঠককুলের কাছে অভিনব ঠেকেছিল। সেই হিসেবে, বিগত শতাব্দীর কুড়ি ও তিরিশের দশক এক উল্লেখযোগ্য কালপর্ব। অমিয় চক্রবর্তীর উত্থানও এই সময়েই। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন তিনি, সাহিত্য সচিব হিসেবে (১৯২৬-’৩৩)। রবীন্দ্রানুসারী হয়েও, প্রথম কবিতার বই ‘খসড়া’ থেকেই স্বকীয়তার ছাপ রেখেছেন অমিয়। লিখেছেন—
‘মেরুতে বরফ ঢেউ তব; আবর্ত গরম কোথা? নিয়ম-জলের অন্ধ বুকে
তবু নিয়ন্ত্রিত ঝড়; স্রোত ঘোরে; মন্সুন। দেখি তট-চোখে
মেশিন-রাজ্যের সীমা। বাসনা-কলেতে মন ডাঙা-’পরে
হাবুডুবু খায় বুদ্ধি-ভরে। কারখানা সব কার? প্রশ্ন হাওয়ায় যায় উড়ে।।’

‘সমুদ্র’-শীর্ষক এ-কবিতায় ফ্যাক্টরি বা কারখানার তুলনা টানা বিশ শতকের নাগরিক সভ্যতারই ইঙ্গিত। ভাবজগত থেকে ক্রমাগত বস্তুজগতের দিকে বাঁক নিচ্ছে কবিতা, একটি বিষয়-প্রসঙ্গে তুলনীয় হচ্ছে অন্য বিষয়। আধুনিকতার এই যাত্রা অমিয় ধরেছিলেন প্রথম বইয়েই। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁর সমসাময়িক বিষ্ণু দে বা সুধীন্দ্রনাথের কবিতা দুর্বোধ্যতার অভিযোগে বিদ্ধ হলেও, অমিয়-র ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি। পরবর্তীকালের সমালোচকরা তাঁর ছন্দের নতুনত্ব, ভাবনার বিস্তার, আন্তর্জাতিকতা ইত্যাদি বহুবিধ প্রসঙ্গ এনেছেন। এমনকী, জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মার্কিন-প্রবাসী হওয়ার পর, তাঁর বহু কবিতায় পশ্চিমের রেফারেন্স ও আবহও ফুটে উঠেছে (যা বঙ্গীয় পাঠককুলের পরিচিত পরিসর নয়)। রমেন্দ্রকুমার আচার্যচৌধুরী বলেন— ‘অমিয় চক্রবর্তী তাঁর রাবীন্দ্রিক স্বভাবে আজও অটল। বস্তুত সেটাই তাঁর নিজস্ব জীবনদর্শন হয়ে উঠেছে।’ তবে এ-প্রসঙ্গে দীপ্তি ত্রিপাঠীর বক্তব্য বোধ করি সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য—
‘আধুনিক কবিদের মধ্যে অমিয় চক্রবর্তীর কবিমানস সর্বাপেক্ষা জটিল ও দ্বিধাবিভক্ত। আপাতদৃষ্টিতে মনে হ’তে পারে তিনি এ-যুগের প্রধান ‘আধ্যাত্মিক’ কবি— রবীন্দ্রনাথের মিষ্টিক চেতনার একমাত্র উত্তরাধিকারী। কিন্তু এজরা পাউন্ডের মতো এ তাঁর ছদ্মবেশ মাত্র।’


এহেন অমিয়-র সঙ্গে নতুন শতকের পাঠককুলের দূরত্ব বাড়ল কেন? শুধু অমিয় নন, সুধীন্দ্রনাথ, বিষ্ণু বা বুদ্ধদেবই-বা কেন তত পঠিত হন না আজ? জীবনানন্দ-উদযাপন এর কারণ হতে পারে না (আর সেই উদযাপন অযৌক্তিকও নয়)। এখানে আরও বুঝতে হবে, কোন পাঠককুল? বাংলা সাহিত্যের ছাত্রছাত্রী কিংবা বাংলা কবিতার তন্নিষ্ঠ পাঠক আজও ওঁদের পড়েন। তবে নবীন কোনও পাঠক বা কবিতাপ্রয়াসী কেন তত মনোযোগ দেন না তাঁদের লেখায়? এর সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ অনুমান করা যায়। রবীন্দ্র-পরবর্তী যুগে ওঁরা নতুন ভাষাভঙ্গি নিয়ে, বাংলা সাহিত্যজগতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিলেন। তাঁদের সমসাময়িক বা অব্যবহিত পরের কয়েক প্রজন্মের পাঠক বুঁদ হয়ে ছিলেন সেসব কবিতায়। তাঁদের আগে, রবীন্দ্রনাথই বাংলা কবিতার প্রধান স্তম্ভ। রবীন্দ্রানুরাগীদের একাংশ আধুনিক কবিতার এই শিফ্টকে যেমন দুর্বোধ্যতার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন, তেমন সাদরে বরণও করেছেন অনেকেই।
