
শুধু কবিতার জন্য: পর্ব ১৫
‘আমার বাড়ি নামুক রুটি/ আমার পাতে পড়ুক স্যুপ/ আমার ছোট বাচ্চাদুটি/ সব বুঝেও থাকুক চুপ/ যুদ্ধ কত প্রয়োজনীয়/ না-ই বা ফেরে ক’জন লোক/ তাদের তুমি কবর দিও/ আমার গাছে আপেল হোক’ নতুন কবিতা।
‘আমার বাড়ি নামুক রুটি/ আমার পাতে পড়ুক স্যুপ/ আমার ছোট বাচ্চাদুটি/ সব বুঝেও থাকুক চুপ/ যুদ্ধ কত প্রয়োজনীয়/ না-ই বা ফেরে ক’জন লোক/ তাদের তুমি কবর দিও/ আমার গাছে আপেল হোক’ নতুন কবিতা।
‘কবির সঙ্গে দেখা’র নিয়ম থাকে, যে-সমস্ত কবির সঙ্গে দেখা হয়নি শ্রীজাতর, তাঁদের কবিতা পড়া। কিন্তু এবার সেই নিয়ম ভেঙে হাজির হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। তিনি আজ নেই, কিন্তু তাঁর কবিতা আমাদের আজও আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এবারের কবিতা-পাঠ ‘সীমান্তবিহীন দেশে-দেশে’ নামক তাঁর শেষ কাব্যগ্রন্থ থেকে।
বাবা বাড়িতে নেই, মা ডুবে আছে গানে, সবিতাদি ভারী যত্ন করে আমাকে বেড়ে খাওয়াত মাংস ভাত। স্টিলের একখানা চকচকে কানাউঁচু থালা ছিল আমার। সেইটায় আচ্ছা করে সময় নিয়ে চেটেপুটে খেতাম। যত বেশি সময় ধরে সেই আশ্চর্য রান্নার স্বাদ নেওয়া যায়, ততই আমার ভাল।’ রোববার আর সবিতাদি।
অন্য কথায়, অন্য মানুষের কথায় মিশে থাকা নিজের মনের অনুভূতি। এ কবিতা যেমন অন্যের, তেমন তাঁরও। এ কবিতা আদত উদুর্তে জাভেদ আখতারের, অনিবাদে শ্রীজাত। কিন্তু কবি যে কখন অনুবাদকের অনুভূতির মধ্যে চাড়িয়ে গিয়ে তৈরি করেন আশ্চর্য এক মিশেল, তা বোঝা দায়। তাই এ কবিতা যেমন জাভেদ আখতারের, তেমন শ্রীজাতর। আসলে অনুবাদ কবিতা না ভেবে বরং, মিশ্র-অনুভূতির কবিতা বলাই ভাল।
‘প্রহরা দুর্গের মন। অপরাধ শাস্তির প্রেরণা।/ মাঝে যে-পরিখা, তাতে আশঙ্কা টলটল করে রাতে।/ শত্রুদের চাঁদ দ্যাখো। তির লেগে ভেঙে যাওয়া কোনা…/ আরও বুঝি যুদ্ধ চাই, নাগরিকে জোছনা বোঝাতে।’ নতুন কবিতা।
‘কত মানুষ এসে দেখা করছেন তাঁর সঙ্গে, সকলের দিকে একই রকম হাসিমুখ নিয়ে তাকাচ্ছেন সুনীলদা। আর দোলের ওই চড়া রোদের তাপে তাঁর বয়স গলতে-গলতে কমে দাঁড়াচ্ছে সাতাশে। আমাদের চোখের সামনে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রূপান্তরিত হচ্ছেন নীললোহিতে।’ দোলের শান্তিনিকেতন।
ঈশ্বর গুপ্ত এমন এক জন কবি যাঁর ছোঁয়ায় বাংলা ভাষা বেঁচে উঠেছে, উজ্জীবিত হয়েছে। তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার বহমান স্রোতের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শুরুর দিকের কবি তিনি, পরলোক গমন করেছেন ১৮৫৯ সালে, অথচ কী আধুনিক, কী উদার মন। তাঁর কবিতা পড়তে পড়তে মনে হয়, আমরা তখন কত এগিয়ে ছিলাম মানসিকতার দিক দিয়ে, সেই উদারমনস্কতা বয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমরা পালন করতে পারব তো?
“যে তোমার মার্চ মাস, ছুটি নিয়ে জুলাই সেজেছে/তার টুপি পড়ে আছে বালিতে, সে সমুদ্রে উদাস/তুমি কী আশ্চর্য লোক/ভাঙা সময়ের মধ্যে বেঁচে/বৃষ্টির সুতোয় বুনে বসে আছ বসন্তের মাস”। নতুন কবিতা
আমাদের চারপাশটা আবারও অন্ধকার হয়ে আসছে। আশঙ্কার কালো মেঘ যেন মাথার ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে, দেখা যায়। এই বিপন্ন সময়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, কালকের সিরিয়া, আজকের ইউক্রেন সব একাকার হয়ে গেছে। সর্বত্র শুধু ভয় আর আতঙ্ক। এই পর্বের কবিতাগুচ্ছের মধ্যে সেই কালো সময়েরই প্রতিধ্বনি।
পড়তে-পড়তে তাদের রুটির আশ্চর্য গন্ধ এসে নাকে লাগছে, তাদের কেকে-র মিঠে ভাপে ভরে উঠছে আমার শীতকাল। যেন আমাদের ভাতের হাঁড়ি এসবের চেয়ে খুব বেশি দূরে নয়। তাই দেব সাহিত্য কুটিরের পাশাপাশি রাদুগা ছিল আমাদের ভরসা, ইন্দ্রজাল কমিকস-এর কাছাকাছি ভস্তককে চিনতাম।
অমিয় চক্রবর্তী বাংলা সাহিত্যের এক অসামান্য কবি, যাঁর কবিতায় আমরা পাই অভিনব চিত্রকল্প, পুরনো ও সমসাময়িক শব্দ পাশাপাশি সাজিয়ে তৈরি করা আশ্চর্য আবেদন, সময় নিয়ে অপূর্ব খেলা। মাত্র একটা শব্দের স্থান বদলে তিনি জাদু সৃষ্টি করেন, নরম অথচ সপ্রতিভ কবিতায় কখনও মিলিয়ে দেন ঝোড়ো হাওয়া আর পোড়ো দরজার বৈপরীত্যও।
‘ভাসছে পথে, আসছে আর যাচ্ছে কত সস্তায়।/ যেন পথের নীচু হোটেল, ভাতে কাঁকর তিনটে…/ তোমারও মন নিথর হল সকাল সাড়ে দশটায়/ আমারও গেল বাকি জীবন ফেরার পথ চিনতে।’ নতুন কবিতা।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.