প্রোফেসর লতিকা ব্রহ্মের কথাটা শুনে হাতের কাগজগুলো ঢুকিয়ে ফেললেন ফাইলটার ভেতরে। যেন খানিকটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন, এমন ভঙ্গিতে বললেন— তাহলে আপনিই বলুন! আমার কথা শুনে, বা আমার নোটস নিয়ে আলোচনা করে কী হবে? আন্দামান নিয়ে সব্বারই তো দেখছি প্রচুর অভিজ্ঞতা আর অভিমত! এই তো, সেদিন করে একটা ম্যাগাজ়িনে পড়লাম কে এক জাপানি ধনকুবের, নাম ‘আকুসি’ না কী যেন— বড় বড় কথা বলেছে আন্দামানের প্রাকৃতিক সম্পদ আর তার সঠিক ব্যবহার নিয়ে। তত্ত্বকথা কিচ্ছু না, শুধু ফাঁকা বুলি কপচানো। তো এতই যখন জানো সবাই, ঠিকঠাক গবেষণাটা তোমরা কেউ করে উঠতে পারছ না কেন? অভিজ্ঞতা— হুঃ!
পরিবেশ ক্রমেই গরম হয়ে উঠছে। প্রসঙ্গটা চট করে বদলে দিতে চাইলেন বিলি গিলচার। বললেন— আমরা ব্রাঞ্চ করে এসেছিলাম। তবুও এখন যেন একটু খিদেখিদেই পাচ্ছে। প্রোফেসর সুব্রহ্মণ্যম ম্যাম, কী খাবার ভাল পাওয়া যায় এই ক্যাফেটেরিয়ায়? একটু ডাকুন না কাউকে, খাবারের অর্ডারটা প্লেস করি।
৬।
— আশ্চর্য, দরজা খোলো। আরেহ চিনতে পারলে না তো, আমি ভবতোষদা। কী! কীর’ম দিলুম বলো! এই মুখোশটা কিন্তু জাস্ট একটা ডেমনস্ট্রেশন। বাকি কথা বলছি শোনো…
বাংলা ছবির ট্রেন্ডসেটিং পরিচালক ভবতোষ লাহিড়ী পরে আছেন একটা হাঁ করা হিংস্র ভাল্লুকের মুখোশ। এর আগে নিজেরই পরিচালিত ‘পলাতক’ ছবিতে তিনি অতিথি-অভিনেতা হিসেবে ভাল্লুকের মুখোশ পরেছিলেন। এখন মুখে লাগানো মুখোশটা অবশ্য সেই সিনেমায় পরা মুখোশটার চেয়েও ভয়ানক। ‘পলাতক’ হিট হওয়ার পর তাঁর তৈরি করা ভাল্লুকের মুখোশ পরা চরিত্র ‘স্মৃতিভল্লুক’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পথেঘাটে এখন দেখা যায় মাঝেমধ্যেই তরুণতরুণীরা ভাল্লুকের মুখোশ পরে হাঁটছে। কাজেই ভবতোষের এই মুখোশটা পরে দরজার সামনে দাঁড়ানো বিরাট ব্যতিক্রমী কোনও ঘটনা না। কেলোটা করেছে তিনি বুকের কাছে একটা টর্চ জ্বেলে নিজের থুতনির দিকে তাক করে ধরায়। এভাবে আশ্চর্যের তাঁকে চিনবার কোনও উপায়ই ছিল না।
আশ্চর্য দরজা খুলে অদ্ভুত উচ্চারণে বলল— আসুন ভবাদা। স্যরি। আমার কথাটা একটু অন্য রকম শোনাবে। কিন্তু কারও সঙ্গে কথা বললেই এখন আমি এই স্টাইলে বলছি, মানে যতটা সম্ভব হচ্ছে। আমি যে চরিত্রটা এখন করছি, তার মধ্যেই ঢুকে পড়বার চেষ্টা করছি। ক্যারেক্টারটা এই রকম অদ্ভুতভাবেই কথা বলে।
— ও! ওই ছ্যাঁচড়া বান্টি ঘোষালের রোল? প্লিজ় ওই সব রিহার্সাল এখন বন্ধ করো। নরম্যালি কথা বলবে, নইলে কিন্তু এই আমি চললাম।
— আরেহ দূর ভবাদা! আপনি আমার সঙ্গে মজা করলেন, ভয় দেখালেন। আমিও একটু মজা করলাম— এই আর কী। বলুন, কী খাবেন?
