ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • আকাশের লম্বা সাদা ফালি

    চিরন্তন দাসগুপ্ত (April 17, 2021)
     


    আসলে তো কাজ নেই, খই ভাজা নিয়ে সারাদিন
    এপাশে ওপাশে ঘুরি, বসে থাকি পিভটের কাছে
    অতিরিক্ত মনে হয় নিত্যকার বরাদ্দ টিফিন—
    জলপানি পাব বলে সাতে থাকছি, মাঝেমধ্যে পাঁচে।

    পাপগত দিনক্ষয় করে যাচ্ছি সোম থেকে শনি,
    স্ফীতহাস্যে মূঢ়শস্য তুলে নিচ্ছে ধারাভাষ্যকার
    বানপ্রস্থে আমাকে যে নিয়ে যাবে অমর্ত্যরমণী
    তার হাতে কানামাছি, সম্মুখেই শান্তি পারাবার।

    পাড় আবার ভাঙবে তার বার্তা এল পাকচক্রবালে
    পতঙ্গের পাখা আঁকা নিমন্ত্রণ-পত্রের প্রচ্ছদে
    পাঠপ্রতিক্রিয়া আমি রেখে দেব ফ্রিজের আড়ালে
    যেখানে আরশোলা থাকে, সঙ্গ দেয় আপদে বিপদে।

    বিপদের কথা বলতে মনে পড়ল বিবাহ-বাসর
    অসাড় বন্ধুর দুঃখে অর্ধ-ভাসমান দুটো কান,
    কান নেড়ে যজ্ঞপতি মন্ত্রপাঠে রাত্রি করে ভোর,
    ঘুম থেকে উঠে দেখব প্রস্তুত অবাক জলপান।

    বেড়াতে সকলে যাচ্ছে সাকেত বা ধলভূমগড়
    বিবাহের পরবর্তী বিছানা বদল অভিযানে,
    আমি পিভটের পাশে, লক্ষ্য ভবিষ্যৎ স্বয়ম্বর
    আপাতত সঙ্গোপনে হাত দিচ্ছি অস্থানে কুস্থানে।


    আসলে যে যার মতো ভুল বোঝানোর চেষ্টা করি। যেমন তোমার হাঁস, অসাবধানে চলে এলে আমার তৈলাক্ত কিন্তু প্রাণপণ আদরের কাছে, চোখ বন্ধ করে রাখে তিতকুটে বিশ্রামের ভানে। একটিও পালক নাড়ে না। অথচ সকলে জানে কান খোঁটা শেষ হলে পাথরের মতো একটা গর্ত ফেলে রেখে ওরা চলে যাবে পশ্চিমের জলে।

    আমি গর্তে জড়ো করি বহুবর্ণ স্তন-টন, পিচ্ছিল পাথর আর পাখিদের ময়লা লাগা পাতা। কবিতার খাতা থেকে ছিঁড়ে ফেলা মাইনের তারিখ, অসাবধানে লিখে রাখা অসুখের পরিচয়, ভবিষ্যৎ সন্তানের নাম। এভাবেই পৃথিবীর ভালবাসা নষ্ট করে অন্ধকারে গড়ে ওঠে গৃহস্থের আড়ষ্ট সংসার।


    রাত্তিরে আমার নাম বনমালী অথবা হরেন। বিড়ির ধোঁয়ার মধ্যে ঝাপসা করে দেখা যায় রাস্তার হলুদ আলো, মাতালের দুরবস্থা, পাপে তাপে উপচে পড়া ড্রেন। হরেন বা বনমালী দ্যাখে কিন্তু কথাটি বলে না। নিজেদের মতো করে বুঝে নেয় জীবনের মানে। তারই শেষ অক্ষর দিয়ে শুরু হয় হাসাহাসি, চতুর্দিকে ছিটকে পড়ে বিভা। দেওয়ালের দাগ গুনে কৌতূহল ক্রমাগত অবসন্ন হয়ে এলে বিছানায় পড়ে থাকে কালো পোড়া নিকষ প্রতিভা। তারই গন্ধ গায়ে মেখে তুলকালাম ফুর্তি করে বয়োজ্যেষ্ঠ বনমালী, বিবর্ণ কবিতা লেখা চাটুকার মিচকে হরেন। শতসূর্য বিকশিত হলে তারা দুইজনে নিংড়ে নেয় হৃৎকমল পর্দা টানে পূর্ব খোলা ঘরে। আহা সেই জাগরণে অন্যদের মতি হোক, উহারা ঘুমাক সকাতরে।     

    কারণ জানি না রাজা, ছদ্মবেশে গোলাগুলি ছুঁড়ি
    হুল্লোড়ের জপমাল্য ছুঁড়ে ফেললে মূর্ছাতুর ভাব
    নখবিদ্ধ করে দেখি ছিন্ন কি না প্রত্যুষের কুঁড়ি
    নেড়ে ঘেঁটে নষ্ট করা, এই আমাদের দাস্যলাভ।

    শুনেছি উত্থান হবে অতিদীর্ঘ— চোখ সরবে না
    অলক্ষ্যে তুমিও রাজা জেনে নেবে ছুপা দৃষ্টিপাতে
    ফুল্লকুসুমিত দেশ পদ্য পেড়ে কারা করছে নাশ
    তাদেরও মঙ্গল হবে, অন্ধকারে অমিত আঘাতে।

    পাপ লাগবে না গায়ে, আমরা তো পাপোশের ছানা
    গুপ্তকক্ষে হানা দিয়ে উদ্ধার করেছি অন্নজল
    কলঙ্কেরও সদুত্তর লিখে দেব দৈববাণী টুকে
    সমর্থনে মাথা নাড়বে বিদগ্ধ বৃক্ষ ও গুল্মদল।


    জিভ দিয়ে বসে আছি পুণ্য জাহ্নবীর জঙ্ঘাদেশে
    জন্তুদের চলাফেরা, ছলাৎছল বিষের আওয়াজ,
    সন্ধিগ্ধ রক্তের মধ্যে আলগা জলের মতো মেশে
    অনাহত আর্তনাদে ভেসে যায় গুহ্য কারুকাজ।

    বরফের কালে যারা গুহার আড়ালে জ্বালে মশালের আলো, শীতার্ত পরির পাশে যারা পাখনা রেখে যায়, আখ্যানকাহিনি আর পোয়াতি কান্নার সুরে শিশুকে ভোলায় যারা মাংস রাখে সন্ধ্যাকাশে সুপুষ্ট পানীয় রাখে উটপাখিদের কাছে চেয়ে আনা নকশাকাটা ডিমের খোলায়— তুষারে আচ্ছন্ন হল তাদের হরিণস্পর্শী মন। তাদের পাখির মতো লঘু ও চঞ্চল সংবেদন— জানে ঠিক কতটুকু রং— মুখে ভরে ছুঁড়ে দিলে সহ্য হবে এই চংক্রমণ। সাদা-মোজা বাইসন নিতান্ত লাজুক মুখে চেয়ে নেবে বল্লমের দাগ, আগুনের পাশে বসে আমারও কবিতা পাবে ধোঁয়া ওঠা রক্তের ভাগ। যত লাল তোর ঠোঁটে ততটাই আমার সোহাগ। আমাদের উষ্ণতায় বাড়ে জল বাড়ন্ত বাওয়ালি। গায়ে গায়ে কাঁটা লাগে— স্বপ্নের ওপরে ভাসে টাপু— বুকে পিঠে লেগে থাকে টুকরো টুকরো জল আর লম্বা সাদা আকাশের ফালি।

    ছবি এঁকেছেন সায়ন চক্রবর্তী
     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook