সমালোচনা

নয় এ পুতুল খেলা

‘ম্যাটেল কোম্পানির তৈরি একটি পুতুল আস্তে আস্তে সচেতন হয়ে উঠছে এবং নিজে গটমট করে নিজেরই স্রষ্টা ম্যাটেলের সদর দপ্তরে ঢুকে পড়ছে, এই দৃশ্য অযুত সম্ভাবনার জন্ম দেয়।…কিন্তু সেই সম্ভাবনার বীজ গাছের জন্ম দেয় কি?’

ভেঙে পড়ার শব্দগুলি

‘সেই বলশেভিক বিপ্লবের সময় থেকেই আমেরিকা কমিউনিজমের ভূত দেখত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন-এর সঙ্গে ‘ঠান্ডা যুদ্ধের’ সময় তা আরও প্রকট হয়।’

কুয়াশায় ঢাকা কান্নাগুলো

‘গোটা সিরিজটি জুড়ে রয়েছে এক আশ্চর্য শূন্যতা। চরিত্ররা নিজেরাও হয়তো জানে না, তারা এক দিশাহীন শূন্যতার ঘূর্ণির মধ্যেই নিত্যকার জীবন কাটাচ্ছে। ‘কোহ্‌রা’ শুধু ঝাপসা হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর কান্না দেখায় না। সুযোগ এনে দেয় উপলব্ধির আর প্রায়শ্চিত্তেরও।’

কবীর চট্টোপাধ্যায়

খবরের কাটতি, খবরের ঘাটতি

‘এলিয়েনেশন যে নিছক সামাজিক বা অর্থনৈতিক তত্ত্ব নয়, এর যে একটা বিরাট প্রভাব পড়ে আমাদের চারপাশের রক্তমাংসের মানুষের উপরে, জাগৃতি বা ইমরানদের মানসিক ব্রেকডাউনের উপর দর্শকের দৃষ্টি টেনে রেখে তা স্পষ্ট দেখিয়ে দিল ‘স্কুপ’।’

সেই বোধের আনাচ-কানাচ

‘রাজীবের নাটকে সত্য আড়ালে ছিলেন। মেঘের আড়ালে শূন্যের মতো। সুমন তাঁকে মঞ্চে নিয়ে এলেন। রিয়্যালিস্টিক ড্রামার মোড়ক ছাড়িয়ে একটু ফ্যান্টাসি এলিমেন্ট জুড়ে দিলেন। কোনো স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্নের খেই ধরে নেই, এমনিই।’

দেব রায়

মহাকাব্য নয়, ইচ্ছাধারী নাগিন

ছবির প্রথমেই সম্ভব-অসম্ভবের এক মায়াজগতে ঢোকার আভাস থাকে। ছবির পরতে পরতে দগদগে মানবিক প্রবৃত্তির ছাপ, অসামান্য অভিনয়, সুরের মাতাল নেশা, তেমনি ফোটোগ্রাফি কিন্তু আদতে জমাট বাঁধে না গল্প। তাই প্রত্যাশা অপূর্ণ থেকে যায়। হাওয়া ঝড় তুলল না।

বন্ধু প্রজাপতির জীবনচক্র

‘বাংলার বহুত্ববাদী অতীতের সুতোয় টান মেরে সংস্কৃতির ভাঙা সেতু চিনিয়ে দিলেন প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। এই সেতুর মেরামতি যে আমাদের মতো দেশে যে-কোনও শিল্পের আদত কর্তব্য এবং বুকে-পিঠে গজাল না ঠুকেও যে তা করে ফেলা যায় ‘দোস্তজী’ তারও বিজ্ঞাপন।’ সমন্বয়ের সংকেত।

বোড়ে দিয়ে কিস্তিমাত

‘নিজেকে জাহির না করে নিজের প্রগাঢ় নাট্যপ্রেম আর পাক-ধরতে-শুরু-করা চলচ্চিত্রবোধ দিয়ে ঘুঁটি সাজাতে পারলে রাজা-উজির নয়, বোড়ে দিয়েও যে কিস্তিমাত করা যায়, ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ তার বিজ্ঞাপন হয়ে থাকল। ফের মনে করিয়ে দিল যে বাংলা থিয়েটারের কাছে বাংলা সিনেমার ঋণ কখনই চুকবার নয়।’

ভিসুয়াল ন্যারেটিভের নতুন দিগন্ত

সাম্প্রতিককালে এই বাংলাতেই নিজ-নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত চারজনের একটি দল ইচ্ছেমতো কমিক্সকে ঢেলে সাজাতে নানা রকম উদ্যোগ নিতে শুরু করে। তারই এক উজ্জ্বল নিদর্শন পেঙ্গুইন বুক্‌স থেকে প্রকাশিত সম্পূর্ণ মুক্তমনা কমিক্সের একটি সংকলন ‘লংফর্ম ২০২২’।

মীরা মুখোপাধ্যায়ের সন্ধানে

‘মীরা মুখোপাধ্যায়ের কাজের অপূর্ব স্পর্শানুভূতি থেকে আন্দাজ করা যায় কী সাংঘাতিক শ্রমসাধ্য পদ্ধতিতে, কত যত্নে তা নির্মিত। অরুণ গাঙ্গুলির ছবি এবং কিউরেটরদের লেখায় শুধু যে কার্যধারার বিভিন্ন ধাপ সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে তাই নয়, শিল্পকর্মের শ্রমের বাস্তবতা, ঘাম-মাটি-ঘুঁটের গন্ধ, ঢালাইয়ের আগুনের তাপ আর বন্ধুত্বের উষ্ণতা উপলব্ধি করা যায়।’

শুভময় মিত্র

রাষ্ট্র বনাম ক্যামেরা

‘ফোটোগ্রাফি-শিল্পের বিনোদনের চেনা সংজ্ঞাগুলো ধুলোয় লুটচ্ছে। কনটেন্ট ও স্টাইলের পাশাপাশি পলিটিক্স ও এস্থেটিক্স চলছে তার সমান্তরাল দৌড়ে। পশ্চিমে যা দেখার দেখে-বুঝে শহিদুলের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন। সে-সময়ের বাংলাদেশের পরিস্থিতি শিল্পীকে গদিমোড়া সোফায় নিশ্চিন্তে বসে থাকতে দেয়নি। মাথা থেকে শরীর যখন ক্রমাগত দগ্ধ হয়ে চলেছে, রোম্যান্স-আর্ট বিলাস কীভাবে অগ্রাধিকার পাবে? এই প্রদর্শনীতে তারই কর্ড প্রগ্রেশন।’

সুরক্ষিত বায়োপিক

‘বাংলা ছবির নিরিখে যে বাঁধভাঙা উল্লাস অনীকের ছবিটির সমাদরকে চিহ্নিত করেছে, তা অবশ্যই নজরকাড়া। তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে এক্ষেত্রে ছবির নিজস্ব গুণ আর পারিপার্শিক এক হয়ে বাংলা ছবির সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটা মাইলস্টোন রেখে গেল? অনীকের ছবিতেই যেমন দেখানো হয়েছে যে ‘পথের পদাবলী’ সাধারণ মানুষ হলে গিয়ে টিকেট কেটে দেখবে কিনা সে ব্যাপারে অপরাজিত রায় বেশ চিন্তিত। অপরাজিত রায়ের ‘চিন্তা’র খেই ধরেই তাই প্রশ্ন উঠতে পারে, অনীকের বায়োপিক এর মধ্যেই কি এমন কিছু আছে যা জনগণের স্বীকৃতির জন্যে মরিয়া?’