ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • দারাজগোশ জিন: পর্ব ১


    মোশাররফ আলি ফারুকি (May 14, 2022)
     

    আদিম কালে, যখন জিনেদের আকাশে অবাধ গতিবিধি, তখন তারা প্রায়শই আড়ি পেতে দেবদূতদের জল্পনা শুনত— যে তাঁরা এবার পৃথিবীতে নেমে আসার সময়ে সঙ্গে কী আনবেন, জীবন না মৃত্যু, এবং জানা মাত্রই তারা পৃথিবীতে ফিরে তাদের গণৎকারদের সেই খবরটা দিত। দেবদূতেরা যখন পৃথিবীতে জীবন নিয়ে আসতেন তখন বৃষ্টি পড়ত, সোনার ফসল ফলত, পশু, পাখি, মানুষ ও সব প্রাণীর জন্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার থাকত; আর তাঁরা যখন মৃত্যু নিয়ে আসতেন তখন আসত দুর্ভিক্ষ, মহামারী। আসত ভূমিকম্প ও বন্যা, শকুন, শেয়াল, মাংসখাদক পোকা ও মাছির বৃদ্ধি হত। গণৎকারেরা এই সব ভবিষ্যৎবাণী করতেন আর সাধারণ মানুষ ওঁদের জ্ঞান দেখে ওঁদের ভয় ও সমীহ করে চলত।

    সেই সময়ে, বিলমান দেশে, এক জলের পাশে স্থিত অন্ধকার একটি গুহায় সারব নামে এমনই এক গণৎকার বাস করত। বিলমান দেশের প্রাচীনতম গাছের সমান তার বয়স, সেই বয়সের ভারে সারবের শরীর শীর্ণ ও কুঁজো হয়ে পড়েছে। দিন-রাত সে তার গণনা আর ভবিষ্যৎবাণী নিয়ে ভাবনা চিন্তা করে, আর এই কাজে তার সাহায্য করে– দারাজগোশ জিন। দারাজগোশের কানদুটি লম্বা ও ছুঁচলো এবং তার ডানাদুটি ঠিক বাদুড়ের মত— কিন্তু মস্ত বড়। সে সারবের সেবায় অনেক বছর কাটিয়েছে, বুড়ো হয়েছে।

    এক দিন সারব দারাজগোশকে বলল: স্বর্গে কী জল্পনা হচ্ছে খোঁজ নিয়ে আমাকে জানাও। দারাজগোশ তাঁর মস্ত বড় ডানার ভাঁজ খুলে পৃথিবীর ঠিক পাশে স্থিত প্রথম স্বর্গ চড়ে বেড়ালো, কিন্তু দেবদূতদের দেখাও পেল না, কিছু শুনতেও পেল না। ফেরার পথে সে একটু জিরিয়ে নেওয়ার জন্যে চাঁদের একটি পাথরের গায়ে হেলান দিয়ে বসল। ক্লান্তিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল, সে টের পায় নি। কয়েকটি গলার আওয়াজে তার ঘুম ভেঙে যায়। পাথরের আড়াল থেকে উঁকি মেরে দেখল এক জটলা প্রথম স্বর্গের গো-মুখী দেবদূত গোল হয়ে বসে গল্প করছে।

    দেবদূতদের সর্দার তার সাঙ্গপাঙ্গকে বলল— ‘বর্ষার মেঘ পাঠিয়ে দাও বিলমানে যাতে সেখানে বন্যা হয়। এক জায়গায় বন্যার জলে জমি উর্বর হয়ে উঠবে, আর এক জায়গায় বন্যায় একটি পাখির বাসা ধ্বংস হবে। তখন ভগবানের নির্দেশ পূর্ণ হবে, কারণ এই দুটি ঘটনার ফলে, অনেক বছর পর, দুই প্রেমিক-প্রেমিকার মৃত্যু নির্ধারিত আছে।’

    গাছটি যেখানে ছিল, ঠিক তার উপরে ময়নাটি একবার আকাশে চক্রাকারে ঘুরল, তারপর উড়ে গেল পশ্চিমের দিকে। দারাজগোশ তার পিছু নিয়ে দেখল যে ময়নাটি মাটির দিকে নেমে এল ঠিক সেইখানে, যেখানে দুই চাষির জমি এসে মিলেছে। ময়নাটি সেখানে বিষ্ঠা ফেলে উড়ে গেল আর একটি নতুন বাসা বানালো।


