জমকালো একটা কালো গাড়িকে টেনে নিয়ে এল দুটো ঝকঝকে সাদা ঘোড়া। গাড়ির ভেতরে উজ্জ্বল চিনা-সাটিনের জামা ও উত্তরীয়তে এক মহীয়সী ব্রিটিশ মহিলা এবং তাঁর সঙ্গে মিলিটারি পোশাকে এক সুদর্শন ও সম্ভ্রান্ত পুরুষ। ঘোড়ার গাড়ি থেকে নেমে আসা লাল কার্পেট ছড়িয়ে যাচ্ছে সিন্ধ বিধানসভার অভিজাত চত্বর অবধি। বিধানসভায় ঢোকার মুখে দাঁড়িয়ে আছেন এক দীর্ঘকায়, অভিজাত ভারতীয় পুরুষ ও তাঁর সঙ্গে এক শাড়ি পরিহিতা সুন্দরী রমণী, অতিথিদের আপ্যায়ন করার জন্য। অতিথিরা নেমে এলে চারজনে একসঙ্গে হেঁটে যান ভবনের ভেতরে। প্রায় আধঘণ্টা পরে, তাঁরা বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিধানসভার ওপরে একটা পতাকা উত্তোলিত হয় এবং বিউগল বাজতে শুরু করে। চতুর্দিকে উল্লাসের শব্দ। একটা সবুজ পতাকা, তাতে একটা বাঁকা চাঁদ, আর তার মাথায় তারা।
১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা দিবসের এই স্মৃতি আজও জীবন্ত। তবে তা ১৫ অগাস্টের নয়, ১৪ অগাস্টের। ইয়ম-এ-আজাদি, পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস।
ন’বছর বয়সি একটা মেয়ে তার বাড়ির বারান্দা থেকে ঝুঁকে দেখেছিল এই ইতিহাস। কেননা করাচির স্ট্রাচাম রো-এর সেই বাংলোর একটা দেওয়াল ছিল সিন্ধ বিধানসভার লাগোয়া। বর্তমানে তিনি কলকাতায় থাকেন। পরিবার, বন্ধুবান্ধব আর সাফল্যে তাঁর জীবন পরিপূর্ণ। করাচি থেকে মুম্বই, দিল্লি ও আবারও মুম্বই হয়ে তাঁর কলকাতা পৌঁছনোর যাত্রাপথ আমাদের সামনে এক দেশের গল্প তুলে ধরে— যে-দেশ ইতিহাসের নিরিখে প্রাচীন, কিন্তু স্বাধীনতার নিরিখে একেবারেই নতুন।
নতুন ভাবে টেক্সটাইল চর্চার পথিকৃৎ, গণিত শিক্ষক, লেখক ও মানবদরদী শামলু দুদেজা জন্মেছিলেন করাচিতে, এক গণিতের অধ্যাপক ও ইংরেজি শিক্ষিকার সংসারে। তিনি ছিলেন তিন সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাঁর শিক্ষা শুরু হয় একটি সিন্ধি মিডিয়াম স্কুলে, যদিও তাঁর মা কনভেন্ট স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। এর কারণটা অবশ্য ছিল অন্যরকম, তাঁর বাবা-মা চেয়েছিলেন তিনি যেন নিজের সংস্কৃতির শিকড় থেকে কখনও বিচ্যুত না হন। তাঁদের আত্মপরিচয়ে তাঁদের সিন্ধি সংস্কার ছিল সবচেয়ে জরুরি, এবং এই সব কিছুর সঙ্গে সেদিন অগাস্টের মাঝামাঝি সেই দিনটাতে যা কিছু ঘটে, তার গভীর যোগাযোগ ছিল।
যে সম্ভ্রান্ত ব্রিটিশ দম্পতিকে শামলু ৭৫ বছর আগের সেই ১৪ অগাস্ট দেখেছিলেন, তাঁরা আর কেউ নন, স্বয়ং লর্ড মাউন্টব্যাটেন এবং তাঁর স্ত্রী, আর তাঁদের অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন মুহম্মদ আলি জিন্না এবং তাঁর বোন ফতিমা জিন্না। যদিও শামলুর স্মৃতি এটুকুই নয়, ‘পতাকা উত্তোলনের ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে বিধানসভায় যে কুলিরা কাজ করত, তারা বেশ ভারী দেখতে বিভিন্ন প্যাকেট নিয়ে বেরিয়ে আসে, প্যাকেটগুলোকে বাইরের লনে ছুঁড়ে ফেলে দেয় এবং আবার ভেতরে চলে যায় আরও বিভিন্ন জিনিস বয়ে নিয়ে আসার জন্য। এইসময় তাদের স্ত্রীরা দাঁড়িয়ে ছিল বাইরের লনে, তারা তাড়াতাড়ি সেই সমস্ত প্যাকেট বাস্কেটে কিংবা বাইসাইকেলে চাপিয়ে নেয়। রুপোর কাঁটাচামচ, লিনেন, দামি ও হালকা আসবাব, কিছুই বাকি ছিল না।’ শামলু স্মৃতিচারণ করেন।
