পত্রিকা

সর্বজিৎ মিত্র

অন্য বইমেলা

১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত এই বিশেষ বইমেলা ও প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়, বিশ্বভারতীর স্টল থেকে তাঁরই এক সময়ের শিক্ষক বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় রচিত ‘শিল্পশিক্ষা’ বইটি কিনে। সে-বছর গিল্ড আয়োজিত বইমেলার কয়েকদিন পরেই এই বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ করে – ১৭৭৮-এ প্রকাশিত প্রথম ছাপা বাংলা বইয়ের দ্বিশতবার্ষিকীকে।

খান রুহুল রুবেল

ঢাকা ডায়েরি: পর্ব ১৩

‘আমার দেখা মেলার ১৮ বছরও কম নয়। প্রথম যখন অমর একুশে গ্রন্থমেলায় আসি, তখন মেলা হত শুধু বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। মাত্র একটা প্রবেশ পথ, বেরোবার একটা পথ। মেলায় ঢোকা— সেটা যদি শুক্র শনিবার বা অন্য ছুটির দিন হত— তাহলে সে এক মহাপ্রস্থানের পথ। প্রায় দেড়’দুই কিমি লাইন, সেই শাহবাগ মোড় থেকে শামুকের মতো ঠেলে-ঠেলে মেলায় ঢোকার অভিজ্ঞতা, তখনকার লোকেরা জানেন। ‘

জয়ন্ত সেনগুপ্ত

হেঁশেলের হিস্‌সা: পর্ব ১৩

‘যে প্রজ্ঞাসুন্দরী রান্না শিখেছেন এপার বাংলার ঠাকুরবাড়িতে, তাঁর নিরামিষ খণ্ডের পোস্ত চচ্চড়িতে কিন্তু টিপিক্যাল পশ্চিমবঙ্গ-স্টাইল পাঁচফোড়ন নেই, আছে তিন ফোড়ন। অথচ ‘বাঙালবালা’ রেণুকা দেবী চৌধুরানীর বইতেই দেখছি পাঁচফোড়ন সহযোগে আলুপোস্তই শুধু নয়, রয়েছে ঝিঙেপোস্ত, পটলপোস্ত-সহ পোস্তর পাঁচমিশেলি প্রসার।’ বাঙাল-ঘটির রান্না।

কবীর চট্টোপাধ্যায়

যুদ্ধ কীসে হয়

‘দুষ্ট রাশিয়াই ছলে-বলে-কৌশলে নানা অসহায় দেশ দখল করে বসে আছে, আর সেই সব বেচারা দেশ অসহায় প্রজার মতো নেটোর দরবারে ধর্না দিলেও নেটো কিছু করেনি। অতএব এই যুদ্ধ আসলে একটি ‘সবল বনাম দুর্বল’ বাইনারি। এঁরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ, লুহানস্ক, দনেতস্ক অঞ্চলে রুশ-সমর্থক গোষ্ঠীরা যেন আচমকাই সক্রিয় হয়ে উঠল, যেন রুশদেশের সাম্রাজ্যবিস্তার ছাড়া তাদের ক্রোধের কোনও ইতিহাস নেই।’ এই যুদ্ধের ছোট্ট ইতিহাস।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৫৩

‘অসুখের মধ্যে কেমন একটা অসহায়তা আছে। সেই অসহায়তা অন্যের সামনে লজ্জা পায়। বিশেষ করে সুস্থ লোকের সামনে। অথচ সেই সুস্থ লোকের সাহায্যও দরকার। কিন্তু তখন মনে হয় আমার দুর্বলতা যেন কারো নজরে না পড়ে। আমি যে অসমর্থ, এটা যেন কেউ জানতে না পারে।’ অসুস্থ গুরু।

উপল সেনগুপ্ত

অ্যাবরা কা থ্যাবড়া ৫৩

কথা থাকবে না, শুধু ছবি। মানে কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র। অবশ্য শুধু ব্যঙ্গ কেন, থাকবে হিহি, খিলখিল, ঠোঁট টিপে মুচকি, একলা দোকলা ফোকলা হাসি। ব্যঙ্গচিত্র কখনও হবে বঙ্গ-চিত্র, কখনও স্রেফ তির্যক দৃশ্য। ছোট্ট ফ্রেম, বিশাল ক্যানভাস।

