প্রবন্ধ

জয়দীপ মিত্র

শূন্যের মাঝারে ঘর

নদীর সাথে নারীর এক চিরকালীন বন্ধুত্ব আছে বলেই কি না কে জানে, গঙ্গাসাগরে দেখেছি জলে নেমে দাঁড়ালেই যে কোনো বৃদ্ধার শরীর থেকে জীর্ণতার খোলস ধুয়ে যায়, আর ম্যাজিকের মতো বেঁচে ওঠে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তাঁর আজন্ম আড়াল করা মুখ। গঙ্গাসাগরের পুণ্য।

ন’টা লেজওয়ালা শেয়াল

‘কিছু গল্পে দেখা যায়, শেয়ালেরা অন্য প্রাণীর রূপ ধারণ করছে, যাতে কোনো গরিব পরিবার তাদের বিক্রি করে কিছু পয়সা অর্জন করতে পারে। বিক্রি হবার পরেই তারা নিজমূর্তি ধারণ করে। এইভাবে একই পরিবার বারবার নানা রূপে তাদের বিক্রি করতে পারে, এবং ধীরে-ধীরে বিত্তবান হয়ে ওঠে। এইসব পরিবারদের বলা হয় শেয়ালের মালিক পরিবার।’

Fox With Nine Tails

‘There are stories of foxes turning into different animals, allowing a poor family to sell them to make money. As soon as they are sold, they return to their fox state. This enables the family to sell them, repeatedly, in different forms, helping them to become rich.’ The myth of the fox as spirit animal.

মকরে প্রখর রবি

‘পৌষের সংক্রান্তি হল উত্তরায়ণ সংক্রান্তি। আমাদের দেশে সেই সনাতন যুগ থেকে এই উত্তরায়ণ কালকেই যাবতীয় শুভকাজের প্রশস্ত সময় বলে মনে করা হয়। এই উত্তরায়ণেরই আরেক নাম মকর সংক্রান্তি। কামশক্তি মকরকে আর মাথায় চড়তে না দেওয়ার প্রার্থনা করা হয় এইদিনে।’ মকর সংক্রান্তির ইতিহাস।

খান রুহুল রুবেল

ঢাকা ডায়েরি: পর্ব ১১

‘পিঠা উৎসবে গিয়ে দেখা গেল, পিঠার নকশায় রকমারি বাহার। তার চাইতে বাহার পরিবেশনে। খেতে যাঁরা এসেছেন তাঁরাও পৌষ-মাঘের অনুকূল পোশাক পরেই হাজির হয়েছেন। এই নাগরিক উৎসবের পিঠায় একটা বড় পার্থক্য যেটা সহজেই চোখে পড়ে, সেটা পিঠার আকার।’ ঢাকার পিঠে উৎসব।

সুমনা রায় (Sumana Roy)

উত্তরবঙ্গ ডায়েরি: পর্ব ১১

‘…আমার কাছে যেটা লক্ষণীয়, তা হল কীভাবে এই প্রবাদ নদীমাতৃক একদল মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, কীভাবে তাঁদের দিনের এবং কথার ছন্দ নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে বয়ে চলে— নদী প্রত্যহ কিছু নিয়ে ভেসে যায়, ফেলে রেখে যায় জীবন।’ তিস্তা-জীবন আখ্যান।

সুস্নাত চৌধুরী

নিজেকে দেখি আমাকে দেখুন

‘কোনও বারেই আমার ডায়েরি-লেখা তাই বেশি দূর এগোতে পারেনি। মাসকাবার হয়তো হয়েছে, কিন্তু বছর ফুরোয়নি। ফের ডিসেম্বর এসেছে, ফের জানুয়ারি। আরেকটা নতুন ডায়েরির আকাঙ্ক্ষায় মন উদ্বেল হয়েছে। বিনয় মজুমদার না পড়েই বুঝে গিয়েছি, ‘দিনপঞ্জী মানুষের মনের নিকটতম লেখা’। কিন্তু নতুন বছর ঈষৎ পুরনো হতেই যে-কে-সেই!’ ‘সত্যিকার’ বন্ধু, ডায়েরি।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

এ বছর কী কী ঘটবে

‘উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের গাদা-গাদা ব্রণ গজাবে মাস্কে, এবং এই মানবেতিহাসে প্রথম, কান থেকে সুতো ছিঁড়ে একটি জিনিস টান মেরে ফেলে দিলেই গুচ্ছের ব্রণদাগ নিমেষে হাপিস। আবার উল্টোও হবে, ছেলে কলেজ যাওয়ার কালে হাঁকবে, মা! আমার ব্রণভরা মাস্কটা ফেলে দিয়েছ না কি!’ আগামীতে যা ঘটবে।

সৈকত ভট্টাচার্য

অবতারের অবতারণা

‘শুধু এই শখের বাবুয়ানির জন্যই মেটাভার্সের দুনিয়ার ইকোনমিক্স বা মেটানমিক্স এত লোভনীয় নয়। মাইক্রোসফ্‌ট, ফেসবুক, গুগলের মতো টেক-দৈত্যরা আরও সম্ভাবনা দেখছে। করোনা-উত্তর সমাজ যে আগের মতো সুস্থ স্বাভাবিক থাকবে না, তার আঁচ আমরা পেতে শুরু করেছি।’ বাস্তব-অবাস্তব পেরিয়ে এক নতুন দুনিয়া।

প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

গণতন্ত্রে ধনতন্ত্র শেষ?

‘যে-নিলাজ ধনতন্ত্রকে অর্থনীতিবিদ মিলটন ফ্রিডম্যান পূজ্যবেদিতে বসিয়েছিলেন, যে-ধনতন্ত্রকে রোনাল্ড রেগন আর মার্গারেট থ্যাচার গোটা পৃথিবীর বুকে একটা জগদ্দল পাথরের মতন চাপাতে চেয়েছিলেন, তার দিন গেছে। ২০০৮-এর বিশ্বজোড়া আর্থিক বিপর্যয়ের সময়েই ওহেন ধনতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বেজেছিল।’ ধনতন্ত্রের বিপর্যয়।

শ্রীজাত

আলোকিত ছায়াপথের শেষে

‘যিশুখ্রিস্ট সাহেবদের দেবতা, সেই খোদ সাহেবদের দেশেও এমন বাঁধনহারা উদযাপন হয় না বড়দিনে। হ্যাঁ, মানুষজন ঘরবাড়ি সাজায়, নতুন কেনাকাটা করে, বাড়িতে-বাড়িতে ভোজ বসে ঠিকই। কিন্তু এই যে শহরের রাজপথে লাখো মানুষের ভিড় বইয়ে দেবার পাগলামি, সে এমনকী তাঁদের ফর্সা দেশেও নেই।’ বাঙালির যিশুপ্রীতি।

সুদেষ্ণা রায়

আমার ছোটদিনের বড়দিন

‘দুর্গা পুজোর ঢাক ও জাঁকজমক যেমন পছন্দ ছিল, ক্রিসমাস ইভের নৈঃশব্দ্যের মধ্যে গান ততটাই টানত। ধীরে-ধীরে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় চলে যেতে থাকে দেশ ছেড়ে। আমার টিনেজের বন্ধু— জেনিংস, লোবো, সোয়ারেস পরিবার-সহ হয়ে গেল দেশছাড়া। আমি আর ক্যারল গাই না। বাড়ি-বাড়ি আর আজকাল কেউ ক্যারল গাইতে আসে না।’ হারিয়ে ফেলা ক্রিসমাস।