নিবন্ধ

শুভময় মিত্র

রাষ্ট্র বনাম ক্যামেরা

‘ফোটোগ্রাফি-শিল্পের বিনোদনের চেনা সংজ্ঞাগুলো ধুলোয় লুটচ্ছে। কনটেন্ট ও স্টাইলের পাশাপাশি পলিটিক্স ও এস্থেটিক্স চলছে তার সমান্তরাল দৌড়ে। পশ্চিমে যা দেখার দেখে-বুঝে শহিদুলের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন। সে-সময়ের বাংলাদেশের পরিস্থিতি শিল্পীকে গদিমোড়া সোফায় নিশ্চিন্তে বসে থাকতে দেয়নি। মাথা থেকে শরীর যখন ক্রমাগত দগ্ধ হয়ে চলেছে, রোম্যান্স-আর্ট বিলাস কীভাবে অগ্রাধিকার পাবে? এই প্রদর্শনীতে তারই কর্ড প্রগ্রেশন।’

সুস্নাত চৌধুরী

সাধু যখন চলিত

‘ফরাসি ভাষায় যাকে বলে ‘Mots savants’ বা ‘মো সাভঁ’। অর্থাৎ কিনা, যা জ্ঞানীদের শব্দ। আমাদের আশপাশে নজরে আসা সাধু ভাষা কিংবা সংস্কৃত-ঘেঁষা প্রয়োগগুলির ক্ষেত্রেও জ্ঞানীর ভূমিকায় অভিনয় করতে চাওয়ার এক অদম্য চেষ্টা কখনও-কখনও ধরা পড়ে যায়। সামাজিক ও ভাষাতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যবহারের প্রভাব অনস্বীকার্য।’ ভাষা প্রয়োগের মনস্তত্ত্ব।

অনির্বাণ ভট্টাচার্য

যাপন, স্মৃতি-বিস্মৃতি এবং কান্ট্রি সঙ্গীত

‘১৯২০-র হিলবিলি মিউজিক বা হঙ্কি-টঙ্ক থেকে পরে স্থায়িভাবে কান্ট্রি হয়ে যাওয়ার রাস্তায় প্রথম হিট রেকর্ড হিসেবে ধরা হয় জন কার্সনের ‘লিটল ওল্ড লগ কেবিন ইন দ্য লেন’কে। যে-নৈকট্যের কথা বলছিলাম, সাগর পেরিয়ে আমাদের নাইনটিজে বাংলা গানের ঝুঁটি ধরে ঘোরানো গৌতম-সুমনের কলকাতা এমনকি খোদ মফস্বল কিভাবে তাদের কলেজ-শুরুয়াতে কান্ট্রিকে কাছে টেনে নিল, তার জবরদস্ত উত্তর পেয়ে যাই হ্যাঙ্ক উইলিয়ামসের কথায়— ‘Folk music is sincere. There ain’t nothin’ phony about it.’

সুভাষ দে

বন্ধু হাত, শত্রু হাত

‘চক্ষুষ্মানরা আমাদের রাস্তা পার করালেও, তাদের চোখের ভাষা কী আমরা বুঝতে পারি না। কিন্তু সে যখন আমাদের ধরছে, ওই ধরা দেখে আমরা বুঝতে পারি, হয়তো আজ তার মনটা বিক্ষিপ্ত; বাড়িতে কোনো সমস্যা হয়েছে কিংবা অন্য কিছু। আমাদের হাত এই তথ্যটা আমাদের জানায়।’ হাতের মন।

শৌভ চট্টোপাধ্যায়

তোমার হাত যে ধরেইছিলাম তাই পারিনি জানতে

জগৎ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান যে অতি সীমিত, তা মনুষ্যজাতি অবলীলায় বিস্মৃত হয়ে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লক্ষ্যে অর্থহীন বিগ্রহ কিংবা যুদ্ধে খরচ করে ফেলে যাবতীয় উদ্যম, প্রাণশক্তি। অন্যের হাতের ওপর হাত রাখার পরিবর্তে, দ্বেষ আর বিভাজনই সভ্যতার অভিজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়।

শুভময় মিত্র

অভিনব দুটি হাতে

হাতের রেখা খুব ফাইন ব্যাপার। প্রত্যেক মানুষের জন্য কেউ নাকি প্ল্যানিং করেই চলেছে! এক্সক্লুসিভ নকশা করে, হাতে থ্রি-ডি প্রিন্ট করে, ফটাফট জিনে গুঁজে দিচ্ছে। নিজের আইডেন্টিটি কোড সঙ্গে নিয়েই আসছে মানুষ। কিন্তু কেন? কয়েক বছর আগে কেউ শুনেছে বায়োমেট্রিক টেস্টের কথা? সাপের চোখের মতো সবুজ আলোয় কী কী গুপ্ত তথ্য ওতে ধরা পড়ে, রাষ্ট্র ছাড়া আর কেউ জানে? রেখা মাহাত্ম্য

