‘খওফ’, রাষ্ট্র, লিঙ্গ

Representative image

এপ্রিল মাসে সম্প্রচার হয়ে যাওয়া একটি ওয়েব সিরিজ নিয়ে তিন মাস পর লিখতে বসা খুব সহজ নয়। সহজ নয় তার কারণ, সোশাল মিডিয়া, ইন্টারনেট এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মে গোলাবর্ষণের মতো প্রতিদিন চব্বিশ ঘন্টা শত সহস্র অযুত নিযুত কন্টেন্টে বহু খুঁটিনাটি মনে থাকে না আর।

আট পর্বের ‘খওফ’ (ভয়) দেখতে-দেখতে সে-সময়ে যা-যা মনে হয়েছিল, তা এখন আর একইভাবে মনে নেই। কিন্তু সময়ের একটা সুবিধে আছে। সময় পেরিয়ে গেলে, শুধু সেটুকুই মনে থেকে যায়, যা মন থেকে মুছে যাওয়া সম্ভব না। সেই নির্যাসটুকুই প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে আবারও।

‘খওফ’ একটি সুপার-ন্যাচারাল হরর, যাকে বাংলায় বলা যায় অতিপ্রাকৃত ভয়। অথচ ‘খওফ’ দেখতে-দেখতে প্রতি মুহূর্তে মালুম হয়, বাস্তব অতিপ্রাকৃতের চেয়েও ভয়াবহ। গোটা সিরিজ জুড়ে এই শ্বাসরোধী বাস্তব হররকে দেখতে-দেখতে নিজের দিকে তাকাবে যে-কোনও মেয়ে। ভাববে নিজের সেকেন্ড সিটিজেন সত্তার কথা। নাগরিক হিসেবে যাকে এক দণ্ড সুরক্ষা, স্বস্তি, স্বাভাবিকতা দিতে পারেনি কোনও রাষ্ট্র, কোনও সমাজ।

আরও পড়ুন: অরুন্ধতী দেবীই প্রথম মহিলা পরিচালক, যিনি নিজের লিঙ্গ-অবস্থান বিষয়ে সচেতন হয়ে পরিচালনায় হাত দিয়েছিলেন! লিখছেন দেবারতি গুপ্ত

‘খওফ’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র মধু, গোয়ালিয়র থেকে দিল্লি আসে এবং নতুন শহরের প্রান্তে এক জরাজীর্ণ হোস্টেলে জায়গা পায়। হোস্টেলটি কর্মরত মেয়েদের জন্য। এর ওয়ার্ডেন, ওয়ার্ডেন-এর বন্ধু এক পুলিশ কন্সটেবল মহিলা এবং বোর্ডার মেয়েদের সমেত হোস্টেলটি ঠিক যেন মেয়েদের প্রান্তবাসী জীবনেরই প্রতীক। শহরের ভিড়, শব্দমুখরতা আর প্রাণচাঞ্চল্য পেরিয়ে সন্ধেরাতে হোস্টেলে ঢোকার পথটি গা-ছমছমে। না, কোনও ভূতপ্রেত বা শ্বাপদের কারণে নয়। সামান্য একটা লেজার টর্চ থেকে মেয়েদের মুখে-গলায়-বুকে ঘুরতে থাকা লাল আলোর বিন্দুমুহূর্তে টের পাইয়ে দেয় নিরাপদ আড়ালে ওঁত পেতে থাকা কোনও এক স্টকারের উপস্থিতি। স্নাইপারের মতো অদৃশ্যএই স্টকার এতই আত্মপ্রত্যয়ী, যে প্রতি সন্ধেয় সে ফিরে-ফিরে আসে। অন্ধকার আড়াল থেকে ফেলা লেজার টর্চের লাল আলো একেবারেই এক্তিয়ারের বাইরে ঘোরা অনধিকার পুরুষদৃষ্টি। কিন্তু তার ভয় নেই। সে জানে তার অপরাধের অলিখিত লাইসেন্স আছে। যে লাইসেন্স আছে বলে, কাহিনির একেবারে শেষে গিয়ে এক তুঙ্গমুহূর্তের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে খুব আয়াসহীনভাবে সে উল্লেখ করতে পারে, ‘রড’ শব্দটা। যে শব্দ অবধারিতভাবে মনে করিয়ে দেয় ২০১২ সালে এই শহরেই ঘটে যাওয়া গা হিম করা গণধর্ষণের কথা। নির্ভয়ার শরীরের অন্ত্র ছিন্নভিন্ন করে যে রড হত্যা করেছিল দেশের প্রতিটি মেয়ের স্বাভাবিক শ্বাস নেওয়ার অধিকারকে। যে ঘটনার পর কোনও শহরে, কোনও মেয়ে— রাতে একলা বাসে ওঠার সাহস পায় না আজও। এই নিরন্তর ভয়ের মধ্যে বাঁচার জীবনই আসল ‘খওফ’।

মাধুরী ওরফে মধু (মনিকা পঁওয়র) গোয়ালিয়র থেকে মুক্তি পেতে দিল্লি এসেছিল। কলেজের অ্যানুয়াল ফাংশনের সন্ধেয় মধুকে গণধর্ষণ করেছিল কলেজের তিন সিনিয়র। মধু ভেবেছিল ছোট শহরের চেনা পরিবেশ থেকে পালিয়ে রাজধানীর বিরাট পেটের ভেতর সেঁধিয়ে যেতে পারবে। নতুন পরিচয় নিয়ে নতুন করে বাঁচতে পারবে। মধু বোঝেনি মেয়েদের গল্পটা পৃথিবীর সব দেশে, সব কালে, সব সমাজে এক। ছোট শহর, বড় শহর, গরীব দেশ, ধনী দেশ, ধনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, যুদ্ধ, বিপ্লব… পালানোর পথ নেই। মধুর সঙ্গে ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকা তার পুরুষবন্ধুটি নিজেই তাকে প্রতিনিয়ত সেই ভয়ংকররাতের কথা মনে করিয়ে দেয়। একটু ঝলমলে খুশিয়াল কোনও সাজ, কোনও ঝোলানো দুল, কোনও উজ্জ্বল লিপস্টিক পরার অধিকার পর্যন্ত নেই তার। কারণ তার সঙ্গে একবার এরকম একটা অপরাধ হয়ে যাওয়ার অর্থ, পুরুষের মনের ভেতর এই ধরনের অপরাধ প্রবণতা উসকে দেওয়ার মতো ক্ষমতা তার আছে। নিজেকে বাঁচানোর জন্য তাই তারই উচিত সবসময় নিষ্প্রভ হয়ে থাকা। ঠিক যে যুক্তিতে বহু পুরুষ ‘অনুমোদন’ করে না, তাদের বাড়ির মেয়েরা জিন্স পরবে বা হাতকাটা জামা পরবে। যে যুক্তিতে এক সম্প্রদায়ের মেয়েদের মুখ দেখানো, চুল দেখানো বারণ। হিজাব, নাকাব, বোরখার বেঢপ আকারহীন পিপের মধ্যে নিজেদের পুরে চলাফেরার পরেও, তাদের যৌন লাঞ্ছনা ঠেকানো যায়নি; অথচ যে যুক্তিতে দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম শহরে ‘ঘুঙ্ঘট’ দিয়ে গোটা মাথা না ঢেকে মেয়েদের বাইরে বেরনোর ‘অনুমোদন’ নেই আজও। অথচ ক্ষেত খামারে বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে অহরহ ছিন্নভিন্ন হওয়া আটকানো যায়নি তাতে।