চারপাশের উল্লাসধ্বনির মধ্যেও শামলুর মনে আছে, উল্লাসের সুর কীভাবে ধীরে ধীরে গম্ভীর ও অন্ধকার হয়ে এসেছিল। এই বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাঁর চোখে পড়েছিল শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে একে একে পাক খেয়ে উঠে আসা কালো ধোঁয়া।
এই ঘটনার ছ’দিন আগে অব্দিও তাঁদের পরিবারে ‘দেশভাগ’ এই শব্দটা নিয়ে প্রচুর আলোচনা চলেছে। শামলুর বাবা ছিলেন করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যক্ষ। অভিজ্ঞ গণিতজ্ঞের প্রয়োজন দেখা দেওয়ায় তিনি সরকার দ্বারা নতুন পদে নিযুক্ত হন। কমবয়সি শামলুর কাছে ‘দেশভাগ’ শুধুই একটা শব্দ ছিল। এই দিনটির পরে, এই শব্দটাই তার, এবং তার মতো আরও কোটি কোটি মানুষের জীবনকে সম্পূর্ণ অন্য এক খাতে বইয়ে দেয়। বদলের হাওয়া প্রথম তাঁর স্কুলকে ছুঁয়ে ফেলে— এরপরে ক্রমাগত দাঙ্গা ও অস্থিরতার জন্য একের পর এক স্থানীয় স্কুলগুলি বন্ধ হতে থাকে এবং শামলুকে বাধ্য হয়ে তাঁর মায়ের স্কুলে ভর্তি হতে হয়।
শামলুর নতুন স্কুলের অভিজ্ঞতা ভাল না হওয়ার মূল কারণ ছিল তাঁর সহপাঠীরা, যাদের পরিবার ওই নতুন রাষ্ট্রে রাতারাতি শাসক শ্রেণীর আসনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। নতুন দেশের পরিবর্তিত সমাজে কয়েক সপ্তাহ কাটিয়ে তাঁর বাবা-মা, পাকিস্তানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তকেই পুনরায় যাচাই করে দেখেন। শামলুর বাবা-মা দুজনেই সুফি ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তাঁরা চেয়েছিলেন তাঁদের গুরুর— যিনি সিন্ধ প্রদেশের অভ্যন্তরে থাকতেন— তাঁর কাছাকাছি থাকতে। কিন্তু দেশের ক্রমপরিবর্তিত ‘পরিবেশ (mahoul)’ তাঁদের গভীর চিন্তায় ফেলে দেয়। অবশেষে, গুরুর আশীর্বাদ নিয়ে তাঁরা সপরিবার ভারতের দিকে যাত্রা করেন।
তাঁদের গন্তব্য ছিল প্রথমে জাহাজে করে মুম্বাই। দেশভাগ-পরবর্তী উদ্বাস্তু হওয়ার কারণে তাঁরা শুধু একটা জামাকাপড়ের ট্রাঙ্ক নিয়ে যাওয়ার অধিকারী ছিলেন। এর বাইরে যা কিছু, তা নিয়মানুসারে ছিল সরকারি সম্পত্তি। শামলুর মা কিছুতেই তাঁর সেলাইমেশিন ফেলে আসতে চাইছিলেন না। শেষপর্যন্ত এক দয়ালু সৈনিক তাঁকে ওইটুকু বাড়তি জিনিসটুকু নিয়ে জাহাজে ওঠার ছাড়পত্র দেয়।
এই গুরুত্বপূর্ণ সফরের স্মৃতি বলতে শামলুর শুধুই মনে পড়ে আকাশছোঁয়া ঢেউয়ের ওপর দিয়ে ভেসে চলার শিহরন, ক্যাবিনের পোর্টহোলের ভেতর দিয়ে দেখা অপূর্ব নিসর্গ আর ডলফিনের সাঁতার। বম্বেতে প্রথম কিছুদিন শামলু ও তাঁর পরিবারকে তাঁদের এক মামার কাছে রেখে শামলুর বাবা কাজের খোঁজে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
