প্রবন্ধ

শুভময় মিত্র

অভিনব দুটি হাতে

হাতের রেখা খুব ফাইন ব্যাপার। প্রত্যেক মানুষের জন্য কেউ নাকি প্ল্যানিং করেই চলেছে! এক্সক্লুসিভ নকশা করে, হাতে থ্রি-ডি প্রিন্ট করে, ফটাফট জিনে গুঁজে দিচ্ছে। নিজের আইডেন্টিটি কোড সঙ্গে নিয়েই আসছে মানুষ। কিন্তু কেন? কয়েক বছর আগে কেউ শুনেছে বায়োমেট্রিক টেস্টের কথা? সাপের চোখের মতো সবুজ আলোয় কী কী গুপ্ত তথ্য ওতে ধরা পড়ে, রাষ্ট্র ছাড়া আর কেউ জানে? রেখা মাহাত্ম্য

সৈকত ভট্টাচার্য

বে-হাত হওয়া আবিষ্কার

আজিজুল হকের আবিষ্কৃত এই পরিসংখ্যান-পদ্ধতির নাম গোটা পৃথিবীর কাছে পৌঁছল ‘হেনরি ক্ল্যাসিফিকেশন সিস্টেম’ নামে। বাঙালি সাব-ইন্সপেক্টর পড়ে রইলেন নিষ্ফল হতাশের দলে। চাকরি যাওয়ার ভয়ে প্রতিবাদের পথেও হাঁটলেন না। চুপচাপ মেনে নিলেন এই অন্যায়। হয়তো এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার আনন্দ তাঁকে এতটাই মোহিত করে রেখেছিল যে, এই খ্যাতির মোহ তার কাছে নিতান্ত ক্ষুদ্র, উপেক্ষণীয় বলে মনে হয়েছিল। আঙুলের ছাপ আবিষ্কারের সত্য।

দেবজ্যোতি

ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর

হাতের পাঞ্জা অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। দিন-কয়েক আগে একটি মেয়ে চাকরি করতে চেয়েছিল বলে, তার স্বামী তার ডান হাতের পাঞ্জা কেটে নিয়েছে। কিন্তু এই হাত-কাটার ব্যাপারটা পুরাণ থেকে পার্টির রাজত্ব সর্বত্র বিদ্যমান। কিন্তু হাত কেটে নেওয়ার পর সেই হাতটা নিয়ে কী করে মালিক? কাটা-হাতের নিয়তি।

দেবদত্ত পট্টনায়েক (Devdutt Pattanaik)

উপকথার কীট-পতঙ্গরা

হিন্দু পুরাণে কীটপতঙ্গের অস্তিত্ব খুব প্রচলিত বা জনপ্রিয় নয়। কিন্তু পুরাণের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন লোককথা বা উপকথায় কীটপতঙ্গের উল্লেখ রয়েছে। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীতে সমস্ত কীটপতঙ্গের মধ্যে, যেটি প্রাধান্য পায় তা হল মৌমাছি কারণ মৌমাছিরা ফুলের কাছে গিয়ে মধু তৈরি করতে পারে। আমরা প্রেমের দেবতার সাথে মধুমক্ষিকার একটি সংযোগ পাওয়া যায়। পুরাণে কীটপতঙ্গের গপ্পোসপ্পো।

সুরক্ষিত বায়োপিক

‘বাংলা ছবির নিরিখে যে বাঁধভাঙা উল্লাস অনীকের ছবিটির সমাদরকে চিহ্নিত করেছে, তা অবশ্যই নজরকাড়া। তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে এক্ষেত্রে ছবির নিজস্ব গুণ আর পারিপার্শিক এক হয়ে বাংলা ছবির সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটা মাইলস্টোন রেখে গেল? অনীকের ছবিতেই যেমন দেখানো হয়েছে যে ‘পথের পদাবলী’ সাধারণ মানুষ হলে গিয়ে টিকেট কেটে দেখবে কিনা সে ব্যাপারে অপরাজিত রায় বেশ চিন্তিত। অপরাজিত রায়ের ‘চিন্তা’র খেই ধরেই তাই প্রশ্ন উঠতে পারে, অনীকের বায়োপিক এর মধ্যেই কি এমন কিছু আছে যা জনগণের স্বীকৃতির জন্যে মরিয়া?’

ক্লাইমেট ফিকশনে কলকাতার ভবিষ্যৎ

দেখা যাচ্ছে, বঙ্গভূমি যে শুধু টেকটনিক প্রক্রিয়ায় তৈরি তা-ই নয়, সেটির ভিতে রয়েছে মহাসাগরীয় অববাহিকা। দেবযানী ভট্টাচার্য তাঁর লেখায় দেখিয়েছেন ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীতে কলকাতার জলময় উৎসের কথা ও নদী-নির্ভরশীলতা কী ভাবে স্মৃতি ও ইতিহাস থেকে মুছে গেছে, বা মুছে ফেলা হয়েছে। সুতরাং, সেই ইতিহাসকে বাদ দিয়ে শহরের ভবিষ্যৎ কল্পনা করার চেষ্টা অসম্পূর্ণ হতে বাধ্য। আজ আমরা দেখতে চেষ্টা করব বিভিন্ন সময়ে কলকাতার ভবিষ্যৎ কল্পবিজ্ঞান অথবা ক্লাইমেট ফিক্‌শনে কীরকম রূপ নিয়েছে।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

