ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • ছায়াবাজি : পর্ব ১০


    চন্দ্রিল ভট্টাচার্য (February 17, 2023)
     

    প্রশ্নের ডাইনি

    বানশি’ মানে হল আইরিশ লোককথায় এক ধরনের ডাইনি, যারা কেঁদে বা আর্তনাদ করে কোনও মৃত্যুর পূর্বাভাস দেয়। ‘বানশিজ অফ ইনিশেরিন’ (চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: মার্টিন ম্যাকডোনা, ২০২২) একটা ছবি, যা প্রায় লোককথার ভঙ্গিতে বলা। ইনিশেরিন একটা কাল্পনিক দ্বীপ, যেখান থেকে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায় প্রায়ই, কারণ আইরিশ গৃহযুদ্ধ চলছে। সময়টা ১৯২৩-মতো। দ্বীপে খুব কম লোকই থাকে, আমরা দেখি একটি লোককে— পরিক— যে প্রতিদিন দুপুর দুটো নাগাদ তার প্রিয়বন্ধু কম-এর সঙ্গে পাব-এ বসে মদ খায়। আচমকা এক দুপুর দুটোয়, কম তার সঙ্গে বন্ধুত্ব ভেঙে দেয়। অন্যরাও অবাক, কারণ তারা ছিল হরিহরাত্মা। কম বলে, তার আর পরিক-কে ভাল লাগে না, কারণ পরিক খুব বোকা আর বোরিং। কম এবার থেকে মন দেবে তার সঙ্গীতের দিকে, সে খুব ভাল সুর বানাতে পারে, বেহালার মতো একটা যন্ত্র বাজাতে পারে, সে এমন সব সুর বানিয়ে যাবে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে থেকে যাবে, আর সে-কাজের জন্যে তার এই ঢিমে ও টিমটিমে বন্ধুটির হাবিজাবি-বুকনি থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিতে হবে। পরিক তো এসব কথার মাথামুন্ডুই বুঝতে পারে না, পরিকের বোনও একবার তর্ক করতে যায় কম-এর সঙ্গে। কিন্তু কম-এর সেই এক গোঁ। পরিক তবু বিভিন্ন ছুতোয় কথা বলতে যায়। শেষমেশ কম এত বিরক্ত হয়, সে বলে, যতবার পরিক তার সঙ্গে কথা বলতে আসবে, ততবার কম নিজের একটা করে আঙুল কেটে ফেলবে। শুনে সবাই স্তম্ভিত হয়ে যায়, এবং সত্যি-সত্যি পরিক কথা বলতে গেলে, কম তা-ই করে। পরিকের বাড়ির সদর দরজায় নিজের কাটা আঙুল ছুড়ে ফেলে, চলে আসে। 

    কাটা আঙুল ফেরত দিতে গিয়ে পরিকের বোন কম-কে বলে, আরে, তুমি তো এই করতে গিয়ে তোমার নিজের বাজনার ক্ষমতাটাকেই নষ্ট করছ, আঙুল না থাকলে তুমি বাজাবে কী করে? কম বলে, সেটাই তো আসল ব্যাপার। ওকে বোলো, এরপর যদি আর কথা বলতে আসে, আমি আমার এই হাতের আর চারটে আঙুলই একবারে কেটে ফেলে দেব। পরিক এমনিতে ভারি ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত, কিন্তু একটু বোকাসোকা। একটা দৃশ্যে সে মদটদ খেয়ে অনেকটা মাতাল হয়ে পাব-এ কম-কে বলে, আগে তুমি ভাল লোক ছিলে, এখন তা নও। কম বলে, ভাল লোককে ইতিহাসে কে কবে মনে রেখেছে? লোকে মনে রাখে প্রতিভাবান লোককে। যেমন মোৎজার্ট। পরিক বলে, কেন, আমি আমার বাবাকে, মা’কে মনে রেখেছি, আমার বোনকে মনে রাখব চিরকাল, কারণ ওরা ভাল। কম তার কোনও উত্তর দেয় না, কিন্তু আমরা আন্দাজ পাই, হয়তো এই ছবি জিজ্ঞেস করছে, আর্টের খাতিরে মানুষ-বিযুক্ত হওয়া ঠিক না ভুল? অনেক মানুষ আমি মরে যাওয়ার পরেও আমাকে মনে রাখুক— এই লোভে যদি বেঁচে থাকাকালীন অনেক কাছের মানুষকে সরিয়ে দিই আর তাদের প্রীতির অপমান করি, তাহলে আমি জিতলাম না হারলাম?

