শুধু কবিতার জন্য: পর্ব ১২
‘ভাসছে পথে, আসছে আর যাচ্ছে কত সস্তায়।/ যেন পথের নীচু হোটেল, ভাতে কাঁকর তিনটে…/ তোমারও মন নিথর হল সকাল সাড়ে দশটায়/ আমারও গেল বাকি জীবন ফেরার পথ চিনতে।’ নতুন কবিতা।
‘ভাসছে পথে, আসছে আর যাচ্ছে কত সস্তায়।/ যেন পথের নীচু হোটেল, ভাতে কাঁকর তিনটে…/ তোমারও মন নিথর হল সকাল সাড়ে দশটায়/ আমারও গেল বাকি জীবন ফেরার পথ চিনতে।’ নতুন কবিতা।
‘শেষমেশ সন্ধের আগে-আগে একটা মোটা সোয়েটার চাপিয়ে বাবার হাত ধরে বেরিয়ে পড়া। এই যে বেরিয়ে পড়লাম একবার, এখান থেকেই কিন্তু সার্কাস শুরু। অপেক্ষা করতাম, যদি বাবার সঙ্গে দেখে পাড়ায় কেউ জিগ্যেস করে, কোথায় যাচ্ছি। তাহলে সামান্য হেসে, ‘এই তো, সার্কাস দেখতে’ বলবার গৌরবটা পেয়ে যাওয়া যাবে।’ সার্কাস দেখার আনন্দ।
খেয়াল করলে দেখা যাবে বৃষ্টির কবিতা সংখ্যায় বেশি। কেন? কারণ বৃষ্টির কাছে গচ্ছিত থাকে অতীত, স্মৃতি, অনেক রকম শহর, অনেক রকম বেদনা আরও অজস্র অনুভূতি। তা-ই কবিতা লিখতেও বোধ হয় বার বার বৃষ্টির কাছে ফিরে যেতে হয়। কবিতার আড্ডাঘর জুড়ে অবিশ্রান্ত বর্ষণ।
‘হতে যে নিকট চাই, সে তুমি দূরের থেকে বোঝো।/ গলার রুশতী মালা খুলে রাখো হাটের বন্দরে/ এখানে পণ্যের দাম বাতাসিয়া। বিরহ সহজও।/ কলমগাছের নীচে চিঠি লেখানোর কথা ঝরে…’ নতুন কবিতা।
‘যিশুখ্রিস্ট সাহেবদের দেবতা, সেই খোদ সাহেবদের দেশেও এমন বাঁধনহারা উদযাপন হয় না বড়দিনে। হ্যাঁ, মানুষজন ঘরবাড়ি সাজায়, নতুন কেনাকাটা করে, বাড়িতে-বাড়িতে ভোজ বসে ঠিকই। কিন্তু এই যে শহরের রাজপথে লাখো মানুষের ভিড় বইয়ে দেবার পাগলামি, সে এমনকী তাঁদের ফর্সা দেশেও নেই।’ বাঙালির যিশুপ্রীতি।
‘বুকের ভেতরটা হত নরম, একটু তাতিয়ে নিলে তার সুগন্ধী ওম গুঁড়ো-গুঁড়ো হয়ে লেগে থাকত হাতে। সেই কেক কি একখানা কেনা হবে এবার, আমাদের বাড়িতে? বড়দিনের আগে আগে এই প্রশ্ন জামার পকেটে লুকিয়ে আমরা সকলেই পাড়া বেড়াতাম হাসিমুখে।’ বড়দিনের স্মৃতি।
যখন হাত দিলেন ছোটগল্পে, তখন কল্পনার জগতকে সরিয়ে রেখে, নেহাতই বাস্তব পারিপার্শ্বিককে বেছে নিলেন গল্প শোনাবার পটভূমি হিসেবে।কাহিনির আকৃতিকে তিনি বেঁধে রাখলেন নির্দিষ্ট একটি সীমায়।জোর দিলেন কাহিনির বুননে। সত্যজিতের ছোটগল্প হয়ে উঠল অনন্য।
হেমন্তের পরে যে শীতের বিষণ্ণতা ঘিরে থাকে, সেই সময় জীবনানন্দের কবিতা খুব বেশি করে মনে পড়ে। তিনি যেন সবার বিষণ্ণতার পাহারাদার। সবার বিষণ্ণতার দায় তিনি নিয়েছেন আর কবিতা দিয়ে পূর্ণ করেছেন সেই বিষণ্ণতাকে। সেই না-দেখা কবির কবিতা আশ্রয় দিক আমাদের জন্ম-জন্মান্তেরের বিষণ্ণতাকে।
‘ছলনা ব্যাধের সঙ্গী। যেরকম রুমাল, তোমার।/ ফেলে কবে গেছ আর তারই সুগন্ধের জেরে আমি/ এ-শহরে বাসা নিই। আসলে শিকার হই তার…/ যে-নিজরহস্য নিয়ে আজও অরণ্যের অনুগামী।’ নতুন কবিতা।
‘ধ্বংস’ নামের কাব্যগ্রন্থ থেকে পড়া কিছু কবিতা। মিথ্যা সম্প্রীতির জাল ভেঙে বেরিয়ে আসা সময়ের কিছু লেখা, যুদ্ধ পরিস্থিতির কবিতা।
‘…ভূগোল নিয়ে ভর্তি হবার এক সপ্তাহের মধ্যে, বন্ধুবৃত্ত তার ডানা ছড়াল সিন্ধবাদের রকপাখির মতোই। ইংরেজি, ইতিহাস, বাংলা, রাশিতত্ত্ব, সব বিভাগের একমনা ছেলেমেয়েদের সে এনে ফেলল তার ডানার ছায়ায়।’ কলেজের সিঁড়ি।
অল্পে যিনি অনন্ত দেখাতে পারেন তিনিই সার্থক কবি। তেমনই একজন বরেণ্য কবি বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়। যাঁর অনায়াস যাতায়াত সাধু-চলিত ভাষায়। একটি চলিত শব্দের পাশে এমন ভাবে একটি সাধু শব্দ বসিয়ে তিনি ভাবের বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে পারতেন, তা সত্যিই মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয়। অদেখা কবির কবিতার স্বাদ।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.