নিবন্ধ

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

আশ্চর্য ছটফটানি ছিল

যখন বিউগল বেজে উঠল রাত বারোটায়, কী যেন একটা হল চারপাশে। কেউ কেউ আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল, কেউ কারও কোলে চেপে পড়ল, কেউ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট বাচ্চাকে কোলে তুলে নিয়ে হাওয়ায় ছুঁড়তে লাগল আর কেউ কেউ এমন কান্নায় ভেঙে পড়ল যে মনে হল, তার হৃৎপিণ্ড কেউ উপড়ে নিয়েছে। সে যেন শেষবারের মতো কাঁদছে, আর কোনও দিন চোখের জন সে ফেলবে না। কেমন ছিল সেই দিনের অভিজ্ঞতা!

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

মধ্যরাতের ভোর

এনসিপিএ-মুম্বই ১৪ অগস্ট রাত ১০টা থেকে আয়োজন করেছিল এক সঙ্গীতসন্ধ্যার—ডন অ্যাট দ্য মিডনাইট। যে সন্ধ্যায় ভারতীয় রাগসঙ্গীতের সঙ্গে পাশ্চাত্যের সঙ্গীতের আশ্চর্য মিশ্রণে শান্তনু মৈত্র তৈরি করেছিলেন এক মায়াবী সঙ্গীতআবহ। আর তাতে ফোঁটা ফোঁটা করে অমৃত যোগ করেছিলেন গুলজারজী। রাত পৌনে বারোটায় দর্শকরা স্বতস্ফূর্ত ভাবে গেয়ে উঠলেন ‘বন্দেমাতরম’। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হয়ে উঠল কানায় কানায়।

রাস্‌কিন বন্ড (Ruskin Bond)

গঙ্গা বয়ে যায়

‘সেই শীতে যখন আমি দেরাদুনে বাড়ি এলাম, তখন চরম সংকটের সময়টা কেটে গিয়েছে। আমার বয়স ১৩, ব্রিটিশ এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বাবা-মায়ের সন্তান, যার জন্ম ভারতে। কেউ কখনও আমাকে হেনস্থা করেনি, না দিল্লিতে, না দেরাদুনে। সেই সময় একদিন আমি আমাদের বিস্তৃত ময়দান পেরিয়ে একটি সিনেমা হল-এ ঢুকেছিলাম ছবি দেখতে। ছবিটির নাম ছিল ‘ব্লসমস ইন দ্য ডাস্ট’।’

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

আনন্দযজ্ঞের বাইরে, একা

‘সেদিন যেন শহরটায় কোনও আইনকানুন ছিল না। এই উৎসব এমনই ছেঁয়াচে যে, কিছুক্ষণ আমিও বিহ্বল হয়ে রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরে বেড়ালাম। কিন্তু ওই আনন্দযজ্ঞে আমার কোনও নিমন্ত্রণ আছে বলে মনে হচ্ছিল না। সেদিন আমার কোনও বন্ধুর সঙ্গে দেখাও হয়নি। পাড়ার যারা ছিল, তারাও যে কে কোথায় গিয়েছিল জানি না! এত একা লেগেছিল সেদিন!’

অদিতি মুখোপাধ্যায়

ঠাকুমাই ছিলেন সুপারস্টার

গোটা দেশের মানুষের কাছে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের কথা এত শুনেছি যে তিনি আমার মনে জ্বলজ্বল করছেন। তবে দাদুর চেয়ে আমার ঠাকুমা বাসন্তী দেবী ছিলেন আমাদের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী। আমি ঠাকুমার সঙ্গে হরিপুরা কংগ্রেস, ত্রিপুরী কংগ্রেস অধিবেশনে গিয়েছি। আন্দোলনের স্মৃতি।