তখন প্রবাসে রবীন্দ্রনাথ: পর্ব ২

‘মেয়েটার মুখে যেন বাঙালি মেয়ের ভালমানুষি মাখানো, তার চুল বাঁধাও যেন ভারতবর্ষের মেয়েদের মতোই। শেতাঙ্গিনীদের সভায় সেই ‘কালো মিষ্টি মুখ’ যেন রবীন্দ্রনাথকে চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে গেল। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ যখন এই মেয়ের রূপে একেবারে বিভোর, তখন জানা গেল সে এক ফিরিঙ্গি মেয়ে।’ বিলেতে নাচের অভিজ্ঞতা।

যে-জটিলতা অতিমারী অধিক

‘অতিমারীর সময়কালে সম্পন্ন গবেষণা দেখাচ্ছে পৃথিবীজুড়ে বহু মানুষ বারংবার স্বার্থপরের মতন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে নিজের বাড়িতে গাদা-গাদা অক্সিজেন সিলিন্ডার জড়ো করেই হোক বা সুপারমার্কেট থেকে সমস্ত টয়লেট টিস্যু তুলে নিয়ে গিয়েই হোক বা সামাজিক দূরত্ববিধি না মেনেই হোক, উদাহরণের কোনও অভাব আমরা রাখিনি। কিছু গবেষক বলছেন দীর্ঘদিনের একাকিত্ব আমাদের বেশি স্বার্থপর করে তুলেছে; কেউ-বা আবার বলছেন এ আমাদের ‘Original Sin’, সামান্যতম বিপদের আশঙ্কা দেখলেই আমাদের এক জান্তব প্রবৃত্তি বেরিয়ে পড়ে।’

সাক্ষাৎকার: জ্যোতিষ্ক বিশ্বাস

৩ জুন, বিশ্ব সাইকেল দিবসে আমরা কথা বলেছিলাম জ্যোতিষ্ক বিশ্বাসের সঙ্গে, যিনি তাঁর প্রথম সাইকেল অভিযান করেছেন হিমালয়ের পশ্চিম থেকে পূর্বে, যাকে সাইকেল অভিযাত্রীদের ভাষায় বলা হয় ট্রান্স-হিমালয়ান ট্রেক। জ্যোতিষ্ক ২০০ দিনে ৮,০০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে এই অভিযান শেষ করেছেন। এবং এমন এমন জায়গায় সাইকেল নিয়ে পৌঁছেছেন যেখানে বাঙালি হিসাবে তিনিই প্রথম।

অরুণাভ সিংহ

আঞ্চলিক ভাষার বিজয়

‘এই একটা পুরস্কার আর আমাদের অনুবাদ সাহিত্য পড়ার উৎসাহকে কত দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে, সে বিষয়ে একটা প্রশ্ন থেকে যায়। যদিও আমি এ ব্যাপারে সত্যি খুব আশাবাদী। কারণ এখন বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুদিত বইয়ের চাহিদা বাড়ছে। আর সবথেকে বড় ব্যাপার হল, যারা ইংরেজিতেই লেখেন আর যাঁরা আঞ্চলিক ভাষায় লেখেন, তাঁদের মূল কনটেন্ট-এ অনেক পার্থক্য থাকে।’ গীতাঞ্জলী শ্রী-র ইন্টারন্যাশনাল বুকার প্রাইজ জয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনুবাদ-সাহিত্য।

দেবদত্ত পট্টনায়েক (Devdutt Pattanaik)

রাধাতন্ত্র

‘এখানে বর্ণিত আছে কীভাবে বিষ্ণু একদিন শিবের কাছে আসে এবং একটি মহামন্ত্রের সন্ধান করে। বিষ্ণু সেই মহামন্ত্র পেয়ে কাশীতে জপ করতে শুরু করেন, কিন্তু কাজ হয় না। তাই, তিনি কৈলাসে ফিরে যান। শিব অনুপস্থিত থাকায় এই সময় দেবীই তাঁর সামনে আবির্ভূত হন।’ ‘রাধাতন্ত্র’-এর বর্ণনা।

‘অপরাজিত’র আঁতুড়ঘর

‘এ-ছবির বিভিন্ন সাংঘাতিক প্রতিকূলতার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বিভিন্ন ঐতিহাসিক চরিত্রের আদলে নতুন করে চরিত্র নির্মাণ; সেখানে আবার দু’রকমের চরিত্র। কিছু মানুষ সম্পূর্ণ বাস্তব যেমন সত্যজিৎ রায়ের আদলে অপরাজিত রায়, বিজয়া রায়ের ধাঁচে বিমলা রায় বা সুব্রত মিত্রের ছায়ায় সুবীর মিত্র— আবার কিছু মানুষ একইসঙ্গে বাস্তব ও সিনেমার বাস্তব।’ চরিত্রের সন্ধানে।