উপল সেনগুপ্ত, চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

একটা গল্প একটা গান: পর্ব ১২

গোল্ডিলকস, যে কিনা পছন্দ করত স্বস্তি, একদিন জঙ্গলে ঘুরতে-ঘুরতে একটা বাড়িতে ঢুকে, পরে জানতে পারে ওটা আসলে ভাল্লুকদের বাড়ি। ভাল্লুকেরা তাকে যে উপদেশ দেয় ছাড়ার সময়, তা সে মানে না এবং শেষে ওদেরই পুড়িয়ে মারে। আর গানে প্রশ্ন করা হচ্ছে, পৃথিবীতে নানান বিপর্যয় নেমে আসলেও, মানুষের আনন্দ-ফুর্তিতে তার ছাপ পড়বে কি?

শ্রীজাত

কবিতার আড্ডাঘর: পর্ব ১২

আমাদের চারপাশটা আবারও অন্ধকার হয়ে আসছে। আশঙ্কার কালো মেঘ যেন মাথার ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে, দেখা যায়। এই বিপন্ন সময়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, কালকের সিরিয়া, আজকের ইউক্রেন সব একাকার হয়ে গেছে। সর্বত্র শুধু ভয় আর আতঙ্ক। এই পর্বের কবিতাগুচ্ছের মধ্যে সেই কালো সময়েরই প্রতিধ্বনি।

গৌতম ভট্টাচার্য

মহাতারাদের মাস্টারমশাই

‘হপম্যানের রাজ করা দীর্ঘ সময়ে অস্ট্রেলিয়ান চ্যাম্পিয়নদের সমাবেশ দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে৷ ইন্টারন্যাশনাল টেনিস ফেডারেশন এই যে ঘটা করে ‘হল অফ ফেম’ দেয়, এঁরা তো সমবেতভাবে ‘হল অফ ফেম ভবন’! লিউ হোড৷ রয় এমার্সন৷ রড লেভার৷ ফ্রেড স্টোলে৷ ম্যাল আন্ডারসন৷ টনি রোচ৷ জন নিউকোম্ব৷ নিল ফ্রেজার৷ কেন রোজওয়াল৷ মুম্বই ক্রিকেট টিমের রঞ্জি আধিপত্যের মতো একচেটিয়া ছিল সার্কিটে অস্ট্রেলিয়ার প্রাধান্য৷’

সুব্রত মজুমদার

সত্যজিতের শহরতলি

‘সত্যজিৎ তো আগাগোড়া ভীষণ রকম শহুরে মানুষ। গড়পার, বালিগঞ্জ, লেক টেম্পল রোড থেকে বিশপ লেফ্রয়। অক্টারলনি মনুমেন্ট থেকে মেরেকেটে দশ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যেই থেকেছেন সারা জীবন। তাহলে ওঁর গল্পে আর সিনেমায় স্মল টাউন— শহরতলি, মফঃস্বল— ফিরে ফিরে আসে কেন?’

অনুপম রায়

ম্যাকি: পর্ব ১৩

‘অন্য মানুষ-ই হলো তোদের কাছে নরকের সমান। অন্য মানুষ কী ভাবছে তাই নিয়ে ভেবেই তোরা শেষ হয়ে যাবি। অন্য মানুষের মাথায় তোকে নিয়ে কী ছবি আঁকা হছে তাই যেন তোদের বেঁচে থাকার আসল উদ্দেশ্যে। সেই নিয়ে অশান্তিতে থাকবি। রাগারাগি করবি, ঝামেলা বাঁধাবি। ফাইনালি আইসোলেট করবি নিজেকে।’ একা থাকার হিউজ প্রবলেম।

সুমনা রায় (Sumana Roy)

উত্তরবঙ্গ ডায়েরি: পর্ব ১৩

‘আমরা বাতাবাড়ি কেন এসেছি, তা আমি ভাবতে শুরু করি। মাসখানেক আগে, যখন বেড়াতে যাওয়ার আগ্রহটা আমাদের কথোপকথনে উঁকি-ঝুঁকি মারা শুরু করে আর আমরা কাছাকাছির মধ্যে বেড়িয়ে আসার জায়গা খুঁজতে শুরু করি – অবশ্যই শহুরে জীবনের ভিড় ছেড়ে পালিয়ে আসার প্রবল ইচ্ছেটার প্রভাবে – বাতাবাড়ির নাম কিন্তু খুব একটা উঠে আসেনি।’ ডুয়ার্সকে শোনা।