ছুটির দিন শ্রোতাদের
সোমবারের ব্লুজ তৈরি হয় কেন? শনি-রবিবার যখন ছুটি থাকে। কিন্তু আমাদের যে-কাজ, মানে এই সাংগীতিক পেশায়, শনি-রবি বলে কিছু নেই। বরং, অন্যদের যখন উইকএন্ডের ছুটি, তখন আমাদের কাজ বেশি থাকে। ওই দু’দিনই যাবতীয় শো, কনসার্ট ইত্যাদি থাকে। তাই সোমবারটাই বরং একটু ছুটির আমেজ পাওয়া যায়। ওইদিনটায় বরং একটু রিল্যাক্সড, একটু ফাঁকাই থাকি। ক্লান্তি কাটিয়ে উঠে চাঙ্গা হই নতুন কাজের জন্য। সেদিনটায় নিজেকে একটু সময় দিই, একটু রান্না করি, কখনও হয়তো লং ড্রাইভে যাই।
কলেজে পড়াকালীন একটা ব্যান্ড ছিল আমাদের। সেই ব্যান্ডের রিহার্সাল হত, মনে আছে, রবিবার। সেদিন দুপুরে সকলে যখন মাংস-ভাতের ঘুমে মগ্ন, আমরা ইলেকট্রিক গিটার, ড্রামস ইত্যাদি নিয়ে তখন হয়তো রিহার্সাল করছি।
আরও পড়ুন: সোমবার যখন ক্রমশ এগিয়ে আসে, ওই সময়ে একটা অদ্ভুত বেদনাদায়ক অনুভূতি গ্রাস করে আমাকে! সোমক ঘোষের কলমে মনডে ব্লুজ-এর সপ্তম পর্ব…
কাজেই, গানবাজনার সঙ্গে ছুটির দিনটা তখন থেকেই নানাভাবে জড়িয়ে আছে। কর্পোরেট জীবনে যেমন শুক্রবারের বিকেল থেকেই ছুটির আমেজ, তেমনটা গানের ক্ষেত্রে হবে কী করে? ছুটির দিন শ্রোতাদের, গায়কদের তো নয়! তাই সপ্তাহের কোনও ছুটির দিন আলাদা করে উপভোগ করি না।
কর্পোরেট জীবনে যেমন শুক্রবারের বিকেল থেকেই ছুটির আমেজ, তেমনটা গানের ক্ষেত্রে হবে কী করে? ছুটির দিন শ্রোতাদের, গায়কদের তো নয়! তাই সপ্তাহের কোনও ছুটির দিন আলাদা করে উপভোগ করি না।
কলকাতা ছেড়ে মুম্বই চলে এসেছি অনেক বছর হল। এখানেও ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে একটা উইকএন্ড আছে, সেই উইকএন্ডের চেহারা কিন্তু কলকাতার চেয়ে অন্যরকম। তাই এখানে মনডে ব্লুজটাও হয়তো জাঁকিয়ে আসে, সেটা অনুভব করি।
কিন্তু ব্লুজ কখন হয়? যখন কাজের ফাঁকে মানুষ একটু অবসর খোঁজে, সেই অবসর ফুরিয়ে আবার কাজ এসে ভিড় করে। আমাদের কাজ নিয়ে আমরা সবসময়ই এতটা আনন্দিত থাকি, উত্তেজিত থাকি, যে, ব্লুজের চেয়ে আনন্দটাই আমাদের বেশি। যদি ধরে নিই, সোমবার আসলে একটা কাজের দিন, তাহলে বলতে পারি, কাজ ভালবাসলে সোমবারের কোনও ব্লুজ আর থাকে না, আনন্দই থাকে ভরপুর। সেই আনন্দটাই পাথেয়।
বিষাদ অনুভব করার মতো ফাঁকা সময় তো পাই না! বরং, কাজের উদ্দীপনাতেই সময় কেটে যায়।