হিন্দ রাজাবের একদিন

Scene of The Voice of Hind Rajab

অতই সহজ আমাদের মেরে ফেলা ?
আমাদের পায়ে রাত্রিচক্র ঘোরে
আমরা এসেছি মহাভারতের পর
আমরা এসেছি দেশকাল পার করে


বিজ্ঞাপন

-মা নিষাদ, জয় গোস্বামী

এই একুশ শতকে, আমরা দৃশ্যে বাঁচি। দৃশ্য আমাদের দেখায়, চেনায় সত্যকে। দৃশ্যের অসুখ যেমন আছে, দৃশ্যের সুখও আছে। তা যুদ্ধ, রক্তপাত, ধ্বংসাবশেষের ছোঁয়াচ এড়িয়ে থাকা নিরাপদ আরামে বসে দেখা যায়, সেই দৃশ্য আমাদের অস্বস্তি দেয়, পেড়ে ফেলে, কিন্তু কিছুটা সময়ের জন্যই। তারপর দৃশ্য আর আমাদের জীবন দু’দিকে হাঁটতে শুরু করে। সেই সিরিয়া-লেবাননের সংঘাতের সময় থেকেই কখনও আয়লান কুর্দির ভেসে আসা দেহ, কখনও বা ক্যামেরার সামনে দু’হাত তুলে দাঁড়িয়ে পড়া শিশুর ছবি আমাদের সমসময়ের অভিজ্ঞান হয়ে উঠেছিল। গাজা ভূখণ্ডে, সেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকেই একের পর এক দৃশ্যের জন্ম হয়েছে। যে দৃশ্য আমরা দেখতে চাইনি, কিন্তু সেই দৃশ্য ভেসে এসেছে অনায়াসেই। আর সেই দৃশ্যের অনেকটা জুড়ে ছিল শিশুরা। ফলে গাজায় নির্বিচার শিশুহত্যার অভিঘাত আমাদের মধ্যে যত না তৈরি করেছে তথ্য, তার চেয়ে বেশি তৈরি করেছে ছবি। কিন্তু তিউনিশিয়ার পরিচালক কাথার বেন হানিয়া-র ডকু-ড্রামা ‘দ্য ভয়েস অফ হিন্দ রাজাব’ কোনও দৃশ্যের ওপর ভর করে নয়, কিছুক্ষণের রেকর্ডিং থেকে তৈরি হওয়া। সেই রেকর্ডিংয়ে কী ছিল? এক শিশুর টানা আর্তি, আমাকে বাঁচাও।

ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের কোনও এক রাস্তায় একটি গাড়িতে সে বসে রয়েছে, সেই গাড়িতে তার বাকি আত্মজনদের রক্তাক্ত লাশ। একটি পরিবার সেই গাড়িতে ছিল। গাড়িতে ছিল ছ’বছর বয়সি হানুদ রাজাব হামাদ, বা হিন্দ রাজাব, সঙ্গে তার কিছু আত্মীয়। সেই নিরস্ত্র, পারিবারিক গাড়িটির ওপর ইজরায়েলি সেনা ৩৫৫টি, হ্যাঁ, ঠিক এতগুলোই বুলেট খরচ করেছে। কোনওভাবে বেঁচে গেছে ছ’বছরের হিন্দ রাজাব। সে ফোনে কথা চালিয়ে যাচ্ছে ‘প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট’-এর সদস্যদের সঙ্গে। সে লাল ফিতের ফাঁস জানে না, ভূরাজনীতি জানে না। কিন্তু তাকে যখন রেড ক্রিসেন্টের এক সদস্যা রানা বোঝাতে যায়, ‘তুমি বলতে চাইছ, গাড়িতে তোমার সঙ্গে যারা ছিল, তারা ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, তাই তো?’ সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি বলে ওঠে স্পষ্ট ও তীক্ষ্ণ, ‘না, আমি বলতে চাইছি, গাড়িতে যারা আমার সঙ্গে ছিল, তারা সবাই মরে গেছে।’ মেয়েটি জানে না, ইজরায়েল কেন গাজা-কে ধ্বংস করছে। মেয়েটি জানে না উপনিবেশিকরণের ইতিহাস, হয়তো জানে, হয়তো বা জানে না ‘নকবা’-র রক্তে ভাসা অতীত। মেয়েটি জানে, যুদ্ধ হচ্ছে। মেয়েটি, ওই ছ’বছরের মেয়েটি জানে, মৃত্যু কী। সে জানে, বুলেটের আঘাতে হত্যা করা যায় মানুষকে। কীভাবে জানে? ভিডিও গেম দেখে, সিনেমা দেখে? না। জীবন দেখে। চারপাশে জেগে থাকা, ক্ষতবিক্ষত জীবন দেখে।