— হ্যাং ইয়োর মজা করা! শোনো হে, এমন কিছু চরিত্র কিন্তু ওই বান্টিফান্টি না! এক নম্বরের ঢ্যামনা একটি লোক। তবে লুকটা কিন্তু দারুণ হয়েছে। তোমাকে মানিয়েওছে। সব শ্যুটিং ফ্লোরেই কিন্তু আমার গুপ্তচর থাকে! আমার কাছে তোমার লুকের কিন্তু, লুকিয়ে তোলা ছবি চলে এসেছে। একবার ভাবলুম দিই লিক করে। তারপর ভাবলুম, কিন্তু তোমার ছবি! তাই থাক। ক্ষতি করব না!
— ওফ ভবাদা! কী যে বলেন! আপনি ইন্ডাস্ট্রির এত বড় পিলার—
— রাখো তো তোমার ‘ইন্ডাস্ট্রি ফিন্ডাস্ট্রি’ ছেঁদো কথা! ‘পলাতক’-এর আগের ছবিটা, মানে ‘পঞ্চানন’ ছবিটা হিট করবার আগে কেউ কিন্তু এক ফোঁটাও রেয়াত করেনি আমায়। একটা নতুন প্রোডিউসারকে আমিই কিন্তু তৈরি করেছি বলা যায়। আসলে কী জানো, সব ব্যাটাই কিন্তু ধান্দাবাজ। ফেসবুক-ট্যুইটারে ছবি আর ‘বেস্ট অফ লাক’ দিয়ে কিন্তু কিছুই প্রমাণিত হয় না। শুনে রাখো, প্রত্যেকেই কিন্তু প্রত্যেকের পেছনে কাঠি করবার ষড়যন্ত্র করে চলেছে, আর আমি কিছু বললেই দোষ? এই যে ‘পলাতক’ ছবিটার লোগো নিয়ে অহেতুক জল ঘোলা হল, কেউ কেউ রটালো ওই লোগোটা নাকি ঝেঁপে দেওয়া, বলো তো আশ্চর্য, আমি কি লোগো ঝাঁপবার মতো লোক? এইটুকু বিশ্বাস থাকবে না? এইটুকু সম্ভ্রম থাকবে না? আরেহ আমায় চ্যালেঞ্জ করলে দু’হাতে একই সঙ্গে কিন্তু পাঁচ মিনিটে দুটো লোগো তৈরি করে দিতে পারি…
কথাটা আশ্চর্য এক চতুর্থাংশ বিশ্বাস করল। দশ মিনিট সময় পেলে অন্তত একটা বিশ্বমানের লোগো তৈরি করে দেওয়ার ক্ষমতা সত্যিই ভবাদার আছে। ভবাদা গুণী লোক এতে কোনও সন্দেহই নেই। শুধু দোষের মধ্যে একটু বেশিই ‘কিন্তু কিন্তু’ করেন। অবশ্য নিউজ় চ্যানেল বেশি দেখেন তো, টেলিসাংবাদিকদের অদ্ভুত জবানির এবং অশিক্ষিত বাংলারই ছোঁয়াচ এটা— আশ্চর্য ভাবল।
ফ্রুটবোল থেকে একটা আপেল তুলে নিয়ে কচ্ করে প্রথম কামড়টা দিয়ে ভবতোষ লাহিড়ী বেশ জমিয়ে বসলেন। তারপর বললেন— শোনো, ফালতু পিএনপিসি করতে আমি এত রাতে আসিনি, তোমায় ভয় দেখাতে তো মোটেই না। কাজের কথা হ্যাজ়। আর আমার কাজের কথাটা কিন্তু এই মুখোশ সংক্রান্তই।— এই বলে ভবাদা টক্ টক্ করে দুটো টোকা মারলেন ভাল্লুকের মুখোশটার দুটো বিপজ্জনক দাঁতে।