    গো-মুখী দেবদূতেরা যখন চলে গেলেন, তখন দারাজগোশ ভাবতে বসল। তার খুব জানতে ইচ্ছে করল যে এই জমির উর্বর হওয়া আর পাখির বাসা নষ্ট হওয়ার সাথে কী করে ওই প্রেমিক-প্রেমিকার মৃত্যু জড়িত হতে পারে। পৃথিবীতে ফেরার পর সে সারবকে শুধু আসন্ন বন্যার কথাটি জানালো, কিন্তু বাকি কথাটি নিয়ে নীরব রইল। সারব তার ভবিষ্যৎবাণী করল, জনগণ সেই হিসেবে প্রস্তুত হল।

    কিছু দিন যেতেই বিলমানের আকাশে ঘনিয়ে এল মেঘ, তারপর মুষলধারে বৃষ্টি। কিছুদিন পর নদীটি ফুলে উঠল, কূল ছেপে তার জল জমিতে এসে সব ডুবিয়ে দিল। দারাজগোশ বন্যার পথ অনুসরণ করে দেখল, জল দাঁড়িয়েছে এক বৃদ্ধ চাষির জমিতে। চাষি তার জমিতেই একটি কুঁড়েঘরে থাকত। সে জমি তার বুড়ো হাতের চেটোর মতনই নেড়া, নিষ্ফলা। দারাজগোশ বুঝল যে এই জমির কথাই দেবদূতেরা বলাবলি করছিলেন।

    দেখতে-দেখতে তার চোখের সামনেই বন্যার জল গরিব চাষিটির কুঁড়েঘরটিকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, চাষি গৃহহীন হল।

    দারাজগোশ আবার বন্যার পথ অনুসরণ করে তার স্রোতে একটি ময়নার বাসা-সমেত গাছকে ভেসে যেতে দেখল। ময়নাটি সেদিন সন্ধ্যাবেলায় ফিরে এসে দেখল যে গাছের সাথে সাথে তার বাসাটিও ধ্বংস হয়ে গেছে। গাছটি যেখানে ছিল, ঠিক তার উপরে ময়নাটি একবার আকাশে চক্রাকারে ঘুরল, তারপর উড়ে গেল পশ্চিমের দিকে। দারাজগোশ তার পিছু নিয়ে দেখল যে ময়নাটি মাটির দিকে নেমে এল ঠিক সেইখানে, যেখানে দুই চাষির জমি এসে মিলেছে। ময়নাটি সেখানে বিষ্ঠা ফেলে উড়ে গেল আর একটি নতুন বাসা বানালো।

    ঘটনাগুলিকে সাক্ষী করে দারাজগোশও চলে গেল, কিন্তু তারপর প্রতি রাতে এই স্থানগুলিতে সে ফিরে আসতে লাগল, কী হয় জানতে আর ভগবানের নির্দেশিত আদেশ কবে পালন হবে, তার অপেক্ষা করতে।

    বৃদ্ধ চাষি তার নিষ্ফলা জমিতে চাষ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাতে কখনও কিছুই ফলেনি। টাকা ধার করে ধার করে সে মহাজনের কাছে তার সব সম্বল খুইয়েছে, কিন্তু জমিটি এখনও তার নিজস্ব। বন্যার জল নামার পর চাষি দেখল যে তার জমির উপর উর্বর মাটির পুরু পরত; সে তখন জমি বন্ধক রেখে সেই স্বল্প অর্থে কিছু বীজ কিনল। বীজ বপন করার দিন পরেই তার সেই নিষ্ফলা জমিতে কিছু অঙ্কুর গজাল।

    সেই বছর চাষির সোনার ফসল ফলল। তারই টাকা দিয়ে সে আরও তিন গুণ বীজ কিনে বপণ করল আর আরও তিনবার ফসল ফলাল। দেখতে-দেখতে চাষি শুধু নিজের জমি ফিরে পেল না, আরও অনেক জমিজমা ও সম্পত্তির অধিপতি হল। কিন্তু তার এই নতুন সমৃদ্ধির পর সে কৃপণ ও পাষাণ হৃদয় হয়ে উঠল। গরীব দুঃখীদের অপমান করে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লাগল।

    তার হাত থেকে এক দানা ফসলও দানে বেরলো না, আর অতগুলি সিন্দুকের সোনাদানা একটি মানুষেরও দুঃখ দূর করল না। চাষির টাকার কথা রটে যাওয়াতে তার বাড়িতে ঘটকদের ভিড় জমল। সে যতই বৃদ্ধ ও শীর্ণ হোক না কেন, বিলমানের সবথেকে সুন্দরী কুমারীদের পরিবার তাকে জামাই বানানোর জন্য উঠে-পড়ে লাগল। বৃদ্ধ চাষির লালসা যতই জেগে উঠুক, তার ভাবনা ছিল যে আত্মীয়-কুটুমেরা তার সব সম্পত্তি আত্মসাৎ করবে। তাই সে ঠিক করল যে এক অজ্ঞাতপরিচয়, অনাথ মেয়েকে সে বিয়ে করবে। তার নাতনির সমান বয়সী এক ফুটফুটে মেয়েকে সে বিয়ে করে বাড়িতে আনল। কেউ সমালোচনা করল না, বরং এক অনাথাকে দয়া করার জন্যে তাকে বাহবা দিল।