আরও পড়ুন: অভিবাসীদের টিকে থাকার লড়াইয়ের দলিল ‘প্রমিসড স্কাই’!
লিখছেন সুমন সাহা…

একটা দেশ, একটা ভূখণ্ড, সেই ভূখণ্ডে নিজের বাড়ি, ঘর। এইটুকু দিয়েই নিরাপত্তার ঘেরাটোপটা তৈরি করবে মানুষ। তার কাছের মানুষদের মধ্যে গুটিসুটি মেরে বড় হয় একটি শিশু। দারিদ্র, কাঁটাতার, নানারকম দাঁতনখের মধ্যেও সে সামান্য ওমটুকু আশা করে। কিন্তু গাজার শিশুরা টানা দেখে যাচ্ছে যে দৈনন্দিনতা, তার মধ্যে কোনও উষ্ণতাই হয়তো স্বাভাবিক নয়, বারুদের ঘ্রাণ ছাড়া।

‘প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট’ দীর্ঘদিনব্যাপী চলা রেড ক্রস আন্দোলনেরই অংশ। ২০২৩-এর ৭ অক্টোবর, হামাস-ইজরায়েল সংঘাতের পর থেকে গাজা-ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে যে নির্বিচার গণসংহার শুরু হয়, তার প্রেক্ষিতেই, ইজরায়েলের ‘ম্যাগেন ডেভিড আদম’ এবং প্যালেস্টাইনের ‘রেড ক্রিসেন্ট’ যৌথভাবে শুরু করে একটি উদ্ধার এবং ত্রাণ প্রকল্প। মানবাধিকার রক্ষা করার হাতে-কলমে প্রয়োগ। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ জুড়ে চিকিৎসা না-পাওয়া মানুষ, খেতে না-পাওয়া মানুষ, মাথার ছাদ-হারানো মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার জন্য। দূর থেকে দেখলে, রেড ক্রিসেন্টের এই কাজ ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারেরই তো অংশ। যুদ্ধ চলাকালে, যুদ্ধের পর আর্তের সেবা তো মিশনারি সেবা-দর্শনেরও অংশ হয়ে ছিল বহুদিন। রেড ক্রসও বহুকাল ধরেই এই কাজ করে চলেছে। আমরা দূরে কোথাও বসে কখনও বা সামান্য অনুদানটুকু পৌঁছে দিয়েছি, কখনও এইসব এনজিও-র আড়ালের রাজনীতি নিয়ে চাট্টি মতামতও রেখেছি। কিন্তু কাথাও বেন হানিয়া-র ছবি ‘রেড ক্রিসেন্ট’-কে এক অন্য আলোয় চেনায়। এই ছবি কোনও যুদ্ধক্ষেত্রে শুরু হয় না। বন্দুকের গুলি ছিটকে যাওয়া, অবিমিশ্র রক্তপাতের গ্র্যাঞ্জারকে অস্বীকার করে এই ছবি শুরু ও শেষ হয় রেড ক্রিসেন্টের কার্যালয়ের অন্দরে।

কাথাও বেন হানিয়া তখন তাঁর আগের ছবি, তথ্যচিত্র ‘ফোর ডটার্স’-এর অস্কার ক্যামপেন নিয়ে ব্যস্ত। মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের, যার ভাবনাবীজ দশ বছর ধরে তাঁর মস্তিষ্কে বাসা বেঁধে আছে। ঠিক সেই সময় বিশ্বজুড়ে আন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ল একটি ছোট্ট ভয়েস রেকর্ড। হিন্দ রাজাব, একরত্তি একটা মেয়ে, গাজা স্ট্রিপের ধ্বংসস্তুপ থেকে ভেসে আসছে তার কণ্ঠস্বর। এইটুকু কাতর আকুতি নিয়ে, ‘ওরা আমার দিকে তাক করে গুলি চালাচ্ছে। আমাকে দয়া করে বাঁচাও।’ বেন হানিয়া রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সম্পূর্ণ রেকর্ডিংটা চান। কয়েক ঘণ্টা জুড়ে খেপে খেপে গোটা সত্তর মিনিট কথা বলেছিল হিন্দ রাজাব। বেন হানিয়া তাঁর স্বপ্নের ছবিটি বানানো থেকে বিরত হন। ঠিক করেন, এই ছবিটিই তাঁকে বানাতে হবে। রেড ক্রিসেন্টের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে একটি তথাকথিত ‘চিত্রনাট্য’ তিনি তৈরি করেন বটে, কিন্তু এই ছবির শরীর চিত্রনাট্য থেকে, চলচ্চিত্রর অন্যান্য শৈলীর ঊর্ধ্বে উঠে যায়। আমরা যা দেখতে পাই ৮৯ মিনিট ধরে, তা ২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারির কয়েকটা ঘণ্টা। ওইদিনই হিন্দ রাজাবের সঙ্গে ফোনে ছিলেন রেড ক্রিসেন্টের রানা, ওমর এবং নিসরিন। প্রথমে ওমর ওই গাড়িরই আরেকজনকে ফোনে পায়, যার কণ্ঠস্বর সামান্য কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢেকে যায় গুলির তীব্র শব্দে। ঠিক তার কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, ওই গাড়িতে আরেকজন জীবিত। ছ’বছরের হিন্দ রাজাব।