আশ্চর্য কৌতূহলী হয়ে তাকাল।
ভবতোষ বললেন— ‘পলাতক ২’ তৈরি হবে। স্ক্রিপ্টটা আজই ফাইনাল হল। শোনো আশ্চর্য, এবার কিন্তু তোমাকেই ‘স্মৃতিভল্লুক’ ক্যারেক্টারটা করতে হবে।
— অসম্ভব ভবাদা। ও’রকম বেঢপ ফিগার, স্যরি ভবাদা— মানে বলতে চাইছি ও’রকম মোটাসোটা চেহারা তো আমার না! তাছাড়া আপাতত আমি করলে নায়কই করছি। সাইড রোল আমি করব না।
— বেঢপ ফিগার? আমি রোলটা করেছি বলে আমাকেই আওয়াজ দিচ্ছ? দাও দাও। তবে সাইড রোল হলে তোমায় বলব কেন? এবারের ছবির নাম কিন্তু ‘পলাতকপূর্ব’। এটা হল, যাকে বলে, ‘অরিজিন অফ স্মৃতিভল্লুক’। আমরা এখানে দেখাব, স্মৃতিভল্লুক কিন্তু তোমার করা ‘পলাতক’ চরিত্রটারই একটি খণ্ডস্মৃতি। এটা দেখলে লোকে বুঝবে আগের সিনেমায় আসলে দুই দেহে তুমি নিজেই কিন্তু নিজেকে তাড়া করছিলে। কী ভীষণ এক্সাইটিং হবে ব্যাপারটা বুঝতে পারছ?— ভবতোষ নিজেই উত্তেজিত হয়ে আধ খাওয়া আপেলটা উপরে ছুড়ে দিলেন। তারপর লুফে নিয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন ‘হাউজ় দ্যাট?’! আশ্চর্য ভাবলেশহীন মুখে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে দেখে তিনি টেবিল-ন্যাপকিনে হাতটা মুছে নিয়ে আশঙ্কিত এবং খানিকটা কাঁদোকাঁদো গলায় চোখ পিটপিট করে বললেন— কিন্তু অমন করে দেখছ কেন? তুমি করবে তো রোলটা? না করলে কিন্তু…
— সেটাই তো বুঝতে পারছি না ভবাদা। একটা মুখোশ ঢাকা রোল। তাছাড়া আগের পর্বে লোকে আপনার নিজের অভিনয় করা ‘স্মৃতিভল্লুক’ দেখেছে। সেটা সুপারহিট। আমাকে ভাল্লুকসাজে প্রথম দেখাতেই রিজেক্ট করে দিতে পারে দর্শক। ছোট হলেও স্মৃতিভল্লুক একটা আইকনিক চরিত্র। সেখানেই ভয়টা!— আশ্চর্য একটু কায়দা
করেই রোলটা রিজেক্ট করবার পথে এগোতে চাইল।
— শোনো আশ্চর্য। আমার শরীর মোটাসোটা ভোম্বলমার্কা হোঁদলকুতকুত হতে পারে, উচ্চতা কিন্তু কম নয়। তোমার আর আমার কিন্তু প্রায় সমান-সমান হাইট। এখানে তুমি কিন্তু নামছ আমার করা স্মৃতিভল্লুকের তরুণ বয়সের চরিত্রে। স্মৃতিভল্লুক যদি আমার মতো ভোজনরসিক হয়, তবে সে তো পরিণত বয়সে পৌঁছে মোটা হবেই, কি? হবে না? তো