উনিশশো একানব্বইয়ের কলকাতা। শীতকাল। ‘টাটা স্টিল’ কোম্পানি বাজারে সিমেন্ট নিয়ে আসবে। জন্মলগ্নেই প্রয়োজন, আবির্ভাবের কথা জানানোর জন্য জুতসই বিজ্ঞাপন। সে-কারণেই কলকাতার ‘টাটা স্টিল’-এর অফিসে দেশের বেশ কিছু নামী বিজ্ঞপন সংস্থার ডাক পড়েছে তাদের ‘খেল’ দেখানোর জন্য। যাদের ‘খেল’, মানে বিপণন, বিজ্ঞাপন-কৌশল আর সৃজনের পারদর্শিতা উপযোগী আর সেরা মনে হবে, তারাই পাবে সেই সিমেন্টের বিজ্ঞাপন তৈরি করার কাজ। ‘টাটা স্টিল’-এর মতো নামী কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসছেন সিমেন্ট। সুতরাং, এই ব্যবসাটা ঘরে আনতে পারলে লাভ নেহাত কম নয়। তাই, দিন-রাত এক করে, নাওয়া-খাওয়া ভুলে দেশের তাবড় বিজ্ঞাপন সংস্থারা সকলেই ডুব দিয়েছে সোনার খনির আশায়।
সেই সময়ে ‘ওগিলভি অ্যান্ড মেথার’ বিজ্ঞাপন সংস্থার কলকাতা অফিসে আমি নেহাতই চুনোপুঁটি। জুনিয়র ভিসুয়ালাইজার। মাঝেমধ্যে লিখেও ফেলি কিছু বিজ্ঞাপনের হেডলাইন। ঠিক হল, এই নতুন ব্যবসার ‘পিচ’, বা আর পাঁচটা বিজ্ঞাপন সংস্থার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ‘খেল’ দেখানোর মহোৎসবে সাহায্য নেওয়া হবে বম্বের ‘হেড অফিস’-এর। কারণ, এত বড় ব্যবসার বিজ্ঞাপনের জন্য যে ধরনের মাথা, অভিজ্ঞতা, পারদর্শিতা আর লোকবল প্রয়োজন, সেটা শুধু কলকাতার খেলোয়াড়দের দিয়ে কুলোবে না। চাই ভারী ওজনের দাদাগিরি। এমন একজন, যার কথা আর কাজ দেখলে মক্কেলের সম্মোহিত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। যিনি সহজেই সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারবেন যে-কোনও মাঠে। আর তাই, সেই শীতের সকালে কলকাতার বিজ্ঞাপনের ‘পিচ’-এ পা রাখলেন পীযূষ পান্ডে।
ভাল বিজ্ঞাপন কাকে বলে, কী করে তৈরি করতে হয়, কীরকমভাবে সেগুলো আকর্ষণ আর সম্মোহিত করে ভোক্তাকে, সেসবই তখন শেখার পালা আমার। পীযূষ কিছু কাগজে ছাপার জন্য বিজ্ঞাপনের খসড়া বা ‘লেআউট’ নিয়ে এসেছেন বম্বে থেকে। আর এনেছেন একটা ‘স্ক্র্যাচ ফিল্ম’ বা এদিক-সেদিক থেকে ফিল্মের অংশ তুলে নিয়ে সম্পাদনা করে তৈরি এমন একটা ছবি, যেটা আসল ছবিটা কেমন হবে, তা বুঝতে সাহায্য করবে। সিমেন্টের ব্যাগের চেহারা কেমন হবে ইত্যাদি তৈরি করেছি আমরা। মানে, কলকাতা অফিসের সকলে মিলে। ওতে পীযূষের তেমন মাথাব্যাথা নেই।
‘দর্শকের কথা ভেবে ছবি বানাইনি, কিন্তু দর্শক একাত্ম হয়েছেন’! দেখুন অপর্ণা সেনের সাক্ষাৎকার…

