শুধু কবিতার জন্য: পর্ব ৫

স্পর্শ

যদি মন তোমার কাছে পৌঁছতে চায়
যেখানে বিষণ্ণতা বারান্দাহীন
যেন বিষ পান করেছেন জেবুন্নেসা 
দেহ তার অলীক কোনও শকটবাহী… 

দু’পাশে নগরবাসীর ভিড় জমেছে 
আলো খুব নরম, যেন তুলোর তারিখ 
অকারণ গুঞ্জনে সে রইল বেঁচে, 
আমি ঠিক সেইখানে পৌঁছতে পারি। 

সেখানে পাথর ধুলোর ব্যবসা চলে
বণিকের সঙ্গদোষে পাহাড় বিকোয় 
ছায়া কেউ বিক্রি করে বিকেলজলে 
জানে সূর্যাস্ত কিছু অন্য দিকও… 

যদি চাই তোমার কাছে পৌঁছতে খুব, 
সে-গ্রামের বাসিন্দা এক মেঘের শরিক। 
জানি এই বৃষ্টি নেহাত অন্ধ, বেকুব
আমি তাও স্পর্শে তাকেই ভরসা করি। 

মলিন

ও মলিন, এক ডাকে কেউ দেয় না সাড়া।
তুমি তাও হাত বাড়ালে বাগান থেকে, 
সে যখন স্পর্শকাতর মাত্রাছাড়া, 
তুমি তার পতঙ্গমন, নীল পেরেকে। 

কে আদর ফুটিয়েছিল পায়ের পাতায়
কিমামের গন্ধে তাকে স্মরণ করি
কিছু কেউ তেমন করে দেখছে না, তাই
সে অমন রৌদ্রপোশাক। দিগম্বরী। 

এ-বাগান অনেকদিনের ব্যস্ততাহীন
তাকে এই নোঙর দিলাম, জাহাজ ভাসান… 
উপঢৌকনের বাতাস আমিরশাহী 
পরী তার শরীর থেকে খুলুক পাষাণ। 

ও মলিন, এক ডাকে তাই পেলাম তোমায়।
সারারাত বৃষ্টিশেষে যেমন মিনার… 
তুমি আজ বিষাদ নিলে যে-মধ্যমায়,
আমি তার গল্প ওকে শোনাচ্ছি না।

তারা

মুঠোর এই রুমাল তোমার বন্ধুতা চায়।
যেন সে অনেক বোঝে অশ্রুকণা 
কে পাখি, বন্দি হতেই চাইছে খাঁচায়,
অধিকার সময় বুঝে অন্যমনা। 

দ্যাখো এই স্টেশন থেকে দিনের শুরু
অকারণ খুচরো করাও চায়ের স্টলে 
যে কোনও ট্রেনের কাছেই বিদায় তুরুপ… 
যদিও, সে পৌঁছনোর গল্প বলে। 

তুমি কোন সঙ্গী ছিলে ওভারব্রিজের  
কে ছিল তোমার প্রিয় অফিসঘড়ি 
কখনও লিখতে গিয়ে দেখবে নিজে
আমি তার শব্দগুলো কেমন পড়ি… 

মুঠোর এই রুমাল তোমায় ছাড়তে নারাজ।
অথচ পরের স্টেশন রাতের দিকে… 
চা-দোকান ফেরত দিল খুচরো তারা, 
তাতে আজ মানাবে, ওই বান্ধবীকে? 

ছবি এঁকেছেন সায়ন চক্রবর্তী