নিবন্ধ

চাঁদির চাঁদের হাটে

‘লোকঠকানো আর রংবাজি ভিন্ন অন‍্য কোনও উপায় নেই পয়সা করবার। শ্রম-মেধা-নিষ্ঠা-একাগ্রতা দিয়ে অথবা ঘটে কয়েন জমিয়ে, কোনও কালে কারুর সাতমহলা স্বর্গ নির্মাণ হয়নি। চুপিসার চুরি কিম্বা সরাসরি বুকের ওপর চড়ে বসে টুঁটি টিপে ধরে উগড়িয়ে নেওয়া পয়সা দিয়েই লোকের টাকা হয়েছে।’ উপার্জনের উপায়।

মহাভারতের রাক্ষসী, শেক্সপিয়রের ডাইনি

‘অথ হিড়িম্বা কথা’য় ভীমের সংলাপে, পাণ্ডবদের হাস্যকর আচার-আচরণে, এমন কি কিছু মেটা-থিয়্যাট্রিকাল কথাবার্তায় হাসি পায় ঠিকই, কিন্তু সে হাসি অত্যন্ত অস্বস্তিকর। নাটকের সম্পাদক, তিতাস দত্তের মতে এই প্রয়োগকৌশলের অনুপ্রেরণা ইতালীয় ‘সোশ্যাল গ্রোটেস্ক’, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পিরান্দেলো প্রমুখ নাট্যকারের কাজে দেখা যায়। এই অস্বস্তিকর হাসির উৎসে রয়েছে দুটি অসম শক্তিশালী সমাজের মধ্যে সংঘর্ষ, যার ফলে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ব্রাহ্মণবাদ ও আর্য সভ্যতার কতগুলো ভয়ানক দ্বিচারিতা।’

শুভময় মিত্র

ক্ষতের শিল্পে বিরাজমান শিল্পী

আজ থেকে একশো বছর আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া ফ্র্যাজাইল শরীরের এই মানুষটির সৃষ্টি নিয়ে আর্ট দুনিয়া এই মুহূর্তে উত্তেজিত। অকশন হাউস, আর্ট গ্যালারি, বই প্রকাশ, ডকুমেন্টারি, কী না হচ্ছে। উনি রেখে গেছেন ওঁর জীবনভর সংগৃহীত, সৃষ্ট, অজস্র ক্ষত।’ শতবর্ষে সোমনাথ হোড় : ‘অর্থশীলা’, শান্তিনিকেতন; প্রদর্শনী চলবে ২০ মে, ২০২২ পর্যন্ত

শান্তনু চক্রবর্তী

ছবির এ যৌবন

গত সত্তর বছর ধরে বাঙালি ‘‌সাড়ে চুয়াত্তর’‌ চুটিয়ে দেখেছে আর প্রাণভরে হেসেছে। ১৯৫৩-র ২০ ফেব্রুয়ারি যখন ছবিটা মুক্তি পাচ্ছে, তখন ছবির রোমান্টিক নায়ক উত্তমকুমারের ক্রেডিটে মাত্র দেড়খানা হিট!‌ কিন্তু এ ছবির সত্যিকারের নায়ক-নায়িক তুলসী চক্রবর্তী, মলিনা দেবী। যাঁদের দেখে এখনও বাঙালির আশ মেটে বা। এ ছবি কালজয়ী। সাড়ে চুয়াত্তর বাঙালি অস্তিত্বের স্বাক্ষর।

জয়দীপ মিত্র

পুরবাইয়া, কানহাইয়া, লড়াই, বেগুসরাই

‘চন্দ্রশেখর সিং-এর হাতে কমিউনিস্ট হয়ে কানহাইয়ার দাদু আমৃত্যু সি.পি.আই থেকে যান। স্কুল ছেড়ে কানহাইয়ার বাবা তখনও নিষিদ্ধ সি.পি.আই (এম-এল) দলে যোগ দেন ও তারা পরে নকশালবাড়ির পথ থেকে হটে এসে সংসদীয় গণতন্ত্রে আস্থা স্থাপন করলে চূড়ান্ত হতাশায় রাজনীতি থেকে সরে আসেন। ভালো করে জ্ঞান হবার আগেই কানহাইয়া কুমারের ডাফলি-বাজানো-গান শেখা শুরু বেহাত গ্রামের আই.পি.টি.এ শাখায়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে এ.আই.এস.এফ-এর ক্ষুরধার ছাত্রনেতা টুপ করে আকাশ থেকে জে.এন.ইউ ক্যাম্পাসে ঝরে পড়েন নি। কার্যকারণ সম্পর্কটা স্পষ্ট।’ কানহাইয়া কুমারের সঙ্গে কয়েকদিন।

গ্র্যামি, রাজনীতি, ধন্যবাদজ্ঞাপন

গ্র্যামি-বিজয়ী ‘ভারতীয়’ শিল্পীরা তাঁদের পুরস্কার গ্রহণের ভাষণে ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে, দেশ-দর্শনে ত্যাগ-তিতিক্ষা-সহিষ্ণুতার কথা বললেন, কিন্তু সুকঠিন বাস্তবের কোনো প্রসঙ্গ তুললেন না। আর তাই প্রশ্নগুলো রয়েই গেল— এই অন্তর্ভুক্তি, এবং প্রধানমন্ত্রী-অভিবাদিত এই গ্র্যামি, ঠিক কোন ভারতের?

