
এক শালিক: পর্ব ১২
দামি গাড়ি রোলস রয়েস-এর রেকর্ড বিক্রি হল গত বছর। সারা পৃথিবী যখন আর্তনাদ করছে আর খরচা কমাচ্ছে, তখন বড়লোকরা কোটি কোটি টাকা খরচা করে গাড়ি কিনছেন কেন? এতে কি ধনী ও দরিদ্রের মূল মনোভঙ্গির তফাত বোঝা যায়?
দামি গাড়ি রোলস রয়েস-এর রেকর্ড বিক্রি হল গত বছর। সারা পৃথিবী যখন আর্তনাদ করছে আর খরচা কমাচ্ছে, তখন বড়লোকরা কোটি কোটি টাকা খরচা করে গাড়ি কিনছেন কেন? এতে কি ধনী ও দরিদ্রের মূল মনোভঙ্গির তফাত বোঝা যায়?
এ-গ্রহের অতি নির্বোধ লোকও মালুম পেয়েছে, কোভিড ধাঁ করে উবে যাবে না, একে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে, একটু হাঁচো-কাশো, তারপর সাতদিন ঘরে কাটিয়ে ফের নাচো-হাসো, পরবর্তী সংক্রমণে ধুত্তোর বলে পুনরায় ঘরে ঢুকে পড়ো— এই প্যাটার্নই আগামীর থিম।
‘উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের গাদা-গাদা ব্রণ গজাবে মাস্কে, এবং এই মানবেতিহাসে প্রথম, কান থেকে সুতো ছিঁড়ে একটি জিনিস টান মেরে ফেলে দিলেই গুচ্ছের ব্রণদাগ নিমেষে হাপিস। আবার উল্টোও হবে, ছেলে কলেজ যাওয়ার কালে হাঁকবে, মা! আমার ব্রণভরা মাস্কটা ফেলে দিয়েছ না কি!’ আগামীতে যা ঘটবে।
মানুষ যখনই নিজেকে ভাবে স্বাধীন, ঠিক তখনই সে একটা ভাল জাতের শেকল এনে নিজেকে শক্তপোক্ত করে বেঁধে নেয়। শৈশবের পরাধীনতার দিকে তাকিয়ে সে যেমন আক্ষেপ করে সুখের দিন চলে গেল বলে, আবার নিজের রোজগারে লাগামছাড়া জীবন কাটালেও অস্বস্তি বোধ করে কেউ কিছু না বললে!
ইরানে বলা হচ্ছে, অন্য জন্তুর প্রতি ভালবাসা খরচা করে মানুষ তার হৃদয়স্থিত প্রেমের অপব্যবহার করছে, কারণ ওই শুদ্ধ আবেগ মানুষের আধারে প্রদত্ত হয়েছে তো পরিবারের অন্য সদস্যদের, গোষ্ঠীর অন্য মানুষের প্রতি ধাবিত হবে বলেই। তাই পোষ্য রাখার অভ্যাস ‘ক্ষতিকর সামাজিক সমস্যা’।
‘বিবাহ প্রাথমিক ভাবে যৌন চুক্তি, ফলে এক কুমার ও এক কুমারীর বিয়ে হবে, তারা প্রথম যৌনতার স্বাদ পাবে পরস্পরের কাছ থেকে, শয্যাতুলুনিতে রক্ত দেখে মেয়ের ব্যাপারটায় আত্মীয় ও প্রতিবেশীরাও নিশ্চিত হবে (কারণ তার সতীত্বই বেশি গুরুত্বপূর্ণ), এরপর বাচ্চা হবে এবং কোনও সন্দেহই থাকবে না এটি কার বাচ্চা।’ বিবাহের উদ্দেশ্য।
পাশ্চাত্যে বিভিন্ন দেশে চলছে কোভিড-বিধি-বিরোধী-আন্দোলন। ভ্যাকসিন নিতে আপত্তি, লকডাউনে আপত্তি, মাস্ক পরতে আপত্তি। ভারতে অনেকেই হয়তো কোভিড বিধি মানে না, কারণ অনুশাসনের ব্যাপারে তারা একটু উদাসীন টাইপের। কিন্তু ইউরোপ বা আমেরিকায়, এ হল ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রকাশ। ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করা, তাদের মতে, মানবাধিকার লঙ্ঘন।
‘ফ্রিডা বা জেডি, সবাই প্রণম্য স্মরণীয় ও ঝুঁকে পড়ে অনুধাবনীয়, কিন্তু ভারতের একটা জঙ্গলে রাতদুপুরে সন্তানের কঙ্কালের পাশে এলিয়ে পড়ে থাকা, পচা-গলা নারীর করোটি এঁদের (ও অন্য আরও বহু চিরজ্যোতির্ময়ের) শিল্পগুলোর দিকে এক নির্ভেজাল খ্যাঁকখ্যাঁক ছুড়ে দেয়, ক্রমাগত।’ শিল্প বনাম জীবন।
আজ ইজরায়েল আর প্যালেস্তাইনের মধ্যে ক্রিকেট খেলা হলে, বা আফগানিস্তান ও আমেরিকার মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ হলে, অথবা জার্মান বনাম ইহুদি কবাডি টুর্নামেন্ট হলে, তা শুধু স্কোরবোর্ড-সর্বস্ব হয়ে থাকবে? খেলা কেবল খেলা নয় হয়তো।
এবারের টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপে প্রত্যেকটা দল, কোনও-না-কোনও ইঙ্গিতের মাধ্যমে কৃষ্ণাঙ্গদের পক্ষে অধিকারের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। কেউ এক হাঁটু গেড়ে বসছেন, কেউ আবার মুষ্টিবদ্ধ একটা হাত ওপরে তুলছেন! কিন্তু আশ্চর্যের, কুইন্টন ডিককের মতো খেলোয়াড় আবার এই প্রতিবাদে অংশই নিলেন না!
বাংলাদেশে যত মুসলিম মৌলবাদের দৌরাত্ম্য বাড়বে, তত ভারতে হিন্দু মৌলবাদেরও দৌরাত্ম্য বাড়বে, কারণ violence begets violence, money begets money, এবং মৌলবাদ begets মৌলবাদ, ক্রোধে ক্রোধকে চাগাবেই। উগ্রবাদের মস্তানি।
‘…নতুনতর নর্মাল-এ, প্রায় সকলেই যখন হয়ে উঠবে নির্বিবাদী ক্লিশেপন্থী নরম নকুলদানা, সব ‘না না’ ঘুচে ফুটে থাকবে কানা খানা গানা ঘানা, সার্বিক সামগ্রিক সামূহিক নজরদারিকে তারপর এক সময় মনে হবে অক্সিজেনের মতোই প্রয়োজনীয়, ভ্যাকসিনের মতোই জরুরি।’ নাগরিক নজরদারির অনুপ্রবেশ।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.