আর একদিন পরেই ‘প্রেজেন্টেশন’ বা খেলা দেখানোর দিন। ওগিলভি অ্যান্ড মেথার বিজ্ঞাপন সংস্থার কনফারেন্স ঘরে আমরা সকলে জায়গা নিয়ে বসে আছি। সকলের চোখ ঘরের ছোট টিভি-র দিকে। পীযূষের ব্যাগ থেকে বেরল সেই ‘স্ক্র্যাচ ফিল্ম’-এর ভিডিও ক্যাসেট। ঘরের আলোর তেজ কমিয়ে দেওয়া হল। ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় আমরা সকলে। ছবি শুরু হল। দেখা গেল এক বাবা আর তাঁর ছোট্ট মেয়ের সম্পর্ক। বাড়ির নকশার ‘ব্লু প্রিন্ট’ সরিয়ে রেখে মেয়েকে ঘুম পাড়াচ্ছে তার ‘আর্কিটেক্ট’ বাবা। আবহে শোনা যাচ্ছে এলটন জন-এর বিখ্যাত গান— ‘স্যাক্রিফাইস’। আমরা সকলেই মন্ত্রমুগ্ধ। কীরকম যেন একটা আবেশ বশ করে ফেলেছে আমাদের সবাইকে। এ কী দেখলাম? কোথায় সিমেন্ট? কোথায় সেই সিমেন্টের ‘ইস্পাত-কঠিন শক্তি’? এ তো বাবা আর মেয়ের সম্পর্কের গল্প! ভালবাসার, আশার গল্প। এতে আবেগ আছে, যুক্তি নেই। দেখতে ভাল লাগলেও, এই বিজ্ঞাপন দিয়ে সিমেন্ট বিক্রি হবে? মানুষ কিনবেন? যাঁরা নির্মাণ করবেন, বা যাঁরা নিজের বাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখেন, তাঁরা?
সেই প্রথমবার বুঝলাম, মানুষ যে পেশাতেই থাকুন না কেন, তাদের আবেগ, তাদের মন, এক সুরে বাঁধা। সকলেরই আছে প্রিয়জন। আর তাদের প্রয়োজন এগিয়ে আছে সব সময়ে। কাজ, রোজগার, অর্থোপার্জনের থেকেও এগিয়ে আছে তাদের জন্য ভালবাসা। আর তাই, কোনও সিমেন্ট কোম্পানি যদি সেই জায়গাটা ছুঁয়ে ফেলতে পারে তাদের বিজ্ঞাপন দিয়ে, কীসের দরকার তাদের সিমেন্টের গুণমানের গুণগানের? আর কোম্পানি যখন ‘টাটা’, তখন আলাদা করে পণ্যের মান সম্বন্ধে কতটাই বা বলার প্রয়োজন?
আমার কাছে, এটাই পীযূষ পান্ডে। এটাই শিক্ষা তার থেকে। ছক্কা মারতে হবে এমন করে, যাতে ঠিক বুকের বাঁ-দিকে গিয়ে লাগে। মাথায় নয়। হেলমেটে নয়।
এ ভাবেই সেদিন ঘরভর্তি মহারথীদের সঙ্গে সম্মোহিত হয়েছিলেন ‘টাটা স্টিল’-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুসি মোদী আর জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর আদিতা কাশ্যপও। বলা বাহুল্য, সেদিন থেকে ‘টাটা স্টিল সিমেন্ট’-এর বিজ্ঞাপন তৈরির দায়িত্ব পায় কলকাতার ‘ওগিলভি অ্যান্ড মেথার’।