    তবে প্রশ্ন এতে থেমে থাকে না। ডমিনিক নামে আরেক বন্ধু আছে পরিকের, কমবয়সি ছেলে, যাকে তার বাবা প্রচণ্ড পেটায়। বাবাটা আইনরক্ষক, নিষ্ঠুর ও অভদ্র, তার এই ছেলে-পেটানোর খবর প্রকাশ্যে বলে পরিকও তার কাছে রাস্তার ওপরেই মার খেয়েছে, তখন কম তাকে নিঃশব্দে, কথা না বলে, গাড়িতে তুলে কিছুদূর দিয়ে গেছে, কিন্তু পরিক কাঁদছে দেখেও তার সঙ্গে কথা বলেনি বা বন্ধুত্ব জোড়া লাগায়নি, বরং একটা এমন জায়গায় গাড়ি থেকে নেমে গেছে, যেখানে তার রাস্তা একদিকে, আর পরিকের অন্যদিকে। ডমিনিকের কাছে পরিক মাঝে মাঝে তার মনের দুঃখ বলে। একদিন বলে, একটা নতুন লোকের সঙ্গে কম-এর বন্ধুত্ব হচ্ছে দেখে, তাকে সে মিথ্যে করে বলেছে যে টেলিগ্রাম এসেছে, তার বাবা অসুস্থ, একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। তখন সে লোকটা তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে গেছে। শুনে ডমিনিক বলে, তোমাকে আমি পছন্দ করতাম, কারণ তুমি সবার মধ্যে সবচেয়ে ভাল। এখন তো দেখছি, তুমি আর ভাল নেই। অন্যদের মতোই হয়ে যাচ্ছ। ফলে আমরা নতুন একটা প্রশ্নের মুকোমুখি পড়ে যাই। তা হল, একটা মানুষের নিষ্ঠুর ব্যবহার কি অন্য মানুষের নিষ্ঠুর ব্যবহারকে টেনে আনে? যদি আনে, তবে অন্য মানুষটার দায় বেশি, না কম?

    তবে কি ছবিটা আয়ারল্যান্ডের গৃহযুদ্ধেরই একটা রূপক উপস্থাপনা? না কি মানুষের অহং-এর ঝঞ্ঝাটের একটা চাপান-উতোরময় আখ্যান? না কি একটা অক্ষমার বল গড়িয়ে দিলে তা কিছুতে থামে না, আরও আরও কর্কশ আবর্জনা জড়ো করে ফেঁপেফুলে হয়ে ওঠে উগ্র হিংস্রতার বিরাট বড় পুঁটলি— এই সতর্কীকরণ? যে-লোকটা ছবির গোড়ায় ছিল গাঁযের বুদ্ধুরাম গোছের, সে হয়ে উঠল এমন নিষ্ঠুর যে কিছুতেই সে রোধ করতে চায় না ধ্বংসের চাকা, যদ্দিন না সে নিজে বা তার একদা-বন্ধু একেবারে নিকেশ হযে যাচ্ছে?