গল্প এগোতে-এগোতে এক সময়ে মধু জানতে পারে, তার এই সর্বদা পাশে থাকা আপাত সঙ্গীটির মেসেজের ভুলেই সেই অভিশপ্ত রাতে সিনিয়র ছেলেগুলো জানতে পেরেছিল, কলেজের কোন বিল্ডিঙের কোথায় সেই মুহূর্তে গেলে পাওয়া যাবে তাকে। কারণ শারীরিক অন্তরঙ্গতার মুহূর্তটি বহু পুরুষের মনে আজও একটি মেয়েশরীরকে জয় করার সামিল। কাজেই নিজের পৌরুষকে প্রতিষ্ঠা করার উল্লাস চেপে রাখতে পারেনি সঙ্গী ছেলেটি। যা ছিল ব্যক্তিগত তাকে সে খোলা বাজারে হাট করে বসল। কারণ মাথার ভেতরে বিনবিনানো পুরুষতন্ত্র। যুগে-যুগে যা নারীর যোনিতে পুঁতে রাখতে চেয়েছে জয়পতাকা। যেখানে নারীর শরীরের অধিকার পাওয়া, অধিকার লঙ্ঘন করার সমান উত্তেজনা বয়ে আনে। যা হতে পারত প্রেমজ সংরাগ তা হয়ে যায় শুধুই ক্ষমতার লড়াই যেখানে পুরুষ আগেভাগেই স্থির করে বসে থাকে যে ক্ষমতার লাগাম তার হাতে। সঙ্গীনি তাকে সেই অধিকার তুলে দিচ্ছে সে-কথা ভুলে গিয়ে সে নিজের কৈশোরলালিত পৌরুষের বিকৃত বোধে নিজের নারীটিকে অজ্ঞাতে তুলে দেয় সবার হাতে। পুরুষতন্ত্রের শিকার কি শুধু একা নারী? পুরুষ নয়?

মধু পালটাতে থাকে। মধু পুরুষের হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মেলায় না। সে ইচ্ছেমতো সাজে। ইচ্ছেমতো পোশাক বেছে নেয়। ইচ্ছেমতো কথা বলে, মেলামেশা করে। কিন্তু আবারও ধাক্কা খেতে হয় তাকে। যে নতুন বন্ধুটির মধ্যে সে নিজেকে আবার রক্তমাংসে আবেগে স্বাভাবিক ভাবে খুঁজে পাওয়ার কথা ভাবতে শুরু করে, বোঝে সেই তার ধর্ষকদের একজন। অন্যান্য গল্পের মতো এখানে লেখিকা স্মিতা সিং দর্শককে আগে থেকেই বুঝিয়ে দেননি, যে এই দ্বিতীয় ছেলেটি আসলে গোয়ালিয়রেরসেই রাতের এক অপরাধী। ফলে দর্শক সরাসরি সেই ‘খওফ’-এর অংশীদার হয়, যখন মধুর মতোই আবিষ্কার করে যে এতক্ষণ সে যা আশঙ্কা করছিল সেটাই সত্যি। ভালবাসার চন্দনের বনেই, আবারও, লুকিয়ে আছে সাপ। মধু ভিক্টিমহুড থেকে বেরিয়ে যায়। বাসের ভেতর তার শরীর লক্ষ্য করে এগিয়ে আসা লিঙ্গকে কনুইয়ের প্রচন্ড ধাক্কা দিয়ে কঁকিয়ে দিতে শেখে। যে সাবওয়ের অন্ধকারে হাঁটতে ভয় পেত সে এতদিন, সেখানে নামে। মুখোমুখি এগিয়ে আসা পুরুষের ইভ টিজিংয়ের লাইসেন্সকে থেঁতলে দুমড়ে দেয় ইটের বাড়ি মেরে। মধুর মধ্যে দিয়ে দর্শক মেয়েদের ‘খওফ’-এর মুক্তি ঘটতে থাকে। বাসে-ট্রামে, রাস্তায়, সাবওয়েতে চলাফেরা করার অভিজ্ঞতা থেকে জন্মানো প্রতিঘাত আর প্রতিহিংসার কৈশোরলালিত অবদমিত ইচ্ছেগুলো রূপ পেতে থাকে।

