কাঠমান্ডুর নানা কাণ্ড
নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না। কিন্তু ক্যামেরার চোখকে তো অবিশ্বাস করা যায় না! যন্ত্রের তো মন নাই, শুধুই শরীর। তাই সে হ্যালুসিনেট করতে পারে না। দাঁড়িয়েছিলাম একটা ঢিপির ওপর, কাঠমান্ডুর ভুবনবিখ্যাত পশুপতিনাথ মন্দির চত্বরে। বোঝাই যাচ্ছে, ফুলের কেয়ারি সাজানোর জন্য এই টিলা তৈরি করেছে ল্যান্ডস্কেপিং-এর লোকেরা। এখনও সাজানো হয়নি। আমার মোটেই ইচ্ছে ছিল না হাঁচড়পাঁচড় করে ওই ঢিপি বেয়ে ওঠার। তাই ক্যামেরাম্যান যখন বলল প্যানোর্যামিক ভিউ পাওয়ার জন্য ওপরে উঠবে, আমি কিন্তু নীচেই ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম, ওপর থেকে আমাকে ডাকছে ব্যস্তসমস্ত হয়ে। ওর চোখমুখের ভাব বলছে, সত্যিই ইন্টারেস্টিং কিছু। তাই কোনওমতে উঠে গেলাম। আমাকে বলল, লেন্সে চোখ রাখতে। পাশেই বাগমতী নদীর তীরে শ্মশান, যেমন থাকে সব মন্দির-সংলগ্ন জায়গায়।
দেখলাম, অবিকল গৌতম ঘোষের ‘অন্তর্জলী যাত্রা’ ছবির দৃশ্য। একটা বাঁশের কাঠামোয় শোয়ানো এক বৃদ্ধ, তার পায়ের দিকটা ডুবে আছে জলে আর বাকিটা ডাঙায়। পুরোহিত তার পাশে দাঁড়িয়ে মন্ত্র পড়ছে আর ঘট থেকে জল ছেটাচ্ছে। মৃত্যুপথযাত্রীর স্বজনেরা ছড়িয়েছিটিয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। সিনেমার শম্পা ঘোষের মতো কোনও সুন্দরী বধূ অবশ্য নেই আশেপাশে, নেই শত্রুঘ্ন সিনহার মতো হ্যান্ডসাম ডোমও। ২০০৯ সালে সহমরণের সম্ভাবনা দেখলে আমি তখনই নেমে দৌড়তাম অকুস্থলের দিকে। কিন্তু শুধুই অন্তর্জলী যাত্রা-র সম্ভাবনায় আমি উলটোদিকে নেমে গেলাম মন্দিরে। এক পান্ডা গোছের বাহুবলীকে ধরে যথাসম্ভব বোঝালাম কী হচ্ছে নদীর তীরে।
আরও পড়ুন: বাজছে ভুভুজেলা থেকে স্টিলপ্যান, ত্রিনিদাদের উদ্দাম নাচগানের কার্নিভাল চমকে দিয়েছিল! ডেটলাইন পর্ব ২০-তে লিখছেন তপশ্রী গুপ্ত…
নেপালে একটা সুবিধে হল, হিন্দিটাই প্রধান ভাষা। কিন্তু হিন্দিতে অন্তর্জলী যাত্রাকে কী বলে না জানায় বিশদে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিপদ বাড়ল। তেমন পাত্তা দিচ্ছে না দেখে আমি মূল কথাটা বললাম, ‘মুমূর্ষু মানুষকে হাসপাতালে না নিয়ে এভাবে অর্ধেকটা জলে ডুবিয়ে রাখা বেআইনি।’ তখন একটু সিরিয়াস হল বটে পান্ডার মুখটা, কিন্তু বলল, ‘তুমি ভুল করছ, লোকটা মরে গেছে। আর আমাদের নিয়ম হল পোড়ানোর আগে তিনবার বডি বাগমতীর জলে চোবাতে হয়।’ প্রথমে একটু ধাঁধা লাগল, লোকটা কি বেঁচে আছে? এতদূর থেকে কি ঠিক দেখলাম শরীরটা মাঝে মাঝে কেঁপে উঠছিল? বেনিফিট অফ ডাউট দেব ঠিক করে একটু কড়া গলায় বললাম, ‘তুমি আমার সঙ্গে চলো, নিজের চোখে দেখবে। নাহলে বলো, মন্দিরের পুলিশ কোথায়, তাকে বলছি।’
