পত্রিকা

চিন্ময় গুহ

দিনরাত্রির কঙ্কাল

‘কলকাতা থেকে পালামৌ-তে ছুটি কাটাতে আসা চারজন সমবয়সি ভিন্নধর্মী যুবককে সত্যজিৎ comédie humaine-এর ভঙ্গিতে নির্মোহ ভাবে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে রাখেন, তাঁর ক্লাসিকাল ক্যামেরা-চোখের সামনে তাদের কৃত্রিম মুখোশ নিজেদের অজান্তে আস্তে আস্তে খুলতে শুরু করে, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ছবির মতোই শহর থেকে বাইরে প্রকৃতির পশ্চাদ্‌পটে টেনে এনে আতসকাচের নীচে রেখে, কিন্তু আরও বেশি চলৎপ্রবাহে, রনোয়ার-এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি ‘রুলস অফ দ্য গেম’-এর মতো।’ অরণ্য-কথা।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শান্তিনিকেতন ডায়েরি: পর্ব ১৩

‘রবীন্দ্রনাথের জীবনযাপন এবং তাঁর আদর্শ দুই ভিন্ন পথে হেঁটে যায়নি। তিনি নিজে যা বিশ্বাস করতেন, জীবন এবং অভ্যাসকে তিনি সেই পথে প্রবাহিত করবার চেষ্টা করতেন। সারাজীবন সহযোগের আদর্শে দীক্ষিত মানুষের সঙ্গে বিশ্বপ্রকৃতির মিলনক্ষেত্র হিসেবে তিনি পৃথিবীকে কল্পনা করে এসেছিলেন। এই একের সঙ্গে অপরকে মিলিয়ে দেওয়ার কাজে উৎসবের যে একটা বড় ভূমিকা রয়েছে, তা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন।’ শান্তিনিকেতনের উৎসব।

অপরাজিতা দাশগুপ্ত

শিকড়: পর্ব ১

‘নয়নতারা আগে ডায়েরি লিখতেন নিয়মিত। এখন আর লেখেন না। শুধু ভাবেন। মনের মধ্যে ব্রেক কষে-কষে হাঁটতে থাকেন পিছন দিকে। স্মৃতি রোমন্থন করেন। জীবনে অনেকগুলো বছর নাকে-মুখে গুঁজে স্কুলে ছুটতেন। মধ্য কলকাতার স্কুলে চাকরি পেয়ে গেছিলেন এমএ-র পরই। স্কুলে চাকরির পর পরই বিয়ের সম্বন্ধটা এনেছিলেন তাঁর সম্পর্কে এক পিসি, যিনি আবার অমলজ্যোতির মাসিমা হতেন।’ নতুন গল্প।

জগন্নাথদেব মণ্ডল

নির্জন চৈত্রের লেখা

‘আমার কান বদলে গেছে অপরূপ যোনিতে।/ তোমার সমস্ত কথা পুরুষাঙ্গ হয়ে প্রবেশ করছে ভিতরে।/ ধীরে ধীরে রাঙা মেঘের ভিতর দিয়ে উঁকি দিল সন্ধ্যাতারা,/ উড়োজাহাজ চলে যাওয়ার চিহ্ন আকাশে।/ ভিতরে ভিতরে রমণ চলেছে আমাদের,/
আর খুলে খুলে যাচ্ছে মেরুদণ্ডে লুকানো গুপ্ত-সন্ধ্যা’ নতুন কবিতা।

উপল সেনগুপ্ত

অ্যাবরা কা থ্যাবড়া ৫৪

কথা থাকবে না, শুধু ছবি। মানে কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র। অবশ্য শুধু ব্যঙ্গ কেন, থাকবে হিহি, খিলখিল, ঠোঁট টিপে মুচকি, একলা দোকলা ফোকলা হাসি। ব্যঙ্গচিত্র কখনও হবে বঙ্গ-চিত্র, কখনও স্রেফ তির্যক দৃশ্য। ছোট্ট ফ্রেম, বিশাল ক্যানভাস।

