
সংবাদ মূলত কাব্য: পর্ব ১১
‘বারাউনি জংশন স্টেশনে ট্রেন থেকে শুনলাম শহরগুলি ও শিল্পাঞ্চল থেকে জনগর্জন: তানাশাহি নহি চলে গা… ইন্দিরা হঠাও… বিহার তখন কাঁপছিল জয়প্রকাশ নারায়ণের ইন্দিরাবিরোধী আন্দোলনে। অর্থাৎ আমি ইতিহাসের ভিতরে ছিলাম।’
‘বারাউনি জংশন স্টেশনে ট্রেন থেকে শুনলাম শহরগুলি ও শিল্পাঞ্চল থেকে জনগর্জন: তানাশাহি নহি চলে গা… ইন্দিরা হঠাও… বিহার তখন কাঁপছিল জয়প্রকাশ নারায়ণের ইন্দিরাবিরোধী আন্দোলনে। অর্থাৎ আমি ইতিহাসের ভিতরে ছিলাম।’
‘বড় রুমাল একটি মাথায় বেঁধে দু’পাশে ঝুলিয়ে সুনীলদা আমারও রুমালটি ওইভাবে বাঁধলেন, গেলাসে চুমুক দিতে-দিতে সুনীলদা বললেন, মরুদ্যানে ধাবায় হাইওয়ের ধারে বেদুইনরা এভাবেই মদ খায়।’
‘রিকশা থামিয়ে এক তরুণ নেমে এলেন। চেনা-চেনা লাগল মুখটি। আমাদের কাছ থেকে বলটি চেয়ে নিয়ে পায়ে নাচালেন, কয়েকটি শট নিলেন। অভিভূত আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে আড়ষ্টতা বোধ করলাম। রিকশায় তাঁরা চলে যেতে, অস্ফুটে বলাবলি করলাম, হাবিব… হাবিব…।’
‘ছোটপিসি বিয়ের বছর দেড়-দুই পর সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়। আমার বয়স তখন বছর দুই। আমাদের বাড়িতে ওই পিসির কোনও ছবি রাখা হয়নি। ছোটপিসি দেখতে কেমন ছিল, আমরা ভাই-বোনেরা জানি না। আমার ‘মৃদুল’ নামটি ওই পিসির দেওয়া।’
‘একটি মিনি পত্রিকা বিজ্ঞাপন করেছিল, ‘দাম বেড়েছে চিনির/ দাম বাড়েনি মিনির।’ আর একটি মিনি পত্রিকার বিজ্ঞাপন ছিল, ‘এক প্যাকেট সিগারেটের চেয়ে সস্তা।’’
‘‘সংবাদ মূলত কাব্য’— বিষ্ণু দে-র কাব্যপংক্তিটি তখনও রচিত না হলেও, হয়তো হাওয়া-বাতাসের ভেতরে ছিল। বরানগরের ওই গণহত্যায় ব্যথিত মনে আমি ‘আগামী’ নামে একটি কবিতা লিখেছিলাম।’
‘আমরা আহত, ক্ষতবিক্ষত প্রজন্ম। উত্তাল নৃত্যরত সময় আমাদের দুলিয়ে দুলিয়ে ছন্দিত করেছে, আবার আঁচড়ে-কামড়েও দিয়েছে, আগুনের ছ্যাঁকাও লেগেছে।’
‘সে-কবিতা ডাকে ফেরত আসে। দেখি, সে-লেখার কোণে ‘চলতে পারে’ লিখে সই করেছেন কৃষ্ণগোপাল মল্লিক। পাশে ‘আর একটা কবিতা চাওয়া যাক’ লিখে সই করেছেন দেবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। দুজনকে দেখতে আমি কলেজ স্ট্রিটে রওনা হই।’
‘১৯৬৮-’৬৯-’৭০ সাল আমার কবিতা প্রয়াসের সূচনাকাল। আমি এসব পত্রিকায় লিখতে শুরু করি। ১৯৭০ সালে আমি যখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ি, সোমনাথদা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায় আমাকে প্রথম কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে নিয়ে এসেছিলেন।’
‘অদূরে গঙ্গায় তখন ভাসছিল পাকিস্তানি বিমানটির ছিন্ন একটি ডানা, অন্যান্য যন্ত্রাংশ, আর ভাসছিল গ্যাস সিলিন্ডারের মতো লাল কী একটা যেন, মোটরচালিত নৌকোয় এসে বারাকপুরের আমাদের সেনারা, আর গঙ্গার দু’পাড়ে মুহুর্মুহু করতালি দিচ্ছিলেন অগণন মানুষ।’
‘সদ্য-তরুণ বয়সে আমি পড়েছিলাম বুদ্ধদেব বসুর সতর্কবাণী— চাকরি আর বিবাহ কবিতার শত্রু। আর সাংবাদিকতাও কবিতার শত্রু। চিন্তায়-চিন্তায় একেবারে মুষড়ে পড়লাম আমি। ‘জলপাই কাঠের এসরাজ’-এর পর যা লিখি, মনঃপূত হচ্ছিল না আমার।’
‘মালবিকা জানেন, শুধু দাড়ির জন্য নয়, হট্টগোলে আঁতকে উঠে সুবিমল ওই বিকট ‘এলা এলা এল্লা’ হাঁক দিয়েছিলেন বলেই সিলামপুরের রাস্তায় পানের দোকানি তার কাঁচি বিঁধিয়ে হুঙ্কার দিয়েছিল ‘জয় শ্রীরাম!’, ছুটে এসে বিল্টু সামলেছিল, ‘মেরা আঙ্কেল ব্রামহিন হ্যায়, মেরা আঙ্কেল ব্রামহিন…।’’ নতুন গল্প।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.