    দুজনেই দাবি করল যে ডালিম গাছটি তাদের জমির আওতায়। ঝগড়া যখন খুব বেড়ে গেল

    যে ময়নাটির বাসা ধ্বংস হয়ে যায়, সেদিন সে রাজার বাগানের ডালিম খেয়ে ফিরছিল, আর তার বিষ্ঠায় একটি বীজ ছিল, যেটি ক্রমে ক্রমে একটি ডালিমের চারা হয়ে উঠল। কয়েক বছরের মধ্যেই চারটি গাছ হয়ে উঠল আর যে দুই গরীব কৃষকের জমির মধ্যিখানে গাছটি ছিল তারা অবাক হয়ে দেখল যে তাদের জমিতে এমন একটি ফল ফলছে যা রাজার বাগানে ছাড়া হয় না। এতদিন তারা দুই ভাইয়ের মত পাশাপাশি থাকত, কিন্তু এখন এই ডালিম গাছটি পাওয়ার জন্য দুই কৃষকের মধ্যে ঝগড়া বেঁধে গেল। দুজনেই দাবি করল যে ডালিম গাছটি তাদের জমির আওতায়। ঝগড়া যখন খুব বেড়ে গেল, তখন দুই কৃষক কাজির কাছে উপস্থিত হল। তাদের জমি মেপে দেখা গেল যে ঠিক যেখানে জমিটি ভাগ হয়েছে, সেইখানেই ডালিম গাছটির গোড়া, তার গুঁড়িটিও এমনভাবে গজিয়েছে যে দুই জমিতেই সমানভাবে তার দুই দিক পড়েছে। দুই চাষিকে জিজ্ঞাসা করাতে কেউই বলতে পারল না যে গাছের বীজটি কে বপণ করেছে। তখন কাজী তাদের জিজ্ঞাসা করলেন যে তাদের কোনো সন্তান আছে কি না। এক চাষির বিবাহের উপযুক্ত একটি মেয়ে ছিল, অন্যজনের সেই রকম একটি ছেলে। কাজী তখন ঠিক করলেন যে ছেলেটির এবং মেয়েটির বিয়ে হবে এবং ডালিম গাছটি তারা উত্তরাধিকার সূত্রে পাবে। এতক্ষণে চাষিরাও নিজেদের ব্যবহারে লজ্জিত; তারা খুশিমনে রাজি হয়ে গেল।

    এর কয়েকদিন পরেই তাদের ছেলেমেয়েদের পস্পরের সাথে বিয়ে হয়ে গেল। কয়েকটি বছর কাটল, আর দারাজগোশ জিন সবই দেখল, আর ভগবানের নির্দেশ পালন হওয়ার অপেক্ষায় রইল।

    বৃদ্ধ চাষিটি যতই কৃপণ আর হৃদয়হীন, তার যুবতী স্ত্রী ঠিক ততই উদার ও দরদী। সে সাধ্যমত গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করত আর তার জন্য নিজের স্বামীর গঞ্জনাও সহ্য করত। একদিন সে সন্তানসম্ভবা হওয়াতে, বৃদ্ধ চাষি তাকে নির্দয়ভাবে মেরে তার ভৃত্যদের দিয়ে তাকে বাড়ির বাইরে তাড়িয়ে দিল, কিন্তু কোনো কারণ জানালো না। মেয়েটির যেহেতু দয়ালু এবং ভালো বলে সুনাম ছিল, তাই পাড়া-পড়শিরা বৃদ্ধ চাষিকে গালি-গালাজ করে মেয়েটিকে কাজীর কাছে নিয়ে গেল, যাতে তার সুবিচার হয়। বৃদ্ধ চাষিকে যখন ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করা হল যে সে তার স্ত্রীকে অকারণে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে কেন, তখন সে বলল যে হবু বাচ্চাটি তার নয়। তাতে সবাই আশ্চর্য হয়ে চাষিকে পাল্টা প্রশ্ন করল যে এর কোনো প্রমাণ আছে কি না। চাষি উত্তর দিল যে তার বৃদ্ধ বয়সের অক্ষমতার জন্যে সে কোনোদিনই তার স্ত্রীর সাথে সম্ভোগ করতে পারেনি, অতএব শিশুটি তার হতে পারে না। কাজী যখন মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন সে স্বীকার করল যে তার স্বামী সত্যি কথাই বলছেন, কিন্তু এ-ও বলল যে সন্তানটি চাষিরই, কারণ তার স্বামী ভিন্ন অন্য কোনো পুরুষ তাকে ছোঁয়নি।