“বাণিজ্য-মন্ত্রকে একটা চাকরি সহজেই পাওয়া গেল। বাবা যখন আশু পাকিস্তান সরকারের হয়ে কাজ করছিলেন, তখন বুদ্ধি করে নিজের অফিসারের কাছ থেকে একটা শংসাপত্র লিখিয়ে নেয়, সেটা অনেকটা কাজে আসে। এছাড়াও, অনেক কর্মরত অফিসার পাকিস্তানে চলে যাওয়াতে বেশ কিছু শূন্যপদ তৈরি হয়।’ শামলু বলেন। কিন্তু দিল্লিতে বাসা হিসেবে পাওয়া গেল শেষমেশ একটা আস্তাবল, যেটাকে একটু সারাই করে কোনওমতে থাকার উপযোগী হয়তো করা যেত। অধ্যাপক কুলকার্নি ফোন করে স্ত্রীকে বলেন, যতদিন না তিনি আরেকটু ভাল থাকার ব্যবস্থা করতে পারছেন ততদিন অব্দি বম্বেতেই থেকে যেতে, কিন্তু শামলুর মা ঠিক করেন যে পরিবারকে একসাথেই থাকতে হবে, সে বাড়িতে হোক বা আস্তাবলে। তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বেরিয়ে পড়েন দিল্লির উদ্দেশ্যে— দৃঢ়সংকল্প, আস্তাবলকেই সাজিয়ে-গুছিয়ে স্বাধীন ভারতবর্ষে নিজেদের প্রথম ঘর বানানোর লক্ষ্যে।
এই সময়, শামলুর পরিবার ভাগ্যের মুখ দেখল। একটা চিলেকোঠার ঘরের খোঁজ পাওয়া গেল, কিন্তু সেটাকেও বসবাসযোগ্য বানিয়ে নিতে হবে। যদিও হাতে টাকাপয়সা যা ছিল সেই হিসাবে অনেকদিন লাগত এই কাজে। সহৃদয় পড়শিরা দুপুরে খাবার পাঠাত, এছাড়াও পাঠাত কিছু রান্নার বাসন আর সংসারের কিছু জিনিস। শামলুকে তড়িঘড়ি ভর্তি করা হল লেডি আরউইন স্কুলে। দিল্লিতে এসে করা মিসেস কুলকার্নির প্রথম কাজগুলোর একটা ছিল নতুন কাপড় কিনে শামলুর জন্য স্কুলের ইউনিফর্ম সেলাই করা।
শামলুর মায়ের সেলাইমেশিনের যুদ্ধে নামার সময় হয়ে এসেছিল। করাচির বন্দর থেকে যে সেলাইমেশিন তাঁদের সহযাত্রী হয়ে এতদূর এসেছে, তার ঢাকা খোলার সাথে সাথে ভাগ্যদেবী শামলুর পরিবারের ওপর মুচকি হাসলেন। বাক্সের ভেতরে আরেকটা ছোট্ট বাক্স থেকে বেরোল একজোড়া হিরের চুড়ি আর হিরে-পান্না খচিত একটা আংটি। সম্ভবত, অনেক আগে, সেলাই করার সময় কখনও শামলুর মা নিজের হাত থেকে খুলে এগুলিকে বাক্সের ভেতর রেখেছিলেন। এই অপ্রত্যাশিত সম্পদ হাতে এসে পড়ায়, পুরো পরিবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। একটা চুড়ি প্রথমেই বিক্রি করা হয় ঘরের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনার জন্য, আর শেষপর্যন্ত শামলুর পরিবার একটা ঘর বানাতে সমর্থ হয়, যেখানে সুস্থভাবে হেসেখেলে থাকা যায়। শামলু আমাদের জানান যে, পরে আরেকটা হিরের চুড়ি গলিয়ে দুটো হিরের দুল বানিয়ে দেওয়া হয় দুই বোনের জন্য আর আংটিটা দেওয়া হয় ভাইকে।
কুলকার্নি পরিবারের জীবন তখন এক স্বতন্ত্র খাতে বইতে শুরু করে। গৃহকর্তার অবসরের পর এবং শামলুর মিরান্ডা হাউস থেকে গ্রাজুয়েশন করা হয়ে গেলে তাঁরা ফিরে আসেন বম্বেতে। স্বাধীন ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল শামলুর মতো কমবয়সি, শিক্ষিত মেয়েদের জন্য চাকরির বিভিন্ন সম্ভাবনা। এছাড়াও ছিল অন্যান্য সুযোগ, যেমন হ্যান্ডলুম হাউসের জন্য অথবা উঠতি দেশি ব্র্যান্ড ‘ল্যাকমে’ বা ‘খাতাউ’ শাড়ির জন্য মডেলিং। এই সব কিছুতেই শামলু ছাপ রেখে যান এবং নিজের এক স্বতন্ত্র পরিচিতি ও আভিজাত্য তৈরি করতে সফল হন।
বিয়ে, কলকাতায় চলে আসা ও সন্তানাদি যথা সময়ে হয়। চিরকাল অঙ্কে ভাল, শামলু এক স্থানীয় স্কুলে বাচ্চাদের ‘প্র্যাক্টিকাল ম্যাথ’ শেখাতে শুরু করেন।