রেড ক্রিসেন্টের কাজ যতটা ফুলেল, স্বর্গীয় বলে দূর থেকে মনে হয়, এই ছবি প্রথম থেকেই সেই মোহ-আবরণ ভাঙতে শুরু করে। রেড ক্রিসেন্টে কর্মরতদের ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আদৌ দেবদূত বলে যে মনে করে না, তা এক পর্যায়ে সরাসরি জানিয়ে দেয় চিফ কো-অর্ডিনেটর মেহদি। সে জানায়, বিভিন্ন অভিযানে তাদের নিজেদের সাথীদের খোয়াতে হয়েছে বারবার। সে ইজরায়েলি ট্যাঙ্কের সামনে থাকা একটি শিশুকে বাঁচাতে কি তৎপর নয়? কর্তৃত্ব ভালবাসা একটি খল চরিত্রমাত্র? না কি কূটনৈতিক নানা ফাঁসে সবুজ সংকেত না পেয়ে সে আর তার সাথীদের পাঠাতে চায় না কোথাও? আর একটিও লাশের দায় তার কাঁধে চেপে বসলে, সেই ভার সে আর নিতে পারবে না। তাই যত দেরি হয় সবুজ সংকেত আসতে, যত হানুদ বা হিন্দের মা অধীর হয়ে ওঠেন, হিন্দ যতবার তার শিশুকণ্ঠে বলে ওঠে, ‘আমাকে বাঁচাও। ট্যাঙ্কটা আমার দিকে এগিয়ে আসছে’, বাকিরা যত অস্থির হয়ে পড়ে, তত নিজেকে গুটিয়ে নেয় মেহেদি। নিয়ম ভেঙে অফিসের মধ্যে সিগারেট ধরায়, ছটফটিয়ে নিজেকে বাথরুমের মধ্যে বন্দি করে নেয়।

সবুজ সংকেত না এলে কেন বাঁচানো যাবে না শিশুটিকে? কারণ ইজরায়েলি সেনাই দেবে সেই সংকেত। তারাই অনুমতি দেবে, তাদের টানা আক্রমণে যে আহত, কিন্তু মৃত্যুকে এড়িয়ে যেতে পেরেছে কোনওমতে, তাদের বাঁচানো যাবে কি যাবে না। তারপর ইজরায়েলি সেনা একজন প্যালেস্তিনীয় শিশুকে বাঁচিয়ে তার ছবি তুলে বিশ্বকে দেখিয়ে বলবে, দেখো, আমরা আদৌ অতটা নিষ্ঠুর নই। হয়তো সেই শিশুটি জীবিত থাকলেও আর চোখে দেখতে পাবে না কোনওদিন, তাও বেঁচে তো যাবে। কিন্তু সবুজ সংকেত না এলে ওই রক্ষাকারী বাহিনীও শত্রু। তাদের ওপরেও হামলা চালাতে পারে সেনা। যে কোনও মুহূর্তে। সবুজ সংকেত আসতে দেরি হয়, অস্থির ওমর কাচের ওপর লিখে দিতে থাকে, আট মিনিটে যে মেয়েটিকে বাঁচানো যেত, তাকে বাঁচানোর প্রয়াসেই পেরিয়ে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। হিন্দ রাজাবের কাকাকে প্রবোধ দিতে দিতে মেহেদিও আঁকতে থাকে ওই কাচের ওপর। হিন্দকে সে আঁকে কাঁচা হাতে, তারপর বোঝায়, তাদের সঙ্গে হিন্দের দূরত্বের মাঝে রয়েছে আমলাতন্ত্র, রাষ্ট্রীয় নানা বেড়া। হিন্দ একা হয়ে থাকে। তাকে দেখতে পাই না আমরা, তার গলাটুকু কেবল শোনা যায়। হিন্দ বলে, অন্ধকার নেমে আসছে। আমাকে বাঁচাও। রানা তাকে বলে, আলো তো এখনও আছে। কিন্তু সত্যিই আর আলো থাকে না। অন্ধকার নেমে আসে। হিন্দের কাছে তখনও কেউ পৌঁছতে পারে না। কাচের ওপর মেহেদির আঁকা হিন্দের ওপর বাইরের আলো এসে পড়ে। সেই আলোয় সাদা, সবুজ, লাল, কালো বৃত্ত তৈরি হয়। সেই আলোছায়ায় যেন খণ্ডবিখণ্ড হয়ে, আবছা যায় স্বাধীন প্যালেস্তাইনের পতাকা।