    চাষি তার স্ত্রীকে বেশ্যা ও গণিকা বলে অপমান করল। কাজী, পাড়া-পড়শি, গ্রামবাসী— কেউই আর তার কথা বিশ্বাস করল না। সবাই একজোটে চাষির পক্ষ নিয়ে বলল যে মেয়েটি নিশ্চয় কোনো ভিখিরি বা ভবঘুরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনা করেছিল, যে তার দরজায় ভিক্ষা চাইতে আসে। মেয়েটি করো বার কেঁদে বলল যে সে নির্দোষ, এ সুবিচার নয়, কিন্তু তাকে চিরকালের মতো শহরটি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল। তাকে মনে করিয়ে দেওয়া হল যে এই দয়ালু চাষির অসীম মহত্বকে, যিনি তাকে অনাথ অবস্থায় ওপার দয়া করে তাকে বিয়ে করে আশ্রয় দিয়েছেন, সে এইভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে সে কোনোদিন ফিরতে পারবে না।

    সে-বছর ডালিম গাছটি দুই কৃষকের পরিবারকে প্রচুর ফল দিল। সেই ফল বিক্রির টাকায় তাদের সারা বছর স্বচ্ছন্দে চলে গেল। চাষি পরিবার দুটির আর দুর্দিন রইল না আর তারা ঠিক করল যে তাদের স্বচ্ছলতার মূলে আছে ওই ডালিম গাছ। দুই পরিবারের ছেলে-মেয়ের যখন একটি মেয়ে সন্তান হল, তারা মেয়েটির নাম রাখল রুম্মন

    জনগণ তাকে আরও অনেক গঞ্জনা শোনাল, আরো অনেক কুৎসিত নাম ধরে ডাকল। মেয়েটিকে যখন খেদিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন সে যাদের সাহায্য করেছিল, তারাও ওর মুখে থুতু দিল।

    মেয়েটি ক’দিন শহরের বাইরে খাবার ও জল ছাড়া ভবঘুরের মতো ঘুরল, তারপরে একদিন অনাহারে নদীর ধারে অজ্ঞান হয়ে গেল। তাকে খুঁজে পেল এক বৃদ্ধ জেলে। জেলে আর তার বউয়ের কোনো সন্তান ছিল না। মেয়েটির গল্প শুনে জেলের তার উপর ভারি দয়া হল। জেলে-জেলেনি মেয়েটিকে তাদের বাড়িতে আশ্রয় দিল।

    সেখানে মেয়েটি একটি ছেলের জন্ম দিল, তার নাম রাখল— লামাদ। জেলে লামাদকে মাছ ধরতে শেখাল, ক্রমশঃ লামাদও একা মাছ ধরতে বেরলো। কয়েক বছর পর মেয়েটি তার বৃদ্ধ স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পেল। তখন সে তার সব কথা লামাদকে খুলে বলল আর তাকে দিয়ে প্রতিজ্ঞা করাল যে একদিন সে তার মায়ের মান ফেরাবে, যদি সে মরেও গিয়ে থাকে। 

    সে-বছর ডালিম গাছটি দুই কৃষকের পরিবারকে প্রচুর ফল দিল। সেই ফল বিক্রির টাকায় তাদের সারা বছর স্বচ্ছন্দে চলে গেল। চাষি পরিবার দুটির আর দুর্দিন রইল না আর তারা ঠিক করল যে তাদের স্বচ্ছলতার মূলে আছে ওই ডালিম গাছ। দুই পরিবারের ছেলে-মেয়ের যখন একটি মেয়ে সন্তান হল, তারা মেয়েটির নাম রাখল রুম্মন। কিন্তু রুম্মনের জন্ম যে দিন, সেই দিন থেকেই ডালিম গাছটি মরতে শুরু করল। সেদিন থেকে কেউ ওই গাছে একটা ফুলও ফুটতে দেখল না, ডালিম গাছে একটা ডালিমও হল না। কয়েক মাসের মধ্যে যেখানে একটা জমজমাট, ফুলে-ফলে ভরা ডালিম গাছ ছিল, সেখানে রইল শুধুমাত্র একটুকরো শুকনো কাঠ। সেই কাঠ কেটে জ্বালানি করে ফেলা হল। চাষি পরিবারের অবস্থাও পড়ে গেল। তার পরের বছর পঙ্গপাল ফসল খেয়ে নিল, তারও পরের বছর তাদের গরু-ভেড়া অসুখে মারা পড়ল আর তৃতীয় বছরে এল খরা।

    (চলবে)

    অনুবাদ: যশোধরা চক্রবর্তী

    ছবি এঁকেছেন: শুভময় মিত্র

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook