
শুধু কবিতার জন্য: পর্ব ১৪
‘প্রহরা দুর্গের মন। অপরাধ শাস্তির প্রেরণা।/ মাঝে যে-পরিখা, তাতে আশঙ্কা টলটল করে রাতে।/ শত্রুদের চাঁদ দ্যাখো। তির লেগে ভেঙে যাওয়া কোনা…/ আরও বুঝি যুদ্ধ চাই, নাগরিকে জোছনা বোঝাতে।’ নতুন কবিতা।
‘প্রহরা দুর্গের মন। অপরাধ শাস্তির প্রেরণা।/ মাঝে যে-পরিখা, তাতে আশঙ্কা টলটল করে রাতে।/ শত্রুদের চাঁদ দ্যাখো। তির লেগে ভেঙে যাওয়া কোনা…/ আরও বুঝি যুদ্ধ চাই, নাগরিকে জোছনা বোঝাতে।’ নতুন কবিতা।
‘কত মানুষ এসে দেখা করছেন তাঁর সঙ্গে, সকলের দিকে একই রকম হাসিমুখ নিয়ে তাকাচ্ছেন সুনীলদা। আর দোলের ওই চড়া রোদের তাপে তাঁর বয়স গলতে-গলতে কমে দাঁড়াচ্ছে সাতাশে। আমাদের চোখের সামনে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রূপান্তরিত হচ্ছেন নীললোহিতে।’ দোলের শান্তিনিকেতন।
ঈশ্বর গুপ্ত এমন এক জন কবি যাঁর ছোঁয়ায় বাংলা ভাষা বেঁচে উঠেছে, উজ্জীবিত হয়েছে। তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার বহমান স্রোতের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শুরুর দিকের কবি তিনি, পরলোক গমন করেছেন ১৮৫৯ সালে, অথচ কী আধুনিক, কী উদার মন। তাঁর কবিতা পড়তে পড়তে মনে হয়, আমরা তখন কত এগিয়ে ছিলাম মানসিকতার দিক দিয়ে, সেই উদারমনস্কতা বয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমরা পালন করতে পারব তো?
“যে তোমার মার্চ মাস, ছুটি নিয়ে জুলাই সেজেছে/তার টুপি পড়ে আছে বালিতে, সে সমুদ্রে উদাস/তুমি কী আশ্চর্য লোক/ভাঙা সময়ের মধ্যে বেঁচে/বৃষ্টির সুতোয় বুনে বসে আছ বসন্তের মাস”। নতুন কবিতা
আমাদের চারপাশটা আবারও অন্ধকার হয়ে আসছে। আশঙ্কার কালো মেঘ যেন মাথার ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে, দেখা যায়। এই বিপন্ন সময়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, কালকের সিরিয়া, আজকের ইউক্রেন সব একাকার হয়ে গেছে। সর্বত্র শুধু ভয় আর আতঙ্ক। এই পর্বের কবিতাগুচ্ছের মধ্যে সেই কালো সময়েরই প্রতিধ্বনি।
পড়তে-পড়তে তাদের রুটির আশ্চর্য গন্ধ এসে নাকে লাগছে, তাদের কেকে-র মিঠে ভাপে ভরে উঠছে আমার শীতকাল। যেন আমাদের ভাতের হাঁড়ি এসবের চেয়ে খুব বেশি দূরে নয়। তাই দেব সাহিত্য কুটিরের পাশাপাশি রাদুগা ছিল আমাদের ভরসা, ইন্দ্রজাল কমিকস-এর কাছাকাছি ভস্তককে চিনতাম।
অমিয় চক্রবর্তী বাংলা সাহিত্যের এক অসামান্য কবি, যাঁর কবিতায় আমরা পাই অভিনব চিত্রকল্প, পুরনো ও সমসাময়িক শব্দ পাশাপাশি সাজিয়ে তৈরি করা আশ্চর্য আবেদন, সময় নিয়ে অপূর্ব খেলা। মাত্র একটা শব্দের স্থান বদলে তিনি জাদু সৃষ্টি করেন, নরম অথচ সপ্রতিভ কবিতায় কখনও মিলিয়ে দেন ঝোড়ো হাওয়া আর পোড়ো দরজার বৈপরীত্যও।
‘ভাসছে পথে, আসছে আর যাচ্ছে কত সস্তায়।/ যেন পথের নীচু হোটেল, ভাতে কাঁকর তিনটে…/ তোমারও মন নিথর হল সকাল সাড়ে দশটায়/ আমারও গেল বাকি জীবন ফেরার পথ চিনতে।’ নতুন কবিতা।
এক কথায় বললে, তাঁর কবিতা প্রবাদের মতন। আশ্চর্য গীতিময়তা, তার সঙ্গে কল্পনার ব্যাপ্তি— এই দুই বৈশিষ্ট্য তাঁর কবিতাকে করে তুলেছে অনন্য। কেউ-কেউ এমনও বলেছেন, তিনি কবিতায় নাকি নক্ষত্রের রহস্য ভেদ করতে পারতেন। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার দুনিয়ায় তাই একবার ঢুকে পড়লে, তা থেকে বেরোনো মুশকিল!
‘শেষমেশ সন্ধের আগে-আগে একটা মোটা সোয়েটার চাপিয়ে বাবার হাত ধরে বেরিয়ে পড়া। এই যে বেরিয়ে পড়লাম একবার, এখান থেকেই কিন্তু সার্কাস শুরু। অপেক্ষা করতাম, যদি বাবার সঙ্গে দেখে পাড়ায় কেউ জিগ্যেস করে, কোথায় যাচ্ছি। তাহলে সামান্য হেসে, ‘এই তো, সার্কাস দেখতে’ বলবার গৌরবটা পেয়ে যাওয়া যাবে।’ সার্কাস দেখার আনন্দ।
খেয়াল করলে দেখা যাবে বৃষ্টির কবিতা সংখ্যায় বেশি। কেন? কারণ বৃষ্টির কাছে গচ্ছিত থাকে অতীত, স্মৃতি, অনেক রকম শহর, অনেক রকম বেদনা আরও অজস্র অনুভূতি। তা-ই কবিতা লিখতেও বোধ হয় বার বার বৃষ্টির কাছে ফিরে যেতে হয়। কবিতার আড্ডাঘর জুড়ে অবিশ্রান্ত বর্ষণ।
‘হতে যে নিকট চাই, সে তুমি দূরের থেকে বোঝো।/ গলার রুশতী মালা খুলে রাখো হাটের বন্দরে/ এখানে পণ্যের দাম বাতাসিয়া। বিরহ সহজও।/ কলমগাছের নীচে চিঠি লেখানোর কথা ঝরে…’ নতুন কবিতা।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.