এবার সে গুটিগুটি চলল আমার সঙ্গে। পাশে আর একটা রাস্তা আছে নদীর ধারে যাওয়ার জন্য। সেখানে পৌঁছে দেখা গেল, আমার কথাই ঠিক। যদিও যমদূত একেবারে হাত ধরে ফেলেছে, তবু বৃদ্ধ বেঁচেই আছেন। পান্ডা নীচু হয়ে নাকের কাছে আঙুল ধরল, তারপর নেপালি ভাষায় ধমকধামক দিল পাশে দাঁড়ানো লোকজনদের। ফল যা হল, প্রথমেই দৌড়ে পালাল পুরুত, তারপর আধভেজা বৃদ্ধকে কাঁধে তুলে হাঁটা লাগাল শ্মশানযাত্রীরা। কোন উদ্দেশ্যে জানি না। ক্যামেরাম্যান কিন্তু বুদ্ধিমান, ঢিপি থেকে নামেনি, গোটাটা রেকর্ড হয়েছে।
এই সোজা স্বর্গে পৌঁছনোর আশায় মৃত্যুপথযাত্রীকে ‘পবিত্র নদী’র জলে ডুবিয়ে রাখার কুসংস্কার, অবাক হয়ে ভাবছিলাম, আমরা কি একুশ শতকে দাঁড়িয়ে আছি? অবশ্য আজও যখন পশুপতিনাথ মন্দিরে অ-হিন্দুর প্রবেশ নিষেধ, তাকে কী বলবেন? বেড়াতে এলে আমি কস্মিনকালেও ঢুকতাম না এই চত্বরে। কিন্তু এসেছি ট্রাভেল শো-এর শ্যুটিং করতে, না ঢুকে উপায় কী?
‘এই যে এত সাহেব-মেম আসে নেপালে, তারা দেখতে পায় না এই বিখ্যাত মন্দির?’ আমার প্রশ্নের জবাবে অমায়িক হেসে জানালেন পুরোহিত, অ-হিন্দুরা নাকি বাগমতীর ওপারে দাঁড়িয়ে দূর থেকে দেখতে পারে পশুপতিনাথ। বোধ হয় দূরবিন দিয়ে। মনে পড়ল, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরেও অ-হিন্দুর প্রবেশ নিষেধ। যতদিন নেপাল হিন্দু রাষ্ট্র ছিল, পশুপতিনাথ ছিলেন জাতীয় দেবতা। পরে নেপাল ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ রাষ্ট্র হয়ে যাওয়াতে দেবতা খাতায়-কলমে সেই মর্যাদা হারালেন বটে, কিন্তু বিশ্বজুড়ে শিবভক্তদের মনে সিংহাসনটা অটুটই রইল।
কাঠমান্ডুর সবচেয়ে প্রাচীন মন্দির পশুপতিনাথ, পঞ্চম শতাব্দীতে তৈরি। তবে ১৪ শতকে মুঘলরা এর প্রায় পুরোটাই ভেঙে দিয়েছিল। উনিশ শতকে ফের তৈরি হওয়া মন্দিরটাই এখনকার। চতুরানন শিবের মূর্তি আর বাহন ষাঁড় শ’তিনেক বছরের পুরনো। এই মন্দিরের পুরোহিতেরা কিন্তু দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকী ব্রাহ্মাণ। আদি শঙ্করাচার্যের নাকি সেটাই বিধান। মন্দিরের স্থাপত্যে কিন্তু বৌদ্ধ প্যাগোডার ছাপ স্পষ্ট সোনার তৈরি। তেকোনা চুড়ো উঠে গেছে, কাঠের জাফরি লাগানো। দ্বিতীয় আর তৃতীয় ধাপ তামা আর সোনার তৈরি।
ভগবান বুদ্ধের জন্মস্থান নেপালের লুম্বিনী। তবু এদেশে হিন্দুদের তুলনায় বৌদ্ধরা একেবারেই সংখ্যালঘু। কিন্তু তাহলে কী হবে, দেখার মতো বৌদ্ধস্তূপ আর মন্দির রয়েছে। কাঠমান্ডুর স্বয়ম্ভূনাথ স্তূপে উঠতে হয় ৩৬৫টা সিঁড়ি বেয়ে। এত হনুমান এখানে যে, মুখে-মুখে চালু নাম মাফি টেম্পল। ওপর থেকে অসাধারণ ভিউ পাওয়া যায় পুরো উপত্যকার। আর আশ্চর্য হল বুদ্ধের চোখ। চুড়োর চার দেওয়ালে আঁকা সেই চোখ তাঁর প্রাজ্ঞতার প্রতীক, যা দিয়ে তিনি চারপাশে কী ঘটছে সব দেখতে পান। ভগবান বুদ্ধের একইসঙ্গে চারপাশে নজর রাখার এই বিশ্বাস শুধু নেপালে নয়, বিশ্বের বহু বৌদ্ধস্তূপে বা মন্দিরে দেখা যায়। এর আগে কম্বোডিয়া পর্বে আঙ্কর থমে অবলোকিতেশ্বরের কথা বলেছি।
কাঠমান্ডু কত পুরনো শহর বোঝাতে গিয়ে অনেকে বারাণসীর সঙ্গে তুলনা করেন। আসলে কিন্তু তুলনা চলে না, কারণ বারাণসী বয়সে অন্তত হাজার বছরের বড় কাঠমান্ডুর চেয়ে। ৩০০০ বছর পেরিয়ে গেছে কাশীর আর কাঠমান্ডু ২০০০-এর কিছুটা বেশি। এই প্রাচীনত্বই ইউএসপি দুই প্রতিবেশী দেশের দুই ‘মিস্টিক’ শহরের। বারাণসীর যেমন, কাঠমান্ডুরও তেমন, এক-একটা এলাকায় গেলে যেন মনে হয় সময় থমকে আছে। ঘিঞ্জি গলির দু’ধারে কাঠ আর পাথরের জীর্ণ বাড়ি। বেশির ভাগেরই নীচে ‘অ্যান্টিক’-এর দোকান। ঢিমে আলো, এধার-ওধার ছড়ানো দেবদেবীর মূর্তি থেকে পশুপাখি, নানা রঙের পাথরের আধভাঙা শিল্পকর্ম, পটচিত্র, পুথি, আরও কত কী! ইচ্ছে করে একটা রহস্যময় আবহ তৈরি করে রাখা হয় খদ্দের টানার জন্য। সেখানে ইউরোপের ট্যুরিস্টদের ভিড়, অগাধ বিশ্বাসে বিরাট দাম দিয়ে তথাকথিত প্রত্নসামগ্রী কেনেন তাঁরা।
নেপালের অ্যান্টিক ব্যবসায়ীরা দালালের মাধ্যমে ধরে শাঁসালো কাস্টমার। তারপর শুরু হয় রোমহর্ষক সব কাহিনি। যেমন, একটা ছোট্ট পিতলের (যাকে আনায়াসে অষ্টধাতু বলে চালানো হয়) বিষ্ণুমূর্তির আসল মালিক দাবি করা হবে দ্বিতীয় শতাব্দীর কোনও রাজারাজড়া। তারপর গল্পের গরু গাছে উঠবে। একে কোথা থেকে পাওয়া গেছিল, রাজা তাকে পাওয়ার পর সৌভাগ্যের কতগুলো দরজা খুলে গেছিল, কীভাবে এক সময়ে হারিয়ে গেল, কত হাত ঘুরে এই কাঠমান্ডুর ব্যবসায়ীর হাতে এল— পরতে-পরতে সাসপেন্স। আমার ধারণা, এরকম গল্প ওদের স্টকে গোটা তিরিশেক আছে। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সেগুলোই বলে। নাহলে এতদিনে বলিউডে স্ক্রিপ্ট রাইটার হয়ে যেত!