কলকাতা ছেড়ে বেশ কিছুদিন বম্বে অফিসে কাজ করার সুযোগ হয় আমার। সেই সময়েই তৈরি হচ্ছিল ‘ক্যাডবারি’স ডেয়ারি মিল্ক’-এর বিজ্ঞাপন। ক্যাডবারি’স ডেয়ারি মিল্ক চকলেট সাধারণত বিক্রি হত ছোটদের কথা ভেবেই। ছোটবেলায় দেখা বিজ্ঞাপনে আর চকলেটের মোড়কে ছবিতে থাকত দুই গ্লাস দুধ ঢালা হচ্ছে চকলেটের বারের ওপরে। স্বাদ, গুণ আর পুষ্টির কথা ভেবেই এই চিত্রকল্প আর বিজ্ঞাপন। এবার ক্যাডবারি’স কোম্পানি ঠিক করলেন শুধু ছোটদের মধ্যে সীমিত থাকবে কেন, বড়রাও খাক ডেয়ারি মিল্ক চকলেট। বাবসা বাড়ুক আরও। ওগিলভি-তে শুরু হল নতুন বিজ্ঞাপনের বিপণন, বিজ্ঞাপন আর সৃজনের কৌশল নিয়ে ভাবনা-চিন্তা। এই চিন্তার মূলে থাকে ‘কনজিউমার ইনসাইট’ বা ভোক্তার মনের গভীরে কী চলে বা চলতে পারে, তার রোজকার অভ্যেস ইত্যাদি বুঝে নেওয়ার প্রক্রিয়া। এখান থেকেই পীযূষের মাথায় এল এক অসাধারণ আইডিয়া… প্রত্যেক পূর্ণবয়স্কর মধ্যে লুকিয়ে আছে এক সরল শিশু। বয়স যতই বাড়ুক না কেন, ছোটবেলার বা কৈশোরের কিছু অভিব্যাক্তি, অঙ্গভঙ্গি বা ব্যবহার লুকিয়ে রাখা যায় না। ইংরেজিতে একে বলে ‘চাইল্ড লাইক’। ‘চাইল্ডিশ’ নয়।
ক্যাডবারি’স ডেয়ারি মিল্ক-এর টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে দেখি একটি ক্রিকেট ম্যাচে নিরানব্বই রানে ব্যাট করছেন ব্যাটার। স্টেডিয়াম জুড়ে উত্তেজনা। একটি অল্পবয়সি মেয়েকে ক্যাডবারি ডেয়ারি মিল্ক চকলেটের বার খেতে দেখা যায়। আশঙ্কা আর উৎকণ্ঠা তার অভিব্যক্তিতেও। পরের বলে ব্যাট হাঁকান ব্যাটার। বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ ফসকে যায় ফিল্ডারের হাত থেকে। বাউন্ডারি পেরিয়ে যায় বল। অল্পবয়সি মেয়েটি জড়িয়ে ধরে পাশে বসে থাকা বান্ধবীকে। তারপর এক ছুটে স্টেডিয়াম থেকে মাঠের নিরাপত্তারক্ষীর বাধা কাটিয়ে এক তাৎক্ষনিক বাধাহীন নাচের ছন্দে মেতে ওঠে সে। আবহে চলে এক প্রাণছোঁয়া গান— কুছ বাত হ্যায়, হম সভি মে…। মনভোলানো এই সুর আর ছন্দের রেশ থেকে যায় অনেকক্ষণ পর্যন্ত। এই বিজ্ঞাপনের জেরেই বাজারে এক নম্বর জায়গা হয়েছিল ‘ক্যাডবারি ডেয়ারি মিল্ক’-এর। বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট— শুধু ছোটরা নয়, বড়রাও খাক ‘ক্যাডবারি ডেয়ারি মিল্ক’। ‘ক্যাডবারি ডেয়ারি মিল্ক’-এর স্বাদে বেরিয়ে আসুক বড়দের মনের ভিতরে লুকিয়ে থাকা শিশু-কিশোর। কোনও বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা না করেই ছোট হয়ে যাক সকলে, এই ছুতোয়, আরও একবার।