‘খওফ’-এ মধুর কাহিনির পাশাপাশিই চলে আর-একটি গল্প, যার মূল চরিত্র ‘হাকিম’ (রজত কাপুর)। যে লোকটি নারী শরীরের অধিকার লঙ্ঘনের চরমে পৌঁছনো এক চরিত্র। যে মেয়েদের অপহরণ করায় অতিপ্রাকৃত শক্তির সাহায্যে নিজের অসুখ আর মৃত্যুর থেকে মুক্তির লোভে। একের পর এক তরতাজা যুবতী মেয়ে শুয়ে থাকে তার বেসমেন্টের গোপন হত্যাকক্ষে। তাদের ‘রুহ’কে সে কখনওই বন্দী করতে পারে না। একের পর এক নারীর লাশ জমতে থাকে, ভেসে যেতে থাকে নদীতে। যে নদী ইন্ডাস্ট্রিয়াল আবর্জনার স্তুপীকৃত মেঘ বুকে নিয়ে বয়ে চলে রক্তের মতো। নদী তো নারীরই মতো। সভ্যতার ক্লেদ রক্ত পুঁজ বয়ে নিয়ে চলা তার ইতিহাস।

কাহিনির শেষে গিয়ে দেখা যায়, সেই ‘খওফ’, যা এতদিন তাড়া করে বেড়িয়েছে মধুকে, তা এখন নকুল, অর্থাৎ তার ধর্ষকের চব্বিশ ঘন্টার সঙ্গী। এর চেয়ে ভাল শাস্তি কী হতে পারে! জায়গাবদল। আত্মাবদল। জীবনবদল। অবস্থানবদল।

কিন্তু ‘খওফ’ শেষ পর্যন্ত এই টানটান প্রতিস্পর্ধা ধরে রাখতে পারে না। সমস্ত আয়োজন থাকা সত্ত্বেও শেষে গিয়ে হতাশ করে এবং বিভ্রান্ত করে দর্শককে। অথচ, প্রতিটি নারীচরিত্র এখানে রক্তমাংসের মানুষ। তারা শুধু ভিক্টিম হবে বলে চিত্রনাট্যে আসেনি। তাদের লোভ আছে, রিরংসা আছে, দুর্নীতির সঙ্গে প্রয়োজনে সমঝোতা করার ইচ্ছে আছে। তাদের সহমর্মিতা আছে, বন্ধুত্ব আছে, বাঁচার ইচ্ছে আছে। কিন্তু চাক না চাক সকলের ভবিতব্য বাঁধা পড়ে আছে পুরুষতন্ত্রের কব্জায়। সবচেয়ে চমক লাগে দেখে, যে ৯৯% ভয়ের ছবির মতো এখানে দুষ্ট আত্মাটি নারীর নয়, একটি পুরুষের। তার ইহজগতের লীলা সাঙ্গ করে যারা, তারা এই হোস্টেলেরই ৩৩৩ নম্বর ঘরের আশপাশের মেয়েরা। সেই রাতের ফ্ল্যাশব্যাক এই সিরিজের সবচেয়ে বড়ো প্রাপ্তি। ৩১ ডিসেম্বরের রাতে দিল্লির শীতে, ছাদে জড়ো হয়ে বন ফায়ার করতে থাকা মেয়েরা আচমকাই বাধ্য হয়ে ছেলেটিকে শেষ করে দিতে। কারণ এই সেই লেজার টর্চ ফেলা স্টকার। সে-রাতে হোস্টেলের দারওয়ানও নেই। থাকলেই বা কী। কারণ শুধু পুরুষ হওয়ার উচ্চাসন থেকে সে একজন অধস্তন কর্মচারী হয়েও হোস্টেলের মেয়েদের গালিগালাজ করার অধিকার রাখে। কাহিনি চলতে-চলতে এর মধ্যে দর্শকের জানা হয়ে যায় কীভাবে প্রতিটি মেয়ে পরিবার আর সমাজের হাতে লাথিঝাঁটা খেয়ে এখন জড়ো হয়েছে বছর শেষের রাতটুকু এই পরিত্যক্ত হোস্টেলের ছাদে একসঙ্গে কাটাবে বলে। কিন্তু স্টকার তো ভয়হীন, উদ্ধত। পুরুষতন্ত্রের সুবিধে পাওয়া পুরুষের মতোই। তাই দরওয়ান বিহীন হোস্টেলে একাই সে পাঁচটা মেয়ের মোকাবিলা করবে এবং তাদের উচিত শিক্ষা দেবে বলে ভাবার সাহস পায়। তার একবারও মনে হয় না এটা অসম লড়াই হতে পারে। কারণ সে তো পুরুষ। তার কাছে একটা মেয়েও যা, পাঁচটা মেয়েও তাই। সেই ঔদ্ধত্যেই বুদ্ধিভ্রষ্ট হয় তার। আর সেই রডের প্রসঙ্গ এনে সে শাসাতে যায় সেই মেয়েটিকে যে এখনও অবধি গল্পে সবচেয়ে লক্ষ্মী, বাধ্য, শান্ত এবং প্রথানুগ। সেই লক্ষ্মীপ্রতিমাই ঘুরে দাঁড়ায় বীভৎস রাগে, শুধু ‘রড’ শব্দটির উচ্চারণ স্ফুলিঙ্গ হয়েআগুন লাগিয়ে দেয় তার ভেতরের জমে থাকা বারুদে। সে মেরে ফেলে… প্রায় মেরে ফেলে ছেলেটিকে। আর ঠিক সেই সময় দূরে রাতের আকাশ জুড়ে আতসবাজি ফুটতে থাকে। নতুন দিন এসে গেছে। দর্শকের গায়ে কাঁটা ধরিয়ে দেয় এই দৃশ্য।