সে যাই হোক, এক কাঠমান্ডুবাসী হঠাৎ-পাওয়া বন্ধুর দৌলতে এমন এক দোকান আর তার পিছনের ওয়ার্কশপে ঢুঁ মারার সুযোগ হয়েছিল। সাধারণ তামা, পিতল বা অন্য কোনও মিশ্র ধাতুর মূর্তি তৈরি করে তাকে কিছু কেমিক্যাল দিয়ে ধুয়ে বিবর্ণ করা হয়। এরপর বছরখানেক পুঁতে রাখা হয় মাটির নীচে। আজব গল্পের মশলা মেখে সেই মূর্তি পরিবেশনের স্কিল জানা না থাকলে অবশ্য ক্রেতাকে টুপি পরানো মুশকিল। যে যত ভুলভাল বোঝাতে পারবে, সে তত বেশি দাম পাবে। অবাক হয়ে দেখছিলাম, কী অবলীলায় একটা তিন ইঞ্চি মূর্তির দাম বলছে দশ লক্ষ টাকা। সাহেব-মেমের দল বেশি আপ্লুত হয়ে পড়লে দাঁও মারা সহজ। আর দরাদরি করলেও কত নামবে? সাত-পাঁচ, তার বেশি তো কমবে না! কড়কড়ে ডলার চলে আসবে মুঠোয়। এখানে একটা বিধিসম্মত সতর্কীকরণ দিয়ে রাখা উচিত। বিদেশিদের এসব গলিঘুঁজিতে না ঢোকাই ভাল। এইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকে। বাইরের লোককে পুলিশের চর সন্দেহ হলে তাকে তো ছাড়েই না এরা, আর ছুরি-ভোজালি ব্যবহারে কার্পণ্য করে, এমন অপবাদ দেওয়া চলে না এইসব মূর্তি-মাফিয়াদের।
২০২০ সালের পর থেকে পৃথিবীজুড়ে সময়টা যেমন দুই পর্যায়ে ভাগ হয়ে গেছে প্রি কোভিড আর পোস্ট কোভিড, নেপালে তার সঙ্গে আগেই যোগ হয়েছিল আর একটা মাপকাঠি— ২০১৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের আগের নেপাল আর পরের নেপালের মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। এর ঠিক আগেই পর্যটনে তরতর করে এগোচ্ছিল নেপাল। এশিয়ার মধ্যে পয়লা সারিতে জায়গা বাঁধা ছিল। কিন্তু ভূমিকম্পে সব ওলটপালট হয়ে গেল। শুধু হাজার দশেক লোকের মৃত্যু না, অর্থনীতির মূল ভিতটাই নড়ে গেছিল হেরিটেজ সাইটগুলো ধ্বংস হওয়ায়। নেপালজুড়ে ছ-শোরও বেশি প্রাচীন স্থাপত্য হয় পুরোপুরি নয়তো আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আজও ইউনেস্কো সবটা আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে পারেনি।