একটা দেশ, একটা ভূখণ্ড, সেই ভূখণ্ডে নিজের বাড়ি, ঘর। এইটুকু দিয়েই নিরাপত্তার ঘেরাটোপটা তৈরি করবে মানুষ। তার কাছের মানুষদের মধ্যে গুটিসুটি মেরে বড় হয় একটি শিশু। দারিদ্র, কাঁটাতার, নানারকম দাঁতনখের মধ্যেও সে সামান্য ওমটুকু আশা করে। কিন্তু গাজার শিশুরা টানা দেখে যাচ্ছে যে দৈনন্দিনতা, তার মধ্যে কোনও উষ্ণতাই হয়তো স্বাভাবিক নয়, বারুদের ঘ্রাণ ছাড়া।

সবুজ সংকেত পাওয়ার পর হিন্দকে উদ্ধার করতে এগিয়ে চলা অ্যাম্বুলেন্স যেখানে আটকে যায়, সেখানে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে আছে। কেউ জানে না, সেই ভিটে যারা হারিয়েছে, তারা আসলে কোথায়। শুধু ওই ভাঙা বাড়িটুকু পড়েছিল। এর কিছুদিন পর যুদ্ধবিরতি হবে, তখন কাছেপিঠেই পাওয়া যাবে একটি দোমড়ানো-মোচড়ানো অ্যাম্বুলেন্স, একটি বুলেটে শতচ্ছিন্ন গাড়ি, যেখান থেকে কেবল উঁকি দেবে একটি স্কুলব্যাগ।

এই ছবির কোনও স্পয়লার নেই। যারা এই ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত, তারা জানে, হিন্দ রাজাব বাঁচেনি। সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেও রেসকিউ টিমের অ্যাম্বুলেন্স ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে ইজরায়েলি হানাদার ট্যাঙ্কের আঘাতে। সেদিন সকাল থেকে ফোনে কথা বলেছে হিন্দ রাজাব। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার সে বলেছে, আমাকে বাঁচাও, আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও। সন্ধে সাড়ে সাতটা থেকে তার গলাটা নিখোঁজ হয়ে যায়। পড়ে থাকে তার কয়েকটা হাসিমুখের স্থিরচিত্র। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে চেয়েছিল ছ’বছরের মেয়েটা। এর চেয়ে বড় অপরাধ আর হয়? মেয়েটা সমুদ্র ভালবাসত। সুমুদ, মানে প্রতিরোধ, সেই প্রতিরোধেই সমুদ্রে ভেসে ওঠে ফ্লোটিলা। সেই সমুদ্রের আহ্বানে লুকিয়ে থাকে প্যালেস্টাইনের আবহমান গণআকাঙ্ক্ষা, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি/ প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’।

‘রিডাউটেবল’ বা ‘গোদার মন আমুর’ ছবির একটি দৃশ্যে, একটি যুদ্ধবিরোধী মিছিলে হাঁটাকালীন এক তরুণী জিজ্ঞেস করে গোদারকে, এই আপনি কবে আবার হাসির ছবি বানাবেন বলুন তো? গোদারের উত্তর, যেদিন ভিয়েতনাম, প্যালেস্টাইন আর ইয়েমেনে মানুষ আবার হাসতে পারবে, সেদিন। এই ছবি, ‘দ্য ভয়েস অফ হিন্দ রাজাব’-কে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন ব্র্যাড পিট, হোয়াকিন ফোনিক্স থেকে শুরু করে আলফানসো কুয়ারোঁ, জেমাইমা খানের মতো ‘গ্লোবাল’ তারকারা। বাংলাদেশ কনসার্টের মতোই এও এক সমস্বর। কিন্তু এই ছবি কি আমরা আরও দেখতে চাই? এই বাস্তব যতদিন থাকবে, এমন ছবিও হয়তো থেকে যাবে। কিন্তু হয়তো আমরা চাইব না, আরও একটা হিন্দ রাজাবের মতো কারও গল্প কোনও পরিচালককে বিব্রত করে তুলুক। হিন্দ রাজাবরা সমুদ্রে পা ডোবাক। প্যালেস্টাইন, গাজা স্ট্রিপের ভেঙে পড়া বসতবাড়িগুলো নতুন করে গড়ে উঠুক। কীভাবে তা হবে? কেউ জানে না। ওমর এক জায়গায় তার এক সাথীকে বলে, তুমি স্পাইডারম্যান হয়ে যাও, মেয়েটাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসো। আমরা জানি, গাজায় কোনও সুপারহিরো নেই। হিন্দ রাজাব আছে। তারা হয় মরে, নয় বাঁচে। বেঁচে থাকার চেয়ে বড় সুপার-পাওয়ার আর কী হতে পারে?