ট্যাবু থেকে ট্রেন্ড

Representative Image

আজও ‘যৌনতা’ শব্দটা বাঙালিকে উচ্চারণের আগে চারপাশে তাকিয়ে দেখে নিতে হয়, আশপাশে কোনও গুরুজন নেই তো! বাসে, ট্রামে, মেট্রোতে যৌনতা নিয়ে কথা বলতে গেলে গলার স্বর কমিয়ে কথা বলতে হয়, নয়তো পাশের লোকটি হাঁ করে শুনবে। এটাই হয়ে আসছে এবং এটাই হবে! যে বিষয়টা নিয়ে রহস্য থাকে, সেই বিষয়টা নিয়েই আমাদের আগ্রহ বেশি জন্মায়। তাই ভ্রান্ত ধারণাও বড্ড বেশি থাকে। বাঙালির বাইরে রক্ষণশীলতা এবং ভেতরে উদ্দাম যৌনতা বাঙালিকে এমন একটি জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে, যেখানে সে কিছুই ঠিক করে জেনে উঠতে পারছে না।

যৌন ফ্যান্টাসি বা চাহিদা একটা বৃহৎ বিষয়। এক-একজনের চাহিদা ভিন্ন। এক-একজনের কামনা-বাসনা ভিন্ন। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি আমাদের একটা বাঁধা গতে চালনা করেছে। যেখানে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে অমুক জিনিসের বাইরে কিছু হয় না! আমরাও সেটাই অভ্যেস করে আসছি। কিন্তু যৌন ফ্যান্টাসি এবং তার ভিন্ন রূপ সেই আদিমকাল থেকে চলে আসছে। হরপ্পা-মহেঞ্জোদারোর সময়েও সেক্স টয় ছিল। তখনও বিভিন্ন ধরনের যৌন ফ্যান্টাসি ছিল। হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো সভ্যতা শুধু তাদের নগর পরিকল্পনা ও নিষ্কলুষ জলনিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং তাদের সমাজে যৌনতা ও প্রজননের ধারণাও এক বিশেষ গুরুত্ব পেত—তা বোঝা যায় তাদের আবিষ্কৃত কিছু নিদর্শন থেকে। প্রত্নতাত্ত্বিক খননে এমন একাধিক টেরাকোটা (পোড়ামাটির) বস্তু পাওয়া গেছে, যেগুলি পুরুষাঙ্গ বা স্তনবৃন্ত আকৃতির, যেগুলিকে কেউ কেউ প্রাচীন ‘সেক্স টয়’ বা কামবস্তু বলে মনে করেন। আবার বহু-সংখ্যক স্তন বৃহৎ নারীমূর্তি (মাদার গডেস ফিগারিন) পাওয়া গিয়েছে, যেগুলি স্পষ্টতই প্রজননশক্তির প্রতীক, তবে কোনও কোনও গবেষক এগুলিকে প্রাচীন সফট-পর্নোগ্রাফির রূপ বলেও উল্লেখ করেছেন। কয়েকটি সিলমোহরে মিলনরত মানবমূর্তি খুঁজে পাওয়ারও প্রমাণ রয়েছে, যা আদিম কামভাবনা বা যৌনচেতনার সাংকেতিক প্রকাশ হতে পারে। যদিও এগুলির অনেককেই ধর্মীয় বা পূজার উপাদান হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়, তবু বর্তমান গবেষণার আলোকে ধারণা করা যায়— হরপ্পা সভ্যতায় যৌনতা ছিল স্বাভাবিক ও উন্মুক্ত, এবং ব্যক্তিগত কাম-উত্তেজনার উপকরণ হিসেবে সেক্স টয়ের আদিম রূপও হয়তো ব্যবহার হত। তবে একে একেবারে আধুনিক সেক্স টয়ের সমতুল্য বলা যাবে কি না, তা এখনও গবেষণার বিষয়।  কিন্তু আধুনিক যৌনতাকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিরাট একটা অর্থনীতি। পরোক্ষভাবে যৌনতাকে এখন নতুন মোড়কে ব্যবসায়িক রূপ দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে সমাজ-মাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। 

আরও পড়ুন : ইতিহাস জুড়ে দুঃসাহসিকতার সাক্ষ্য রেখেও কেন নারী গুপ্তচরদের বাঁধা পড়তে হয় যৌন আবেদনের ফাঁদে? লিখছেন ভাস্কর মজুমদার…