এর ফলে পরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি ঘটতে শুরু করে। ব্রিটিশ কাউন্সিলে একটি তিন দিনের সার্টিফিকেট কোর্স করার পর শামলুর কাছে ইংল্যান্ড ও আমেরিকা থেকে স্পেশাল ট্রেনিং প্রোগ্রামে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ আসে। প্র্যাক্টিকাল ম্যাথ শেখানোর ক্ষেত্রে তাঁর চিন্তা, অভিনবত্ব ও অভিজ্ঞতা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের নজরে আসে। তারা শামলুকে অনুরোধ করে গণিতের পাঠ্যবইয়ের একটা সিরিজ লিখতে। শামলু সিরিজটি লেখেন, এবং নাম দেন ‘কাউন্টডাউন’। বইটি ভারতে খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। অক্সফোর্ড প্রেসের পাকিস্তানের শাখাও এই সিরিজটি নিয়ে আগ্রহ দেখায় এবং এর ফলে, এক বছরের মধ্যে সীমান্তের দু’পাশে স্কুলের বাচ্চারা এমন এক নারীর লেখা গণিতের পাঠ্যবই পড়তে শুরু করে, যাঁর জন্ম ও প্রাথমিক গণিতশিক্ষা করাচিতে এবং উচ্চশিক্ষা ও গণিতের সমস্ত ডিগ্রি ভারতবর্ষে।
এই সময়, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে শামলুকে তাঁর লেখা গণিত বই পাকিস্তানে কীভাবে পড়ানো হচ্ছে তা দেখে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। শামলুর মেয়ে দুশ্চিন্তা করলেও করাচিতে জন্ম নেওয়া শামলুর পক্ষে এই আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। উপরন্তু তিনি নিজের বোন, তিনিও গণিতের শিক্ষিকা, তাঁকেও সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। নিজের জন্মশহরের ভেতর আবার ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি বড়ই মধুর তাঁর কাছে। শামলু শুধু একটাই আক্ষেপ করেন, তাঁর আগেকার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দারোয়ান তাঁদের কিছুতেই ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। তাঁরা শুধু বাইরে থেকে গাছের পেছনে থাকা নিজেদের বাংলোবাড়ির একঝলক মাত্র দেখতে পেয়েছেন।
“আমার মন পরিতৃপ্তি, গর্ব ও আনন্দের এক অবর্ণনীয় অনুভূতিতে ভরে যায় এই ভেবে যে, অন্তত আমার জন্য, অন্তত এই একটা জায়গায়, দেশটা এখনও অবিভক্ত আছে। ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমার লেখা গণিতের পাঠ্যবই সীমান্তের দু’পাশের স্কুলগুলোতে পড়ানো হচ্ছে। এমনকী একটা নতুন সিরিজ ‘ম্যাথওয়াইস’, খুব সম্প্রতি পাকিস্তানে প্রকাশিত হয়েছে। জীবন তার বৃত্ত সম্পূর্ণ করেছে।” শামলু বলেন।
এছাড়াও আরও অসংখ্য অকল্পনীয় স্মৃতিকথা এই উপমহাদেশের ইতিহাসের একটি যুগের কবলে চাপা পড়ে আছে আমরা নিশ্চিত। প্রত্যেক স্মৃতিই এক-একটা অমূল্য দলিল। শামলুর জীবনকাহিনি একাই অনায়াসে একাধিক বইয়ের বিষয় হতে পারে। “হ্যাঁ, অবশ্যই পারে। যে কারণে আমি এখন নিজের স্মৃতিকথা লেখা শুরু করেছি। আমি লিখতে শুরু করেছিলাম একেবারেই ব্যক্তিগত কারণে, কিন্তু এখন আমার মনে হয় আমার ঘনিষ্ঠদের বাইরেও অনেক মানুষ আছেন যারা আমার কাহিনি জানতে আগ্রহী হবেন। আর কিছু না হই, আমি ইতিহাসের সাক্ষী তো বটেই!” শামলু বলেন।