এভাবেই তৈরি হয় ‘ফেভিকল’-এর বিজ্ঞাপন। আঠার মতো আটকে থাকা বা লেপটে থাকা যা কিছু চোখে পড়ুক বা ধরা পড়ুক স্রেফ কল্পনায়, তার সঙ্গেই মনে আসুক ‘ফেভিকল’-এর নাম। একবার ভেবে দেখুন এই ‘ফেভিকল’-এর প্রথম দিকের বিজ্ঞাপনের কথা। হাতি আর মানুষের ‘টাগ অফ ওয়ার’, সঙ্গে রাজকুমার হিরানির ব্যাখ্যা— ‘ইয়ে ফেভিকল কা জোড় হ্যায়, টুটেগা নেহি’। সেখান থেকে এই ‘ফেভিকল’-এর ছবি দেওয়া দোকানের বন্ধ শাটারের গায়ে মানুষের ছায়া আটকে যাওয়া, গ্রামে বাসের মাথায় গাদাগাদি, সাঁটাসাঁটি করে আটকে যাওয়ার মতো করে যাত্রীদের বসে থাকা, বা ট্রেনে সদ্যবিবাহিত পুরুষের ‘ফেভিকল’-এর বাক্সে ভর দিয়ে ঘুমিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখা ইত্যাদি বিজ্ঞাপন পীযূষ পান্ডে না থাকলে বোধহয় সম্ভব হত না। আসলে পীযূষ যেটা করেছিলেন, সেটা হল ভারতীয় বিজ্ঞাপনে এক পরিচিত দেশীয় রূপ ফিরিয়ে এনেছিলেন। চেনা গ্রাম, শহর, মানুষ, বাস, পুকুর, ট্রেন, ক্রিকেট-ফুটবলের ময়দান, স্কুল-কলেজ…। আর তার মধ্যেই দর্শক-ভোক্তা পেয়েছিলেন হাসির খোরাক। পীযূষ বুঝেছিলেন, হাসি, হাসির খোরাক আর কৌতুক না থাকলে সেই বিজ্ঞাপন মাঠে মারা যাবে। আজকের সময়ের নানা দুর্ভোগ আর দুশ্চিন্তায় ভারাক্রান্ত মানুষের মনের অন্দরমহলে পৌঁছে সেটাকে নাড়া দিতে গেলে চাই আবেগের আবেশ। তা সে কৌতুকই হোক বা চোখের কোণে দু’ফোঁটা জল বা গালভরা হাসি।
অনেক বছর পর, আমার নিজের ছবি তৈরির কাজে তখন মুম্বইতে। বম্বে তখন মুম্বই। গোরেগাওঁ-এর ‘ফিল্ম সিটি’-তে উত্তরপ্রদেশ পর্যটন বিভাগের জন্য বিজ্ঞাপনের ছবির শুটিং হচ্ছে। নির্দেশক সুজিত সরকার। অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন আর চিত্রগ্রাহক অভীক মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে আছেন ‘ওগিলভি’-র একজিকিউটিভ চেয়ারম্যান পীযূষ পান্ডে। এই ছবির ভাবনাও তাঁর। অভীক আমার ছবিরও চিত্রগ্রাহক। সেই সূত্রেই নেমন্তন্ন। গিয়ে দেখলাম, কীভাবে সুজিত আর অভীকের সঙ্গে অনর্গল বাংলায় কথা বলে গেলেন অমিতাভ। আর প্রত্যেক শটের পর পীযূষকে জিজ্ঞেস করলেন, ঠিক আছে কি না, না কি এই একই শট আরও একটা প্রয়োজন। এতদিন পরেও দেখে চিনতে পারলেন পীযূষ। পুরনো দিনের কথা হল অনেক।
