তাহাদের রায়/Ray@100

শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore)

অপুর সংসার

‘এমন অভিনব সমস্যার কথা উনিও ভাবেননি! শেষপর্যন্ত সমস্যার সমাধান করলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। পরামর্শ দিলেন, অফ ক্যামেরা অন্য কেউ কাঠিটা জ্বালিয়ে ওর হাতে দিক। সেটাই হল। এত অপূর্বভাবে সেই শটটি নেওয়া হল, এই এত বছর পরেও কেউ বুঝতে পারেন না, দেশলাইটা আমি জ্বালাইনি।’ ‘অপুর সংসার’-এর অভিজ্ঞতা।

ডাকবাংলা.কম

সাক্ষাৎকার: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

গ্রুপ থিয়েটার থেকে সরাসরি সিনেমায়। তাও আবার প্রথমেই সত্যজিৎ রায়ের ছবির নায়ক। সঙ্গে উৎপল দত্ত, রবি ঘোষের মতো খ্যাতনামা সমস্ত অভিনেতা। কেমন ছিল সত্যজিতের শুটিং-অভিজ্ঞতা? সেইসব কথাই এই সাক্ষাৎকারে জানালেন ‘জন-অরণ্য’ ছবির নায়ক প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

‘প্রতিদ্বন্দ্বী’র টুকরো-টাকরা

‘ছবিটা কর্কশ। শুধু সংলাপে প্রচুর ‘শালা’, ‘শুয়োরের বাচ্চা’ ছড়ানো আছে বলে নয়, যেখানেই সিদ্ধার্থ যাক হাঁটুক দাঁড়াক তার পিছনে পাশে প্রতিবাদী পোস্টার বা রাজনৈতিক দেওয়াল-লিখন থাকে বলে নয়, সিদ্ধার্থর বাড়িতে সবসময় চাপ-চাপ অন্ধকার থাকে বলে নয়, ছবিটার পাত্রপাত্রীদের অ্যাটিটুড আমাদের প্রকৃত ইট-পাটকেলগুলো মারে।’ ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’র সত্য।

সিমি গারেওয়াল

দুলি আর ওয়ার্ড-গেম

‘আমরা থাকতাম ছিপাদহর জঙ্গলে, যেখানে তখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি, কলের জলের বালাই নেই, আর বাথরুমে ফ্লাশ থাকা তো চিন্তারও বাইরে। কিন্তু এসব কিছুই আমাকে তখন কাবু করতে পারেনি। কারণ আমি তখন বাংলার তাবড় তাবড় অভিনেতা পরিবৃত— সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ, শমিত ভঞ্জ। রাত্রিবেলা চাঁদের আলোয় আমরা হাঁটতে বেরোতাম। এই শুটিংটা সত্যিই আমার জীবনের সেরা স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে।’

সিমি গারেওয়াল

Duli and Word Games

‘We were staying in Chhipadohar Forest and it was a place with no electricity or running water or a flush! But none of this mattered as I was surrounded by brilliant actors from Bengal – Soumitra Chatterjee, Subhendu Chatterjee, Robi Ghosh and Samit Bhanja. We would go for moonlit evening walks and the shoot is truly one of the most special memories of my career.’

মোহন আগাশে

খেরোর খাতা পেরিয়ে

‘১৯৮১ সালে, আমার একটা অসুখ হয়েছিল, বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ছিলাম, বেরিয়েই দেখি, আমার একটা চিঠি এসেছে, সত্যজিৎ রায় লিখেছেন। টাইপ করা চিঠি। তাতে লেখা, আমার অসুস্থতার খবর পেয়ে উনি দুঃখিত, আমি কি ওঁর ৫০ মিনিটের টেলিফিল্ম ‘সদ্‌গতি’তে একটি মূল চরিত্রে অভিনয় করব?’ মানিকদার স্মৃতি।

সুদীপ দত্ত

কাল্টিভেট করতে হচ্ছে

‘তাঁর ছবিতে তিনি অজ্ঞেয়বাদী, প্রগতিশীল, অথচ জন্মান্তরবাদী। আপাতভাবে অনেকটা চন্দ্রবিন্দুর চ, রুমালের মা আর বিড়ালের তালব্য শ-এর মতো ঘেঁটে-যাওয়া। হয়তো তাঁর নিজস্ব যুক্তিতে পুনর্জন্মকে মান্যতা দিয়েও তিনি তার সঙ্গে কর্মফল বা তার অনুসারী শোষণের সূক্ষ্ম প্রভেদ টেনেছিলেন।’ জন্মান্তরবাদের ধারণা।

