গল্প / কবিতা

বিপ্লব চৌধুরী

কয়েকটি কবিতা

‘… মাতাল হয়ে তুমি বুকে জড়িয়ে ধরতে আমাকে।/ ভাত খাইয়ে দিতে মাছের সমুদ্র দিয়ে।/ কিন্তু তুমি আর নেই সে তুমি।/ তাই মল্লভূম থেকে উড়ে চলে গেছি ধলভূমগড়।/ আমি ঘুরে বেড়াই নানা দেশ, কিন্তু জগতের রহস্য কিছু বুঝতে পারি না।’

টুপি

‘সাধুজ্যাঠার দেখিয়ে দেওয়া দরজার পাল্লা ঠেলে ঠান্ডা-ঠান্ডা ভেতরে ঢুকে, সামনে যে চেয়ার দেখতে পেয়েছিল তাতেই বসে পড়েছিল জগৎ। ফাঁকা টেবিলে ফাঁকা কলমদান ছাড়া আর কিছু ছিল না, দেয়ালে ছিল না কোনও ছবি। এ কীসের অফিস? গুমঘর নয় তো!’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ১৬

‘বাবা আর কাকা মিলে বিছানা পেতে দিলেন রিজার্ভ বেঞ্চিতে। মাঝরাতে হিসি পেয়ে যাওয়ায় ঘুম থেকে উঠে তরু দেখল যে, মা, জেঠিমা আর কাকিমা অঘোরে ঘুমিয়ে পড়লেও, জ্যাঠা, কাকা আর তার বাবা, তিনজনেই একটা বেঞ্চিতে জেগে বসে আছেন।’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ১৫

‘কার একটা ধুতি চেয়ে দু-ভাঁজে ফেরতা দিয়ে পরে, খালি গায়ে এমন করে খেতে বসে গেল, যেন এটা ওর নিজের বাড়ি! তনুর মাথা তখন রাগে দপদপ করছে। কোথায় সেই বুদ্ধিদীপ্ত হরু আর কোথায় এই ভোজন-সর্বস্ব সেজদা!’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ১৪

‘শাফিকা শুধু তাকিয়ে-তাকিয়ে পড়েছে তার মিঞার দু’চোখের ভাষা। মায়া আর মায়া— গভীর মমতায় উপচে আছে যেন! শাফিকা আন্দাজ করতে চেষ্টা করে, এই মায়াটাই কি প্রেম! শরীর ছাপিয়ে ভালবাসা?’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ১৩

‘হরুর মনে প্রতিবাদ জাগে সাহেবদের নতুন নতুন প্রশাসনিক আইন, কৃষকদের দুরবস্থা এবং জমিদার তোষণের আয়োজন দেখে। হরু ঠিক বুঝে উঠতে পারে না যে, কোন পথ ধরলে সে তার ভাবনাগুলোকে একটু গুছিয়ে ভাবতে পারবে!’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ১২

‘বড় অভিভূত লাগছে ভূতেশের। মনে মনে প্রণাম জানিয়ে সে ভাবল, কৃপানাথ নয়! জয় ইংরেজ সরকারের, জয় ভাইসরয় সাহেবের— এমন আপিস! এমন দপ্তর! এটাকেই তো ঘরবাড়ি করে ফেলবে সে!’

খালধারের গপ্পো

‘নতুন ঘটনা বলতে মিউনিসিপ্যাল ইলেকশনের দিন ঘোষিত হয়। গেরুয়া শাড়িতে কুটুপিসির তুলি হাতে ওয়ালিং-এর ছবি ওঁর ফেসবুক পেজে চলে আসে। ব্যাকগ্রাউন্ডে গান : রং দে তু মুঝে গেরুয়া।’

স্নান

‘কাঁপতে কাঁপতে বেরিয়ে এসেছিল রামরতন। অপমানিত সে অনেকবার হয়েছে, অনেকে বলে অপমানিত না হলে ভাল লেখা যায় না; কিন্তু তাই বলে পিয়নের পোস্ট! বাবলুর অফিসে বসে রামরতন কেঁদে ফেলেছিল ছেলেমানুষের মতো।’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ১১

‘সঙ্গে করে আনা এই একমাত্র উপহারটুকুও আমার হাতে সরাসরি না দিয়ে, মেসোমশাই সেটাও দিয়ে গেছেন ছোটেলালের হাতে। একেই বোধহয় বলে ভিজিলেন্সকে আঙুল দেখানোর স্পর্ধা; একই সঙ্গে আপাত বিশ্বাস অর্জনের পথও।’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ১০

‘নিরন্ন ঘরের যুবতী মেয়েদের যে পুলিশ কোয়ার্টারে বা সাহেবদের বাংলোয় যাতায়াত থাকবে, এ আর নতুন কী! গাড়ি করে শহরে যাতায়াত করিয়ে সে ব্যাপারেও কি আমার রুচি তৈরি করতে চাইছেন মি. অগাস্ট? ক্লাব-পার্টিতে গিয়ে মহিলা-সঙ্গই তো দস্তুর।’

শুধু কবিতার জন্য : পর্ব ৩৪

‘বৃষ্টি নয়।/ মেঘ করলে বোমা পড়ে সিরিয়া, ইরাকে।/ প্রতি পূর্ণিমায় বুদ্ধ বামিয়ানে ভেঙে যেতে থাকে।/ পাথরের গুঁড়ো আর পোশাকের টুকরো ওড়ে গরম হাওয়ায় –/
কেউ কেউ এরই মধ্যে আকাশের দিকেও তাকায়।’