টুকরো লেখা
১
এ-রুমাল কানাকানি। এ-বাতাস বান্ধবীর চিঠি।
জাহাজের ছায়া থেকে দূরে যায় কিশোরের দিন…
সবচেয়ে দামি আজও পিকাসো আঁকেননি যে-ছবিটি।
সমস্ত হওয়ার পরও না-হওয়ার কাছে তাই ঋণ।
২
শরীরে তর্কের আলো, মনে মীমাংসার অন্ধকার
তুমি এর মাঝামাঝি দাঁড়িয়েছ ট্রেন ধরবে ব’লে।
জেনো স্থাপত্যের দেশে সকলই প্রস্তর সমাহার।
স্থায়ী তো হত না কোনও অবয়ব, নিশ্চল না হলে।
৩
সমাধির পাশে যত গাছ থাকে, তাদের শরীর
শান্ত পৃথিবীর শেষ প্রতিনিধি। ফলকের নাম
মৃত্যুর পরেও কত ছায়া পায়। তারও চেয়ে ধীর,
যদি মনে পড়ে আজও, কীভাবে তোমাকে ডাকতাম…
৪
প্রহরা দুর্গের মন। অপরাধ শাস্তির প্রেরণা।
মাঝে যে-পরিখা, তাতে আশঙ্কা টলটল করে রাতে।
শত্রুদের চাঁদ দ্যাখো। তির লেগে ভেঙে যাওয়া কোনা…
আরও বুঝি যুদ্ধ চাই, নাগরিকে জোছনা বোঝাতে।
৫
সামরিক ভালবাসা কাকে বলে, বিমানেরা জানে।
তাদের ছায়ার নীচে জ্বলে যাওয়া খামারের মতো
তুমিও এসেছ আজ পৃথিবীর অন্তিম বাগানে।
হাওয়া কিছু কম, যেন দূর দেশে অনেকে নিহত।
৬
চেয়ারে যে-রোদ পড়ে, বসতে চায়, দূর থেকে এসে।
অথচ তোমার তাকে খালি ব’লে মনে হয় খুব।
যেখানে শূন্যতা শেষ, বন্ধু ঘোরে হিসেবের বেশে,
তোমার সমস্ত মন রোদহীন সেখানে মকুব।
৭
ডানা যে পায়নি, তাকে ওড়া দাও। তবেই তো বুঝি।
রং যে পায়নি তাকে ছবি। তুমি কত কারিগর
দেখাও আমাকে তার অধিকারবৃত্তি, রুটিরুজি।
নইলে তো পথও বৃথা, নাহলে তো ব্যর্থ হয় ঘর।
৮
দরিদ্র কিনারে লেগে নদী ক্ষয়ে যায় এই দেশে।
দূরে দূরে জ্বলে নেভে আমাদের উনুনসভ্যতা।
কত-না রান্নার ছল, ফোড়নে বারুদগন্ধ মেশে…
রাত্রি তবু ধাবমান, সময় তবুও খরস্রোতা।
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র