স্বরবর্ণ
মেঘের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা স্বরবর্ণ ব্যক্তি
কখন যেন হাত তুলেছে, বাজার অবসন্ন।
জাহাজ ছিল প্রবাদ, তারও গল্প আছে একটি
এখন মৃদু বর্ষাকাল, তরল স্বরবর্ণ
ভাসছে পথে, আসছে আর যাচ্ছে কত সস্তায়।
যেন পথের নীচু হোটেল, ভাতে কাঁকর তিনটে…
তোমারও মন নিথর হল সকাল সাড়ে দশটায়
আমারও গেল বাকি জীবন ফেরার পথ চিনতে।
এখান থেকে জিপ ছুটেছে সুপান্থ মনাস্ট্রি
দেখা হবার ছুতোয় কিছু গাছের অভিনন্দন
অর্থহীনতাই এখন মানে খোঁজার শাস্তি…
তোমার চোখ খোলা, আমার সরাইখানা বন্ধ।
দুঃখ ছিল অনেক, আর প্রশ্ন ছিল একটি—
মেঘের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা স্বরবর্ণ ব্যক্তি…
আবিষ্কার
তুমি রুমাল কুড়িয়ে পেলে ক্যাফেটেরিয়া প্রান্তে
বেহালা নিয়ে বাড়ি ফিরছে রসায়নের ছাত্র
রোমাঞ্চ নেভাচ্ছ জানি, কেবল যদি জানতে
আবিষ্কার বিক্রি হতে দু’দিন লাগে মাত্র।
এই হঠাৎ সুগন্ধের ইচ্ছেহারা মঞ্জিম
বাঁধে তোমায় অনর্গল। কালো কফির বন্ধু
তোমার খাতা ডানা পেলেই অতীত দিনপঞ্জি
বাতাস জানে এ শহরের অভিসারিকা কোন দূর।
রোদের খোলা চত্বরেই ম্যাজিক খোলা মিস্ত্রি
ছড়াচ্ছে কোন মোহর, তাতে বিকেল হবে বিস্ময়
তোমার হাতে উপন্যাসের না-লেখা সেই কিস্তি
এবার কোনও সম্পাদক তৈরি হবে নিশ্চয়…
দূরে কোথাও বেহালা আর হাতে কফির পাত্র
আবিষ্কার বিক্রি হতে দু’দিন লাগে মাত্র।
রাপুনজেল
এখনও কোনও বন্দরে সে নাবিক অভিশপ্ত
হোটেল ভেসে উঠতে থাকে হারানো মেঘপুঞ্জে…
দিয়েছে কারা একলা হওয়া মেয়েটিকেই সব দোষ
জানলা থেকে দূরে তাকায় বিষণ্ণ রাপুনজেল
রাস্তা যত ভিজে একশা ছড়িয়ে গেছে দূরতক
সোনালি চুল বাদামি চুল ভাবনারা অনাম্নী…
এখানে চোরা সন্ধে নামে, শেয়াল যেন ধূর্ত
আমিও কিছু খাবার কিনে শেষরাতের ট্রাম নিই।
দেখি উদাস রূপকথার বানান ভুলে কষ্ট
দেখি নাবিক বৈঠা হাতে উঠছে ভিড় মেট্রোয়…
এখানে মিথ অদরকারী, সহজে বিধ্বস্ত
এবং প্রেম সময়মতো সংগঠিত ক্ষেত্র।
অপরাধী তো বর্ষাকাল, করিয়েছিল খুন যে
জানলা থেকে দূরে তাকায় বিষণ্ণ রাপুনজেল।
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র