প্রকৃতপক্ষে, এ এক ধারাবাহিক যাত্রা। দশকের পর দশক জুড়ে নতুন কবিরা পূর্বসূরিদের থেকে পুষ্ট হয়েছেন, জন্ম দিয়েছেন সমসাময়িক ভাষাভঙ্গির। আগের প্রজন্মের থেকে আলাদা সে-ভাষা। কুড়ি-তিরিশের দশকের কবিদের তুলনায় চল্লিশের কবিদের ভাষাবদল এ-প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। আর পঞ্চাশের দশকে পৌঁছে, এক ঝাঁক নতুন কবি সম্পূর্ণ নতুন আবহ আনলেন বাংলা কবিতায়। সে-ভাষা যেমন আধুনিক, তেমনই বিষয়বস্তু অভিনব। ভাবজগত থেকে বস্তুজগতের দিকে, চেনা-পরিচিত রেফারেন্স ও অনুভূতির দিকে যাত্রা। কবিতায় দর্শনপ্রতিষ্ঠা নয়, মুখ্য হয়ে উঠল অনুভব-প্রকাশ। যদি দর্শন থেকেও থাকে, তা রইল অন্তঃসলিল হয়ে। ছন্দ, চলন, শব্দ ও বাক্যবিন্যাসে রবীন্দ্রনাথের থেকে তো বটেই, তিরিশের কবিদের থেকেও অনেকটাই দূরে সরে এলেন তাঁরা। এই জন্যেই বিগত একশো বছরের বাংলা কবিতার ইতিহাসে পঞ্চাশের কবিরা তাৎপর্যবাহী।


পরবর্তী দশকগুলিতে, ষাট থেকে নব্বই পর্যন্ত, কবিতার ভাষা বদলে-বদলে গেছে, সমসাময়িকতার কাছাকাছি এসেছে আরও। শূন্য পেরিয়ে একের দশকে আমরা যখন মনোযোগ সহকারে বাংলা কবিতা পড়তে শুরু করলাম, সুধীন্দ্রনাথ-অমিয়-বিষ্ণু-বুদ্ধদেবের সঙ্গে ততদিনে বেশ কয়েক দশকের দূরত্ব। তাঁদের বিখ্যাত কবিতাগুলি আজও পঠিত হয়, আলোচিত ও বন্দিতও হয়। কিন্তু গুটিকয়েক জনপ্রিয় কবিতার বাইরে, তাঁদের জীবনব্যাপী রচনার দিকে মনোযোগ যায় না সহজে। অথচ একজন কবিকে নিবিড়ভাবে চিনতে, তাঁকে সামগ্রিকভাবে পড়া জরুরি।
এই না-পাঠ-প্রবণতার বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে যে, ওঁদের কবিতা না-পড়ার অর্থ প্রস্তুতিতে ফাঁক থেকে যাওয়া। অংশত সত্য সে-কথাও। এই দূরত্বের জন্য প্রধান দায়ী কবিতার ভাষা ও সময়। অমিয় বা তাঁর সমসাময়িকেরা কবিতায় যে-ভাষাভঙ্গির চর্চা করেছিলেন, তা কালক্রমে তামাদি হয়ে গেছে (রবীন্দ্রনাথের কবিতাই এখন আর পঠিত হয় না তত!)। পরবর্তী দশকের কবিরা এসে বাংলা কবিতার ভাষাকে ‘সমসাময়িক’ করার দিকে এতদূর অগ্রসর হয়েছেন যে, অমিয়রা থেমে রয়েছেন তাঁদের নিজস্ব কালেই। হয়তো তাঁদের কবিতাভাবনা আজও প্রাসঙ্গিক, দর্শনও, কিন্তু কবিতা শুধু সেটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। ছন্দ, বাক্যগঠন, শব্দব্যবহার, উপস্থাপনা সব মিলিয়েই তৈরি হয় কবিতার আবহ। ফলে বাংলা কবিতার কোনও তন্নিষ্ঠ পাঠক অমিয় চক্রবর্তীর কবিতায় ফিরে যেতে চাইলে, তাঁর সময়কালের চিন্তা থেকে উত্তীর্ণ হতে পারবেন না কিছুতেই। তবে শুধু ভাষার ‘প্রাচীনতা’-ই কারণ নয়। ভাষাকে বিনির্মাণ করে বা কবিতায় সেই আবহ এনে আজও অনেক কবি নতুন কবিতা লেখেন। সবচেয়ে জরুরি হল চিন্তার আধুনিকতা। বহুচর্চিত কোনও বিষয়কেও নতুনভাবে হাজির করা পাঠকের সামনে। এখানেই বর্তমান পাঠকের দূরত্ব তৈরি হয় অমিয় চক্রবর্তীদের সঙ্গে। তাঁদের কবিতায় যে-চিন্তা বা বিষয়ের প্রতিফলন, তা আর আলাদা করে নতুনত্বের স্বাদ জাগায় না নবীনের মনে; কিংবা অমিয়-র সমকালে যা ছিল নতুন, বিগত কয়েক দশকে বহুব্যবহারে অতিসাধারণ হয়ে এসেছে তা।