ইনস্টাগ্রাম খুললেই অজস্র উঠতি মডেলের ছবি চোখে পড়বে। তাঁদের প্রোফাইলের নিচে একটি করে লিঙ্ক শেয়ার (‘অনলি ফ্যানস’, ‘স্কাই’) করা থাকে। যেগুলি একধরনের গুপ্ত অ্যাপ্লিকেশন। যে লিঙ্কে ঢুকলেই আপনি সেই মডেলের বলিষ্ঠ ছবি দেখতে পাবেন, একটি নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে। যাকে ইংরেজিতে বলে ‘সাবস্ক্রিপশন’। এখানেই শেষ নয়, চাইলে আপনি ওই ব্যক্তিকে দিয়ে আপনার জন্য বিশেষ কোনও মেসেজ বা ভিডিও বানাতে পারেন। ধরুন, আগামীকাল আপনার জন্মদিন, সেই জন্য তাঁকে একটি নির্দিষ্ট অর্থ দিলেই সে আপনার জন্য বিশেষ একটি ভিডিও বার্তা বানিয়ে পাঠাবে এবং তাঁর সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করবে। নতুন প্রজন্মের কাছে এটিও একটা কাজের ক্ষেত্র।

দেহব্যবসা মানব-সভ্যতার প্রাচীনতম পেশাগুলোর একটি— সুমের, ব্যাবিলন, ভারত কিংবা গ্রিস, রোম— সব সমাজেই এর অস্তিত্ব ছিল, কখনও দেবদেবীর নামে, কখনও উপাসনার অংশ হিসেবে। প্রাচীন ভারতে ‘নগরবধূ’ বা ‘গণিকা’-রা কেবল শরীরের নয়, সংস্কৃতি, সংগীত ও নৃত্যকলার ধারক ছিলেন। কামসূত্র-তে দেহ ও কামের যে সূক্ষ্ম জ্ঞান উঠে আসে, তা বোঝায় যে, প্রাচীন সমাজ যৌনতাকে অস্বীকার করত না, বরং শিল্পের স্তরে তুলে এনেছিল। মধ্যযুগে ধর্মীয় ও সামাজিক কাঠামোর চাপে এই পেশা গোপন ও কলঙ্কিত হয়, অথচ চাহিদা কখনওই হারায়নি।

কিন্তু আধুনিক বিশ্বে যৌনতা এক নতুন রূপে আবির্ভূত, বহু-বিলিয়ন ডলারের পণ্য হিসেবে। আজকের দিনে যৌনতা শুধু পর্নোগ্রাফি বা দেহব্যবসার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তা ছড়িয়ে পড়েছে ‘অনলি ফ্যানস’ (OnlyFans)-এর মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে, এআই(AI) ও ভিআর (VR) প্রযুক্তিভিত্তিক সেক্স টয়ে, থেরাপি, লুব্রিকেন্ট, এমনকী, ‘সেক্স ওয়েলনেস’ ক্যান্ডেলেও। বিশ্বে যৌনকর্মীর সংখ্যা আনুমানিক চার কোটির বেশি, এবং ভারতে প্রায় ৩০ লক্ষ। ২০২৩ সালে পর্ন ইন্ডাস্ট্রির বাজারমূল্য ছাড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার, ‘অনলি ফ্যানস’ একাই উপার্জন করেছে ৩.২ বিলিয়ন। ‘পর্নহাব’ (Pornhub)-এর ২০২৩ রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি মিনিটে গড়ে ৮৪, ০০০ মানুষ পর্ন দেখছেন। বিশ্বে পর্ন ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক বাজার-মূল্য, ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বিশ্বের দু’কোটিরও বেশি সাবস্ক্রাইবার এবং ২০ লক্ষ কনটেন্ট ক্রিয়েটর এই প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়। এইসব তথ্য প্রমাণ করে— যৌনতা আর ট্যাবু নয়, বরং আধুনিক পুঁজিবাদী বাস্তবতায় এটি এক পূর্ণাঙ্গ ব্যবসায়িক খাত। প্রাচীন দেবীর নামে যে শরীর উৎসর্গ হত, আজ তা সাবস্ক্রিপশন ফি-তে বিকোচ্ছে— একই শরীর, শুধু প্যাকেজিং ভিন্ন। 

