চিত্রকলা

স্মৃতির কথকতা

‘স্বপনের ছোটবেলা কেটেছে বনগাঁতে, বহুদিন অবধি মাটির বাড়িতে। সেই মাটি পুড়িয়ে শক্ত ইটের বাড়িও এসেছে সময়ের নিয়ম ধরে। সেই সোঁদা মাঠ-ঘাট, গাছ-পাতালির মিতালি আজও আছে। মাঝবয়সের স্বপন এখন ঘর বেঁধেছেন আর এক গাঁয়ে। বীরভূমে। ফিরে পেয়েছেন ছেলেবেলার সেট। চলচ্চিত্র নির্মাণে বাধা থাকেনি। সেটি রয়ে গেছে মনের ভিতরে। দরকার পড়েনি অভিনেতার। স্মৃতির কথকতায় ছবিটা সাইলেন্ট হয়েও হয়নি।’

শুভময় মিত্র

ক্ষতের শিল্পে বিরাজমান শিল্পী

আজ থেকে একশো বছর আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া ফ্র্যাজাইল শরীরের এই মানুষটির সৃষ্টি নিয়ে আর্ট দুনিয়া এই মুহূর্তে উত্তেজিত। অকশন হাউস, আর্ট গ্যালারি, বই প্রকাশ, ডকুমেন্টারি, কী না হচ্ছে। উনি রেখে গেছেন ওঁর জীবনভর সংগৃহীত, সৃষ্ট, অজস্র ক্ষত।’ শতবর্ষে সোমনাথ হোড় : ‘অর্থশীলা’, শান্তিনিকেতন; প্রদর্শনী চলবে ২০ মে, ২০২২ পর্যন্ত

ধূসর মুখাবয়বের আলো

‘রামানন্দের ছবির আর এক চরিত্র হল আলো। ছবিতে অন্ধকার নেই। আলোয় ঝলমলে প্রেক্ষাপট অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। রাতের পটভূমিতে যে নীল ব্যবহার করেছেন, তা-ও বড় স্নিগ্ধ। আঁধারকে আলো দেখাচ্ছে যেন।’ দেবভাষায় রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প প্রদর্শনী।

পৃথ্বী বসু

রেখো, মা, দাসেরে মনে

‘যেই দুজন শিশু চলে এল একটা চুম্বনদৃশ্যে, অমনি একলাফে ছবিটার অন্য এক অর্থ আমাদের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকল। তাহলে কি দাস চুম্বনের সারল্যকে প্রত্যক্ষ করাতে চাইছেন? চুম্বনরত মানব-মানবীর মনের প্রতীক হয়ে যেন ওই দুজন শিশু উঠে এল হরেন দাসের ছবিতে।’ ছবির ব্যঞ্জনা।

শিল্পী সত্যজিৎ

‘…সত্যজিতের শতবর্ষে এটা অবশ্যই মনে রাখা দরকার যে, ভারতবর্ষের গ্রাফিক ডিজাইনের জগতে দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে সম্পূর্ণ একা হাতে সত্যজিৎ যে অভাবনীয় একটা উত্তরণ ঘটিয়ে গেছেন, তার কোনও তুলনা আজও খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।’ শিল্পীর চোখে পরিচালকের শিল্পসত্তা।

গণেশ হালুই

যে পথ ধরে

‘…অবনীন্দ্রনাথ হলেন বেঙ্গল স্কুল অব আর্ট-এর জনক। পরে যাঁরা এসেছেন, বা আমরা যারা এসেছি, তাঁরা সবাই এক অর্থে তাঁর সন্তান। সন্তানদের মধ্যে পিতার অনেক ছাপ থাকে। হাবভাব-ব্যবহারে মিল থাকে। কিন্তু ভাবনাচিন্তার ধরন ও তা প্রকাশের ভঙ্গি অন্যরকম হয়।’ প্রাসঙ্গিক অবনীন্দ্রনাথ।

জয়ন্ত সেনগুপ্ত

আমার অবন

‘…ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের নিজস্ব সংগ্রহে রয়েছে তরুণ অবনীন্দ্রনাথের – সতেরো-আঠারো থেকে শুরু করে তেইশ-চব্বিশ বছর বয়স অবধি – আঁকা পঞ্চাশটির বেশি ছবি, আর সেখানে সংরক্ষিত রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির সংগ্রহে এক পরিব্যাপ্ত সম্ভার, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে পাঁচশো ছবি, যার সৃষ্টিকাল ১৮৯০ থেকে শুরু করে প্রায় তার পর অর্ধশতাব্দী জুড়ে।’ শিল্প সংগ্রহে অবনীন্দ্রনাথ।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

জলে ধোওয়া সময়ের স্মৃতি

‘অবনীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত সরঞ্জামের ভিতর জাপানি তুলি দেখে ধারণা হয়, তিনি জাপানের তুলি ব্যবহার করতেন। ১৯২০ সালের মাঝামাঝি অবনীন্দ্রনাথের আঁকা গাছের ডালে বসা পাখি আর চাঁদের ছবি একেবারে জাপানি ছবি বলে ভুল হতে পারে।’ অবনীন্দ্রনাথের ছবিতে জাপানি প্রভাব।

অমিতাভ পুরকায়স্থ

জননায়ক কালকেতু

‘…অবনীন্দ্রনাথ যে চণ্ডীমঙ্গলকে বিষয় হিসেবে বেছে নেন, তার আরেকটি কারণ ধরা পড়ে সে সময়ের জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট থেকে। তখন জাতীয় রাজনীতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অংশীদারি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছিল।’ মঙ্গলকাব্যে অবনীন্দ্রনাথ।

সুজান মুখার্জি

মূর্তি ভাঙার অর্থ কী?

‘…মনে রাখতে হবে যে, যখন কোন স্ট্যাচুকে আক্রমণ করা হয়, সেটা শুধুমাত্র ইতিহাসকে লক্ষ্য করে তা নয়। তার মধ্যে লুকিয়ে আছে সেই শহরের অধিকারের ওপর বিক্ষিপ্ত মানুষদের দাবি।’ মূর্তি গড়া-ভাঙার সেকাল-একাল।

পৃথ্বী বসু

ওয়ার্ডটুন

‘অবাক লাগলেও একথা না মেনে উপায় নেই, যে কোনও শব্দকে তারই অনুষঙ্গে ছবিতে বদলে ফেলতে চিত্রশিল্পী শুভেন্দু সরকারের সময় লাগে গড়ে পাঁচ মিনিট থেকে সাত মিনিট। আর এ এমনই এক পদ্ধতি, যা শুভেন্দুরই মস্তিষ্কপ্রসূত। ছবি আঁকার এই পদ্ধতির নাম তিনি রেখেছেন ‘ওয়ার্ডটুন’।’ ছবির ম্যাজিক।

উল্কিতে যামিনী রায়, নন্দলাল!

পিঠ জুড়ে আলপনা, হাত পেঁচিয়ে সরা বা কাঠখোদাইয়ের নকশা, কালীঘাটের পটচিত্র অনুসারে দুর্গা-গণেশ-সরস্বতী এবং যামিনী রায় বা নন্দলাল বসুর বিখ্যাত কাজ — কলকাতা থেকে জার্মানির মানহেইমে ট্যাটুশিল্পী অভিনন্দন বসুর অসামান্য উল্কির জয়জয়কার।