

মুক্তিযোদ্ধা
থিয়েটারকে নাগরিক বৃত্তের বেড়াজাল থেকে বের করে আনার যে লড়াই লড়েছিলেন বাদল সরকার, তা, বলা যায়, একরকমের মুক্তিযুদ্ধই। সেই লড়াইয়ে বাদল সরকার কিন্তু সফলও হয়েছিলেন।
থিয়েটারকে নাগরিক বৃত্তের বেড়াজাল থেকে বের করে আনার যে লড়াই লড়েছিলেন বাদল সরকার, তা, বলা যায়, একরকমের মুক্তিযুদ্ধই। সেই লড়াইয়ে বাদল সরকার কিন্তু সফলও হয়েছিলেন।
আজ শ্রাবণের এই অবিশ্রান্ত জলধারায় আমরা আর বিজন ভট্টাচার্যকে পাব না। যে বিজন ভট্টাচার্য ‘সুবর্ণরেখা’-য় বলেছিলেন, ‘ঈশ্বর, আমারে কইলকাতায় নিয়া যাবা?’ সেই কলকাতায় আমরা আর
‘কত কিছু যে শিখিয়েছেন, তা ঠিক গুনেগেঁথে বলা যাবে না। আসলে আমি যখন বাদলদার কাছে গিয়েছিলাম, তখন ছিলাম একটা মাটির তাল। সেই মাটির তাল থেকে বাদলদা আমায় গড়ে তুলেছেন। মৃণালদা হয়তো সেই গড়নের ওপর রং-টং চড়িয়ে আমায় আরও পালিশ করে দিয়েছেন, কিন্তু মুখ্য কারিগর হলেন বাদলদা।’
‘‘‘রক্তকরবী’ রচনার শতবর্ষ। বাদল সরকারেরও একশো স্পর্শ করা। তবে এখানে কোনও সমাপতন নেই। দীর্ঘদিন ধরেই রঞ্জনের উত্তরপুরুষের মতো তিনি কাজ করেছেন। নাহলে ‘মিছিল’-এ কী করে প্রবেশ করে সর্দারের দল! ওই যে একদা ‘গীতবিতান’ সম্বল করে সাতসমুদ্র তেরো নদী পার হয়ে বিদেশ যাত্রা করেছিলেন?’’
‘বাদলদা আদ্যপান্ত রাজনৈতিক মানুষ ছিলেন, কিন্তু কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের রঙ ঘেঁষা নন। উনি বলতেন, যে-মুহূর্তে একটা সৃষ্টি রাজনৈতিক রং পেয়ে যায়, সেটা আর স্বতন্ত্র সৃষ্টি থাকে না। ওঁকে দেখে হঠাৎ করে মনে হতেই পারে উনি কমিউনিস্ট, তা উনি ছিলেন না।’
“‘অনঙ্গমোহন’ কাব্য দিয়ে তাঁর লেখালেখির শুরু। সংবাদ-প্রভাকর দফতরে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত যে-দিন একটা ‘ইংলিশম্যান’ কাগজ থেকে খানিকটা তাঁকে অনুবাদ করতে বলেছিলেন, অক্ষয়কুমার সোজা বলে দিয়েছিলেন, ‘আমি কখনও গদ্য লিখিনি, আমি লিখতে পারব না’। পরে গদ্যই হয়ে ওঠে তাঁর লেখার প্রধান বাহন।”
‘ভারতের যে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, তাতে ভাষা-সংস্কৃতির বিভিন্নতাকে স্বীকার করার কথা। অথচ তা আর হচ্ছে কোথায়? ট্রাম্প যেভাবে লাইবেরিয়ার ইংরেজি নিয়ে ফুট কাটেন সেই একই মানসিকতা ভিন্ন রূপে এই ভারতেও হাজির। লাইবেরিয়া সাদা মুখোশকে মুখ বলে মেনে নিয়ে প্রয়োজন মেটাতে চাইতে পারেন।’
‘ফ্রান্স তার বিপ্লবের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করতেই পারে। কিন্তু ফ্রংকোফোন আফ্রিকা বা ফরাসিভাষী আফ্রিকার অধিকাংশ মানুষের চোখে এখন তার কোনও মূল্য নেই। প্রাক্তন এই উপনিবেশগুলো খাতায়-কলমেই স্বাধীন। আজও তারা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায়নি।’
“জল আমাদের ব্যথা বোঝে, কিন্তু স্থল? নিজেকে প্রশ্ন করি, সামতাবেড়ে আলাপ হওয়া হরিদাস পাড়ুইয়ের মতো আমি কি কোনওদিন অত সহজে কাউকে বলে উঠতে পারব, ‘খাড়ায়েন কত্তা, মোরা ময়দানের খেলোয়াড়, যাব আর আইব’? জানি, পারব না।”
‘জরুরি অবস্থা যখন এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে সমাজদেহে জাগছিল মুক্তিব্যাকুল উসখুস। বিশেষত ছটফট করছিল সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পজগতের মানুষজন। নাটকের দলগুলি নড়াচড়া শুরু করে দিয়েছিল।’
‘ছেচল্লিশ বছরে এমন অনেক দিন গেছে, অনেক সন্ধে গেছে, যখন কেবল আড্ডাই মেরেছি। প্রসেনিয়াম থিয়েটার দলগুলোর মতো আমাদের টার্গেট পয়েন্ট ছিল না। আড্ডা দিতে-দিতে, ইচ্ছেখুশির পাল তুলে দিয়ে খেয়ালখুশির ভেলায় চড়ে আমরা কাটিয়ে দিলাম এতগুলো বছর!’
‘এদিকে ফোনে চার্জ কমতে-কমতে প্রায় শূন্য আবিষ্কারের দোরগোড়ায়। বাস যাবে আরও পঁয়তাল্লিশ মিনিট। তারপর হয়তো আরও দশ মিনিট হাঁটতে হবে। এই সময়টা বাড়ির ফোন আসবে না ভেবে আপনি নিশ্চিন্ত হবেন, না কি, যাকে বলে ‘প্যানিক’, তা গ্রাস করবে আপনাকে?’
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.