সৈকত ভট্টাচার্য

বে-হাত হওয়া আবিষ্কার

আজিজুল হকের আবিষ্কৃত এই পরিসংখ্যান-পদ্ধতির নাম গোটা পৃথিবীর কাছে পৌঁছল ‘হেনরি ক্ল্যাসিফিকেশন সিস্টেম’ নামে। বাঙালি সাব-ইন্সপেক্টর পড়ে রইলেন নিষ্ফল হতাশের দলে। চাকরি যাওয়ার ভয়ে প্রতিবাদের পথেও হাঁটলেন না। চুপচাপ মেনে নিলেন এই অন্যায়। হয়তো এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার আনন্দ তাঁকে এতটাই মোহিত করে রেখেছিল যে, এই খ্যাতির মোহ তার কাছে নিতান্ত ক্ষুদ্র, উপেক্ষণীয় বলে মনে হয়েছিল। আঙুলের ছাপ আবিষ্কারের সত্য।

দেবজ্যোতি

ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর

হাতের পাঞ্জা অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। দিন-কয়েক আগে একটি মেয়ে চাকরি করতে চেয়েছিল বলে, তার স্বামী তার ডান হাতের পাঞ্জা কেটে নিয়েছে। কিন্তু এই হাত-কাটার ব্যাপারটা পুরাণ থেকে পার্টির রাজত্ব সর্বত্র বিদ্যমান। কিন্তু হাত কেটে নেওয়ার পর সেই হাতটা নিয়ে কী করে মালিক? কাটা-হাতের নিয়তি।

সায়নদেব চৌধুরী

সুরক্ষিত বায়োপিক

‘বাংলা ছবির নিরিখে যে বাঁধভাঙা উল্লাস অনীকের ছবিটির সমাদরকে চিহ্নিত করেছে, তা অবশ্যই নজরকাড়া। তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে এক্ষেত্রে ছবির নিজস্ব গুণ আর পারিপার্শিক এক হয়ে বাংলা ছবির সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটা মাইলস্টোন রেখে গেল? অনীকের ছবিতেই যেমন দেখানো হয়েছে যে ‘পথের পদাবলী’ সাধারণ মানুষ হলে গিয়ে টিকেট কেটে দেখবে কিনা সে ব্যাপারে অপরাজিত রায় বেশ চিন্তিত। অপরাজিত রায়ের ‘চিন্তা’র খেই ধরেই তাই প্রশ্ন উঠতে পারে, অনীকের বায়োপিক এর মধ্যেই কি এমন কিছু আছে যা জনগণের স্বীকৃতির জন্যে মরিয়া?’

সুজান মুখার্জি

ক্লাইমেট ফিকশনে কলকাতার ভবিষ্যৎ

দেখা যাচ্ছে, বঙ্গভূমি যে শুধু টেকটনিক প্রক্রিয়ায় তৈরি তা-ই নয়, সেটির ভিতে রয়েছে মহাসাগরীয় অববাহিকা। দেবযানী ভট্টাচার্য তাঁর লেখায় দেখিয়েছেন ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীতে কলকাতার জলময় উৎসের কথা ও নদী-নির্ভরশীলতা কী ভাবে স্মৃতি ও ইতিহাস থেকে মুছে গেছে, বা মুছে ফেলা হয়েছে। সুতরাং, সেই ইতিহাসকে বাদ দিয়ে শহরের ভবিষ্যৎ কল্পনা করার চেষ্টা অসম্পূর্ণ হতে বাধ্য। আজ আমরা দেখতে চেষ্টা করব বিভিন্ন সময়ে কলকাতার ভবিষ্যৎ কল্পবিজ্ঞান অথবা ক্লাইমেট ফিক্‌শনে কীরকম রূপ নিয়েছে।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

তখন প্রবাসে রবীন্দ্রনাথ: পর্ব ২

‘মেয়েটার মুখে যেন বাঙালি মেয়ের ভালমানুষি মাখানো, তার চুল বাঁধাও যেন ভারতবর্ষের মেয়েদের মতোই। শেতাঙ্গিনীদের সভায় সেই ‘কালো মিষ্টি মুখ’ যেন রবীন্দ্রনাথকে চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে গেল। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ যখন এই মেয়ের রূপে একেবারে বিভোর, তখন জানা গেল সে এক ফিরিঙ্গি মেয়ে।’ বিলেতে নাচের অভিজ্ঞতা।

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

যে-জটিলতা অতিমারী অধিক

‘অতিমারীর সময়কালে সম্পন্ন গবেষণা দেখাচ্ছে পৃথিবীজুড়ে বহু মানুষ বারংবার স্বার্থপরের মতন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে নিজের বাড়িতে গাদা-গাদা অক্সিজেন সিলিন্ডার জড়ো করেই হোক বা সুপারমার্কেট থেকে সমস্ত টয়লেট টিস্যু তুলে নিয়ে গিয়েই হোক বা সামাজিক দূরত্ববিধি না মেনেই হোক, উদাহরণের কোনও অভাব আমরা রাখিনি। কিছু গবেষক বলছেন দীর্ঘদিনের একাকিত্ব আমাদের বেশি স্বার্থপর করে তুলেছে; কেউ-বা আবার বলছেন এ আমাদের ‘Original Sin’, সামান্যতম বিপদের আশঙ্কা দেখলেই আমাদের এক জান্তব প্রবৃত্তি বেরিয়ে পড়ে।’