এ ছবিতে আমরা দেখাব তুমি মানে তরুণ স্মৃতিভল্লুক গপগপ করে বিভিন্ন খাবার খেয়ে চলেছ। চিন্তা কোরো না, তোমায় পুরো কিন্তু খেতে হবে না। এক কামড় দিলেই চলবে। ট্রিক শটে নেব। ধরো তুমি একবার কামড়ালে। আমরা কিন্তু শটটা তুলে নিয়ে পরপর পাঁচবার দেখাব। দেখনি, নায়ক-নায়িকা দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরল একবার, পর্দায় দেখাল কিন্তু তিনবার পরপর! তোমার খাবার খাওয়ার দৃশ্যগুলো কিন্তু আমি সেভাবেই দেখাব। কী যে ভাল লাগবে!— ভবাদা আনন্দে আরেকবার ফটাস করে হাততালি দিয়ে উঠলেন— তাছাড়া ডায়েটিং-এর চক্করে পড়ে তোমার তো কিছুই প্রায় খাওয়াদাওয়া হচ্ছে না। শুকিয়ে কিন্তু প্যাঁকাটি মেরে যাচ্ছ। এর’ম চিমড়ে হলে কিন্তু দু’দিন পরে দর্শকই আওয়াজ দেবে! তো বল না, কী কী খাবারে এক কামড় দিতে চাও? সব কিন্তু তোমায় খাওয়াব। মশালা দোসা খাবে? মালপোয়া? পিৎজ়া খাবে না পিজ় পোলাও? চিকেন রোল বা চিংড়ির কাটলেট? মোমো খাবে? মোরগমোসল্লম? — চিন্তা কোরো না হে। নো ওয়োরিজ় অ্যাট অল! সব রকমের খাবার কিন্তু এক কামড় করে খেতে পারবে। খাওয়াদাওয়ায় ভরিয়ে দেব ছবিটা। আর এই খাবারদাবারের ব্যাপার রেখেছি বলেই কিন্তু আমরা পেয়ে গেছি দারুণ এক প্রযোজককে!— আনন্দিত, কিন্তু ক্ষুধার্ত মুখেই বললেন পরিচালক ভবতোষ লাহিড়ী। এই খিদে অবশ্য ঠিক খাবারের খিদে নয়। ‘পলাতকপূর্ব’ নামের ‘হবু-কাল্ট’ ছবিটা তৈরি করবার অদম্য ক্রিয়েটিভ খিদে!
৭।
খাবার নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই পরিবেশটা স্বাভাবিক হয়ে এল। অন্তত সেরকমই মনে হল। বোঝা গেল লতিকাদেবীর মাথা গরম বা ঠান্ডা, কোনওটা হতেই খুব বেশি সময় লাগে না। বিলি গিলচারকে তিনি বললেন— দেখুন মি. গিলচার, সুস্বাদু খাবার অনেক পাবেন এই দ্বীপপুঞ্জের স্পেশ্যালিটি হিসেবে। তবে আমি রেকমেন্ড করব ‘ক্র্যাব মসালা সিজ়লার’। ইউ অল মাস্ট হ্যাভ ইট। এখানে ওটা যেরকম বানানো হয়, সেরকমটি আর কোত্থাও পাবেন না।
— মসালা? ওহ্ মাই! দেন আই’ল গিভ ইট আ মিস। ইট মাস্ট বি ভেরি স্পাইসি।
— কাম অন মি. গিলচার। আন্দামানে এসে কাঁকড়া খাবেন না?
