শুধু কবিতার জন্য : পর্ব ৩৮

কয়েকটি কবিতা

গান

আলো ভেঙে যাওয়া পাখির মধ্যে তুমি

আকাশ ভরেছ একটু একটু ক’রে।

এখন তরল ঝলমল থেকে রোজ

রোদের সকাল তৈরি হচ্ছে। ভোরে।

সেসব ডানার পিওন রঙের নাম।

সেসব উড়াল ঝাপটায় অভিধানে।

তোমাকে দেখেছি কতদিন পর। যেন

পাল্টেও গেছে, বন্দি থাকার মানে।

শুধু পাখি থেকে হ্রস্ব-ই তুলে এনে

আমি বানাচ্ছি বাগানের সমাধান।

আকাশ যেমন, সেরকমই থেমে আছে

কোনও মেঘ থেকে একা উড়ে গেছে গান।

স্রোত

কে বলেছিল, সে মহানন্দার মতো

খালি চোখে ধরা পড়বে না তার স্রোত।

এখানে ট্যুরিস্ট চা খেতে দাঁড়ায় ঠিকই

বড় বেশি দূরে, শহুরে বিমানপোত।

কিছু গাছ চেনে পাহাড়ি অন্ত্যমিল

ব্যকরণ মেনে তাদেরও বয়স বাড়ে।

সে বয়ে যাচ্ছে কিনারে হাজার পাথর…

হোটেল উঠল, মহানন্দার পাড়ে।

এখানে জানলা বেশি দামে হাওয়া আনে

এখানে দরজা বিনিময়ে খোলে মন

স্রোত ছুটে যায় পা ধুইয়ে দিতে তার

কে জানে ট্যুরিস্ট থাকবে কতক্ষণ!

হৃদয়

তোমার হৃদয় শশী থারুরের মতো।

প্রতি স্পন্দন কঠিন শব্দে ঘেরা।

বুঝি না, তবুও ভাল লাগে মিছিমিছি…

যা চিনি না, তারই পিছুটানে ঘরে ফেরা।

তবু তাকে দাও, কথা বলবার সভা।

আমি দল বেঁধে বসে শুনি, সে কী বলে।

সারাজীবনের করতালি জড়ো ক’রে

আজই সন্ধ্যায় ভাসান দিয়েছি জলে।

এবারে অবুঝ প্রশংসা, তারই দাবি

সারাতেই হবে ভাষায় নিহিত ক্ষত…

আমার ভাবনা অভিধানসঞ্চারী

তোমার হৃদয় শশী থারুরের মতো।

সানাই

মেয়েটি মুকুট জলে ফেলে দিয়ে ফেরে

অবসাদ তার কপালের আলপনা।

সানাই রঙের সন্ধের জঙ্গলে

তার কাজ ছিল ঝিঁঝিঁর শব্দ গোনা।

এখন সে একা হাঁটছে যে-পথে সোজা

সেখানে প্রেমিক, আঙুলে জোনাকি নিয়ে

অপেক্ষা ক’রে বসে নেই, সেও জানে।

তারও স্পর্ধার আজ বাদে কাল বিয়ে।

সাক্ষী বলতে রুমাল ও লাল চেলি

নিচু মেহেন্দি সহজে যাবে না হাতে

মৃত্যু নিজেই নহবত হয়েছিল

এখন কাঁদাবে, মেয়েটিকে, সাক্ষাতে।