সাক্ষাৎকার: স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়

Representative Image

এক যুগ পেরিয়ে গেছে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের মধ্যে নেই। ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনসের ন-তলার ফ্ল্যাট এখন বিষণ্ণ, থমথমে। এক সময়ে ৭ সেপ্টেম্বর, এই বাড়ি গমগম করত সুনীল-অনুরাগীদের ছোঁয়ায়। আর এখন? ধুলোয় মোড়া লেখার টেবিল, বইয়ের তাকে শূন্যতা। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ৯২ তম জন্মদিনে স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডাকবাংলা.কম পত্রিকার তরফে কথা বললেন পৃথ্বী বসু ও অর্পণ ঘোষ।

সারাজীবন এত আড্ডাময় জীবন কাটিয়েছেন সুনীল ও তাঁর বন্ধুবৃত্তে, তার তো কিছুই অবশিষ্ট নেই আর! এখন কীভাবে দিন কাটে আপনার?

এখন বড় একা লাগে। প্রতিদিন ভগবানকে ডাকি, আমাকে নিয়ে নাও, কিন্তু ভগবান আমার প্রতি সদয় নন, বুঝতে পারি। এখন যত বয়স হচ্ছে, মেজাজটাও কীরকম যেন হয়ে যাচ্ছে। যত একা হয়ে যাচ্ছি, প্রায়ই নানা কারণে মেজাজ গরম করে ফেলছি। কিন্তু পরে তা নিয়ে অনুশোচনা হয়। গতজন্মে আমি নিশ্চয়ই ভাল মানুষ ছিলাম না। সেজন্যই বোধহয় আমাকে এত যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। এখন মনে হয়, মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার চাইতে, যত আগে চলে যেতে পারব, ততই ভাল।

বই পড়েন এমনি?

আমি সারাজীবন চোখ নিয়ে ভুগেছি। একসঙ্গে একটানা পড়ে উঠতে পারি না। এই যেমন নানা পূজাবার্ষিকী কেনা রয়েছে, এখনও একটাও শেষ করে উঠতে পারিনি। যেহেতু একটা চোখে একদমই ঝাপসা দেখি, তাই মনে হয়, আরেকটা চোখে বেশি চাপ দিলে, যদি সেটাও দুর্বল হয়ে যায়! সব সময়ে ভয় পাই যে, অন্য চোখটার কী অবস্থা হবে।

গান শোনেন?

হ্যাঁ, গানটা শুনি…

রবীন্দ্রসংগীত?

রবীন্দ্রনাথের গানই বেশি, কিন্তু তাছাড়াও অন্য নানা পুরনো আমলের গান শুনি।

সুনীল তো একজন চমৎকার পাঠক ছিলেন। ওঁর বই কেনা, বই পড়া— এমন কোনও স্মৃতি যদি ভাগ করে নেন।

অনেক জিনিসই আজকাল ভুলে যাই। সুনীলের সঙ্গে তো সব জায়গায় সব সময়ে যেতাম না; তবু, এখানে বা বিদেশে, নানা সময়ে ওকে নানা বইপত্র কিনতে দেখেছি।  ধরা যাক, একসঙ্গে এমন কোনও জায়গায় গেলাম, সেখানে শুধু বই আর বই। আর ও বই কিনতও প্রচুর। আবার ধরো কোথাও একটা বসার জায়গা পেয়ে গেল, সেখানে বসেই ম্যাগাজিন পড়তে শুরু করে দিল…

আরও পড়ুন : দূরদর্শনের অনুষ্ঠানগুলো হয়ে উঠতে পারত জাতীয় সম্পদ, যা আজ হারিয়ে গিয়েছে!
সাক্ষাৎকার। অভিজিৎ দাশগুপ্ত…

আপনাকে কোনও বই এগিয়ে দেওয়া কিংবা এই ধরনের বই পড়ো বলে কোনও বই পড়তে বলা— এরমকম কোনও স্বভাব ছিল ওঁর? 