বিলি গিলচার অসহায়ভাবে হেসে নিমরাজি হলেন। হাত কচলে বললেন— ওক্কে! আপনি যখন ইনসিস্ট করছেন। তবে প্লিজ় বলে দিন আমারটায় একটু চিনি মিশিয়ে দিতে। আমেরিকায় চিনে-খাবার রান্না করলেও চিনি মিশিয়েই করে ওখানকার চাইনিজ় রেস্তোরাঁগুলো।
অর্ডার দেওয়া হল। আলোচনায় খানিকক্ষণের বিরতি। বিলি গিলচার আরেকটা চুরুট ধরিয়ে জানলার সামনে দাঁড়ানো ব্রহ্ম ঠাকুরের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন। জানলা দিয়ে একবার উঁকি মেরে সামনের রাস্তাটা দেখে কী একটা ইংরেজি গান গুনগুন করতে করতে ব্রহ্মের পিঠে দুটো আদরের থাবড়া মারলেন। তারপর ফিরে এসে বসলেন টেবিলে।
তপ্ত এবং ফুটন্ত মশলামাখানো কাঁকড়া টেবিলে সার্ভ করা হয়েছে। শেল ক্র্যাকার দিয়ে ফটাস করে কাঁকড়ার একটা দাঁড়া ভাঙলেন প্রোফেসর লতিকা। খুলে ভেতরের শাঁসটা বের করে মুখে পুরে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন ব্রহ্ম ঠাকুরের দিকে। তারপর বললেন— কী ভেবেছিলেন আমার নামটা শুনে? ভেজিটেরিয়ান? দক্ষিণ ভারতীয় মানেই কিন্তু ভেজ-খাদক নন ড: ঠাকুর। ইন ফ্যাক্ট দক্ষিণ ভারতের ভেজ আইটেম যেমন বিখ্যাত, ননভেজও কিছু কম যায় না। তাই আপনার অভিজ্ঞতা কী বলছে সেটাই শেষ কথা নয়। ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। হয়তো শেষে গিয়ে দেখলেন, নিয়ম যেটাকে ভাবছেন, সেটাই ব্যতিক্রম! প্রচুর ইতিহাসবিদ যে কনফার্ম করেছেন এখানকার উপজাতিরা অনেকেই ক্যানিবলস, সেটাকে অগ্রাহ্য করি কী করে বলুন! আর ‘মানুষখেকো’ টপিকটা যদি বাদও দিই, ধরুন ধরে নিলাম ওরা মানুষ খায় না, আপনার আমার মতো কাঁকড়াই খায়, তা হলেও এ অঞ্চলের আদিবাসীদের হিংস্রতার একটা ইতিহাস আছে, সেটা তো মানবেন? ১৮৫৯ সালের অ্যাবারডিনের যুদ্ধের কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন? তীর ধনুক আর বল্লম নিয়ে বন্দুকধারী ইংরেজ সৈন্যদের আক্রমণ করেছিল যারা, তাদের মধ্যে কি খেলা করছিল না একটা অযৌক্তিক হিংস্রতা? ইংরেজরা তো ভালই করতে চেয়েছিল আদিবাসীদের!
ব্রহ্ম ঠাকুর হালকা হেসে কাঁকড়ায় এক কামড় দিয়ে বললেন— দুধনাথ তেওয়ারী বলে এক বিশ্বাসঘাতক মীরজ়াফর না থাকলে ওই যুদ্ধটা হয়তো আদিম মানুষেরাই জিতে নিত প্রোফেসর। দুধনাথ ইংরেজদের কারাগার থেকেই পালিয়েছিল। সে ছিল একজন অপরাধী। বন্য লোকেরা তাকে আশ্রয় দেয়। তারপর বন্যেরা এই যুদ্ধ করতে চলেছে, এরকম ভেতরের খবর পেয়ে সেই আবার ইংরেজদের তা জানায়। লোকটা আসলে মুক্তির স্বাদ পাওয়ার পরেও সাদাদের কাছে দাসত্বের অভ্যেস কাটাতে পারেনি— স্যরি বিলি, কিছু মনে কোরো না…
বিলি গিলচার টেবিলটা থেকে উঠে গিয়ে জানলাটার পাশে দাঁড়িয়ে চুরুটে আরেকটা টান দিলেন। হুঁ হুঁ করে একটা গানের সুর গুনগুন করে ‘ডোন্ট কেয়ার’ অ্যাটিটিউড প্রকাশ করতে চাইলেও মুখের বিরক্তিটা কিন্তু লুকোতে পারলেন না। অবশ্য এটাও ঠিক যে ক্র্যাব মসালা সিজ়লার তাঁর একেবারেই পোষায়নি।
(ক্রমশ)
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র