সৈকত ভট্টাচার্য

ধাঁধিয়ে যাওয়া ধাঁধা

‘যদি সুদোকু খেলার নেশা থাকে, তাহলে এই ধাঁধার মানে বোঝা সহজ হবে। সুদোকুতে যেমন প্রতি সারিতে একই সংখ্যা দু’বার আসা না-মুমকিন, তেমনি এই বর্গক্ষেত্রের বেলাতেও। আপাত ভাবে এই ধাঁধাকে রোববারের খবরের কাগজের ব্রেন-টুইস্টারের থেকে আলাদা কিছু মনে হয় না। কিন্তু অয়লার অনেক কাঠখড় পুড়িয়েও নিজের ধাঁধায় নিজেই ধাঁধিয়ে গেলেন।’ আড়াইশো বছর পর লিওনার্ড অয়লার-এর ধাঁধার সমাধান।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৫৪

‘লোকে বলে গুরু দত্তর জীবনে সব চেয়ে বড় অভিশাপ তার গীতার সঙ্গে বিয়েটা! কিন্তু সেটা যে কত বড় ভুল, তা আমি কেমন করে বোঝাব। আসলে ওয়াহিদা রেহমান কেবল একটা উপলক্ষ্য। গীতা যদি আর একটু হিসেবী হত, আর একটু কড়া হাতে গুরুর জীবনের রাশ টেনে ধরত, তাহলে হয়তো আর আমাকে এই রাত জেগে ‘বিনিদ্র’ লিখতে হত না।’ ছন্নছাড়া জীবন।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

সামথিং সামথিং: পর্ব ২৬

যাঁরা সংস্কৃতির মানচিত্রের ভগবান, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নির্ঘাত পিওর-প্রণম্য, এবং সুদীর্ঘ ও যুগ-যুগব্যাপী বিস্ময়ের যোগ্য, তাঁদের অনুরাগী ও ভক্ত হওয়া দিব্যি চমৎকার ঘটনা, জীবনের কেন্দ্রে তাঁদের অধিষ্ঠিত রেখে নিত্য জাগরণ এক শুদ্ধ ব্রত, কিন্তু তার সঙ্গে যেন এই বোধ থাকে: আমার দেবতাকেও কেউ এসে গাল দিতে পারে, সেই গালে যদি যাথার্থ্য থাকে আমি তা অনুধাবনের চেষ্টা করব। একরৈখিক ব্যক্তিপুজো।

শ্রীজাত

শুধু কবিতার জন্য: পর্ব ১৩

“যে তোমার মার্চ মাস, ছুটি নিয়ে জুলাই সেজেছে/তার টুপি পড়ে আছে বালিতে, সে সমুদ্রে উদাস/তুমি কী আশ্চর্য লোক/ভাঙা সময়ের মধ্যে বেঁচে/বৃষ্টির সুতোয় বুনে বসে আছ বসন্তের মাস”। নতুন কবিতা

ডাকবাংলা.কম

দুই হুজুরের গপ্পো: পর্ব ৩

বড় ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গলের শরীরী ভাষা অনেক আগ্রাসী, আত্মবিশ্বাসী। সেদিক থেকে ইস্টবেঙ্গল হয়তো এগিয়ে। তবুও, মনোরঞ্জন কেন শেষ দু-বছর খেললেন মোহবাগানে? মাঠের দুই ওস্তাদ মুখোমুখি।

সুমন্ত মুখোপাধ্যায়

গপ্পো তর্ক যুক্তি: সত্যজিতের খুদে জগৎ

‘শিবু-রা পেয়ে যায় রাক্ষসদের প্রাণভোমরা, ছোট্ট এক পাথর, মাছের পেট থেকে। পাগলা ফটিক নয়, স্বয়ং মানিকবাবুই শিখিয়ে দেন অঙ্ক স্যারদের ঘায়েল করার মন্ত্র। ছোটদের সঙ্গে অনেক বড়রাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। একটু সুন্দর হয়ে ওঠে পৃথিবীটা।’ মধ্যবিত্ত রোজনামচা বনাম সত্যজিতের আদর্শ।

সর্বজিৎ মিত্র

অন্য বইমেলা

১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত এই বিশেষ বইমেলা ও প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়, বিশ্বভারতীর স্টল থেকে তাঁরই এক সময়ের শিক্ষক বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় রচিত ‘শিল্পশিক্ষা’ বইটি কিনে। সে-বছর গিল্ড আয়োজিত বইমেলার কয়েকদিন পরেই এই বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ করে – ১৭৭৮-এ প্রকাশিত প্রথম ছাপা বাংলা বইয়ের দ্বিশতবার্ষিকীকে।