
শুভারম্ভ: পর্ব ৬
এর পরের ছ’ঘণ্টা ধরে নির্মলার প্রত্যেকটি প্রচেষ্টাই হয়ে উঠল প্রহসন। যতবার এক পায়ের উপর ভর দিয়ে নানা মুদ্রা দেখানোর চেষ্টা করলেন, সারা শরীর থরথর করে কেঁপে উঠল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে

এর পরের ছ’ঘণ্টা ধরে নির্মলার প্রত্যেকটি প্রচেষ্টাই হয়ে উঠল প্রহসন। যতবার এক পায়ের উপর ভর দিয়ে নানা মুদ্রা দেখানোর চেষ্টা করলেন, সারা শরীর থরথর করে কেঁপে উঠল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে

মানুষের মেমরিকার্ডের সঙ্গে আরও কিছু জড়িয়ে আছে, যা আমরা এখনও ঠিক ধরতে পারি না। সময় লাগছে বুঝতে। কী দিয়ে মাখিয়ে দেয় স্মৃতিগুলোকে? কম্পিউটার অনেক বেশি সত্ই, মানুষের চেয়ে

‘একটা জানোয়ার, যে শুরু করেছিল অন্য সব্বার মতো স্রেফ খাদ্য অন্বেষণে দৈনিক হাওয়া-শোঁকাশুঁকি দিয়ে, সে গ্রহতারকার পাশ দিয়ে শাঁ করে বেরিয়ে যায়, আবার ঝামেলা হলে মহাকাশযানের ধারে পা রেখে মেরামত অবধি করে! এ প্রায় সুপার-একলব্যের মতো মার্কশিট।’ মানুষের বিবর্তন।

বোর্ড পরীক্ষার্থীরা একটি দীর্ঘ সময় ধরে নানা শিক্ষক-প্রতিষ্ঠান-শিক্ষাদানের ছোঁয়া পেয়েছে। স্কুল-জীবনের শেষের দিকে এই বদল একটি শূন্যতা তৈরি করে দিল ওদের মধ্যে। ফিনিশিং লাইনই থাকল না।

এই দেশে বোর্ড-পরীক্ষার ফলই পরবর্তীর জীবন আর চাকরি নির্ধারক অথচ এ বছরের পরীক্ষার্থীরা এক নিরালম্ব অবস্থায়। তাদের ১২ বছরের তপস্যায় নির্দিষ্ট ইতি পড়ল না। পরীক্ষা বাতিল মানে ভবিষ্যৎ বাতিল?

‘ভোরবেলা সাত তলায় যে-মেয়েটা এক্সারসাইজ করে, তার শুধুমাত্র হাতদুটো চোখে পড়ে। আমার একেবারে উল্টোদিকের জানলায় যারা থাকে, তাদেরই একমাত্র চিনি। ও-বাড়ির একজন মহিলা মাঝে মাঝেই জানলায় এসে এদিক-ওদিক কী সব খোঁজেন। অন্য ফ্ল্যাটগুলোয় যারা থাকে, চিনি না।’ প্রতিবেশীর গল্প।

‘ছুটির দিনগুলোতেই খেলা হত বেশি, মনে আছে। স্কুল থাকলে পড়ি কি মরি করে ফিরে বাড়িতে ব্যাগটা নামিয়েই মাঠে, আর না-থাকলে সাড়ে তিনটে বেজেছে কি বাজেনি, পাড়ায় ক্রিকেট বাহিনীর টহল শুরু। একে-তাকে বাড়ি থেকে ডেকে ডেকে বার করা, তারপর মাঠে হাজির।’ ছোটবেলার ক্রিকেট।

‘…ভারতীয় খাওয়াদাওয়াকে যদি মহাকাব্যের সঙ্গে তুলনা করা যায়, তবে বিরিয়ানিই তার অবিসংবাদিত নায়ক, আদতে মুসলিম রান্না হলেও সে-ই আমাদের ‘ন্যাশনাল ডিশ’, সে আজ মুঘলসরাই ধাপ্পা দিয়ে নিজেকে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায়’ বলে চালানোর যতই চেষ্টা করুক না কেন।’ বাঙালির পাতে মুঘল খানার ঋণ।

এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী আর কিছু লড়াই যদি হেরেও যাই, তবুও সবারএই বিশ্বাস দরকার যে, এই অতিমারীর বিরুদ্ধে আমরা ভিতরের যুদ্ধ যেন চালিয়ে যেতে পারি। ফের কোভিডের হানা, আতঙ্কের দীর্ঘস্থায়ী সময়

‘মাঝেমধ্যে রশীদও এক-দু’লাইন বলতে চেষ্টা করেন, কিন্তু শক্তিদা বলে ওঠেন, ‘অ্যাই অর্বাচীন, চুপ! আমার কবিতা আমার থেকে ভাল তুই আবৃত্তি করবি? হবে না! পারবি না!’ আমি তখন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছি, দেখছি, সবটা নিজের মধ্যে জমিয়ে রাখছি।’ শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের গল্প।

‘গোড়ালিতে ঘুংরুর নিচে ওই একই প্যাটার্নের চওড়া নুপূর, এবং হাতে ও পায়ে জটিল নকশায় আলতার চিহ্ন। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে, কোমরবন্ধ-নুপূর-ঘুংরু-বালা-চুড়ি সব একে অপরের সঙ্গে লেগে ঝনাৎ-ঝনাৎ আওয়াজ তুলতে লাগল, যেন ব্যান্ডপার্টি!’ উদ্ভট নাচ।

করোনায় মৃত্যু হয়ে জলে ভাসছে এক-একটা লাশ। আর সেসব দেখছে ছানা-মাছ, বাবা-মাছ, মা-মাছ এবং তাদের আত্মীয়স্বজনরা। ছানার আনন্দ, কিন্তু বড়দের ভয়, যদি ওতে বিষ থাকে? সেই সূত্র ধরেই মাছেদের কথালাপ শুরু হয়। উঠে আসে মানুষের দেশ-কাল-সংস্কৃতির নানা ঘটনা।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.