    এবং এতক্ষণ যে-বৃদ্ধাকে আমরা দেখছিলাম শুধু এক নাক-গলানো বিরক্তিকর দ্বীপবাসী হিসেবে, প্রায়ই দেখা দেয় আর তাকে এড়াতে পরিক বা তার বোন পাঁচিলের আড়ালে লুকোয়, সে পরিককে জানায়, শিগগির এখানে একটা মৃত্যু হতে চলেছে, অবশ্য দুটোও হতে পারে। তখন আমরা খেয়াল করি, তাকে দেখতে তো ডাইনির মতোই বটে। আর তার হাতে একটা বিরাট বাঁকা লাঠি, অনেকটা মৃত্যুর হাতের লম্বা লাঠির (যার মুখে কাস্তে বসানো) মতো? তবে কি সে-ই বানশি, এই দ্বীপের চরম দুর্ঘটনা সম্পর্কে সে জানতে পারে ও জানিয়ে দেয়? 

    এদিকে পরিক গেছে ফের কম-এর সঙ্গে কথা বলতে, কারণ সে মাতাল হয়ে কম-কে যাচ্ছেতাই বলার পর, কম বলেছিল (পরিক ডমিনিকের কাছে পরে শুনেছে), এখন বরং ও বেশ আকর্ষক কথাবার্তা বলছে, আমার তো নতুন করে ওকে পছন্দ হচ্ছে। পরিক গিয়ে কম-কে বলে, কী মোটুরাম, কেমন চলছে? তারপর, তোমার সেই গানটা কদ্দূর? শেষ হল? কম জানায়, তার গানটা শেষ হয়েছে, ওটার নাম হচ্ছে ‘বানশিজ অফ ইনিশেরিন’, পরিক বলে, আজকালকার দিনে বানশি তো আর নেই। কম বলে, ‘শ’-র অনুপ্রাসটা তার ভাল লেগেছে। তাছাড়া বানশি হয়তো আছে, তবে তারা আর সতর্ক করে না, চুপ করে বসে বসে দ্যাখে, মজা পায়। পরিক বলে, তোমার গানটা যে শেষ হয়েছে, তা উদযাপন করার জন্যে পাব-এ গিয়ে দু’পাত্তর অর্ডার দিই? কম বলে, দাও। তারপর পরিক সেই পাব-এ বসেই থাকে, কম-এর দেখা নেই। অনেক পরে, তার বোন তাকে ডাকতে যায়, একটা খবর দেওয়ার আছে। খবরটা হল, বোন এই দ্বীপ ছেড়ে চলে যাচ্ছে, সে সারাক্ষণ পড়াশোনা করত, এখন একটা লাইব্রেরিতে কাজ পেয়ে গেছে। এই কথা বলাবলি করতে-করতে দুজন বাড়ি ফেরার সময় দ্যাখে, কম ফিরে আসছে ওদের বাড়ি থেকে, তার একটা হাতের কোনও আঙুলই নেই। অর্থাৎ, সে আর চারটে আঙুল কেটে ফেলেছে, পরিক তার সঙ্গে কথা বলতে গেছিল বলে, আর সেগুলো ছুড়ে দিয়ে গেছে ওদেরই সদর দরজায়, সেগুলো পড়ে আছে এখানে-ওখানে। এরপরেই বোন নৌকো করে চলে যায়, আর পরিক বাড়ি ফিরে দ্যাখে, তার প্রিয় গাধা, যাকে ভীষণ ভালবেসে সে প্রায়ই ঘরে ঢুকতে দিত তার বোনের প্রবল বাধা সত্ত্বেও, সে কম-এর চারটে কাটা আঙুলের একটা খেতে গিয়ে গলায় আটকে মরে গেছে। বেশ কিছুক্ষণ সে গাধাটাকে নিয়ে বসে থেকে, তারপর তাকে সমাধি দিয়ে, পাব-এ যায়, যেখানে কম রক্তাক্ত হাতে তাল দিচ্ছে, টেবিলময় স্বরলিপিময় রক্তের ফোঁটা, লোকে স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছে। কম পরিককে দেখে বলে, আর তোর ক্ষমা চাওয়ার দরকার নেই, এ একরকম মুক্তি পেয়েছি আমি, এবার আমরা তাহলে এ-ব্যাপারটা শেষ করি, আর কখনও আমাদের দেখা না হওয়াই ভাল, তখন কঠোর মুখে পরিক উত্তর দেয়, শেষ নয়, এবার শুরু হবে। আমার গাধা মরে গেছে তোর আঙুল খেয়ে, তোর বাড়িতে কাল দুপুর দুটোয় আমি আগুন ধরিয়ে দেব, তুই ভেতরে থাক আর না-ই থাক। শুধু কুকুরটাকে বাইরে রাখিস, কারণ ওর প্রতি আমার কোনও রাগ নেই। পারলে আমাকে থামাস। থামাবার কোনও চেষ্টাই অবশ্যই কম করে না, সে কুকুরটাকে বাইরে রেখে শান্ত হযে ঘরের ভেতরে বসে থাকে দুটোর সময়, পরিক আগুন লাগিয়ে চলে যায়। সন্ধের দিকে আইনরক্ষক জ্বলন্ত বাড়ি দেখে রেগে পরিকের বাড়ির কাছে যাচ্ছিল, কিন্তু তাকে ডেকে নিয়ে ডাইনির মতো বৃদ্ধাটি দেখায়, জলে ভাসছে তার ছেলে ডমিনিকের মৃতদেহ। কয়েক দৃশ্য আগে ডমিনিক অবশ্য পরিকের বোনকে প্রোপোজ করেছিল, সে মৃদুভাবেই ফিরিয়ে দেয়। 

