ব্যক্তিগত ভিলানেল: গুচ্ছকবিতা
মাংস
চলন্ত সিঁড়ি থেকে আকাশ স্পষ্টতর হয়
বুঝি না কেন চিল বিক্রি হয় শহরে
এমনকি মাংসও
শিশুটি ফোন রেখে অশ্লীল প্রস্তাবে
জনকের শিশ্ন ভেবে খিলখিল হাসে, তবু
বুঝি না কেন চিল বিক্রি হয় শহরে
বিক্রির হাজারও ওজন, এদিক
ভারী হলে, ওদিকে পুরুষের নরম হাড়, জমে
এমনকি মাংসও
বাড়ে, কমে, কখনও রক্তবোধহীন
যাতায়াতে, দায়বোধ ঝুলে ঝুলে পড়ে,
বুঝি না কেন চিল বিক্রি হয় শহরে
কেনে কেউ? ঘরে এসে মনে পড়ে
ফ্রিজে ভুল, হত্যাচিন্তা, প্রহারের দাগ?
এমনকি মাংসও
খসে গেছে আগের দশকে, সন্ততি, সেতু
নদী ভেবে খেয়ে গেছে করুণ রক্ত, আমরাও
বুঝিনি কেন চিল বিক্রি হয় শহরে
এমনকি মাংসও।
হাড়
বিষণ্ণ হাড়ের শব্দ, নিরন্তর—
পানপাতার মতো মুখশ্রীর
এক নারী হেঁটে যায় কোমল বাস্তবে
বিবাহের তুমুল আয়োজন, লৌকিক
কুশলবিনিময়ে মূক ও বধিরে আলাপ—
বিষণ্ণ হাড়ের শব্দ, নিরন্তর
ঢেকে দেয় প্রবীণ মঙ্গলবাদ্য, ইশারায়
কী মহান শিল্পরূপ, পক্ষীসুষমা
এক নারী হেঁটে যায় কোমল বাস্তবে
পুড়ে যায় দাউদাউ মোহ, অস্থি—
ভস্ম থেকে ভস্মে ভাগ হওয়া সজল প্রলাপ,
বিষণ্ণ হাড়ের শব্দ, নিরন্তর
কাকে যে ক্লান্ত করে, কার
নিয়ত রতির শোক, আনখে আনখে,
এক নারী হেঁটে যায় কোমল বাস্তবে
যে পুরুষ অস্থিচর্মসার, তাকে ছুঁলে
রমণের ভয়, লোকাচার, কী ভীষণ প্রলয়ে
বিষণ্ণ হাড়ের শব্দ, নিরন্তর
এক নারী, হেঁটে যায় কোমল বাস্তবে।
রক্ত
সতর্ক করেছি তোমায়, করিনি?
রক্তে এত কেন মুখ দ্যাখো, নিয়ত
আবক্ষ লাল হয়ে ওঠো, তবু কেন?
কিছু আর পরিপাটি নেই, আলনাও,
শিথিলতা রক্তজাত বড়। কেন ক্রোধ?
সতর্ক করেছি তোমায়, করিনি?
এ সংসার ক্ষমাঘেন্নাজাত, নিষ্কাম
পরশে পরশে, রক্তের সতত মায়ায়
আবক্ষ লাল হয়ে ওঠো, তবু কেন?
তুমিও তো গ্রহণে অক্ষম, আমিও
পোকাদের রক্তাভ আঠায়, চলচ্ছক্তিহীন
সতর্ক করেছি তোমায়, করিনি?
বলিনি, ভিক্ষুক আমি, ছিটেফোঁটা
প্রগলভ হলে, ছুঁয়ে ফেলি হাত, আধুলি, ওষ্ঠ
আবক্ষ লাল হয়ে ওঠো, তবু কেন?
অথচ অনন্ত বিলাপ, ঘাতক
সময়ও জানে ঋতুর সুস্পষ্ট ক্ষরণ
সতর্ক করেছি তোমায়, করিনি?
আবক্ষ লাল হয়ে ওঠো, তবু কেন?