গল্প / কবিতা

সোহিনী দাশগুপ্ত

কয়েকটি কবিতা

‘আমি বুঝতে চেষ্টা করি/ তুমি আশেপাশেই আছ কি না, তুমিও/ আশ্চর্য হয়ে আমাকে দেখছ কি না/
সন্ধে হলে আমার মনে হয় তোমারও/ আমার জন্য মন কেমন করছে, মনে হয়/ তুমিও হয়তো খাতা টেনে নিয়েছ কোলে আর/ খাতা ছাপিয়ে উঠে আসছে অতলান্তর কালো জল।’ নতুন কবিতা।

স্বর্ণেন্দু সাহা

উদ্বাস্তু

‘সারাটা দিন সে ছাউনির ভিতর চুপচাপ শুয়ে কাটিয়ে দেয়। ঘুম এলে আবছা, ধোঁয়াটে একটা কুয়াশার স্তর ডানা মেলতে থাকে তার মস্তিষ্কে। সেই ডানার পরিসীমা অপরিসীম কোনও সমতলের মতো অসীম। স্বপ্ন আসে না। কিংবা হয়তো আসে, কিন্তু সেই স্বপ্নে স্রেফ আঁধার ঘুরে বেড়ায়।’ নতুন গল্প।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৬

‘…গুরুর অবশ্য এ অভিজ্ঞতা প্রথম নয়, আগে আরো পাঁচ-ছখানা ছবি করেছে। প্রতিবার এমনি করে প্রিমিয়ারের দিন দুরু-দুরু বুক নিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তারপর আসল রায় যা দেবার দিয়েছে জনসাধারণ। যে যত বড় মহাপুরুষই হোক, জনসাধারণের বিচারালয়ে তাকে দাঁড়াতেই হয় আসামী হয়ে। কেউ পায় ফুলের মালা, কেউ নিন্দের। জনসাধারণের প্রীতির ওপর যাদের প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে, তাদের এমনি করেই দুরু-দুরু বুক নিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে হয।’ ছবির প্রিমিয়ার।

নীল কেটলি: পর্ব ৭

‘…আবার ময়মনসিংহ। আবার দাদু-ঠাকুমা, আবার সেই নদী! সব ঠিক, তবে এবার কী যেন নেই! হ্যাঁ, সঙ্গে আমার শান্ত, স্নিগ্ধ, ছায়ার মতো, তেষ্টার জলের মতো, শ্বাসবায়ুর মতো মা নেই। তাই তেমন করে মন আর আগের মতো নেচে উঠল না কিছুতেই।’ ছোটবেলার ময়মনসিংহ।

রাস্‌কিন বন্ড (Ruskin Bond)

শুভযাত্রা বন্ধু

‘যাত্রা শুভ হোক, বন্ধু!’পৃথিবীটা ভেঙে পড়ছে, কিন্তু আমরা, চিলেকোঠার ধর্মাবতার আর আমি, আমরা জীবন ভাল কাটিয়েছি। প্যাঁচা মহাশয় তাঁর বরাদ্দ ইঁদুর যথেচ্ছ ভক্ষণ করেছেন, আর আমি কোফতা কারি সহযোগে ভাত। বহু Friday The 13th এসেছে ও গেছে। প্যাঁচা ও কালো শুক্রবার।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৫

‘…যে কবছর ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম গুরুর সঙ্গে সে কবছরের সালতামামি করে দেখলে অনুরাগ ছাড়া আর কিছুই মনে পড়ে না। নইলে কোথায় বোম্বাই আর কোথায় কলকাতা! মাঝখানে দুস্তর নদী-পর্বত-মেঘমালার ব্যবধানটাও যেন কয়েক বছরের মতো অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। একে কি বৈষয়িক সম্পর্ক বলে? তাই যখন যেখানে থাকত তখন ট্রাঙ্ককল করে আমার খোঁজ নিত কেন?’ মানুষ গুরু দত্ত।

মৌসুমী দেবঘোষ

আজনবি

‘দুপুরে একটু গড়িয়ে নেওয়া দত্তবাবুর বহু দিনের অভ্যাস। ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেল, কোথা থেকে একটা গানের সুর ভেসে আসছে না? তাঁর বাড়িতে গান! টিভির আওয়াজ ছাড়া কিছু শোনা যায় না তাদের বাড়িতে, সেখানে গজল! গানটা ভেসে আসছে গিন্নির বন্ধ ঘর থেকেই।’ নতুন গল্প।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৪

‘…আর একজন যে শান্তি দিতে পারত গুরুকে, সে হল ওয়াহিদা রেহমান। যে মেয়েটিকে সে হায়দ্রাবাদের নির্জন নিরিবিলি থেকে একেবারে খ্যাতির শিখরে পৌঁছিয়ে দিয়েছিল। তারও একটু কৃতজ্ঞতা ছিল গুরুর ওপর। গুরু না হলে কে তাকে শিখিয়ে-পড়িয়ে এমন করে বিখ্যাত করে তুলত। কিন্তু… গুরুর জীবন থেকে সে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছিল।’ শান্তি-অশান্তির সংসার।

দীপান্বিতা রায়

খাঁচার ময়না

‘স্টেশনের ওপারে একটা গলির ভিতর দিয়ে কিছুটা গেলে একটা আধা-বস্তি এলাকা। তারই একপাশে পর পর গোটা তিনেক বেড়ার ঘর। ভিতরে একটা চৌকির ওপর তেলচিটে তোশক আর চাদর পাতা। মোটামতো একজন মহিলা, যাকে মালতী ক্ষুদিদিদি বলে ডাকছিল, সে-ই কথাবার্তা বলল।’ নতুন গল্প।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৩

‘…ঘটনাটা এমন আকস্মিক ঘটল যে আমরা দুজনেই কেমন যেন বিমূঢ় হয়ে গেলাম। আমরা ও-বাড়িতে অতিথি, তাই ও-বাড়ির অন্দরমহলের সব ব্যাপারে কৌতুহলী হবার অধিকার আমাদের নেই। আমরা আনন্দের ভাগীদার হব, দুঃখেরও সমব্যথী হব, কিন্তু তার বেশি আর কি করতে পারি আমরা!’ অশান্তির সংসার।

অপরাজিতা দাশগুপ্ত

আক্রান্ত: পর্ব ৮

‘…অভিমন্যু বুঝতে পারছে, জীবনে এই প্রথম কাউকে ছেড়ে যেতে তার কষ্ট হচ্ছে। প্রথম বিদেশে পড়তে যাবার সময় দাদু-দিদানের জন্য, কলকাতায় ফেলে যাওয়া বন্ধুদের জন্য যেমন কষ্ট হয়েছিল— এটা ঠিক তেমন নয়। এই কষ্টটা বুকের অনেক বেশি ভিতর থেকে মুচড়ে মুচড়ে আসছে।’ সম্পর্কের সমাপ্তির গল্প।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২২

‘… অথচ দুজনের কত মধুর সম্পর্ক। একজনকে ছেড়ে আর একজন যে থাকতে পারে না, তার নজিরও পেয়েছি বহুবার। এমন আকর্ষণ সাধারণত স্বামী-স্ত্রীতে থাকে না। গীতা না থাকলে গুরু একলা অসহায় বোধ করে, তবু দুজনেই এটা মন খুলে বলতে পারে না। একজনের আড়ালে অন্যজন আমাকে পেয়ে তার দুঃখের কথাগুলো শোনাতো…’ সম্পর্কের টানাপড়েন।