    পরের দিন সকালে পরিক এসে দ্যাখে, সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে আছে কম, পরিক তার পাশে গিযে দাঁড়ায়। কথা হয়। কম বলে, আমার বাড়িটা গেল। এবার তাহলে শোধবোধ, তাই তো? পরিক বলে, বাড়ির মধ্যে তুই থাকলে, ব্যাপারটা শেষ হত। কম বলে, তোর গাধাটা মরে গেছে বলে আমি দুঃখিত। পরিক বলে, আমার কিচ্ছু এসে যায় না। কম একটু পরে বলে, দিনদুই কোনও গুলিগোলার আওয়াজ শোনা যায়নি, তার মানে গৃহযুদ্ধ থামছে। পরিক উত্তর দেয়, ও আবার শুরু হযে যাবে। কিছু ব্যাপার কখনও থামে না। আর সেটাই ভাল। এরপর ও হেঁটে চলে যায়, কম ওকে কুকুরটার খেয়াল রাখার জন্য ধন্যবাদ জানায়, আর একটা অদ্ভুত শটে আমরা দেখি, সেই ডাইনি-বৃদ্ধা বসে-বসে, কোলে বিরাট লাঠিটা নিয়ে, এদের দুজনকে দেখে চলেছে। আমাদের মনে পড়তে পারে, কম বলেছিল, ইদানীং বানশিরা সতর্ক করে না, বসে মজা দ্যাখে।