হ্যাঁ, এগুলো তো বেশ কয়েকবার হয়েইছে। নানা বিষয়ের বই এগিয়ে দিয়ছে। পরেরদিকে ও নিজেও যেমন ব্যস্ত হয়ে পড়ল, আমিও তেমন ব্যস্ত হয়ে গেলাম। বিশেষ করে, বিয়ের পর আমার বই পড়ার সময়টা কমে গেল। এক সময়ে ফাঁকি মেরে লেখাপড়া করলেও, নানা বিষয়ের বই পড়তাম। সেটা আস্তে-আস্তে কমে এল। বই পড়লে তো নানা বিষয়ের জ্ঞান হয়, বলো! এদিকে বিয়ের পর বাড়িতে মানুষ বলতে তো শুধু আমি আর সুনীল। বাড়িতে নানা অতিথি আসতেন, তাঁদেরকে আপ্যায়ন করা, সব মিলিয়েই আমার সময়টা কমে এল। ছেলে হওয়ার পর আরও। সুনীলও প্রায়-ই নানা জায়গায় কাজে বেরিয়ে যেত…

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখার টেবিল

অনেক রাত করে ফিরতেন— আপনি লিখেছেন আপনার বইতে। 

হ্যাঁ, তা তো ফিরতই। এখন হল কী, ওর যত খ্যাতি, প্রসার বাড়তে শুরু করল, ওকে আরও কম করে পেতে শুরু করলাম। পাশাপাশি, আমার আরও এক অভিমান, ছেলেকে আমি বা সুনীল— কেউই বেশি সময় দিতে পারিনি। ছেলেরও একটা খারাপ লাগার জায়গা ছিল; ও ওর বাবা-মাকে বেশি সময় পায়নি নিজের মতো করে।

আপনাদের বই পড়ার রুচিটা মিলত? ওঁর পছন্দ বা আপনার পছন্দ…

হ্যাঁ, তা খুবই মিলত। কিন্তু ওই যে, পরে সময় বড় কমে এল।

পুরনো বন্ধুবান্ধব যাঁরা ছিলেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা আসেন? সমসাময়িক বন্ধুদের মধ্যে তো শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ই বোধহয় একমাত্র আছেন এখনও…

হ্যাঁ, উনি ছাড়া সামান্য-ছোট কবিরাও কেউ-কেউ আছেন। তবে সংখ্যায় খুবই কম তাঁরা। মাঝে-মাঝে কোনও অনুষ্ঠানে বা সভায়, তাঁদের সঙ্গে অল্পবিস্তর দেখাসাক্ষাৎ হয়। শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের ছেলে, দিব্যেন্দু পালিতের ছেলে— তাঁদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথাবার্তা হয়। তাঁদের অনেকেই এখন আর এখানে থাকেন না, বিভিন্ন রাজ্য-দেশে… কেউ ব্যাঙ্গালোর, কেউ-বা সিঙ্গাপুর এমন নানা জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেছে।

সুনীলের যে বইয়ের সংগ্রহ, সেগুলো এখন কোথায়? সেগুলো সংরক্ষণের জন্য কি কোনও বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে?

সব এখানে, আমাদের ‘পারিজাত’-এই রয়েছে। কেউ বা কোনও প্রতিষ্ঠান যদি প্রতিশ্রুতি দেন, এই বইগুলি যথাযথ সংরক্ষণ করবেন, তাঁদের আমরা দিয়ে দেব। কিন্তু এখন সুনীলের জন্য কেউ কিছু করতে চান না। মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, যা গয়না আমার কাছে আছে, সেগুলো বিক্রি করে কোথাও একটা জায়গা কিনে বাড়ি করে বইগুলোর সুরাহা করি। কিন্তু আমার কাছে বিক্রি করার মতো কোনও গয়নাও তো নেই!

