

কবির সঙ্গে দেখা: পর্ব ১৯
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এমন অনেক কবিতা আছে, যা এখন তত পঠিত বা আলোচিত নয়। তাঁর জনপ্রিয় কবিতাগুলির মধ্যে যে অহরহ ম্যাজিক আছে, তা হয়তো এই কবিতাগুলির মধ্যে নিয়ন্ত্রিত, ঈষৎ চাপা। যদি সেই জাদু ছোঁয়া না যায়, তা হলে আমাদের ক্ষতি।
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এমন অনেক কবিতা আছে, যা এখন তত পঠিত বা আলোচিত নয়। তাঁর জনপ্রিয় কবিতাগুলির মধ্যে যে অহরহ ম্যাজিক আছে, তা হয়তো এই কবিতাগুলির মধ্যে নিয়ন্ত্রিত, ঈষৎ চাপা। যদি সেই জাদু ছোঁয়া না যায়, তা হলে আমাদের ক্ষতি।
‘পুজোসংখ্যা হাতে পাবার পরের যে-রাত, রাত মানে বেশ নিশুতিই, বাবা-মা ঘুমিয়ে পড়েছে ততক্ষণে, সেই রাতে আমি আবিষ্কার করতাম প্রথম উপন্যাসের প্রথম পাতাটিকে।’ পুজোর রোমাঞ্চ।
‘তুমি ফুল তুলেছিলে, তারই দাগ রয়েছে বাগানে।/ যেন অপরাধচিহ্ন, যেন ব্যর্থ অভিমানভাষা।/ যে-মেয়েটি অন্ধ, সেও বিরহের কিছু গান জানে।/ তাকে ফুল দাও। আর কেড়ে নাও দেখার পিপাসা।’ নতুন কবিতা।
মাঝে মাঝে ঠাহর হয়, সমাপতন বোধ হয় সত্য নয়। বরং পূর্বনির্ধারিত শব্দটি বেশি বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে। অস্ট্রেলিয়ার পার্থ নিবাসী চার্লস সাহেব, লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিট থেকে ১ পাউন্ড দিয়ে রবীন্দ্রনাথের ইংরেজি বই কিনলেন এবং যাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বহস্তে লেখা রয়েছে কবিতা, এবং সেই বই কালে কালে হাতে এসে পড়ল চালর্স সাহেবের প্রতিবেশী এক বাঙালির। এবং একশো বছর আগের প্রকাশিত বই দেখার সৌভাগ্য হল কলকাতার এক বাঙালির। সূ-দূর যোগাযোগ একেই বলে!
‘টানা অনেকগুলো বছরই ১৫ আগস্টের সকালবেলা পৌঁছে গেছি স্কুলে, কিন্তু প্রথমবার, সেই এক প্রথমবার জোট বেঁধে স্কুলে পৌঁছনোর যে-অভিজ্ঞতা, অনেকগুলো বছর ছেড়ে থাকার পর হুট করে একদিন কাছে ফেরার যে-আবেগ, তার সঙ্গে তুলনীয় কিছুই নয়।’ স্বাধীনতা দিবসের স্মৃতি।
তাঁর প্রেম কখনও ব্যক্তিগত পরিসরে আটকে থাকে না। কখনও তা পৃথিবীর প্রতি ভালবাসায় ব্যক্ত হয়, কখনও তা সমস্ত শুভ চিন্তার দ্যোতক হয়ে ওঠে। সেখানেই তাঁর বিশিষ্টতা। এই পর্বে রইল সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কয়েকটি প্রেমের কবিতা।
‘আজও কারা বন্ধ রাখে চোখ/ আজও কারা ভেবে চলে, ভাল চায় অধিকাংশ লোক/ আমি দূর থেকে দেখি তাদের। ভেতর থেকে হাসি।/ সন্ধে নেমে এলে/ আস্থার কবরে যাই। মোমবাতি জ্বালিয়ে রেখে আসি।’ নতুন কবিতা।
শুরু হচ্ছে নতুন ভ্লগ— দূরপাল্লা। না, কেবল বেড়ানোর ভ্লগ নয়। ভাললাগা, অভিজ্ঞতা, উত্তেজনা, মেদুরতা আর ভিন্ন যাপনের কাহিনি। নিজের খোঁজ অন্য ভাবে, অন্যকে খুঁজে নেওয়া নিজের মতো করে। বার বার যা অসীমের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়, বার বার মনে করিয়ে দেয় বিশালতার কথা।
সেসব দিনকালে ছোট ছোট পাড়াগুলোয় সন্ধের পর শব্দ-আওয়াজ তেমন হতো না। কয়েক বাড়িতে টিভির আওয়াজ, কোথাও রেডিও নাটক চলছে, আবার কিছু বাড়ির জানলায় নিয়মমাফিক গলা সাধা। সেসব আমাদের কানে আসত রোজই, মন্দ লাগত যে, এমনও নয়। কানে আসত আরও একটা স্বর। বিশেষত, সন্ধের পর বা রাতের দিকে লোডশেডিং হলেই শুনতে পেতাম, দিলীপ জেঠুদের বাড়ির জানলায় বেহালা বাজছে। স্মৃতির সুর বেয়ে।
‘মিছিল তোমায় চেনাল এই দেশে/ ওই ভেসে যায় তরণীবক্তৃতা—/ দ্যাখেইনি যে, কী করে আঁকবে সে/ নদীর উপর জ্বলন্ত সেই চিতা?/ বরং তাকে বিচার করা ভাল/ যে-বালিকা প্রবঞ্চনায় ধীর…/ তোমার প্রিয় তরুণ পরিচালক—/ আমার ছিল প্রহরামঞ্জির।’ নতুন কবিতা।
শক্তি চট্টোপাধ্যায় এমন এক জন কবি, যিনি বুকের গহীনে সব সময় উচ্চারিত হতে থাকেন। তাঁর স্বতত টলটলে উপস্থিতি সর্বদা বিদ্যমান। কিন্তু তা ভার বাড়ায় না। তাঁর উপস্থিতি বড় অনায়াস। কিন্তু তাঁর লেখা আত্মস্থ করার সময় মনে হয় তিনি অনন্য। আপাত সহজতা থাকলেও, তা সহজে লেখা যায় না। তাই তাঁর সঙ্গে বার বার দেখা করতে হয়।
‘বাগডোগরা থেকে দার্জিলিং যাবার পথটুকু আমাদের ভারী ভাল লাগে, বরাবরই। কিন্তু এই মেঘবৃষ্টির মরসুমে তা যেন আরও অন্যরকম হয়ে উঠেছিল। রোহিণী হয়ে পাঙ্খাবাড়ি রোড ধরে সোজা দার্জিলিং, চেনা রুট। কিন্তু সেই রুটম্যাপই বর্ষায় কেমন যেন অচেনা হয়ে ওঠে, সেটাই দেখলাম এবার।’
দার্জিলিং আর দলমা।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.