এর পরেও বেশ ক’বার ভূমিকম্পে কেঁপেছে নেপাল। ২০২২, ’২৩-এও মাঝারি কম্পনে প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২০১৫-তে কাঠমান্ডুর বিখ্যাত দরবার স্কোয়ারের সাংঘাতিক ক্ষতি হলেও, দ্রুত অনেকটাই সারিয়ে ফেলা গেছে। অবাক হয়ে ভাবছিলাম, শয়ে-শয়ে বছরের প্রাচীন মন্দির, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কারুকাজ করা, এমনিতেই সংরক্ষণ করা কঠিন, তার ওপর যদি প্রকৃতি থাবা বসায়, কত অসহায় হয়ে পড়ে মানুষ! দরবার স্কোয়ারেই তো আছে পঞ্চাশটিরও বেশি মন্দির। বিশাল এলাকা নিয়ে এই চত্বর যুগে-যুগে লিচ্ছভি থেকে মল্ল, নানা রাজবংশের জাঁকজমকের সাক্ষী। কান্তিপুর, ভক্তপুর, ললিতপুর আর কীর্তিপুর— চার প্রাচীন রাজ্যের জন্য চার প্রাসাদ রয়েছে এখানে। আসলে দুটি অঙ্গনে ভাগ করা দরবার স্কোয়ার। বাইরের চতুষ্কোণে আছে কাঠমণ্ডপ। ভেতরেরটা বেশি বিখ্যাত— হনুমান ধোকা। আমার অবশ্য খুব ইন্টারেস্টিং লাগল কুমারী ঘর। সেখানে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কুমারী পুজো হয়। আমাদের এখানে যেমন হয় দুর্গাপুজোর সময়ে। ‘সুলক্ষণা’ বালিকার খোঁজে মাথার ঘাম পায়ে পড়ে যায় ভক্তদের। তফাত একটাই, নিজের পরিবারের সঙ্গে নয়, কাঠমান্ডুর এই ঘরে থাকে কুমারী মেয়েটি। রাজাদের আমলের চালু বিধান এই সেদিনও মানা হত। গাইড জানালেন, রানিরা আর রাজপুরোহিতেরা মিলে রীতিমতো কুষ্ঠি বিচার করে খুঁজে বার করত বত্রিশটি গুণসম্পন্ন এমন মেয়ে, যে তখনও রজঃস্বলা হয়নি। কারণ বিশ্বাস, পিরিয়ড শুরু হওয়ামাত্র তার শরীর ছেড়ে চলে যান দেবী তালেজু (নেপালি ভাষায় দুর্গাকে এই নামে ডাকা হয়)। নেপালজুড়ে মন্দির, মন্দির আর মন্দির। পশুপতিনাথ বাদ দিলে মাতৃতান্ত্রিক সমাজে দেবীরই জয়জয়কার। ভবানী, গজলক্ষ্মী, সপ্তমাতৃকা, নানা রূপে পূজিতা।
কাঠমান্ডুতে ল্যান্ড করা একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। যদিও সড়কপথে নেপালে ঢোকার অনেকগুলো রাস্তা আছে, তবু বলব বাজেটে টান পড়লেও যাওয়াটা অন্তত বিমানে করুন। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশাল-বিশাল পাহাড়ঘেরা একটা উপতাকায়। উচ্চতা চার হাজার ফুটেরও বেশি। সেখানে প্লেন নামানোটা খুব কঠিন। সব পাইলট পারবেন না। বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। জানালা দিয়ে দেখবেন, পাহাড়ের দেওয়াল ঘেঁষে কীভাবে একটু ত্যারছা হয়ে নামছে প্লেন। এর থেকেও কঠিন অবশ্য ভুটানের পারোতে বিমান অবতরণ। তার ওপর রয়েছে কাঠমান্ডুর খামখেয়ালি আবহাওয়া, কখন মেঘ, কখন রোদ, ক্ষণে-ক্ষণে পালটে যায় আকাশের মুড। তার সঙ্গে পাল্লা দিতে হয় পাইলটকে।
ছবি সৌজন্যে: লেখক