চিন্ময় গুহ

দিনরাত্রির কঙ্কাল

‘কলকাতা থেকে পালামৌ-তে ছুটি কাটাতে আসা চারজন সমবয়সি ভিন্নধর্মী যুবককে সত্যজিৎ comédie humaine-এর ভঙ্গিতে নির্মোহ ভাবে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে রাখেন, তাঁর ক্লাসিকাল ক্যামেরা-চোখের সামনে তাদের কৃত্রিম মুখোশ নিজেদের অজান্তে আস্তে আস্তে খুলতে শুরু করে, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ছবির মতোই শহর থেকে বাইরে প্রকৃতির পশ্চাদ্‌পটে টেনে এনে আতসকাচের নীচে রেখে, কিন্তু আরও বেশি চলৎপ্রবাহে, রনোয়ার-এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি ‘রুলস অফ দ্য গেম’-এর মতো।’ অরণ্য-কথা।

সুমন্ত মুখোপাধ্যায়

গপ্পো তর্ক যুক্তি: সত্যজিতের খুদে জগৎ

‘শিবু-রা পেয়ে যায় রাক্ষসদের প্রাণভোমরা, ছোট্ট এক পাথর, মাছের পেট থেকে। পাগলা ফটিক নয়, স্বয়ং মানিকবাবুই শিখিয়ে দেন অঙ্ক স্যারদের ঘায়েল করার মন্ত্র। ছোটদের সঙ্গে অনেক বড়রাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। একটু সুন্দর হয়ে ওঠে পৃথিবীটা।’ মধ্যবিত্ত রোজনামচা বনাম সত্যজিতের আদর্শ।

সুব্রত মজুমদার

সত্যজিতের শহরতলি

‘সত্যজিৎ তো আগাগোড়া ভীষণ রকম শহুরে মানুষ। গড়পার, বালিগঞ্জ, লেক টেম্পল রোড থেকে বিশপ লেফ্রয়। অক্টারলনি মনুমেন্ট থেকে মেরেকেটে দশ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যেই থেকেছেন সারা জীবন। তাহলে ওঁর গল্পে আর সিনেমায় স্মল টাউন— শহরতলি, মফঃস্বল— ফিরে ফিরে আসে কেন?’

বরুণ চন্দ

সত্যজিৎ ও তাঁর নগর-দর্পণ

‘‘মহানগর’কে বাদ দিলে সত্যজিতের সত্যি-সত্যি নগরকেন্দ্রিক ছবি হল ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘সীমাবব্ধ’ ও ‘জন অরণ্য’, যা দেশে-বিদেশে ‘Ray’s Calcutta Trilogy’ বলে আখ্যা পেয়েছে। এখানে একটা চমৎকার তথ্য পাঠকদের দিয়ে রাখি, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’র পর পরই যখন ‘সীমাবদ্ধ’ বিদেশ দেখানো হয় তখন ওখানকার সমালোচক বা সাংবাদিকরা একে City-trilogy-র তকমায় এঁটে দিয়েছিলেন ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’কে দিয়ে শুরু করে। এর কারণ আর কিছুই নয়, ‘জন অরণ্য’ তখনও তৈরিই হয়নি।’ কলকাতা এবং সত্যজিৎ।

শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore)

সীমাবদ্ধ

‘সুদর্শনা চরিত্রটির জটিলতা, বিভিন্ন সূক্ষ্ম এক্সপ্রেশনের কথা বিবেচনা করে সেই সময় আমার উপর ভরসা রেখেছিলেন মানিকদা। তাছাড়া চরিত্রটির সঙ্গে আমার অভিনীত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ এবং বিশেষ করে ‘নায়ক’ ছবিতে অভিনীত চরিত্রটির মূল সুর, যেন কোথাও একটা বাঁধা ছিল।’ সুদর্শনা চরিত্রের আত্মবিশ্লেষণ।