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

ব্লাউজ দিয়ে জাতীয় পতাকা

‘সকালে উঠে দেখলাম চারিদিকে কাগজের পতাকা পতপত করে উড়ছে। তিনকোনা পতাকা। রাস্তার ওপরদিকে তাকালে আকাশ দেখা যাচ্ছে না। তখন তো এত মাইকের চল ছিল না! আশেপাশে অনেক ক্লাবের ব্যান্ড বাজতে শুরু করেছিল।’ স্বাধীন সকাল।

চিত্রা সেন

সেদিন মুসলমান পাড়ায় গিয়েছিলাম

‘আমরা প্রত্যেকে ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে হাতের কড়ে আঙুলে সেফটিপিন ফুটিয়ে এক ফোঁটা রক্ত বের করে, সেই রক্ত দিয়ে গান্ধীজির ছবিতে টিপ পরাতাম। মনে হত সক্রিয়ভাবে না হলেও, আমিও যেন তাঁদের আন্দোলনের শরিক হতে পারলাম।’ আত্মত্যাগের দেশপ্রেম।

মালবিকা ব্যানার্জি (Malavika Banerjee)

সেরা সময়টা আসছে

ক্ষণজন্মা তিনি। ১৯৪৭-এর মধ্যরাতের শিশুও বলা যেতে পারে। বুদ্ধিতে তীক্ষ্ণ, রূপে স্নিগ্ধ, গ্ল্যামারে অনন্য। জীবনের ৭৫ বছরে সঞ্চয় করেছেন আশ্চর্য সব অভিজ্ঞতা। আশা রাখেন তরুণদের প্রতি যারা আনবে ভারতের সেরা সময়।

ডাকবাংলা.কম

স্বাধীনতা দিবসের স্মৃতি

তাঁদের প্রত্যেকেরই বয়স আজ আশি পেরিয়ে নব্বইয়ের দিকে। পঁচাত্তর বছর আগে, ১৯৪৭ সালে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী তাঁরা। কীভাবে কেটেছিল সেই দিন? এত বছর পরে এসে স্মৃতিচারণ করলেন অমল চক্রবর্তী, সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনন্ত মহাপাত্র।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

তখন প্রবাসে রবীন্দ্রনাথ: পর্ব ৪

‘রবীন্দ্রনাথ দু’একবার কেশে গান শুরুর উদ্যোগ নিলেন। তারপর গান ধরলেন। সে যেন কিছু কথা আর সুরের সমষ্টি গলার ভিতর থেকে কোনওরকমে বের করা। হেসে গড়িয়ে পড়লেন সবাই। সেই হাসির আবার কী বিচিত্র প্রকাশ!’ অস্বস্তির পরিবেশ।

পৃথ্বী বসু

নীল অপেক্ষার দিনে

‘অপেক্ষায় থাকি, হয়তো এসব কেটে গিয়ে একদিন আবার সুন্দর একটা চর্চার ক্ষেত্র ফিরে আসবে। ‘নীল অপেরা’র মতো একাধিক পত্রিকা আবার জন্ম নেবে গুমটি চায়ের দোকানের আড্ডা থেকে; যারা কবিতার জন্য সারা পৃথিবীটা তোলপাড় করার ক্ষমতা রাখে।’ লিট্‌ল ম্যাগাজিন ভাবনা।

মৈত্রীশ ঘটক

কথার পিঠে কথা

আড্ডা-আলোচনা-বিতর্ক-ঝগড়া এদের কোন ধরাবাঁধা আঙ্গিক নেই, খানিকটা অনানুষ্ঠানিক বা আটপৌরেভাবে হওয়াটাই চল। তাই একটা থেকে আরেকটায় খুব সহজেই চলে যাওয়া যায়। আর কিছু ক্ষেত্রে আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে আর আসলে যা হচ্ছে সেদুটো আলাদা হতে পারে – আপনি ভাবছেন আড্ডা বা আলোচনা হচ্ছে কিন্তু তলায় তলায় বিতর্কের একটা চোরাস্রোত বইছে এটা হতেই পারে।