কেউ যদি আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বইপত্র সব নিয়ে গিয়ে কোনও একটা  জায়গা তৈরি করে রাখেন, তাঁকে আপনি দিয়ে দেবেন?

হ্যাঁ, নিশ্চয়ই! এমনকী আমি চাই ওর ব্যবহৃত জিনিসপত্র— লেখার জিনিস, জামাকাপড়— যা ভালবাসত, তা যদি কোনও মিউজিয়াম করে রাখা যায়। কিন্তু তার জন্য তো জায়গা চাই। আমি তো আর নিজে সারাজীবনে তেমন কিছু উপার্জন করলাম না। সামান্য কয়েকদিন স্কুলে পড়িয়ে বা দু-চারটে অনুবাদ করে তেমন উপার্জন হতে পারে না। কিন্তু আমি ওর জিনিসগুলোর সত্যিই কোনও সুরাহা করতে চাই। এখন কথা হল, আমাকে কেউ কখনও কোনও অফার দেয়নি যে তাঁরা এগুলো নিয়ে সংরক্ষণ বা এই জাতীয় কিছু করবেন।

এই বাড়িতে করতে পারবন না?    

না, এই বাড়িতে করা সম্ভব নয়, নানা অসুবিধা আছে। তাছাড়া অনুমতিও হয়তো পাব না। অনেকেই বলেন শান্তিনিকেতনের বাড়িতে করার কথা। কিন্তু আমি সম্মত হই না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জায়গায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জিনিস কখনও-ই থাকতে পারে না। শান্তিনিকেতন তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি-বিজড়িত। সেখানে সুনীলের জিনিস সংরক্ষণ করাটা ধৃষ্টতা। আমি চাই যাদবপুর, সোনারপুর বা ওইদিকে কোথাও করা। ‘পারিজাত’ থেকে সেটা একটু হলেও কাছে হবে। কিন্তু আমি আর কতদিন…

আচ্ছা আমরা আপনার লেখা বইতে পড়েছিলাম, এক সময়ে ‘অন্তরা’-র মতো সাংস্কৃতিক চক্র চালাতেন আপনি। ফরাসি ভাষাও শিখেছেন বহুদিন। কখনও মনে হয়নি, সুনীল-বৃত্তের বাইরে গিয়ে কিছু করি?  

সেটা এখনও ভাবি, যদি এখনও কিছু করতে উঠতে পারি! কিন্তু সমসাময়িক বন্ধুবান্ধব— প্রায় সকলেই চলে গেছেন। সে-সময়ে সত্যিই  কিছু করে উঠতে পারিনি আলাদা করে। নানা ব্যস্ততা, সব মিলিয়েই।  আর ওই যে বললাম, একটা আক্ষেপ ছিলই ছেলেকে বেশি সময় দিতে পারিনি। এই আফসোস সুনীলেরও ছিল। আমার এখন এত কষ্ট হয়, ভাবলে! ছেলে হয়তো আমাদের থেকে একটু সময় দাবি করছে, মেরেই দিলাম হয়তো। এখন বুঝি, দোষটা আমারই। মনে পড়লে, একলা-একলা ভীষণ কাঁদি! অনুশোচনা হয়…

অনুবাদ করছেন কখনও ফরাসি থেকে?

হ্যাঁ করেছি, তবে তা সংখ্যায় এত কম, বলার মতো কিছু নয়। আর সত্যি বলতে কী, আমি যে খুব দুর্দান্ত ফরাসি জানতাম, এমনটাও নয়। একটা সময়ে কেউ কোনও ফরাসি শব্দ বুঝতে না পারলে, জিজ্ঞেস করত, আমি বলে দিতাম। এখন তো বয়সের ভারে ইংরেজিরই অনেক শব্দ বুঝতে পারি না!

সুনীলের গল্পে বা উপন্যাসে যে-সমস্ত নারীচরিত্ররা এসেছেন, তাদের মধ্যে কে আপনার সবচেয়ে প্রিয়? কেই-বা নয়? এবং কেন? কখনও সুনীলকে কোনও চরিত্র নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন? 