এর পর, দেখা হয়েছে বেশ কয়েকবার। শেষবার কলকাতায়, ২০১৭-য়। ‘অ্যাডভারটাইজিং ক্লাব ক্যালকাটা’ বিশেষ আজীবন সম্মাননার জন্য মনোনীত করেছে পীযূষকে। কী করে যেন কথায় কথায় ‘ভার্নাকুলার রাইটিং’ বা আঞ্চলিক ভাষায় লেখার কথাটা উঠে এসেছিল, মনে নেই। আমাকে শুধরে দিয়ে পীযূষ বলেছিলেন, ‘ভার্নাকুলার’ নয়, সঠিক কথাটা হবে ‘মাদার টাং’। মাতৃভাষায় লেখা, আঞ্চলিক ভাষায় নয়। এই নিজের ভাষায় তৈরি বিজ্ঞাপন ব্যাপারটা পীযূষ যতটা সমর্থন করেছেন বা এগিয়ে নিয়ে গেছেন সবসময়ে, তা বোধহয় এদেশের বিজ্ঞাপনে দু’-একজন ছাড়া আর বিশেষ কেউ সেরকমভাবে ভাবেননি। শুধু তাই নয়, একবার বলেছিলেন, ‘আমি সবসময়ে যে কোনও বিজ্ঞাপনের চিন্তা মাথায় এলে প্রথমেই সেটা শোনাই আমার বাড়ির কাজের আর রান্নার লোককে। তাঁদের ভাল লাগলে, অনুমোদন পেলে, তবেই সেটা নিয়ে এগনোর কথা ভাবি।’ পীযূষ বুঝতেন, দেশের সাধারণ মানুষের ভাল না লাগলে কোনও আইডিয়াই ধোপে টিকবে না। আসল ভোট চাই গ্রাম-গঞ্জ-জেলা-উপজেলা আর শহর-শহরতলির সাধারণ মানুষের। তাই, কথা বলতে হবে তাঁদের ভাষাতেই, তাঁদের মনের কথা ভেবেই।
আসলে পীযূষ যেটা করেছিলেন, সেটা হল ভারতীয় বিজ্ঞাপনে এক পরিচিত দেশীয় রূপ ফিরিয়ে এনেছিলেন। চেনা গ্রাম, শহর, মানুষ, বাস, পুকুর, ট্রেন, ক্রিকেট-ফুটবলের ময়দান, স্কুল-কলেজ…। আর তার মধ্যেই দর্শক-ভোক্তা পেয়েছিলেন হাসির খোরাক। পীযূষ বুঝেছিলেন, হাসি, হাসির খোরাক আর কৌতুক না থাকলে সেই বিজ্ঞাপন মাঠে মারা যাবে। আজকের সময়ের নানা দুর্ভোগ আর দুশ্চিন্তায় ভারাক্রান্ত মানুষের মনের অন্দরমহলে পৌঁছে সেটাকে নাড়া দিতে গেলে চাই আবেগের আবেশ। তা সে কৌতুকই হোক বা চোখের কোণে দু’ফোঁটা জল বা গালভরা হাসি।
পীযূষ ইন্দ্রনারায়ণ পান্ডে ছিলেন রাজস্থান ক্রিকেট দলের ডান-হাতি ব্যাটার আর উইকেটকিপার। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলেছেন বহুদিন। ‘রঞ্জি ট্রফি’-র জন্য খেলেছেন ১৯৭৭ থেকে ’৭৯। পাঁচটা ম্যাচ খেলে ন’টা ইনিংসে একশো পাঁচ রান করেছিলেন। ক্যাচ ধরেছিলেন সাতটা। স্টাম্প করেছিলেন দুটো। উনিশ বিরাশিতে ‘ক্লায়েন্ট সার্ভিসিং এগজিকিউটিভ’ হিসাবে যোগ দেন ‘ওগিলভি অ্যান্ড মেথার’ বিজ্ঞাপন সংস্থায়। সেইদিন থেকে বিজ্ঞাপনের ময়দানে খেলে এসেছেন ‘ফ্রন্ট ফুট’-এ। ক্রিকেট টিমের মনোভাব নিয়ে দলের সকলের সঙ্গে মিলেমিশে জিতে নিয়েছেন একটার পর একটা নতুন ব্যবসা আর সারা দেশের মানুষের সঙ্গে সঙ্গে মক্কেলের হৃদয়ও। তাই আজ, ৭০-এও ‘নট আউট’ পীযূষ। মানুষটা নেই, কিন্তু পড়ে আছে তাঁর হাতে তৈরি শত শত বিজ্ঞাপন আর বিজ্ঞাপন কর্মী। যাঁদের সবসময়ে, সব মিটিং-এর আগে বলতেন, জিততে হলে ‘ফ্রন্ট ফুট’-এ খেলতে হবে। না হলে উইকেট পড়বেই। সে যে মাঠেই খেলা হোক না কেন, জেতার মনোভাব নিয়ে না খেললে কীসের খেলা?



