নিবন্ধ

মৈত্রীশ ঘটক

সাহিত্য, বাজার, অস্বস্তি

‘ বিমূর্ত শিল্পও তো বিক্রি হয়। তার শৈল্পিক মূল্য একটা ব্যাপার, আর মানুষের হাতে বিনিময় হবার সময় একটা আর্থিক অঙ্ক যুক্ত হয়ে যায়— সেটা আরেকটা ব্যাপার। আসলে মূল্য (value) আর দাম (price)— বা মার্ক্সের ভাষায় ব্যবহার-মূল্য আর বিনিময়-মূল্য— অনেক সময়ে একই অর্থে ব্যবহৃত হলেও, ব্যাপার দুটো সম্পূর্ণ আলাদা। মূল্য মানুষের মনে, যে মনের গহন রহস্য অনেক সময় বোঝা মুশকিল। আর দাম হল চাহিদা আর জোগানের ঠোকাঠুকিতে ঠিক হওয়া একটা অঙ্কমাত্র, যাতে কোনো জিনিসের বিনিময় হয়।’

তরুণ মজুমদার

সৌমিত্র, আপনাকে

‘সেই সৌমিত্র, আপনি, এভাবে কোনও নোটিস না দিয়ে চলে গেলেন? অভিনেতা তো বটেই, আপনার মতো এমন একজন ‘টিম ম্যান’কে হারাবার ক্ষতি আমরা কী ভাবে পূরণ করব? মনে পড়ে কি ‘গণদেবতা’র লোকেশন শুটিংয়ের সেই দিনগুলির কথা? বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে আমরা শুটিং করে বেড়াচ্ছি, ভোর চারটেয় উঠে তৈরি হওয়া, দিনভর দাপাদাপি, তারপর সন্ধে হলে প্যাক‌-আপ।’

রজত চৌধুরী

ঘোলাজলে ভাইরাস

‘অন্তত ২২টি দেশ কোভিডের সময়ে নিজেদের পরিবেশ-সংক্রান্ত নিয়ম বদলেছে, বা নতুন নিয়মকানুন এনেছে, যার ফলে পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বিস্তর। ব্রাজিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ভারতে এই প্রবণতা সর্বাধিক।’ লকডাউনে আইন বদল।

প্রত্যয় নাথ

যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা

‘আসল যুদ্ধের মতোই খেলাতেও গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া যায় শত্রুর দেহ, কম্পিউটারের পর্দায় দেখা মেলে তার রক্তমাখা দেহের, যদি না শত্রু আগেই নিশানা করে ঝাঁঝরা করে দেয় আমাকে। যুদ্ধ কতটা কঠিন হবে— সহজ, মাঝারি, শক্ত, না কি খুব শক্ত— তা আগে থেকে ঠিক করে নেওয়া যায় মাউসের ক্লিকে।’ যুদ্ধের খেলা এবং আমাদের হিংস্রতার সুপ্ত প্রবৃত্তি।

পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়

বিরজু মহারাজ: বহমান ইতিহাস

বিরজু মহারাজের মধ্যে ছিল আদির বীজ, তার সঙ্গে বর্তমানের সৃষ্টি ও বিশ্লেষেণের মিশ্রণে তিনি পরিণত হয়েছিলেন এক মহীরুহে। যে মহীরুহের মধ্যে গ্রথিত ছিল বহমান সৃষ্টির ইতিহাস। এক সম্পূর্ণ নৃত্যশিল্পী যিনি রচনা করেছিলেন নৃত্যের এক মহাবিশ্ব।

তন্ময় বসু

মেজাজেও মহারাজ

বিরজু মহারাজ জীবনকে উপভোগ করতে পারতেন তার সব রকম উপাদানের মধ্যে দিয়ে। কোনও বাঁধাগতে না রেখে মনকে, শিল্পকে অনেক বড় বৃত্তে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন। এবং সেই কারণেই তাঁর শিল্প ছিল এতটা প্রসারিত। এমন পূর্ণাঙ্গ মানুষ, এমন ব্যক্তিত্ব এখন বিরলও নয় বোধহয়, অমিল।