আজকাল যেভাবে শারদীয়া ছাপা হয়, একটা সময়ে তো সেভাবে ছাপা হত না, তখন পত্রিকা থেকে প্রুফ দেখার জন্য পাঠানো হত প্রেসকপি। তাই আমার উপন্যাস বা গল্পগুলো আগেই পড়া হয়ে যেত। তখন অনেক সময়ে ওকে বলেছি, এই জায়গাটা আমার ভাল লাগছে না, এটা অন্যভাবে লিখতে পারতে। তবে আমার কথা শুনে যে বদলে দিত তা নয়। কখনও আবার মজা করে বলত, তুমি আমার কঠোর সমালোচক হয়ে যাচ্ছ দিনে-দিনে। পরে আস্তে-আস্তে সেভাবে প্রুফ দেখার ব্যাপারটাই উঠে গেল। ফলে, আমার আর বাড়িতে বসে আগে পড়ার উপায় রইল না। তবে তোমরা শুধু নারী চরিত্রের কথা বললে কেন?  যেহেতু সুনীল, তাই না? ওর এক-একটা পুরুষচরিত্রও কিন্তু মনে রাখার মতো! তাছাড়া অনেক তরুণ কবিকেও সুনীল স্নেহ করত। তাঁরা নারীদের থেকে সংখ্যায় বরাবরই বেশি…

শান্তিনিকেতন যান মাঝে-মাঝে?

অনেকদিন যাওয়া হয়নি। গেলে গাড়িতেই যাই। বাড়িটাও ভীষণ খারাপ হয়ে গেছে।

সুনীলের এত খ্যাতি, এত মানুষ আসতেন, টেলিফোন করতেন; কখনও খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে?

হ্যাঁ, তা তো হয়েইছে। অনেক দুঃখকষ্টের মুহূর্ত যেমন এসেছে,আনন্দর মুহূর্তও এসেছে। তবে এ-কথা ঠিক যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পুরুষরা প্রেমে পড়ে বেশি। এটা হয়তো সমাজ বা কালের নিয়ম। অনেক মহিলাই সুনীলকে সম্মান করতেন, সত্যিই ভালবাসতেন। ওকে নিজের করে পেতে চাইতেন। সব সময়ে যে আমি রাগ করেছি, তেমনও নয়। সব কথা তো প্রকাশ্যে বলা যায় না, সে-পরিসরও নেই। সুনীল কখনও বেশি রাগ করত না। আমি হয়তো কখনও হয়তো খুব রেগে, আঘাত দিয়ে কথা বললাম, ও অভিমানে এমন চুপ করে যেত, পরে আমারই খারাপ লাগত। ওর রাগের বহিঃপ্রকাশ এত কম, আমাকে স্বীকার করতেই হবে, একজন মানুষ হিসবে সুনীল অসম্ভব ভাল।  মানুষের জন্য, বন্ধুদের জন্য ও যা করেছে, আমি জানি না, আর তেমন কেউ করেছে কি না।

খুব ভাল সংগঠক ছিলেন, না?

হ্যাঁ, খুবই ভাল সাংগঠনিক ক্ষমতা ছিল ওর।

সুনীলের এত যে বিপুল সাহিত্যসম্ভার, কখনও মনে হয়েছে ওঁর সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে না, বা সুনীলকে যাঁরা পড়ছেন, তাঁরা সুনীলের বিশেষ কিছু সাহিত্যকীর্তিতেই ঘোরাফেরা করছেন?

