৫
এবার দেয়াল থেকে তুলে নাও সমস্ত কবিতা।
পৃথিবীর সব আঁচ শীতের পোশাকে এসে থিতু
তুষার পোহাচ্ছে, দ্যাখো, কাছে দূরে ছোট বড় চিতা…
নিভে গেল ব’লে তুমি আগুনের নাম দিলে ভিতু।
নীল রক্ত ফুটে আছে, গাছে গাছে সে অপরাজিতা
আমি খুব দূর থেকে দেখি—
তোমাকে সাজিয়ে দিক কসাই রঙের এই ঋতু।
৬
আর আমার হাতে কিছু নেই
তোমারও তো হাত দেখছি খালি
কী মসৃণ একই কাণ্ড রোজ ঘটছে চোখের সামনেই—
তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে, যারা হেঁটে বেড়াচ্ছিল কালই।
কার দিকে ফেরাব মুখ? রাগ হলে কাকে দোষ দেব?
প্লাস্টিক ব্যাগের মধ্যে সংখ্যা হয়ে ঢুকে যাচ্ছে
নামহীন, পরিচয়হীনা…
আমরা শুধু রোজ রাতে নিজেদের ছুঁয়ে দেখে নেব
এই মুহূর্তে বেঁচে আছি কি না!
৭
আরতি। প্রার্থনাগান। সংখ্যা নিয়ে জড়ো হয় লোকে।
বিষের অমৃত ছোটে রোম থেকে বারাণসী, কাবা…
মানুষ আতর মাখে। কুকুর গায়ের গন্ধ শোঁকে।
সেই একই ঘুঁটি দিয়ে একই চালে খেলা হচ্ছে দাবা।
রাতের বাতাস যেই আরামের অন্ধকারে ঢোকে—
মাটি ফেটে আকাশ অব্দি উঠে যায় উত্তাপের আভা
কোথাও না কোথাও রোজ পাহাড়ের চুড়ো ফেটে
ছিটকে পড়ে দমকে দমকে
পৃথিবীর রক্তবমি। তুমি যার নাম দাও লাভা।
৮
মরা গাছে এসেছে বাহার।
তবু কেউ থাকবে না পরের বর্ষায় কিংবা শীতে।
খুব আবছা শোনা যাচ্ছে শেষতম জাহাজের ভোঁ…
আজ কী যে হয়েছে তোমার,
একা একটা নৌকো নিয়ে গান গেয়ে ভেসে যাচ্ছ
শিরা কেটে বানানো নদীতে—
পিছনে তাকিয়ে দ্যাখো, কতদূর চলে এসেছ!