জয়দীপ মিত্র

শূন্যের মাঝারে ঘর

নদীর সাথে নারীর এক চিরকালীন বন্ধুত্ব আছে বলেই কি না কে জানে, গঙ্গাসাগরে দেখেছি জলে নেমে দাঁড়ালেই যে কোনো বৃদ্ধার শরীর থেকে জীর্ণতার খোলস ধুয়ে যায়, আর ম্যাজিকের মতো বেঁচে ওঠে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তাঁর আজন্ম আড়াল করা মুখ। গঙ্গাসাগরের পুণ্য।

মকরে প্রখর রবি

‘পৌষের সংক্রান্তি হল উত্তরায়ণ সংক্রান্তি। আমাদের দেশে সেই সনাতন যুগ থেকে এই উত্তরায়ণ কালকেই যাবতীয় শুভকাজের প্রশস্ত সময় বলে মনে করা হয়। এই উত্তরায়ণেরই আরেক নাম মকর সংক্রান্তি। কামশক্তি মকরকে আর মাথায় চড়তে না দেওয়ার প্রার্থনা করা হয় এইদিনে।’ মকর সংক্রান্তির ইতিহাস।

সুস্নাত চৌধুরী

নিজেকে দেখি আমাকে দেখুন

‘কোনও বারেই আমার ডায়েরি-লেখা তাই বেশি দূর এগোতে পারেনি। মাসকাবার হয়তো হয়েছে, কিন্তু বছর ফুরোয়নি। ফের ডিসেম্বর এসেছে, ফের জানুয়ারি। আরেকটা নতুন ডায়েরির আকাঙ্ক্ষায় মন উদ্বেল হয়েছে। বিনয় মজুমদার না পড়েই বুঝে গিয়েছি, ‘দিনপঞ্জী মানুষের মনের নিকটতম লেখা’। কিন্তু নতুন বছর ঈষৎ পুরনো হতেই যে-কে-সেই!’ ‘সত্যিকার’ বন্ধু, ডায়েরি।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

এ বছর কী কী ঘটবে

‘উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের গাদা-গাদা ব্রণ গজাবে মাস্কে, এবং এই মানবেতিহাসে প্রথম, কান থেকে সুতো ছিঁড়ে একটি জিনিস টান মেরে ফেলে দিলেই গুচ্ছের ব্রণদাগ নিমেষে হাপিস। আবার উল্টোও হবে, ছেলে কলেজ যাওয়ার কালে হাঁকবে, মা! আমার ব্রণভরা মাস্কটা ফেলে দিয়েছ না কি!’ আগামীতে যা ঘটবে।

সৈকত ভট্টাচার্য

অবতারের অবতারণা

‘শুধু এই শখের বাবুয়ানির জন্যই মেটাভার্সের দুনিয়ার ইকোনমিক্স বা মেটানমিক্স এত লোভনীয় নয়। মাইক্রোসফ্‌ট, ফেসবুক, গুগলের মতো টেক-দৈত্যরা আরও সম্ভাবনা দেখছে। করোনা-উত্তর সমাজ যে আগের মতো সুস্থ স্বাভাবিক থাকবে না, তার আঁচ আমরা পেতে শুরু করেছি।’ বাস্তব-অবাস্তব পেরিয়ে এক নতুন দুনিয়া।

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

গণতন্ত্রে ধনতন্ত্র শেষ?

‘যে-নিলাজ ধনতন্ত্রকে অর্থনীতিবিদ মিলটন ফ্রিডম্যান পূজ্যবেদিতে বসিয়েছিলেন, যে-ধনতন্ত্রকে রোনাল্ড রেগন আর মার্গারেট থ্যাচার গোটা পৃথিবীর বুকে একটা জগদ্দল পাথরের মতন চাপাতে চেয়েছিলেন, তার দিন গেছে। ২০০৮-এর বিশ্বজোড়া আর্থিক বিপর্যয়ের সময়েই ওহেন ধনতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বেজেছিল।’ ধনতন্ত্রের বিপর্যয়।