হ্যাঁ, এটা খুবই মনে হয়। অনেকেই শুধু ‘সেই সময়’, ‘প্রথম আলো’, ‘পূর্ব পশ্চিম’-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেন। কিন্তু এছাড়াও ওঁর অনেক সাহিত্যকীর্তি রয়েছে, যেগুলো অনেকেই পড়েন না। ধরা যাক ‘আত্মপ্রকাশ’ উপন্যাসটির কথাই, আমার এত প্রিয়! সুনীলকে অনেক বেশিই লিখতে হয়েছে। বিশেষ করে শারদীয়া সংখ্যার জন্য। সব লেখা কখনওই ভাল হয়নি। এমন অবশ্য সব লেখকের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। কখনও মনে হয় সুনীলের যে-সমস্ত লেখা অগ্রন্থিত, সেগুলো নিয়ে কিছু হওয়া দরকার। সেরকম কিছু হচ্ছে না। সুনীল চলে গেছে আজ প্রায় ১২ বছর। ও চলে যাওয়ার পর কত পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু আমার শারীরিক অসুস্থতার জন্য তেমন কিছুই হল না। বড় বিষণ্ণ লাগে। সুনীলের সমস্ত বই যাতে বাজারে থাকে, তার জন্য কত প্ল্যান করেছি, কিছুই তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। বেঁচে থাকারই মানে খুঁজে পাই না।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বইঘর

তরুণ প্রজন্মর যারা সুনীল গাঙ্গুলির লেখার ভক্ত, তাদের ভাবনার কোনও আঁচ আপনি পান?

সত্যি বলতে পাই না। কয়েকজন সুনীলভক্ত মাঝেমধ্যে আসে, কথা বলে, তবে সেটা সংখ্যায় খুবই কম। তবুও যারা সময় বের করে আসে, তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এখন সময়ের দাবি এমন, সকলেই এত ব্যস্ত…

কোনও গবেষণা হচ্ছে ওঁর সাহিত্য নিয়ে?

প্রথমদিকে বেশ কিছু কাজ হত, আজকাল একদম কমে গেছে। এখন এত অসুস্থ হয়ে পড়েছি, নিজেও যোগাযোগ রাখি না কারো সঙ্গে সেভাবে। হয়তো হচ্ছে, আমার কাছে সে-খবর এসে পৌঁছাচ্ছে না।

মাঝে যেভাবে ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকা বের করেছিলেন, ‘কৃত্তিবাস’ নিয়ে কি নতুন কোনও পরিকল্পনা রয়েছে?

না, কোনও পরিকল্পনা নেই। আমি সে-সময়েও বলেছিলাম, আমি সুনীলের পরিবার বলেই ‘কৃত্তিবাস’ সম্পাদনার দায়িত্ব নেব, এমন কোনও যোগ্যতা আমার নেই। তখন অন্য কাকে বাছা হবে না ভেবে পেয়ে আমাকে বাছা হল। সে-সময়ে অনেকে সাহায্য করেছিলেন। পরে নানা কারণে বন্ধ হয়ে গেল।

এখন ৭ সেপ্টেম্বর কীভাবে কাটে?

সুবোধ সরকার, সৌমিত্র মিত্ররা এ-বছর যেমন একটা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। তেমনই কিছু-না-কিছু থেকেই থাকে। যাই, লোকজনের সঙ্গে দেখা হয়। এটুকুই। 

বাড়িতে লোকজন আসেন?

হ্যাঁ, আসেন অল্প কয়েকজন। আমি ওঁর জন্মদিনে যা-যা খাবার হত সেগুলোই এখনও করার চেষ্টা করি।

কী-কী খাওয়াতেন?

ঘুঘনি, চপ, পায়েস আর মিষ্টি। আগেও করতাম, এখনও করে চলেছি।

আচ্ছা এখন যেভাবে ‘কৃত্তিবাস’ বেরোয়, আপনি কি তা সমর্থন করেন?

না, সমর্থন করি না। এটা তো এক প্রকার ‘হাইজ্যাক’ করা! কিন্তু আমি এই নিয়ে কোনও ঝগড়া বা অসূয়া চাই না। খারাপ লাগে, কষ্ট হয়…