    ছবিটা ব্ল্যাক কমেডির সুরে বাঁধা। ক্রমে একটা শান্ত নির্বিবাদী লোক কীভাবে হিংস্র ও প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে, একটা চমৎকার বন্ধুত্ব কীভাবে একেবারে মিটমাটের সম্ভাবনাহীন শত্রুতায় গড়িয়ে যায়, কিন্তু এমন ভয়ানক পরিণতির কোনও কারণ বা যুক্তিই বোঝা যায় না— তা নিয়ে গল্প। তবে কি ছবিটা আয়ারল্যান্ডের গৃহযুদ্ধেরই একটা রূপক উপস্থাপনা? না কি মানুষের অহং-এর ঝঞ্ঝাটের একটা চাপান-উতোরময় আখ্যান? না কি একটা অক্ষমার বল গড়িয়ে দিলে তা কিছুতে থামে না, আরও আরও কর্কশ আবর্জনা জড়ো করে ফেঁপেফুলে হয়ে ওঠে উগ্র হিংস্রতার বিরাট বড় পুঁটলি— এই সতর্কীকরণ? যে-লোকটা ছবির গোড়ায় ছিল গাঁযের বুদ্ধুরাম গোছের, সে হয়ে উঠল এমন নিষ্ঠুর যে কিছুতেই সে রোধ করতে চায় না ধ্বংসের চাকা, যদ্দিন না সে নিজে বা তার একদা-বন্ধু একেবারে নিকেশ হযে যাচ্ছে? সেই বন্ধু আঙুল (মানে, ক্ষমতা), সঙ্গীত (মানে, সাধনা), আবাস (মানে, আশ্রয়), সবই তো হারিয়েছে। আর সে নিজে হারিয়েছে তার বোন, গাধা এবং ডমিনিক-বন্ধুকে। সে জগতে এখন পুরোপুরি নিঃসঙ্গ। বোন অবশ্য চিঠি লিখেছিল, তাকে নিজের কাছে নিয়ে যাবে বলে। লিখেছিল, ওখানকার একাকিত্ব আর তিক্ততা থেকে বেরিয়ে চলে আয়। পরিক মিথ্যে করে লিখেছে, গাধাটাকে ছেড়ে যেতে পারব না, জায়গাটাকে ছেড়েও না। আর ডমিনিক যে মরে গেল, তা কেন? সে কি মরে গেছে পরিকের বোনকে হারানোর শোকে? না বাবা তাকে অত্যাচার করে বলে? না পরিক-ও অন্যদের মতো নিষ্ঠুর হয়ে গেল বলে? না সব ক’টাই তার আত্মহত্যার কারণ? না কি সে এমনিই পা ফসকে জলে পড়ে গেছে? কম যে আঙুলগুলো কেটে ফেলল, তা কি আসলে সে মোৎজার্ট হতে পারবে না এই উপলব্ধির চাবুকে? ফাদারের কাছে কনফেশন বক্সে যতবার সে যায়, ফাদার তাকে জিজ্ঞেস করে, হতাশা কি এখনও চলছে? মাঝে মাঝে সে বলে, হ্যাঁ চলছে। এই হতাশা কীসের? কেন সে বলে, আঙুলগুলো সব চলে গেছে, এটা তার কাছে একটা মুক্তি? হয়তো একটা গৃহযুদ্ধ এইরকমই হয়। তার কোনও আগা বা শেষ খুঁজে পাওয়া যায় না, কোত্থেকে শুরু হল জানতে পেরে অনেকে অবাক হয়ে ভাবে এ তো একটা হাস্যকর বা উদ্ভট কারণ, একটা নিতান্ত হাবিজাবি উৎস। হয়তো বেশ কিছু রক্তক্ষয়ের পর মনে হয় এদের কেউ স্রেফ মর্ষকামী আত্মহানির নেশায় মেতেছে, আর অন্য কেউ প্রতিক্রিয়ায় বোধহীন অতিরেকের মেশিন লাগিয়ে নিয়েছে। আর আশেপাশে কিছু কো-ল্যাটারাল লাশ ভাসছে। আবার, ছবিটাকে রূপক হিসেবে না দেখে, স্রেফ এই গল্পটাকেই দেখব কি? একজন বৃদ্ধা অপ্রিয় কথা প্রায়ই কটকট করে বলছে বলেই তাকে ডাইনি বলে ভাবব কি? অজস্র প্রশ্ন নিয়ে ছবিটা আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। ইদানীং উত্তর ও সমাধান সাপ্লাই করতে ব্যগ্র শিল্প-পরিবেশনের বাজারে এ-ধরনের হলিউডি ছবি বিরল।

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook