উপল সেনগুপ্ত গায়ক, সুরকার। এছাড়া কার্টুনিস্ট হিসেবেও তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। ‘চন্দ্রবিন্দু’ গানের দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। অনেক ছবি আঁকেন, বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন, নতুন প্রতিভা তুলে আনায় তাঁর জহুরির চোখ এবং বড়দা-সুলভ উদারতা তাঁকে অনন্য করেছে।
বিমল মিত্র (১৯১২-১৯৯১) বাংলাভাষার অন্যতম জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। প্রথম উপন্যাস ‘ছাই’ রচনার পর তাঁর লেখা ‘সাহেব বিবি গোলাম’ উপন্যাসটি পাঠক জগতে বিপুল ভাবে সমাদৃত হয়। এ ছাড়া ‘বেগম মেরি বিশ্বাস’, ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এবং ‘একক দশক শতক’ উপন্যাসের মধ্যে দিয়ে তিনশো বছরের সমাজজীবনের এক বিস্তৃত কালের চালচিত্র তিনি তুলে ধরেছেন। ১৯৬৮ সালে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কারে সম্মানিত হন।
এব্রাহাম মজুমদার সুরকার, কন্ডাকটর, পিয়ানোবাদক, বেহালাবাদক; বাংলা গানের অন্যতম ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পাশ্চাত্য শাস্ত্রীয়সঙ্গীতের জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষক, বর্তমানে নিজস্ব পাশ্চাত্য সঙ্গীত অ্যাকাডেমির প্রাণপুরুষ। সঙ্গীত শিক্ষকতা করেছেন ক্যালকাটা বয়েজ স্কুল এবং লা মার্টিনিয়ের ফর বয়েজ স্কুলে, তৈরি করেছেন নিজের অর্কেস্ট্রা 'লা অ্যাতেলিয়র দে মিউজিক'। পাশাপাশি, মৌলিক বাংলা গানের ক্ষেত্রে যুক্ত থেকেছেন মহীনের সঙ্গে।
চন্দ্রিল ভট্টাচার্য সাহিত্যিক, গীতিকার, বক্তা। দশটি বই লিখেছেন। ‘চন্দ্রবিন্দু’ গানের দলের সঙ্গে যুক্ত। খুব শখ, কান-বার্লিন কাঁপানো চলচ্চিত্রকার হবেন, কিন্তু সে গুড়ে ধারাবাহিক বালি পতনের ফলে ইদানীং ফ্যান্টাসি ফেঁদেছেন, দ্রুত তিন-চারটে নোবেল পেয়ে সে টাকায় নিজের যুগান্তকারী ছবি বানাবেন।
মৃদুল দাশগুপ্ত কবি, গদ্যকার। এছাড়া লিখেছেন ছোটগল্প, ছড়া। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘সূর্যাস্তে নির্মিত গৃহ’ কবিতা-বইয়ের জন্য পেয়েছেন বাংলা আকাদেমির সুনীল বসু-অনীতা বসু পুরস্কার (২০০০)। ২০১২ সালে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রবীন্দ্র পুরস্কার। সেলিম পারভেজ নামে একাধিক গ্রন্থের প্রচ্ছদও করেছেন নানান সময়ে। ‘শত জলঝর্ণার ধ্বনি’ আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ ছিলেন তিনি।
দেবশঙ্কর হালদার মঞ্চ অভিনেতা, নাট্যপরিচালক, নাট্যচিন্তক, লেখক। দীর্ঘকাল যুক্ত থেকেছেন নান্দিকার, শুদ্রক, গান্ধার এবং ব্রাত্যজনের মতো বিখ্যাত নাট্যদলের সঙ্গে। 'মহুলবনীর সেরেং', 'হার্বার্ট' এবং 'অ্যাক্সিডেন্ট'-এর মতো মূলধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
অংশুমান ভৌমিক সাংস্কৃতিক ভাষ্যকার ও নাট্য সমালোচক। শিক্ষকতা করছেন দু’দশকের ওপর। সংস্কৃতির নানান দিক নিয়ে চর্চার সুবাদে গোটা আটেক বই বেরিয়েছে দেশ-বিদেশ থেকে। ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ ও ‘কৃত্তিবাস মাসিক’-এর নিয়মিত নাট্য সমালোচক। প্যান্ডেমিকের দরুন হুটহাট বাংলাদেশ যাওয়া যাচ্ছে না বলে ইদানীং মনমরা হয়ে পড়েছেন।
শ্রীজাত কবি, ঔপন্যাসিক, গীতিকার। ২০০৪ সালে ‘উড়ন্ত সব জোকার’ কাব্যগ্রন্থের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার এবং কৃত্তিবাস পুরস্কার। ২০১৪-তে ‘কর্কটকান্তির দেশ’ কাব্যগ্রন্থের জন্য বাংলা আকাদেমি সম্মান। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক লেখক কর্মশালায় আমন্ত্রিত হয়েছেন ২০০৬ সালে। ‘এবং সমুদ্র’, ‘ভাষানগর’ ও ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন বিভিন্ন সময়ে।
অনুপম রায় গায়ক, সুরকার, গীতিকার। ২০১০ সালে ‘অটোগ্রাফ’ ছবিতে তাঁর গলায় গাওয়া গান ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ এবং ‘বেঁচে থাকার গান’ তাঁকে জনপ্রিয় করে তোলে। ২০১৫ সালে ‘পিকু’ ছবির সঙ্গীত পরিচালনার মধ্যে দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ এবং ছবিটির আবহসঙ্গীতের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান। শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে ২০১৬ সালে পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সঙ্গীতচর্চার পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা ও ছোটগল্পও লেখেন।
শুভময় মিত্র ফোটোগ্রাফার, চিত্রকর, গদ্যকার, ভ্রমণবিলাসী। কিন্তু তাঁর সর্বাধিক পারদর্শিতা যে কাজে, তা হল, চব্বিশ ঘণ্টা হো-হো করে হাসা ও কোনও কিছুকেই সিরিয়াসলি না নেওয়ার ভঙ্গি করা। খুব মন দিয়ে জীবনটাকে দেখা ও চাখা তাঁর নিত্যকর্ম, এবং সেই জন্যই বোধহয়, কেউ চাকরি, তকমা বা দায়িত্ব দিতে চাইলেই পিছলে বেরিয়ে যান।