‘সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি’ ছবির দৃশ্য

আধুনিক যৌনতা আজ আর শুধুই গোপনীয়তার বিষয় নয় তাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এক বিশাল শিল্পজগৎ, যা যৌনতার বাণিজ্যিক রূপকে বৈধতা ও বাজার দিয়েছে। বিশ্বের বড় বড় শহর থেকে শুরু করে ভার্চুয়াল জগতে, যৌনতা আজ পোশাক, খেলনা, সিনেমা, অ্যাপ, এমনকী, থেরাপির পণ্যে পরিণত হয়েছে। সেক্স টয় ইন্ডাস্ট্রি, যার বার্ষিক বাজারমূল্য এখন প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে এগিয়ে চলেছে— যেমন এআই সেক্স রোবট, অ্যাপ-কন্ট্রোলড ভাইব্রেটর, বা রিমোট ইন্টিমেসি ডিভাইস। পর্নোগ্রাফির ক্ষেত্রেও ঘটেছে বিপুল পরিবর্তন— টিকটক বা অনলি ফ্যানস-এর মতো প্ল্যাটফর্ম যৌন কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য খুলে দিয়েছে নিজস্ব বাজার, যেখানে তাঁরা স্বাধীনভাবে আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। আবার যৌনতা ঘিরে থেরাপি, কাউন্সেলিং ও ‘ওয়েলনেস’ পণ্য— যেমন লুব্রিকেন্ট, অর্গ্যাজম জেল, বা এনার্জি বুস্টিং ক্যান্ডেল— এগুলিও যৌন অভিজ্ঞতাকে পণ্য করে তুলেছে। এমনকী, সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সেক্স পজিটিভ’ ইনফ্লুয়েন্সাররাও যৌনতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা ও প্রচার করে তৈরি করছেন নতুন মার্কেট। ফলে, আধুনিক যৌনতা শুধুই একটি অনুভূতির জায়গায় নেই, বরং তা এখন একটি সুশৃঙ্খল, বিপুল অর্থনৈতিক প্রবাহের উৎস।

ভারতে বিডিএসএম কিট ও ইরোটিক পোশাকের বাজার ধীরে ধীরে প্রসার লাভ করছে। ২০২৪ সালে ভারতের যৌন স্বাস্থ্য-পণ্যের বাজারের আকার ছিল প্রায় ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩৩ সালের মধ্যে ২.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে (CAGR: ৬.২০%)। এরই পাশাপাশি সেক্স টয় বা যৌন খেলনার বাজার ২০২৪ সালে ছিল ১০২.৩৮ মিলিয়ন ডলার, এবং তা ২০৩৩ সালে পৌঁছতে পারে ৪৫৭.৯৩ মিলিয়নে, যার গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার ১৬.৭০% (তথ্যসূত্র: IMARC Group)। এছাড়াও ভারতের ইরোটিক বা প্রাপ্তবয়স্ক ই-কমার্স বাজার ২০২৫ সালের মধ্যে ৫৬৭.৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে, এবং ২০২৯ সালের মধ্যে ১,০৭২.৫ মিলিয়ন ডলারে, যার বার্ষিক গড় বৃদ্ধি প্রায় ১৭.২% (তথ্যসূত্র: ecommerceDB)। এই প্রবৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ— যৌনতা নিয়ে আগের তুলনায় খোলামেলা মনোভাব, ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও স্বাধীনতার প্রতি জোর, এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গোপনীয়তা বজায় রেখে কেনাকাটার সুযোগ। IMbesharam, Kaamastra, ও ThatsPersonal-এর মতো ওয়েবসাইটগুলি ভারতে বিডিএসএম হ্যান্ডকাফ, বন্ডেজ সেট, চোকার, ল্যাঞ্জারি, থাই কফ, লেদার হ্যারনেস ইত্যাদি পণ্য ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে নিরাপদ ও পরিচয় গোপন রেখে। ফলে বিডিএসএম এবং ইরোটিক পোশাক ধীরে ধীরে শহুরে যৌনতা ও ফ্যাশনের একটি নতুন চর্চায় পরিণত হচ্ছে— যাকে বলা যেতে পারে ভারতের ‘ইন্টিমেসি ইকোনমি’-র গোপন কিন্তু শক্তিশালী উত্থান।

বাংলায় প্রথম নীল ছবি তৈরি হয়েছিল ১৯৩০ সালে। বাংলার প্রথম যৌনতাভিত্তিক গসিপ ম্যাগাজিন ছাপানো হয়েছিল ১৮৪৯ সালের দিকে, ‘সম্বাদ রসরাজ’। সমসাময়িকভাবে, বাংলার পর্নোগ্রাফি সার্চ ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করে দেখা যায় (Pornhub 2020 Insights), ‘বৌদি’, ‘দেশি আন্টি’, এবং ‘বেঙ্গলি ভাবি’–র মতো শব্দগুলি পশ্চিমবঙ্গে সর্বাধিক সার্চ হওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে পড়ে।