পৃথ্বী বসু

উপেক্ষিত বাঙালি, স্বশিক্ষিত মন

‘সাধারণ মানুষের মধ্যে ভিন্নধর্মের প্রতি আগ্রহ তৈরি করার কারণে নববিধান ব্রাহ্মসমাজের পক্ষ থেকে যখন অন্যান্য ধর্মশাস্ত্রের পাশাপাশি ইসলামি ধর্মশাস্ত্র ও মুসলমান ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের জীবনচরিত অনুবাদ করে প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেই ভারও এসে পড়ে গিরিশচন্দ্রের ওপরে।’ গিরিশচন্দ্র সেনের অনুবাদ।

রূপক বর্ধন রায়

গণবিজ্ঞানের পুনরাবর্তন?

‘জেনেটিক ভ্যাক্সিনের মতোই মোড় ঘোরাল কোভিড। বিজ্ঞানীরা দেখলেন দ্রুত কোভিড পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে যে-পরিমাণে ডেটা বা তথ্য বিশ্লেষণ প্রয়োজন, তাতে সংস্পর্শ সম্পর্কিত সংক্রমণের সম্ভাবনা এড়িয়ে সে-কাজ করতে হলে ওয়্যারেবল প্রযুক্তির ব্যবহারই একমাত্র উপায়।’ কোভিড ও বিজ্ঞান।

লোপা ঘোষ

আইটেম নম্বর হইতে সাবধান

বলিউডের কোটি ডলারের কাহিনিগুলো মহিলাদের জন্য এক ভয়ঙ্কর দুনিয়ার জন্ম দিচ্ছে। এতে নারীবিদ্বেষ এবং লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যকে সাংগঠনিক ভাবে মান্যতা দেওয়া হয়, মহিলাদের এবং মেয়েদের উপর নির্যাতনের সামাজিক রীতিকে পুষ্টি জোগানোয় এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বলিউড আইটেম নম্বর সমাজের মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক।

সৈকত ভট্টাচার্য

ধাঁধিয়ে যাওয়া ধাঁধা

‘যদি সুদোকু খেলার নেশা থাকে, তাহলে এই ধাঁধার মানে বোঝা সহজ হবে। সুদোকুতে যেমন প্রতি সারিতে একই সংখ্যা দু’বার আসা না-মুমকিন, তেমনি এই বর্গক্ষেত্রের বেলাতেও। আপাত ভাবে এই ধাঁধাকে রোববারের খবরের কাগজের ব্রেন-টুইস্টারের থেকে আলাদা কিছু মনে হয় না। কিন্তু অয়লার অনেক কাঠখড় পুড়িয়েও নিজের ধাঁধায় নিজেই ধাঁধিয়ে গেলেন।’ আড়াইশো বছর পর লিওনার্ড অয়লার-এর ধাঁধার সমাধান।

সর্বজিৎ মিত্র

অন্য বইমেলা

১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত এই বিশেষ বইমেলা ও প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়, বিশ্বভারতীর স্টল থেকে তাঁরই এক সময়ের শিক্ষক বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় রচিত ‘শিল্পশিক্ষা’ বইটি কিনে। সে-বছর গিল্ড আয়োজিত বইমেলার কয়েকদিন পরেই এই বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ করে – ১৭৭৮-এ প্রকাশিত প্রথম ছাপা বাংলা বইয়ের দ্বিশতবার্ষিকীকে।

যুদ্ধ কীসে হয়

‘দুষ্ট রাশিয়াই ছলে-বলে-কৌশলে নানা অসহায় দেশ দখল করে বসে আছে, আর সেই সব বেচারা দেশ অসহায় প্রজার মতো নেটোর দরবারে ধর্না দিলেও নেটো কিছু করেনি। অতএব এই যুদ্ধ আসলে একটি ‘সবল বনাম দুর্বল’ বাইনারি। এঁরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ, লুহানস্ক, দনেতস্ক অঞ্চলে রুশ-সমর্থক গোষ্ঠীরা যেন আচমকাই সক্রিয় হয়ে উঠল, যেন রুশদেশের সাম্রাজ্যবিস্তার ছাড়া তাদের ক্রোধের কোনও ইতিহাস নেই।’ এই যুদ্ধের ছোট্ট ইতিহাস।