এ-প্রসঙ্গে আরও একটি বিষয় দরকারি, তা হল পাঠক্রম। একজন তরুণ পাঠক রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে ক্রম অনুসারে পরবর্তী কবিদের যদি পড়েন, সে-প্রস্তুতি একরকম। কিন্তু পঞ্চাশ ও তৎপরবর্তী কবিদের পড়ার পর কুড়ি-তিরিশে ফিরে যেতে হলে, ভাষাভঙ্গির ব্যবধান পীড়া দিতে বাধ্য। এর ভিতরেও কোনও-কোনও পাঠক আছেন, যাঁরা অমিয়-সুধীন্দ্রনাথ-বিষ্ণু দে-র কবিতাতেও সমান স্বচ্ছন্দ। কিন্তু তাঁরা নেহাতই ব্যতিক্রম, নইলে এ-আলোচনার প্রয়োজনই পড়ত না। রবীন্দ্রোত্তর যুগে পঞ্চকবি ভাষা ও ভাবনার আড় ভেঙে বেরোতে চেয়ে কিছুদূর অগ্রসর হয়েছিলেন, পরবর্তী দশকের কবিরা সেই কাজকেই ক্রমাগত এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। এ প্রকৃতপক্ষে এক রিলে রেস, এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের হাতে নিজস্ব অর্জন ও ঐতিহ্য তুলে দেওয়ার প্রয়াস।

আর ঠিক সেই কারণেই অমিয় চক্রবর্তীকে পড়া আরও জরুরি। জরুরি তাঁর সমসাময়িকদের পড়াও। বর্তমান বাংলা কবিতা যাঁদের উত্তরাধিকার বহন করছে, তাঁদের কবিতাবৈশিষ্ট্য ও ধারাবাহিকতা চিহ্নিত করা না-গেলে ধরা যাবে না বিবর্তন, ফাঁক থেকে যাবে যাত্রাপথের সঙ্গে বোঝাপড়ায়। আজ বাংলা কবিতার অবস্থান যেখানে, সেই স্তরে পৌঁছনোর পিছনে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। সাধনমার্গের মতো কবিতাচর্চায় কোনও গুরু-পরম্পরা নেই, কিন্তু চুঁইয়ে-আসা যে শিক্ষায় আমরা পুষ্ট, তা অমিয় চক্রবর্তী, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বিষ্ণু দে-রও। তা রবীন্দ্রনাথের, ঈশ্বর গুপ্তের, ভারতচন্দ্রের। রামপ্রসাদ থেকে চণ্ডীদাস, মুকুন্দ চক্রবর্তী থেকে বিপ্রদাস পিপিলাই— যে-আবহমানতার উত্তরসূরি আমরা, তাহা অস্বীকার করি কী উপায়ে!
তবে, যাবতীয় আলোচনা শেষাবধি পৌঁছে দেয় অন্য একটি ভয়ে। আমাদের আজকের যা লেখালিখি, তার অধিকাংশই কয়েক দশক পর ফিকে হয়ে যাবে, সময়ের ধর্ম মেনে। অমিয়-সহ পঞ্চকবি গুরুত্ব হারাননি, তাঁদের পাঠ করার অভ্যাস কমেছে মাত্র (জীবনানন্দ ব্যতিক্রম)। কিন্তু বিগত দশকগুলির বহু কবি সমসময়ে চর্চিত হলেও, কালক্রমে বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছেন। আমাদের লেখালিখিরও সেই পরিণতি হওয়া অসম্ভব নয়। শুষ্ক প্রবন্ধ আর বাতিল-হয়ে-যাওয়া কিছু গ্রন্থিত কবিতার বাইরে যদি কিছুই না-থাকে, জায়গা যদি হয় সাহিত্যের ইতিহাসের ফুটনোটে? রিলে রেস ও ব্যাটনের কথা ভেবে নিশ্চিন্ত করতে পারছি কি নিজেকে? সেই দুর্দশার আশঙ্কা ঘোচাতে এমন কিছুও লিখতে পারছি কি, যা আজকের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও সমান প্রাসঙ্গিক থাকবে? ভয় করে, অমিয়বাবু, ভয় করে!