নবীনের পুঁটুলি
১
নবীনোয়া, গান শোনা— দু’কলির বেগম সাহেবা
তেষ্টার জন্যও তো বরাদ্দ থাকতে হয় গলা
না হলে গানই বা কী, আর পরিতোষই বা কী
পরিতোষ তো এক কৃমিহীন শিশু
খায় ভাল (গরাসে গরাসে তার প্রকাণ্ড পয়ার)
পরিষ্কার হাগে
পাখওয়াড়া থেকে রিনরিনে চিৎকার করে— তেরি মা-কি…
নবীনের মা হলেন বেগম সাহেবা,
শান্তিবাণীর মতো খরখরে গলা
বাছুরের পিঠ চেটে দেয়
২
এমন তো নয়, যে কেউ ভাবনাতে এল আর
চালে খড় গুঁজে, ঘটিটি গড়িয়ে, পরিপাটি মাদুর বিছাল
বড় কথা হলে তার বড় ঠাঁই লাগে, আকাশকলস জামা
— সে জামার নাম দাও পিরানদেল্লো…
বড় কথা আকাশেই ভাল
মেঘে মেঘে শ্রাবণী সেনের বেলা
বৃষ্টি নামে গানের কেলাসে…
নবীনের কথাগুলি
খুদে-নাটা, ছেঁড়া পাজামার রোঁয়া
ভুঁই থেকে পলকা-সবুজ মাথা বের করে,
ডেঁয়ো পিঁপড়ের মুখে তার সে কী ঘোরা!
এই ক্রসস্টিচে তো ওই ছাঁকনিতে
একে তুমি অন্ন বলতে পারো…
প্লিজ ‘ভ্রমণ’ বোলো না!
ইলাকা জোখিমপুর
১
আমার শেষ পারানির কড়ি কণ্ঠে নিলে
কোমল নিলে না—
ফলে গানে আর গতর লাগল না
কঠোর বাস্তু নামে মানুষের ঘরে
রান্নাঘর বাথরুম চিনচিন করে
আমি কাকে অবেলায় ডাকি?
বলি— ভয় হয়ে এসো
পলিটিকো হয়ে এসো
দাওয়াতে দাওয়াত খাও
কলাপাতে খিচুড়ি বেগুনভাজা চাটনি সন্দেশ
সজোরে আঁচাও
এই তো সবুজ মগ, মানুষের চরিত্র
থেকে পরম তফাতে রাখা
নিপাট আয়না, যাতে টিপ লেগে নেই
আচমকা সরে যাওয়া ঠোঁটের রেখাটি লেগে নেই
আর এই জল, অকর্ষিত ইনোসেন্স তার
ঝুমকা গিরাবে যদি, বরেলি বাজার কেন
এখানেই হোক!
২
থাকো অন্নজলে, আত্মজীবনী নিয়ে
নিছক বেড়াতেই নাহয়, এসো হে জোখিমপুরে
ভূদেব ভগত আছে, মোসল্লিম আলি
সান্ধ্যকালে দোঁহা হবে, মারফতি গান
চিকনি-চামেলি নাচ (পপুলার ভোটে)…
তুমি না হলেও, আত্মজীবনীটুকু সম্ভ্রান্ত হবে
‘সম্ভ্রান্তি’ শালা এক খুঁখার কামিনা
বিপুল লম্বা ডিঙ পেড়ে আসমানে রাঙা মেঘ দেখে
চিৎকার মারে— আগুন আগুন!
গাঁ-গরজ ভেঙে পড়ে তামাশা দেখতে
কেবল ব্যাজার হয় ছুটকো মাদারি
তারও হে ব্যবস্থা হবে, দেশ-গাঁয়ে জমীর মরেনি!
ওই যে ভকিল সাব পুটপুট স্কুটার চালিয়ে
বগলে ফাইল, ভিড়ের ‘গহীনে’ বিডিওকে খোঁজে…
৩
পারসেপশন তো এক স্বচ্ছ বেড়াল,
কপিশ ঘোলাটে জলে মাছ খোঁজে,
শেষমেশ শ্যাওলালিপ্ত দাঁতে নিজেকে বোঝায়
বিভ্রান্তি মোক্ষম এক প্রাকৃতিক বল
তারও চেয়ে তিসমার তার ক্যাওড়ামি
(সেন্স অফ হিউমার, বুঝহ গোঁসাই!)
নিভেছে গঞ্জ, আর জ্বলিছে হ্যাজাক
আকাশে বসেছে হাট, চলেছে বাজাড়ু
ধুপধাপ কেনাকাটি— চন্দ্র তারা গ্রহ
দুধখোর শিশু কেনে এনসি নস্য…
ইলাকা জোখিমপুর, বেলা গেছে পাটে
ডায়নামো চেগে ওঠে (ডিজেল-চালিত)
ডিগডিগ আওয়াজে রমণে নেমেছে ব্যাঙ
ওদের কী দোষ!
৪
(উৎপলকুমার বসুকে)
লাগিল তো! লাগল, লাগিল
চুনরি মে দাগ
ইনডেলিবল ইংক,
উৎপল নবম বসু
তদ্দ্বারা-ব্যবহৃত পংক্তি চুঁইয়ে
কঙ্কালের বাহুবদ্ধ ছায়া, পুঁজ ও প্রদর
আমি কী লিখব তবে?
অভিনব এ জগতে মানুষের কারনামা শুধু,
করাতকলের পাশে জনগণহাট
ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের অভিনয় করে— মেকাপ আর্টিস্ট আসে
তরং-শাসিত তটে— ভিড়কে জানায়, তুমি ইউনিক—
ইউ ইউ ইউ ইউ এভরিওয়ান— পৃথক পৃথক…
এমনকী নিজের থেকেও— কনগ্র্যাচুলেশনস!
ঐক্যবদ্ধ ভিড়, মুঠোত্তোলন; বলে— আউয়া আউয়া!
ভিড়ের কোণেই আমার ছোট্ট স্টল— ঐক্য বেচে থাকি
মুখে বলি— বাক্য মাণিক্য…