‘খওফ’ ওয়েব সিরিজের দৃশ্যে রজত কাপুর

কাহিনির শেষে গিয়ে দেখা যায়, সেই ‘খওফ’, যা এতদিন তাড়া করে বেড়িয়েছে মধুকে, তা এখন নকুল, অর্থাৎ তার ধর্ষকের চব্বিশ ঘন্টার সঙ্গী। এর চেয়ে ভাল শাস্তি কী হতে পারে! জায়গাবদল। আত্মাবদল। জীবনবদল। অবস্থানবদল। প্রতিটি মুহূর্ত ঘরে বাইরে ভয়কে সঙ্গী করে মাথার একটা অংশ শুধু আত্মরক্ষার জন্য নিয়োজিত করে বেঁচে থাকা! কোনও ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট, কোনও জেল এর প্রতিস্থাপন হতে পারে না। এই আতঙ্ক, এই হিসেব, এই আত্মবিশ্বাসহীনতাই নকুলদের প্রাপ্য। ঠিক এমন একটা বয়ান দিয়েই শেষ হতে পারত খওফ। কিন্তু শেষরক্ষা হয় না।

বাস্তব যেমন। যেমন কাজ করতে গিয়ে কাজের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে ক্ষমতার চক্ষুশূল হতে হয়েছিল ডাক্তার মেয়েটিকে। বেদম মেরে যাকে মেরেই ফেলা হল তার নিজেরই কাজের জায়গাতে। এক বছর হতে চলল, যার হত্যার কোনও সঠিক শাস্তি হল না। আইন, আদালত, সংবাদ, মাধ্যম যার পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট থেকে যোনির ওজন কত জানাতে ব্যস্ত রইল। হত্যার চেয়েও বড়ো-বড়ো হেডলাইন পেল ধর্ষণ। যেমন পড়তে গিয়ে আইনের ছাত্রী হয়েও নিজেরই কলেজে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গণধর্ষণের শিকার হতে হলো মেয়েটিকে। একটার পর একটা এমন ভাবেই চলতে থাকবে। চলে এসেছে এভাবেই। ‘খওফ’-এর সামাজিক রাজনৈতিক বয়ান যতদিন না জায়গা বদল করছে।