‘বিএ পাস’ ছবির দৃশ্য

‘স্যাগি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অবিবাহিত উচ্চশিক্ষিত মহিলাদের, যারা মূলত বিলাসবহুল আবাসনে থাকে, তারা বিয়ের আগে একাধিক শয্যাসঙ্গী পছন্দ করেন। ২০২০ সালে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন বর্তমান যুগে কতটা বেড়েছে কিংবা কমেছে— সেটা বিবেচনা-সাপেক্ষ। কিছু অসমর্থিত সূত্রের দাবি, কিছু মানুষ একঘেয়েমি থেকে মুক্ত হতে, আবার অনেকের দাবি, কিছু মানুষ একসঙ্গে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে এই সমস্ত খেলনা পুতুলের সহায়তা নিয়েছেন। ‘ইনসাইডার বিজনেস’ নামক একটি সংস্থার সার্ভের মতে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বেঙ্গালুরুতে। তারপরে মুম্বই এবং কলকাতা। ২০২০ সালের এই সার্ভের ভিত্তিতে বলা যেতেই পারে, টায়ার ওয়ান শহরে এইধরনের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অর্থাৎ, যে সমস্ত শহরের জনসংখ্যা বেশি এবং আধুনিক সেই সমস্ত শহরকে এই টায়ার ওয়ান শ্রেণির তকমা দেওয়া যেতে পারে। সিগমুন্ড ফ্রয়েডের মতে, ফ্যান্টাসি হল সেই অবচেতনের দরজা, যেখানে চেপে রাখা ইচ্ছে, ভয় ও সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ চিন্তাগুলো রূপ পায়। অনেক যৌন ফ্যান্টাসি, অবচেতনে দমনপ্রাপ্ত আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। সমাজে যা নিষিদ্ধ, মস্তিষ্ক তাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে, কারণ ফ্যান্টাসির জগতে পরিণতির ভয় থাকে না। আবার অনেক ফ্যান্টাসি নিয়ন্ত্রণ হারানো বা পুনরুদ্ধারের প্রতীক হিসেবেও কাজ করে— যেমন বিডিএসএম-এর মধ্যে লুকিয়ে থাকে ক্ষমতা, আত্মসমর্পণ আর বিশ্বাসের জটিল খেলা। যৌন ফ্যান্টাসি, এক অর্থে, আমাদের মানসিক মানচিত্রের সেই গোপন কোণ, যেখানে আমরা নিঃশর্তভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে পারি— নিরাপদ, নিভৃতে, কল্পনার আলো-ছায়ায়।

বাঙালিদের যৌন ফ্যান্টাসির চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সামাজিক রক্ষণশীলতা, পারিবারিক কাঠামো ও সাহিত্য-সিনেমার যৌথ প্রভাব। ২০১৮ সালে ‘Indian Sexual Behaviour Survey’–এর একটি অংশে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গের শহরাঞ্চলের প্রায় ৪২% উত্তরদাতা স্বীকার করেছেন যে, তাঁরা কোনও না কোনও ধরনের যৌন ফ্যান্টাসি লালন করেন, যার মধ্যে ‘রোল-প্লে’, ‘নিষিদ্ধ সম্পর্ক’ এবং ‘voyeurism’ (গোপনে দেখার প্রবণতা) ছিল উল্লেখযোগ্য। বাংলায় প্রথম নীল ছবি তৈরি হয়েছিল ১৯৩০ সালে। বাংলার প্রথম যৌনতাভিত্তিক গসিপ ম্যাগাজিন ছাপানো হয়েছিল ১৮৪৯ সালের দিকে, ‘সম্বাদ রসরাজ’। সমসাময়িকভাবে, বাংলার পর্নোগ্রাফি সার্চ ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করে দেখা যায় (Pornhub 2020 Insights), ‘বৌদি’, ‘দেশি আন্টি’, এবং ‘বেঙ্গলি ভাবি’–র মতো শব্দগুলি পশ্চিমবঙ্গে সর্বাধিক সার্চ হওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে পড়ে। এই ফ্যান্টাসিগুলি মূলত পরিচিত নারীর প্রতি গোপন আকর্ষণের দিকটি নির্দেশ করে, যা যৌনতা ও সামাজিক নৈকট্যের সংঘাতময় মিশ্রণ।

গতিময় যুগে আমরা যৌনতাকে যেমন বিস্তৃত হতে দেখছি, তেমনই সেই বিস্তারকে কীভাবে ব্যাবসায়িক রূপ দেওয়া যায় সেটাও দেখছি। অনেকটা সিউডো-বিজ্ঞাপনের ধাঁচে চলছে নব্য এই ‘ইন্টিমেট ইকোনমি’।